বিশেষ সাক্ষাত্কার-দেশে মানবাধিকার সংস্কৃতি গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য by মিজানুর রহমান

ড. মিজানুর রহমান। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অধ্যাপনা করতেন। একই বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন ছাড়াও অতিথি অধ্যাপক ছিলেন সুইডেনের উমিও বিশ্ববিদ্যালয় ও নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের।


দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ আইনের অধ্যাপক ২০১০ পদকে ভূষিত মিজানুর রহমান দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রথম আলো তাঁর মুখোমুখি হয়।
 সাক্ষাত্কার নিয়েছেন সোহরাব হাসান

প্রথম আলো  মানবাধিকার কমিশন কী কাজ করছে? আপনারা কমিশনকে কী অবস্থায় পেলেন?
মিজানুর রহমান  ২৩ জুন আমরা দায়িত্ব নিই। সত্যি কথা বলতে কি, আমরা শূন্য অবস্থায় পেয়েছি। সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হয়েছে। মানবাধিকার কমিশন সম্পর্কে মানুষ তেমন কিছু জানত না। আমরা দায়িত্ব নিয়ে যে কাজটি করেছি তা হলো, এ সম্পর্কে দেশবাসীকে জানানো। এখন তারা জানতে পারছে, ক্ষতিগ্রস্তরা আসছে প্রতিকারের আশায়। হয়তো সবটা আমাদের এখতিয়ারে পড়ে না। কিন্তু তাদের এই আসাটাকে আশাব্যঞ্জক বলে মনে করি।
প্রথম আলো  মানবাধিকারের কথাটি ব্যাপক। কোন কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দেবেন?
মিজানুর রহমান  পুনর্গঠিত কমিশনের একটিমাত্র বৈঠক হয়েছে। সেখানে অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রথমে আমাদের দেখার বিষয় হলো কোন কোন ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, লঙ্ঘনের প্রকৃতি কী। দ্বিতীয়টি হলো, যারা সংক্ষুব্ধ হচ্ছে, তারা কীভাবে প্রতিকার পেতে পারে। আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় আছে যারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, যারা নিখোঁজ হয়েছে কিংবা আটক অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তৃতীয়ত, যেসব স্থান বা সংস্থায় কয়েদিরা আটক থাকে, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, যেমন জেলখানা, ডিটেনশন কেন্দ্র, সেখানে ন্যূনতম মান বজায় রাখা হয় কি না, সেটিও তদন্ত করে দেখা হবে।
প্রথম আলো  মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্তে যে লোকবল প্রয়োজন, তা কি কমিশনের আছে? না থাকলে কীভাবে তারা কাজ করবে?
মিজানুর রহমান  এই মুহূর্তে নেই। আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। সম্প্রতি সরকার কমিশনে ২৮ জনকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করি, শিগগিরই আমরা তাদের পেয়ে যাব। তারা এলে প্রাথমিক কাজগুলো শুরু করতে পারব। যেমন, আমাদের তদন্ত ও গবেষণার কাজে তারা সহায়তা করতে পারবে। কম জনবল দিয়েই আমরা বেশি কাজ করতে চাই।
প্রথম আলো  মানবাধিকার কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনটি কি জাতীয় সংসদে আলোচনার সুযোগ আছে?
মিজানুর রহমান  আইন অনুযায়ী এটি রাষ্ট্রপতির কাছেই পেশ করার কথা। আমার পূর্ববর্তী বিচারপতি আমিরুল কবির চৌধুরী প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়ার পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলন করে দেশবাসীকেও জানিয়েছেন। বিষয়টি সংসদেও আলোচনা হতে পারে। আরেকটি কথা হলো, রাষ্ট্রপতির কাছে বছরে একবার প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। কিন্তু কমিশনের কাজ তো চলবে সারা বছরই। যদি দেখি, আমাদের সুপারিশগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আমলে নেয়নি, সেটিও প্রতিবেদনে যুক্ত করা হবে।
প্রথম আলো  অন্যান্য সাংবিধানিক সংস্থা যেমন—দুর্নীতি দমন কমিশন, তথ্য অধিকার কমিশনের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। সে ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের কোনো সংঘাত হলে কী করবেন?
মিজানুর রহমান  আমরা বিষয়টি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে চাই। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আমরা যেমন সরকারের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করি, তেমনি এর প্রতিকারও চাই তার কাছে। অতএব এখানে কমিশন ও সরকারের সম্পর্ক হতে হবে পরিপূরক। পারস্পরিক আস্থা থাকতে হবে। সরকারের লক্ষ্য নিশ্চয়ই মানবাধিকার নিশ্চিত করা, সে কথাটি যদি আমরা সরকারকে বোঝাতে পারি, তাহলে কোনো সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও আমরা এসব কথা বলেছি। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো হস্তক্ষেপ হবে না বলে তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। বর্তমানে যে আইনের মাধ্যমে মানবাধিকার কমিশন পরিচালিত হচ্ছে, সেই আইনে কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক আমলে প্রণীত অধ্যাদেশের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের আন্তরিকতাই প্রমাণিত হয়েছে।
প্রথম আলো  আইনমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রণালয়ের বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু সার্বিকভাবে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কী?
