বিশ্বমন্দায় বিপর্যস্ত পাট, রফতানিতে ধস
চলমান বিশ্বমন্দার ঢেউ আঘাত হেনেছে দেশের পাট শিল্পে। এরইমধ্যে আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে পাট রফতানি। রফতানিকারকদের গুদামে আটকে আছে কোটি কোটি ডলারের লাখ লাখ টন কাঁচা পাট। শিগগিরই জরুরি ব্যবস্থা না নিলে ধস নামবে এ খাতে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাব মতে, এ বছরের অক্টোবর মাসে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৫৭ হাজার ডলার ও ৯ লাখ ৬৮ হাজার ইউরো মূল্যের পাট ও পাটজাত দ্রব্য রফতানি হয়।
এ পণ্যের প্রধান রফতানি বাজার ছিল ১৪টি দেশ। গত নভেম্বর মাসে ১ কোটি ৪০ লাখ ৭৫ হাজার ডলার ও ৭৩ হাজার ইউরো মূল্য পাট রফতানি হয়। অক্টোবরের তুলনায় এ অঙক ২২ লাখ ৮২ হাজার ডলার ও ৮ লাখ ৯৫ হাজার ইউরো কম।
যে সব দেশে গত ২ মাসে কাঁচা পাট রফতানি হয়েছে সেগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, চীন, বেলজিয়াম, জাপান, গ্রিস, চেক রিপাবলিক, স্পেন, রাশিয়া, তুরস্ক, ইতালি, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস ও বুলগিরিয়া।
পাট ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য মতে কেবল খুলনার দৌলতপুরের বিভিন্ন পাট গুদামেই ২ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন কাঁচা পাট অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। অবিক্রিত এ পাটের মূল্য কমপক্ষে ১৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলার।
বিশ্ববাজারে পাটের মূল্য কমে যাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লোকসান এড়াতেই পাট রফতানি না করে এ বিপুল পরিমান পাট মজুত করেছে।
তাদের মতে, বিশ্বমন্দায় কেবল কাঁচা পাটই নয়, পাটজাত পণ্যও রফতানি কমে গেছে। কমে গেছে এসব পণ্যের চাহিদাও। ফলে দেশের মিলগুলোতেও পাটের চাহিদা কমে গেছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা পাটের নতুন বাজার অনুসন্ধান, ব্যাংকের সুদের হার কমানো ও রফতানিকারকদের ভর্তুকি দেওয়াসহ নানা পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।
একইসঙ্গে পাটের বাজার চাঙ্গা ও পাট শিল্পকে বাঁচাতে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়শনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৪ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়শনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেট্রিক টন কাঁচা পাটের দাম ছিল ৬৮৮ ডলার। নভেম্বর মাসে প্রতি টন কাঁচা পাট ৫৯৯ ডলার মূল্যে বিক্রি হয়। অল্প সময়ের ব্যবধানে পাটের এ দরপতনে রফতানিকারকদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
উল্লেখ্য, চলতি পাট মৌসুমের শুরুতে খুলনার দৌলতপুর মোকামে প্রতি মণ কাঁচা পাটের দাম ছিল ২ হাজার টাকা। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে এর দাম দাঁড়ায় ৯শ’ টাকা মন। ফলে পুজিঁ হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জুট অ্যাসোসিয়শনের সদস্য, জুয়েল জুট মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পাট ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় পাট মোকাম দৌলতপুরের রফতানিকারকদের কাছে বর্তমানে ২ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন কাঁচা পাট মজুদ রয়েছে। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী এর দাম ১৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলার।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ফড়িয়া ও কৃষকদের কাছেও বিপুল পরিমান পাট রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়টি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, পরিস্থিতি সামলানো না গেলে আসছে গ্রীষ্ম মৌসুমে হয়তো নতুন করে আর পাট চাষের প্রয়োজন হবে না।’
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার প্রতিবেশী দেশকে খুশি করতেই আন্তর্জাতিক বাজার হারিয়েছে। পাটের বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে, বাজার ধরে রাখতে পারেনি।’
বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়শনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী বলেন, ‘সুদানে আমাদের পাটের মার্কেট হারিয়েছি। পাট শিল্পকে বাচাঁতে নতুন বাজার খুঁজতে হবে।’
পাট শিল্পে এ অব্যবস্থাপনা ও চাষীদের অনীহার জন্য তিনি পাটনীতি না থাকাকেই দায়ী করেন।
তিনি বলেন, ‘২ বছর ধরে কাঁচা পাট রফতানিতে ধস নেমেছে। এ পরিস্থিতিতে পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করে ব্যাংকের সুদের হার কমাতে হবে এবং রপ্তানিকারকদের ভর্তুকি দিতে হবে।’
এ দিকে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়শনের পক্ষ থেকে এ শিল্পকে বাঁচাতে এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষতি এড়াতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ৪ দফা সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
সুপারিশগুলো হলো— পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে দেখানো হলেও অর্থ ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে সে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাই কৃষি ভিত্তিক পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে কাঁচা পাট ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকদের সরকার প্রদত্ত রফতানি বাণিজ্য সুবিধা প্রদান।
কাঁচা পাট রফতানিখাত পুনরুদ্ধার ও গতিশীল করার জন্য গত ১০ বছরের আরোপিত সুদ একটি সুদবিহীন আবদ্ধ হিসাবে (ব্লকড অ্যাকাউন্ট) স্থানান্তর করে আগামী ১০ বছরে পরিশোধ করার সুযোগ প্রদান।
