শততম ম্যাচেও সেই মুশফিককেই চাওয়া
নেতৃত্বের অভিষেককে রাঙিয়েছিলেন জয় দিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচে একপর্যায়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়া জয়টা নিশ্চিত হয়েছিল মুশফিকুর রহিমের ব্যাটিং ঝলকেই। ২৬ বলে অপরাজিত ৪১ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংসের জন্য ম্যাচসেরার পুরস্কারও নিয়ে এসে বলেছিলেন, 'এর চেয়ে স্মরণীয় বোধহয় আর কিছু হতে পারত না।' স্মরণীয় করে রাখার মতো এ রকমই আরেকটি উপলক্ষ বাংলাদেশ অধিনায়কের সামনে। বাংলাদেশের নবম ক্রিকেটার হিসেবে আজ যে ক্যারিয়ারের শততম ওয়ানডে খেলতে নামছেন তিনি। ম্যাচটা এখন বাংলাদেশের জন্য সিরিজে টিকে থাকার কঠিন পরীক্ষাও।
এ পরীক্ষার আগে ইতিহাস আর পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, শততম ম্যাচকে নিজ নৈপুণ্যে ভাস্বর করে তুলেও জয়মাল্য গলায় পরতে না পারার সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনাটা মাশরাফি বিন মর্তুজার। ২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারি, যেদিন প্রথমবারের মতো কোনো ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের চৌকাঠ থেকে ফিরতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। ফিরিয়েছিল আসলে 'স্পিন জাদুকর' মুত্তিয়া মুরালিধরনের ব্যাটিং-জাদু! মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফাইনালে টস হেরে ব্যাটিং পাওয়া বাংলাদেশ গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ১৫২ রানেই। এই মামুলি রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কা এক পর্যায়ে ৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলায় এক প্রান্ত থেকে মাশরাফির আঁটসাঁট বোলিংয়ের ভূমিকা আজও ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতিতে যত্নে লালিত হচ্ছে। এটা বোঝাতে তাঁর বোলিং বিশ্লেষণ তুলে দেওয়াই যথেষ্ট : ১০-১-১৮-১! ১১৪ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর চার বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায় মুরালির ১৬ বলে অপরাজিত ৩৩ রানের ইনিংস 'পেতে পেতেও না পাওয়া'র যন্ত্রণায় পোড়ায় বাংলাদেশকে। একটু বেশিই বোধহয় পুড়িয়েছিল মাশরাফিকে। শততম ওয়ানডেতে অর্জনের এমন সুউচ্চ বেদিতে ওঠার সুযোগ তো আর কোনো বাংলাদেশির সামনেই কুড়িয়ে নেওয়ার অপেক্ষায় ছিল না।
শততম ম্যাচে জয়ের স্বাদ অবশ্য তিনজন পেয়েছেন। টেস্টে এক শ উইকেট নেওয়া একমাত্র বাংলাদেশি বোলার মোহাম্মদ রফিক তাঁদের একজন। ২০০৬ সালের আগস্টে নাইরোবির জিমখানা মাঠে কেনিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ৬ উইকেটের জয়ে অবিশ্বাস্য কিছু করেননি এ বাঁহাতি স্পিনার। তবে স্পিনার হিসেবে মিতব্যয়ী ছিলেন ঠিকই, ৬-০-১৬-১। সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারও তাঁর শততম ম্যাচে জিতেছেন, তবে সেটি ছিল ২০০৭ বিশ্বকাপের আগে অ্যান্টিগার সেন্ট জন্সে প্রস্তুতিমূলক আসরে কানাডার বিপক্ষে। সাকিব আল হাসানের (১৩৪*) সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ ২৭৮ রান করার পরও বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল বলে জয় মাত্র ১৩ রানের। সেই ম্যাচে হাবিবুলের ৭৫ বলে ৫৭ রানের ইনিংস এখনো শততম ম্যাচে কোনো বাংলাদেশির সেরা ব্যাটিং পারফরম্যান্স হয়ে আছে।
বাংলাদেশের হয়ে নিজের শততম ওয়ানডেতে সেরা বোলিং সাকিব আল হাসানের। গত ডিসেম্বরে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ১৯১ রানে গুটিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ জিতেছিল ৬ উইকেটে। ৩০ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাক, তবে আরেক বাঁহাতি স্পিনার সাকিবও কম যানটি, ৯-০-৩৯-৪! রফিক-সাকিব-হাবিবুল বাদে বাংলাদেশের হয়ে এক শ'র বেশি ওয়ানডে খেলা অন্য পাঁচজনই তাঁদের শততম ম্যাচ ডুবেছেন হারের লজ্জায়। সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা মোহাম্মদ আশরাফুল (১৭০) যেমন ২০০৭ সালের ১০ মে মিরপুরেই তাঁর শততম ম্যাচ খেলেছিলেন ভারতের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ২২ বলে করেছিলেন ২৯ রান। ২০০৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম শততম ম্যাচ খেলেছিলেন খালেদ মাসুদ। সাবেক এই অধিনায়ক কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ৮২ বলে অপরাজিত ৩৯ রান করে দলের হারের ব্যবধান কিছুটা কমিয়েছিলেন।