মিজানুর রহমান  সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক বলে মনে করি। না হলে কমিশনকে এত ক্ষমতা দিত না। কমিশন ভালো কাজ করলে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। আমার ধারণা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবেন। কেননা, তাঁর ওপরই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বড় ঘটনা ঘটেছে; সমগ্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জাতির জনকের কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই। তিনিও সারা জীবন কাজ করে গেছেন সাধারণ মানুষের কল্যাণে। অনেক সময় রাষ্ট্রযন্ত্র গরিব মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতো বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও সাধারণ মানুষকে অনেক কাছে টেনে নিয়ে এসেছেন। সাধারণ মানুষও তাঁর কাছে অনায়াসে যেতে পারে।
প্রথম আলো  এসব সত্ত্বেও আমাদের প্রশাসনিক কাঠামোর যে চরিত্র, তা মানবাধিকার রক্ষায় সহায়ক নয় বলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন। আপনার অভিমত?
মিজানুর রহমান  প্রথমেই আমরা যে কাজটি করছি তা হলো, রাষ্ট্রের যেসব প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি, তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা। আমরা পুলিশ বাহিনী, র্যাবের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আইনের ব্যাখ্যা ও প্রয়োগে যান্ত্রিক হলে চলবে না, মানবিক দৃষ্টি থাকতে হবে। বিশেষ করে যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছে, তারা একটু সজাগ থাকলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অনেক কমে যাবে।
প্রথম আলো  সম্প্রতি পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় মাঠপর্যায়ের সদস্যরা তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা তুলে ধরেছেন। এ ব্যাপারে কমিশনের কিছু করণীয় আছে কি?
মিজানুর রহমান  সেমিনারে পুলিশ কর্মকর্তারা যে বঞ্চনা ও বৈষম্যের অভিযোগ করেছেন, তা অসত্য নয়। মতিঝিল ও সবুজবাগ থানা পরিদর্শন করতে গিয়েও দেখেছি, পুলিশ সদস্যদের কী দুঃসহ পরিবেশে থাকতে হয়! তার পরও তাঁরা রাষ্ট্র ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত আছেন। দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করছেন। তাঁদের অবস্থার উন্নতিতে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সরকার দৃষ্টি দেবে আশা করি। আমরা যদি তাঁদের কাছ থেকে উন্নত সেবা আশা করি, তাহলে তাঁদেরও উন্নত জীবনের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
প্রথম আলো  মানবাধিকার রক্ষায় অনেক বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে। তাদের সঙ্গে কমিশনের কাজের সমন্বয় হতে পারে কি?
মিজানুর রহমান  মানবাধিকার রক্ষা কোনো একক সংগঠনের কাজ নয়। দেশে একটি মানবাধিকার সংস্কৃতি গড়ে তোলাই আমাদের সামনে প্রধান লক্ষ্য। এর মধ্যে থাকবে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহূদয়তা ও ভালোবাসা। খেয়াল রাখতে হবে, আমার কোনো কাজে যেন অন্য কারও মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমরা সবাইকে নিয়েই কাজ করতে চাই। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেসব ব্যক্তি মানবাধিকার নিয়ে কাজ করছেন, তাঁরা আমাদের দূত হবেন। স্থানীয়ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমাদের জানাবেন। তাঁদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেব। অর্থাৎ তাঁদের শক্তি ও সামর্থ্য ব্যবহার করে আমাদের কার্যক্রমকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।
প্রথম আলো  ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় অনেক আগেই এ ধরনের কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতা কীভাবে কাজে লাগাতে পারি?
