আলোর নিচে অন্ধকার by মোঃ আদনান আরিফ সালিম

বিগত হরতালের দিনে তেমন কাজ না থাকায় কয়েক বন্ধু মিলে মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনে গিয়ে যারপরনাই হতাশ হয়েছি। দেশের প্রচলিত আইনকে অনেকটা বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গার্ডেনের অসাধু কর্মচারীরা তাদের অন্যায় উপার্জন করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে হেনস্তাও করছে। যানবাহন না থাকায় অনেকটা হেঁটেই বাসায় ফিরতে হয়।


সকালে এক বন্ধুর ফেসবুক নোট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষিকা রুমানা মঞ্জুরের করুণ কাহিনী পড়ে মেজাজটা বিগড়ে ছিল অনেকটাই। এই আধুনিক যুগে বাস করেও পিশাচ স্বামী কীভাবে তার নাক কামড়ে চিবিয়ে দৃষ্টিশক্তি পর্যন্ত কেড়ে নিল, তা ভাবতে অনেকটাই চোখে পানি আসছিল। মনে পড়ছিল মধ্যযুগীয় পিশাচ ক্রুসেডার নাইটদের নৃশংস বর্বরতার কথা।
পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত নারীদের দৈহিক ও যৌন নির্যাতন আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কীভাবে শিশু আর নারীরা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে এসে শারীরিক ও যৌন হয়রানির শিকার হয়। গত ৩ মে চিত্রনায়িকা নিশির বাড়ি থেকে তার বাসার গৃহকর্মী পিয়ার লাশ উদ্ধার ছাড়াও গৃহকর্মী হাসিনা, গৃহকর্মী নাসরিন, শাম্মী, রেহানাসহ অনেকের নির্যাতনের খবর প্রতিনিয়ত পত্রিকায় আসছে; কিন্তু এ অপকর্মে কেউ শাস্তি পেয়েছে এমন খবর পাওয়া দুষ্কর। এসব ঘটনা ইভ টিজিং, নারী নির্যাতন দমন নীতিমালার আলোর নিচে অন্ধকার হিসেবে দেখা দিয়েছে। নিপীড়নবিরোধী আইন প্রবর্তনে দেশের জনগণ যেমন আশাবাদী হয়েছিল, তেমনি এর প্রায়োগিক দিককেও তেমনি শক্তিশালী করা হোক, যাতে অপকর্ম করা দূরে থাক, কেউ যেন এ ধরনের দুঃস্বপ্নও না দেখে। আইন মানুষের জন্য, মানবতার জন্য আর সবার জন্য সমান, তাই তার চোখ কালো কাপড়ে বাঁধা। এ উক্তি বইয়ের শক্ত মলাট থেকে বের হয়ে আসুক। বাংলাদেশের মানুষ তার সুফল ভোগ করুক, এ প্রত্যাশা আজ সবার।
হ শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
aurnabmaas@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.