বোলারদের মধ্যে শততম ম্যাচে সবচেয়ে মন খারাপ করা বোলিং আবদুর রাজ্জাকের। গত বছরের জুলাইতে এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে। ব্রিস্টলে ঠিক আগের ম্যাচেই ৫ রানে জিতে সিরিজে ১-১-এর সমতা নিয়ে সেই ম্যাচে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আগে ব্যাট করা ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে ৩৪৭ রান তুলে প্রথমার্ধেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছিল। ৯ ওভার বল করে সেদিন ৬৩ রান দিয়েছিলেন রাজ্জাক। আর বাংলাদেশের অষ্টম ক্রিকেটার হিসেবে তামিম ইকবাল গত আগস্টে নিজের শততম ম্যাচটি খেলেছেন জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ৭ উইকেটের হার এবং ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শততম ম্যাচে সবচেয়ে হতাশ করা পারফরম্যান্স তামিমের। ৬ বল খেলে করেছিলেন মাত্র ৩ রান!
নেতৃত্বের অভিষেকে উজ্জ্বল মুশফিক আজ তাঁর শততম ওয়ানডেতেও জ্বলে উঠুন এটা এ দেশে কে চায় না বলুন!
তাঁর আগে যাঁরা
* খালেদ মাসুদ
অভিজ্ঞতা ১২৬ ম্যাচের। তিনিই শততম ওয়ানডে খেলা প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার। ২০০৫ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
* মোহাম্মদ রফিক
১২৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে শততম ম্যাচটি খেলেছেন কেনিয়ার বিপক্ষে, ২০০৬ সালে। সেই ম্যাচে ৬ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট।
* হাবিবুল বাশার
১১১ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে ২০০৭ সালে খেলা শততম ম্যাচে করেন ৫৭ রান। এটিই বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের শততম ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
* মোহাম্মদ আশরাফুল
দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০ ম্যাচ খেলেছেন। ২০০৭ সালে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে নিজের শততম ম্যাচে করেছিলেন ২৯ রান।
* মাশরাফি বিন মর্তুজা
এ পর্যন্ত ওয়ানডে খেলেছেন ১১৮টি। ভারতের বিপক্ষে দুই বছর আগে মাইলফলকের ম্যাচে ১০ ওভারে ১৮ রানে নিয়েছিলেন ১ উইকেট।
* আবদুর রাজ্জাক
এ পর্যন্ত খেলেছেন ১২৫ ম্যাচ। গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শততম ম্যাচে ৯ ওভারে ৬৩ রান দিয়েও ছিলেন উইকেটহীন।
* সাকিব আল হাসান
১১৭ ম্যাচের ক্যারিয়ারের শততম ম্যাচে গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ৯ রান করার পাশাপাশি ৩৯ রানে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
* তামিম ইকবাল
সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরে ৩ রানেই শেষ হয় তাঁর শততম ম্যাচটি।
শততম ম্যাচে জয়ের স্বাদ অবশ্য তিনজন পেয়েছেন। টেস্টে এক শ উইকেট নেওয়া একমাত্র বাংলাদেশি বোলার মোহাম্মদ রফিক তাঁদের একজন। ২০০৬ সালের আগস্টে নাইরোবির জিমখানা মাঠে কেনিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ৬ উইকেটের জয়ে অবিশ্বাস্য কিছু করেননি এ বাঁহাতি স্পিনার। তবে স্পিনার হিসেবে মিতব্যয়ী ছিলেন ঠিকই, ৬-০-১৬-১। সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারও তাঁর শততম ম্যাচে জিতেছেন, তবে সেটি ছিল ২০০৭ বিশ্বকাপের আগে অ্যান্টিগার সেন্ট জন্সে প্রস্তুতিমূলক আসরে কানাডার বিপক্ষে। সাকিব আল হাসানের (১৩৪*) সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ ২৭৮ রান করার পরও বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল বলে জয় মাত্র ১৩ রানের। সেই ম্যাচে হাবিবুলের ৭৫ বলে ৫৭ রানের ইনিংস এখনো শততম ম্যাচে কোনো বাংলাদেশির সেরা ব্যাটিং পারফরম্যান্স হয়ে আছে।
