আগামী
১৫ জুন অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রধান দুই প্রার্থীই দাবি করেছেন, তারা
সন্ত্রাসকে ‘প্রশ্রয়’ দেন না। তবে তাদের সঙ্গে খুনের আসামি ও অস্ত্রধারীদের
দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নাগরিক সমাজের নেতারা।
গত ৬ জুন ১৮ দলের
মেয়র প্রার্থী আরিফুলের সঙ্গে পাঠানটোলা এলাকায় দেখা যায় জগৎজ্যোতি হত্যা
মামলার ৬ ও ৭ নম্বর আসামি শিবিরকর্মী উবায়দুল হক শাহীন ও ফয়জুল হককে।
সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে অভিযোগ করে আরিফুল হক নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে আসছেন।
তিনি
বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সম্প্রতি নগরীতে প্রকাশ্যে
অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। যেভাবে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ঘুরে
বেড়াচ্ছে, তাতে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা প্রয়োজন।”
তার নির্বাচনী
প্রচারে হত্যা মামলার আসামি থাকার বিষয়টি তুলে ধরা হলে আরিফুল বলেন,
“নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অনেকেই অংশ নিতে আসে। আমরা বিষয়টি এতটা খেয়াল
করিনি।”
বদরউদ্দিন কামরানের পাশেও গত ৩১ মে শেখঘাট এলাকায় দেখা গেছে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক পীযুষ কান্তি দে-কে।
গত
২২ ফেব্রুয়ারি নগরীর জিন্দাবাজারে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময়
অস্ত্র হাতে পীযূষের ছবি বিভিন্ন সংবাদপত্রে ছাপা হয়, যা নিয়ে সমালোচনার ঝড়
ওঠে।
এছাড়া গত ১৯ মে সিলেটের এমসি কলেজে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের
অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি পঙ্কজ পুরকায়স্থ ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিরণ মাহমুদ
নিপুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় অস্ত্রহাতে যাদের দেখা গিয়েছিলো, তাদের
অনেকেই ভোটের মাঠে সক্রিয়।
বুধবার আরিফের পক্ষে প্রচারে এসে বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেছেন, “ভোটের জন্য
সরকারসমর্থক মেয়র প্রার্থী নগরীর বাইরে থেকে সন্ত্রাসীদের এনে জড়ো করছেন।”
তবে
সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে কামরান বুধবার
সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মোশাররফ সাহেব না জেনে এমন
কথা বলেছেন। সিলেটের মানুষ ভালো করেই জানে, কামরান সন্ত্রাসীদের লালন করে
না।”
প্রধান দুই প্রার্থীর সঙ্গে আসামি ও অস্ত্রধারীদের দেখে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভোটারদের অনেকে।
সচেতন
নাগরিক কমিটি (সনাক) সিলেট এর সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন,
“প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া ও প্রার্থীদের প্রচারণার সময় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে
থাকা সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। তারা অনেকটা শঙ্কিত।”
হত্যা
মামলার আসামি ও অস্ত্রধারীরা ভোটের প্রচারে অংশ নিলেও তাদের কেন গ্রেপ্তার
করা হচ্ছে না- জানতে চাইলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এম
রোকন উদ্দিন বলেন, “যারা পলাতক তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।”
নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো সন্ত্রাসীই শহরে ঢুকতে পারবে না।”
রোকন
উদ্দিন জানান, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ৩০ থেকে ৩৫ জন পুলিশ ও আনসার
দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও থাকবে পুলিশের ৪০টি মোবাইল টিম এবং ১০ থেকে
১৫টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে থাকবে পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স।
No comments