হাসপাতাল পরিদর্শন
কান টানলে যেমন মাথাও চলে আসে, তেমনি চিকিৎসক সম্পর্কে বলতে গেলে চিকিৎসালয় তথা হাসপাতালের কথাও এসে যায়। আর বিলেতের জোক্বুকে পড়েছিলাম: মানুষ অসুস্থ হলে যায় হসপিটালে। হর্স (ঘোড়া) অসুস্থ হলে কোথায় যাবে? কোথায় আবার, হর্সপিটালে! তা জীবন-নাট্যের-জীবনের হাসি-কান্না, রোমান্স-ভালোবাসার কত অসংখ্য দৃশ্যই না প্রতিনিয়ত প্রতিফলিত হয়ে থাকে বিভিন্ন হাসপাতালে, যেগুলোর অধিকাংশই চিত্তাকর্ষক। নীহাররঞ্জন গুপ্তের লেখা হসপিটাল উপন্যাসটি যঁারা পড়েছেন, তঁারা সবাই একবাক্যে আমার সঙ্গে একমত হবেন। আর আমি যদি আইএসসি পাস করার আগে উপন্যাসটি পড়তাম, তাহলে স্নাতক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি না হয়ে বোধ করি তৎকালে পার্শ্ববর্তী ঢাকা মেডিকেল কলেজেই ভর্তি হতাম। সে যা হোক। আমার কনিষ্ঠ ছেলে, যে বর্তমানে এক কন্যাসন্তানের গর্বিত বাবা, জন্মগ্রহণ করেছে লন্ডনে; আমি তখন ওখানে আমাদের দূতাবাসে সরকার কর্তৃক পদায়িত। মাত্র ছয় মাস বয়সে ওর পেটের অসুখ হওয়ায় নিয়ে গেলাম নিকটবর্তী নামকরা সেইন্ট জর্জেস হসপিটালে।\
উইক এন্ডে বড় চিকিৎসকেরা থাকেন না; নবীন চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বললেন, পেটের ভেতরে অঁাত প্যঁাচ খেয়ে গেছে, অপারেশন করে ঠিক করতে হবে। বাধ্য হয়ে সম্মতি দিলাম। কিন্তু অপারেশনের পরে তঁারা বললেন, পেট কাটার পূর্বক্ষণেই তা এমনিতে সেরে গেছে; যা হোক, আমরা ওর অ্যাপেনডিক্স কেটে ফেলে দিয়েছি। আমি বললাম, ‘থ্যাংক ইউ ডক্টর, ২০-৩০ বছর পরের একটা অপারেশন এখন সারার জন্য। পরে শুনলাম, নবীন চিকিৎসকেরা হাত পাকানোর জন্য নাকি এসব করে থাকেন। আর এই যদি হয় বিলেতের অবস্থা, তাহলে...। তো মানুষের শরীরের ভেতরে অ্যাপেনডিক্স বলে একটা উপ-অঙ্গ আছে, যেটার কার্যকারিতা বা প্রয়োজনীয়তা চিকিৎসকেরা অদ্যাবধি বের করতে পারেননি বিধায় নাম দিয়েছেন ‘অ্যাপেনডিক্স’ তথা বাড়তি অংশ এবং অন্য কোনো কারণে পেটে অপারেশন করলে তঁারা এটা কেটে ফেলে দেন; কেননা পরবর্তী সময়ে এটাতে ইনফেকশন হলে পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপারেশন না করলে রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে। তা এটা নিয়েও অনেক মজার গল্প আছে, যেমন: একজন গভীর রাতে পরিচিত শল্য চিকিৎসককে টেলিফোন করেছেন, ‘ডাক্তার সাহেব, তাড়াতাড়ি আসুন; আমার স্ত্রীর অ্যাপেনডিক্সের ব্যথা বেড়েছে, অপারেশন করতে হবে।’ চিকিৎসক বললেন, ‘গত বছর আপনার স্ত্রীর অ্যাপেনডিক্স অপারেশন করে কেটে ফেলে দিয়েছি। অ্যাপেনডিক্সের অপারেশন।
No comments