বাংলাদেশের হয়ে নিজের শততম ওয়ানডেতে সেরা বোলিং সাকিব আল হাসানের। গত ডিসেম্বরে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ১৯১ রানে গুটিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ জিতেছিল ৬ উইকেটে। ৩০ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন আবদুর রাজ্জাক, তবে আরেক বাঁহাতি স্পিনার সাকিবও কম যানটি, ৯-০-৩৯-৪! রফিক-সাকিব-হাবিবুল বাদে বাংলাদেশের হয়ে এক শ'র বেশি ওয়ানডে খেলা অন্য পাঁচজনই তাঁদের শততম ম্যাচ ডুবেছেন হারের লজ্জায়। সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা মোহাম্মদ আশরাফুল (১৭০) যেমন ২০০৭ সালের ১০ মে মিরপুরেই তাঁর শততম ম্যাচ খেলেছিলেন ভারতের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ২২ বলে করেছিলেন ২৯ রান। ২০০৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম শততম ম্যাচ খেলেছিলেন খালেদ মাসুদ। সাবেক এই অধিনায়ক কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ৮২ বলে অপরাজিত ৩৯ রান করে দলের হারের ব্যবধান কিছুটা কমিয়েছিলেন।
বোলারদের মধ্যে শততম ম্যাচে সবচেয়ে মন খারাপ করা বোলিং আবদুর রাজ্জাকের। গত বছরের জুলাইতে এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে। ব্রিস্টলে ঠিক আগের ম্যাচেই ৫ রানে জিতে সিরিজে ১-১-এর সমতা নিয়ে সেই ম্যাচে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আগে ব্যাট করা ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে ৩৪৭ রান তুলে প্রথমার্ধেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছিল। ৯ ওভার বল করে সেদিন ৬৩ রান দিয়েছিলেন রাজ্জাক। আর বাংলাদেশের অষ্টম ক্রিকেটার হিসেবে তামিম ইকবাল গত আগস্টে নিজের শততম ম্যাচটি খেলেছেন জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ৭ উইকেটের হার এবং ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শততম ম্যাচে সবচেয়ে হতাশ করা পারফরম্যান্স তামিমের। ৬ বল খেলে করেছিলেন মাত্র ৩ রান!
নেতৃত্বের অভিষেকে উজ্জ্বল মুশফিক আজ তাঁর শততম ওয়ানডেতেও জ্বলে উঠুন এটা এ দেশে কে চায় না বলুন!
তাঁর আগে যাঁরা
* খালেদ মাসুদ
অভিজ্ঞতা ১২৬ ম্যাচের। তিনিই শততম ওয়ানডে খেলা প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার। ২০০৫ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
* মোহাম্মদ রফিক
১২৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে শততম ম্যাচটি খেলেছেন কেনিয়ার বিপক্ষে, ২০০৬ সালে। সেই ম্যাচে ৬ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট।
* হাবিবুল বাশার
১১১ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে ২০০৭ সালে খেলা শততম ম্যাচে করেন ৫৭ রান। এটিই বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের শততম ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
* মোহাম্মদ আশরাফুল
দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০ ম্যাচ খেলেছেন। ২০০৭ সালে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে নিজের শততম ম্যাচে করেছিলেন ২৯ রান।
* মাশরাফি বিন মর্তুজা
এ পর্যন্ত ওয়ানডে খেলেছেন ১১৮টি। ভারতের বিপক্ষে দুই বছর আগে মাইলফলকের ম্যাচে ১০ ওভারে ১৮ রানে নিয়েছিলেন ১ উইকেট।
* আবদুর রাজ্জাক
এ পর্যন্ত খেলেছেন ১২৫ ম্যাচ। গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শততম ম্যাচে ৯ ওভারে ৬৩ রান দিয়েও ছিলেন উইকেটহীন।
* সাকিব আল হাসান
১১৭ ম্যাচের ক্যারিয়ারের শততম ম্যাচে গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ৯ রান করার পাশাপাশি ৩৯ রানে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
* তামিম ইকবাল
সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরে ৩ রানেই শেষ হয় তাঁর শততম ম্যাচটি।
No comments