গোপনীয়তা আইন সহজ করার আবেদন তিন প্রতিষ্ঠানের
যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয় তদন্তের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা আইন আরও সহজ করতে সরকারের কাছে আবেদন করেছে শীর্ষস্থানীয় তিনটি প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট, ফেসবুক ও গুগল। এই আবেদন গত মঙ্গলবার সরকারের কাছে করা আরেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টুইটারের আবেদনের মতোই। মার্কিন কর্তৃপক্ষ গুগল ও অ্যাপলসহ দেশটির নয়টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সার্ভার থেকে সরাসরি তথ্য নিয়েছে—এ মর্মে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে গোপনীয়তা আইন সহজ করার দাবি ওঠে। সার্ভার থেকে তথ্য নেওয়ার বিষয়টি মার্কিন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে স্বীকারও করেছে। স্নোডেন হংকংয়েই আছেন: জনগণের ফোন রেকর্ড ও অনলাইন তৎপরতার তথ্য সংগ্রহের ঘটনা ফাঁস করে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এডওয়ার্ড স্নোডেন হংকংয়েই আছেন। গতকালতিনি তাঁকে হংকংথেকে প্রত্যর্পণ করার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালানোর প্রত্যয়ব্যক্ত করেন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট পত্রিকাকে স্নোডেন বলেন, তিনি বিশ্বাসঘাতকও নন, নায়কও নন।তিনি একজন মার্কিন। এর আগে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল, স্নোডেনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্নোডেন যেকোনো সময় হংকং ছাড়তে পারেন বলে গতকাল তাঁর স্থানীয় আইনজীবী জানিয়েছিলেন। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন সরকার স্নোডেনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনেনি। তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠাতেও বলেনি। আর যুক্তরাষ্ট্র যদি সেটা বলে, স্নোডেন আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন। আদালতেই বিষয়টির ফয়সালা হবে। এএফপি, রয়টার্স। নাগরিক সংগঠনের মামলা: আমাদের নিউইয়র্ক প্রতিনিধি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকদের ফোন রেকর্ড ও অনলাইন তৎপরতাবিষয়ক তথ্য গোপনে সংগ্রহের অভিযোগে ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নাগরিক অধিকার সংগঠন আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালতে এ মামলা করে। মামলায় অভিযোগ করা হয়, নাগরিকদের ওপর এমন সরকারি গোয়েন্দা কার্যক্রম মার্কিন সংবিধানের পরিপন্থী। সদ্য ফাঁস হওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, মার্কিন সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ ঢালাওভাবে নাগরিকদের ফোনালাপ সংগ্রহ করছে। কোথায়, কখন, কার সঙ্গে কত সময় কথা বলা হয়েছে—নাগরিকদের এমন অনেক তথ্যই গোয়েন্দাদের সংগ্রহে রয়েছে। সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের মামলায় বলা হয়, ইতিপূর্বে কংগ্রেসে পাস করা প্যাট্রিয়ট অ্যাক্টে সরকারের এমন গোয়েন্দা কার্যক্রমের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সরকারের গোয়েন্দা কার্যক্রম বন্ধ করাসহ সংগ্রহ করা ফোনালাপের তথ্য ফেরত দেওয়ার জন্যও আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। মামলায় মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বিবাদী করা হয়েছে। মামলার খবর প্রকাশ পাওয়ার পর মার্কিন বিচার বিভাগ বা সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইতিমধ্যে বলেছেন, ফোনালাপ সংগ্রহের সময় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারের মধ্যে ভারসাম্য রাখা হয়েছে। কিন্তু নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, একটি মুক্ত সমাজে সরকারের এমন গোয়েন্দা তৎপরতা নাগরিকদের জন্য চরমঅস্বস্তিকর।
No comments