মমতাকে পাশে চায় সোনিয়া
নরেন্দ্র মোদিকে ঠেকাতে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে আবার সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চান সোনিয়া গান্ধী। ভোটপর্ব চুকতেই সোমবার সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস কোর কমিটির বৈঠক বসেছিল। সেখানে দুটি সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমটি হল, মোদিকে ঠেকাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। দুই, এক্সিট পোলের ফলাফল দল খারিজ করবে। প্রথম উদ্দেশ্য সিদ্ধ করতে গেলে, মমতা ব্যানার্জির তৃণমূলসহ আঞ্চলিক দলগুলোকে পাশে পেতেই হবে কংগ্রেসকে। সে জন্যই মমতাকে পাশে পেতে ঝাঁপাতে চায় কংগ্রেস। মমতার সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন খোদ সোনিয়া গান্ধী। ইউপিএ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস বেরিয়ে আসার পর গত বছর দেড়েক কংগ্রেসের সঙ্গে মমতার সম্পর্ক মোটেই মধুর নয়। কিন্তু সেই সম্পর্ককে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছেন সোনিয়া নিজে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, ভোটপর্ব শেষ হওয়ার পর মমতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রাখবেন সোনিয়া। এমনিতে কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্ক খারাপ হলেও সোনিয়ার সঙ্গে মমতার সম্পর্কে উষ্ণতায় ভাটা পড়েনি। দুজনেই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেই সম্পর্ককে চাগিয়ে তোলার চেষ্টা করবেন সোনিয়া। কংগ্রেসের এক প্রধান নেতার কথায়, ভবিষ্যতের জন্য তৃণমূলসহ অনেক আঞ্চলিক দলকেই আমরা পাশে পেতে চাই। সে জন্যই যোগাযোগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এই আঞ্চলিক দলের তালিকায় রয়েছে, মায়াবতীর বসপা, মুলায়মের সমাজবাদী পার্টি, চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির মতো দলগুলো। তবে এসব নেতা-নেত্রীদের মধ্যে মমতাকেই বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে কংগ্রেস। এ ব্যাপারে সোনিয়ার হিসাবটা স্পষ্ট। যেসব রাজনৈতিক দল মুসলিম ভোট পায় এবং অদূর ভবিষ্যতে যাদের বিধানসভা নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে, তারা নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যেতে পারবেন না। তৃণমূলের ক্ষেত্রে দুটিই সত্য। ২০১৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা ভোট হবে। তাছাড়া রাজ্যের মুসলিম ভোটের একটা বড় অংশ পাওয়ার ব্যাপারে মমতা সচেষ্ট। তাই তার পক্ষে মোদিকে সমর্থন করা সম্ভব নয়। তার উপরে মোদি সম্প্রতি রাজ্যে গিয়ে মমতাকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করতে শুরু করার পর থেকেই তৃণমূলনেত্রী সম্পর্কে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব পাল্টেছে। তার পর থেকেই ভবিষ্যতের কথা ভেবে মমতা সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার ভাবনারও শুরু। ভোটপর্ব চলার সময় থেকেই কংগ্রেস নেতারা কীভাবে নরেন্দ্র মোদিকে ঠেকানো যায়, তার কথা ভাবতে শুরু করেছিলেন। সোমবার কোর কমিটির বৈঠকেও সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কীভাবে সেটা হবে, কংগ্রেস নিজে সরকার গঠন করতে যাবে, না কি আঞ্চলিক দলের কাউকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে, সেই সব বিস্তারিত বিষয়ে আলোচনা হয়নি। ভোটের ফলাফল না দেখে সেই আলোচনা হওয়ার কথাও নয়। কিন্তু কংগ্রেস মোটামুটি সব বিকল্পই খোলা রাখছে।
No comments