শান্তির জন্য কাজ করছেন ওবামা?
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন বারাক ওবামা। সেটা ২০০৯ সালের ঘটনা। নোবেল জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওপর চেপে বসে বাড়তি দায়িত্ব—বিশ্বের আরও শান্তি এনে দেওয়ার দায়িত্ব। কিন্তু সত্যি কি শান্তির পক্ষে কাজ করছেন ওবামা?
প্রশ্নটা নতুন নয়। তবে ওবামা যেভাবে শত্রুদের হত্যার ঘোষণা দিচ্ছেন, ড্রোন হামলার নির্দেশ দিচ্ছেন, তাতে প্রশ্নটা নিয়ে নতুন করে ভাবার সময়ে এসেছে।
যুক্তরাজ্যের ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, হোয়াইট হাউসে সম্প্রতি একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর নাম দেওয়া ছিল ‘টেরর টুইসডে’। বৈঠকের উদ্দেশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের মধ্যে কাদের হোয়াইট হাউস ‘হত্যা তালিকা’য় রাখবে, এটা নির্ধারণ করা। এই বৈঠকে ওবামা ঘোষণা দেন, কোন কোন শত্রুকে হত্যা করতে হবে।
গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নিহত হন আল-কায়েদার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা আবু ইয়াহিয়া আল-লিবি। আল-কায়েদার নেতাদের মতো শীর্ষ শত্রুদের বিরুদ্ধে একই রকম হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোয়াইট হাউস।
যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ড্রোন আক্রমণ চালায় ২০০৪ সালে। কিন্তু তত্কালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ড্রোন আক্রমণ চালানোর খুব একটা পক্ষে ছিলেন না। পাঁচ বছরে মাত্র ৪৪টি ড্রোন হামলার অনুমোদন দিয়েছিলেন বুশ। তবে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের ড্রোন হামলাই পছন্দ! ওবামা ক্ষমতায় আসার তিন বছর চলছে। অথচ এই মধ্যে বুশের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি ড্রোন হামলার অনুমোদন দিয়েছেন তিনি।
ড্রোন হামলার কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ছয় হাজার শব্দের প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউইয়র্ক টাইমস। কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, আরেক দফা প্রেসিডেন্ট হওয়ার আশা থেকেই একের পর এক শত্রুদের ওপর ড্রোন হামলার অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছেন ওবামা।
শত্রু হত্যার ঘোষণা দিয়ে অনেকের কাছ থেকেই প্রশংসা-বাক্য শুনছেন ওবামা। কিন্তু বাস্তবতা হলো যে প্রক্রিয়ায় শত্রুদের হত্যা করা হচ্ছে, তাতে খুব একটা লাভ হচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের। কারণ, আল-কায়েদার নেতাদের জীবিত ধরতে পারলে অনেক তথ্যই বের করা সম্ভব হতো। নিরীহ লোকদেরও হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হতো না।
ওবামার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। বিনা বিচারে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছ থেকে তো বটেই, দেশের ভেতরেও কড়া সমালোচনা শুনতে হচ্ছে শান্তিতে নোবেলজয়ী মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।
No comments