মিজানুর রহমান  আমরা অবশ্যই তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চেষ্টা করব। আগামী ২০-২১ নভেম্বর ঢাকায় আমরা একটি আঞ্চলিক কর্মশালার আয়োজন করব। সেখানে সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা তো থাকবেনই; জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনকেও আমন্ত্রণ জানাব। আশা করি, তাদের সুচিন্তিত মতামত ও পরামর্শ আমাদের পথচলাকে সহজতর করবে।
প্রথম আলো  বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধে আপনি জোরালো বক্তব্য রেখেছেন। অন্যদিকে সমাজে এ সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। অনেকে এটিকেই আত্মরক্ষার উপায় বলে মনে করে।
মিজানুর রহমান  বিচারবহির্ভূত হত্যা কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। আপাতদৃষ্টিতে যেটিকে স্বস্তিদায়ক বলে মনে হচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে তা ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনতে পারে। আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। এ কারণেই বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ আলাদা করা হয়েছে। কেউ এর এখতিয়ারের বাইরে যেতে পারে না। অসীম ক্ষমতার অধিকারী মানুষকে অসীম দুর্নীতিগ্রস্ত করে। দু-একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে হত্যা করায় না-হয় অনেকে স্বস্তিবোধ করেন; কিন্তু এ কারণে অনেক নিরীহ মানুষও মারা পড়ে। অনেকে প্রভাব খাটিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হাত করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেও পিছপা হন না। এর বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলতেই হবে।
এ ক্ষেত্রে বিচারের প্রক্রিয়ায় যে দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে, তারও যুক্তিসংগত সমাধান হওয়া প্রয়োজন। ইতিমধ্যে আমরা প্রধান বিচারপতির সাক্ষাতের অনুমতি চেয়েছি। তিনি অনুমতি দিলে যে কথাটি বলতে চাইব তা হলো, তিনি যেন অধস্তন আদালতকে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। সরকার বিকল্প উপায়েও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছে। ভারতে এটি বেশ কার্যকর হয়েছে। আমরা যদি এ কাজগুলো করতে পারি, তাহলে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকে তারা বিকল্প উপায় হিসেবে নেবে না।
প্রথম আলো  মানবাধিকার রক্ষার প্রধান শর্ত আইনের শাসন। সেটি কি আমাদের দেশে কতটা কার্যকর আছে?
মিজানুর রহমান  আমরা যখন আইনের শাসনের কথা বলি, তখন সাধারণ ও দুর্বল শ্রেণীর মানুষকেই বোঝাই। তাদের আইন মেনে চলতে বলি। কিন্তু সমাজে যাঁরা সচ্ছল ও ক্ষমতাবান, তাঁদের যেন আইন মেনে চলতে হয় না! এ অবস্থার উত্তরণ না হলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। সরকারের দায়িত্ব হলো আইনকে নিজস্ব গতিতে চলতে দেওয়া। আবার বিরোধী দলকেও সচেতন থাকতে হবে, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে গিয়ে যেন অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন না করে। এখানে মানবাধিকারের শিক্ষাটি অত্যন্ত জরুরি। আশা করব, প্রাথমিক থেকে স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত পাঠ্যসূচিতেও মানবাধিকারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। শিক্ষার্থী থেকে সাধারণ নাগরিকেরা যখন এ বিষয়ে অবহিত হবেন, তখন তাঁরা অন্যের মানবাধিকার রক্ষায়ও আগ্রহী হবেন।
প্রথম আলো  সম্প্রতি বিএনপির একজন স্থানীয় নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিখোঁজ হয়েছেন। দলের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন তাঁকে ধরে নিয়ে গেছে। আপনারা বিষয়টি আমলে নেবেন কি না।
মিজানুর রহমান  আমরা অবশ্যই আমলে নিতাম, যদি বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন না থাকত। আইনে স্পষ্ট বলা আছে, বিচারাধীন বিষয়ে মানবাধিকার কমিশন তদন্ত করতে পারবে না।
প্রথম আলো  মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আপনার স্পষ্ট বক্তব্য বিভিন্ন মহলে আলোচিত। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাপ এসেছে কি?
মিজানুর রহমান  এখন পর্যন্ত কমিশন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আমি যেসব কথাবার্তা বলেছি, এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের কাছ থেকে কোনো চাপ আসেনি। আমার ধারণা, সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই চান মানবাধিকার কমিশন শক্তিশালী হোক, স্বাধীনভাবে কাজ করুক। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দায়বদ্ধতা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি, মানবাধিকারের প্রতি; অন্য কারও প্রতি নয়।
প্রথম আলো  মানবাধিকার কমিশন যেহেতু মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে, একাত্তরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে বিচার-প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তাদের সহায়তায় আপনারা কিছু করার কথা ভাবছেন কি? যখন এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশে প্রচারণা চলছে।
মিজানুর রহমান  বিচারাধীন বিষয়ে আমরা নাগ গলাব না। তবে একাত্তরে যে জঘন্যতম অপরাধ এ দেশে সংঘটিত হয়েছে, তার বিচারে যেকোনো সহযোগিতা দিতে আমরা প্রস্তুত। ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এই বিচারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তাও আমরা জানি। এর জবাব অবশ্যই দিতে হবে। আমরা সেসব দেশের মানবাধিকার কমিশনকে জানাব, এই প্রচারণা উদ্দেশ্যমূলক। আন্তর্জাতিক আইন মেনেই যুদ্ধাপরাধের বিচার হচ্ছে।
প্রথম আলো  আপনাকে ধন্যবাদ।
মিজানুর রহমান  ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.