৮৪-৮৫ সালে সরকার কর্তৃক পাট রফতানি বন্ধ হওয়ার পর ৭২ জন ক্ষতিগ্রস্থ পাট ব্যবসায়ীর ব্যাংকের সুদ মওকুফ, উচ্চ হারে সুদ আদায়ের ফলে কাঁচা পাট রফতানিখাত বর্তমানের নাজুক অবস্থায় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে উৎসাহিত করার জন্য পাট ব্যবসায়ীদের ঋণের সুদের হার ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা।
যে সব দেশে গত ২ মাসে কাঁচা পাট রফতানি হয়েছে সেগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, চীন, বেলজিয়াম, জাপান, গ্রিস, চেক রিপাবলিক, স্পেন, রাশিয়া, তুরস্ক, ইতালি, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস ও বুলগিরিয়া।
পাট ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য মতে কেবল খুলনার দৌলতপুরের বিভিন্ন পাট গুদামেই ২ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন কাঁচা পাট অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। অবিক্রিত এ পাটের মূল্য কমপক্ষে ১৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলার।
বিশ্ববাজারে পাটের মূল্য কমে যাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লোকসান এড়াতেই পাট রফতানি না করে এ বিপুল পরিমান পাট মজুত করেছে।
তাদের মতে, বিশ্বমন্দায় কেবল কাঁচা পাটই নয়, পাটজাত পণ্যও রফতানি কমে গেছে। কমে গেছে এসব পণ্যের চাহিদাও। ফলে দেশের মিলগুলোতেও পাটের চাহিদা কমে গেছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা পাটের নতুন বাজার অনুসন্ধান, ব্যাংকের সুদের হার কমানো ও রফতানিকারকদের ভর্তুকি দেওয়াসহ নানা পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।
একইসঙ্গে পাটের বাজার চাঙ্গা ও পাট শিল্পকে বাঁচাতে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়শনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৪ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়শনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মেট্রিক টন কাঁচা পাটের দাম ছিল ৬৮৮ ডলার। নভেম্বর মাসে প্রতি টন কাঁচা পাট ৫৯৯ ডলার মূল্যে বিক্রি হয়। অল্প সময়ের ব্যবধানে পাটের এ দরপতনে রফতানিকারকদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
উল্লেখ্য, চলতি পাট মৌসুমের শুরুতে খুলনার দৌলতপুর মোকামে প্রতি মণ কাঁচা পাটের দাম ছিল ২ হাজার টাকা। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে এর দাম দাঁড়ায় ৯শ’ টাকা মন। ফলে পুজিঁ হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জুট অ্যাসোসিয়শনের সদস্য, জুয়েল জুট মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পাট ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় পাট মোকাম দৌলতপুরের রফতানিকারকদের কাছে বর্তমানে ২ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন কাঁচা পাট মজুদ রয়েছে। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী এর দাম ১৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলার।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ফড়িয়া ও কৃষকদের কাছেও বিপুল পরিমান পাট রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়টি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, পরিস্থিতি সামলানো না গেলে আসছে গ্রীষ্ম মৌসুমে হয়তো নতুন করে আর পাট চাষের প্রয়োজন হবে না।’
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার প্রতিবেশী দেশকে খুশি করতেই আন্তর্জাতিক বাজার হারিয়েছে। পাটের বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে, বাজার ধরে রাখতে পারেনি।’
বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়শনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী বলেন, ‘সুদানে আমাদের পাটের মার্কেট হারিয়েছি। পাট শিল্পকে বাচাঁতে নতুন বাজার খুঁজতে হবে।’
পাট শিল্পে এ অব্যবস্থাপনা ও চাষীদের অনীহার জন্য তিনি পাটনীতি না থাকাকেই দায়ী করেন।
তিনি বলেন, ‘২ বছর ধরে কাঁচা পাট রফতানিতে ধস নেমেছে। এ পরিস্থিতিতে পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করে ব্যাংকের সুদের হার কমাতে হবে এবং রপ্তানিকারকদের ভর্তুকি দিতে হবে।’
এ দিকে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়শনের পক্ষ থেকে এ শিল্পকে বাঁচাতে এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষতি এড়াতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ৪ দফা সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
সুপারিশগুলো হলো— পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে দেখানো হলেও অর্থ ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে সে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাই কৃষি ভিত্তিক পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে কাঁচা পাট ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকদের সরকার প্রদত্ত রফতানি বাণিজ্য সুবিধা প্রদান।
কাঁচা পাট রফতানিখাত পুনরুদ্ধার ও গতিশীল করার জন্য গত ১০ বছরের আরোপিত সুদ একটি সুদবিহীন আবদ্ধ হিসাবে (ব্লকড অ্যাকাউন্ট) স্থানান্তর করে আগামী ১০ বছরে পরিশোধ করার সুযোগ প্রদান।
৮৪-৮৫ সালে সরকার কর্তৃক পাট রফতানি বন্ধ হওয়ার পর ৭২ জন ক্ষতিগ্রস্থ পাট ব্যবসায়ীর ব্যাংকের সুদ মওকুফ, উচ্চ হারে সুদ আদায়ের ফলে কাঁচা পাট রফতানিখাত বর্তমানের নাজুক অবস্থায় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে উৎসাহিত করার জন্য পাট ব্যবসায়ীদের ঋণের সুদের হার ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা।
No comments