সিলেটে শিশু হত্যা-এ কেমন নিষ্ঠুরতা?
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পুরনো তেতলীর বাসিন্দা আবদুুল হকের চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ূয়া শিশুসন্তানকে অপহরণ করে ছয় তরুণ মিলে অর্থ-লোভ ও পূর্বশত্রুতার জেরে হত্যা করার খবরটি আমাদের তরুণ সমাজের মধ্যে স্বার্থান্ধতার ক্ষতিকারক ঘুণে ধরার আলামতকে নির্দেশ করে।
গত মঙ্গলবার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত রিপোর্টে ঘটনাটির যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে, তা সত্যিই হৃদয়বিদারক ও হতবিহ্বলকর। গত ১৪ আগস্ট বাবার সঙ্গে শিশু মোজাম্মেল হক নাঈম মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে গিয়ে অপহৃত হয়েছিল। অপহরণকারীরা নাঈমের বাবার সদ্য জমি বিক্রয়লব্ধ ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল বলেই ধারণা করা হয়। একই সঙ্গে পূর্বশত্রুতার জের মেটানোও উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কারণ যাই হোক শিশুটিকে অপহরণের পরপরই হত্যা করা হয়। শিশুর নিষ্পাপ মুখাবয়ব দেখেও ওই ঘাতকদের মন নরম হয়নি। অর্থ-লোভ ও পূর্বশত্রুতাজাত ক্রোধে তারা উন্মত্ত হয়ে এক একজন সীমারে পরিণত হয়েছিল। শিশু নাঈমের অপহরণকারী ও ঘাতক সবাই ছিল স্থানীয় বাসিন্দা। এদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করাও গিয়েছিল। স্থানীয় পুলিশ ও র্যাব অপরাধী চক্রের হোতাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। কিন্তু স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যানের অনুরোধে দু'বারই আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়ার ফলে অপরাধী চক্রের নৃশংসতা এতদিন বেআব্রু হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় জনতা অপরাধী দলের হোতাদের বেধড়ক মার দিয়ে শিশু হত্যার আসল কাহিনী জানতে পারে। প্রশ্ন হলো, একটি অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করা যেখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বড় দায়িত্ব, সেখানে তারা একজন ক্ষমতাশালী সাবেক চেয়ারম্যানের কথায় সন্দেহভাজন অপরাধীদের ধরেও ছেড়ে দিল কেন? এর সঙ্গে কি উৎকোচ ও রাজনৈতিক ক্ষমতার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই? এ রহস্য অবশ্যই উদ্ঘাটন করতে হবে এবং এ জন্য শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।
শিশু নাঈমকে ছয় তরুণ-যুবক মিলে অপহরণ ও হত্যা করার ঘটনাটি অসুস্থ মানসিকতার পরিচায়ক। অর্থ-লোভ হোক আর পূর্বশত্রুতার জেরেই হোক, এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে মেনে নেওয়া যায় না। অপরাধীদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধান করতে হবে।
শিশু নাঈমকে ছয় তরুণ-যুবক মিলে অপহরণ ও হত্যা করার ঘটনাটি অসুস্থ মানসিকতার পরিচায়ক। অর্থ-লোভ হোক আর পূর্বশত্রুতার জেরেই হোক, এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে মেনে নেওয়া যায় না। অপরাধীদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধান করতে হবে।
No comments