সেই ব্যাটসম্যানদের দিকেই নজর সবার
প্রচণ্ড গরমে পুরো ৫০ ওভার ফিল্ডিংয়ের পর ব্যাটিং করে ম্যাচ শেষ হতে হতে রাত ৯টা। এরপর টিম মিটিং সেরে হোটেলে পেঁৗছতে পেঁৗছতে ঘড়ির কাঁটা ১১টা ছুঁই ছুঁই। ক্লান্তি আর অবসাদে বিছানায় শরীর নেতিয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। ক্রিকেটের সবচেয়ে নিষ্ঠুর ফিজিও-ও চাইবেন সে ক্লান্তি দূর করতে খেলোয়াড়রা যেন বাড়তি বিশ্রাম নেন। যেখানে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও একই রুটিন মেনে চলার দায়বদ্ধতা আছে। তবু সে ক্লান্তি ভুলে অনুশীলনে উপস্থিত তামিম ইকবাল। কোচের নজরের ওপর বোলিং মেশিনে ক্রমাগত একই 'ড্রিল' করে গেলেন বাঁহাতি এ ওপেনার।
বোলিং মেশিন আধুনিক ক্রিকেটের কোচিং ম্যানুয়েলে অত্যাবশ্যকীয়। যদিও এ যন্ত্রের প্রসঙ্গে ক্রিকেটের পুরনো ছাত্রদের কারো কারো নাক কুঁচকে ওঠে। তাঁদের কাছে নেট প্র্যাকটিসের গুরুত্বই কম। সেখানে একই ধরনের বল 'সেট' করে বোলিং মেশিনে প্র্যাকটিসটা রীতিমতো হাস্যকর কিংবা স্রেফ বুজরুকি। তবে জনমত জরিপে, বিশেষ করে ব্যাটসম্যানের নির্দিষ্ট কোনো দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য বোলিং মেশিন ক্রিকেটীয় প্রযুক্তির অনন্য আবিষ্কার। তামিম যেমন গতকাল মিরপুরের ইনডোরে থ্রি কোয়ার্টার লেন্থ থেকে লাফিয়ে ওঠা বল খেললেন, সেটি কি আর কোনো বোলারকে ধরে এনে নেটে করাতে পারতেন?
হঠাৎ ঘরের মাঠে এমন 'ড্রিল' শুরু করলেন কেন তামিম? ওপেনারদের ফাস্ট বোলিং খেলা জানতে হয়। সেটি ভালোই জানেন তামিম। লর্ডস ঘুরে ম্যানচেস্টারে তো আর এমনি এমনি সেঞ্চুরি করেননি তিনি। তবু সে তুলনায় দেশের ধীরগতির উইকেটে ম্যাচের আগে শর্ট অব লেন্থ বল খেলার প্রস্তুতি নতুন করে নিতে হচ্ছে তামিমকে। আসলে বাধ্য করেছেন রবি রামপাল আর কেমার রোচরা। বলের লাফিয়ে ওঠাটা তামিমের জন্য সমস্যার নয়। তবে লাফিয়ে ওঠা বল ব্যাটের কাছে কখন আসবে কিংবা পেরিয়ে যাবে, উইকেটের চরিত্রের কারণে তা সংশয়াচ্ছন্নই থেকে যাচ্ছে। যে কারণে লাফিয়ে ওঠা বলে পুল-হুক করার লোভ সামলাতে হচ্ছে। লোভের ফাঁদে পা দিয়ে প্রথম ওয়ানডেতে মোহাম্মদ আশরাফুল এবং অলক কাপালির পরিণতি তো সবাই-ই দেখেছেন। আগে খেলে ফেলায় আশরাফুলের গ্লাভস ছুঁয়ে বল উইকেটকিপারের কাছে ক্যাচ যায়। আর অসময়ে ব্যাটে-বলে হওয়ায় অলক আউট হন আকাশে ক্যাচ তুলে।
তাই কোমরের ওপরে ওঠা বল নিচে খেলার অনুশীলনই গতকাল করেছেন তামিম ইকবাল। প্রতিপক্ষের যে দুর্বলতার কথা মনে করিয়ে দিতে গিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগের দিন দাঁত বের করে হেসেছিলেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার কিয়েরন পোলার্ড, 'আমরা জানি কোমরের ওপর বল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা খেলতে পারে না'। টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচের শেষ বলটা করার সময় বহুল আলোচিত এ দুর্বলতার কথা কি ভুলে গিয়েছিলেন রবি রামপাল? নাকি যদি পুলটা মুশফিক ঠিক সময়ে খেলে দেন_এ আশঙ্কায় ইয়র্কার দিতে গিয়ে এক্কেবারে হিটিং জোনে ফেলেছিলেন ক্যারিবীয় এ পেসার? এ প্রশ্নের উত্তর ম্যাচ শেষের টিম মিটিংয়ে হয়তো দিয়েছেনও রামপাল। তা যে ভুল ছিল, সেটি ধরিয়ে দেওয়ার যথেষ্ট যোগ্যতা আছে ক্যারিবীয় দলের কোচ ওটিস গিবসনের। খেলোয়াড়ি জীবনে যে ফাস্ট বোলার ছিলেন তিনি!
কোচের হাতে-কলমে শিক্ষা নিয়ে প্রথম ওয়ানডেতে আরো বিস্তৃত পোলার্ডের হাসি! ওয়ানডেতে বাউন্সারের কড়াকড়ি আছে। কিন্তু কোমর আর পাঁজরের মাঝামাঝি উচ্চতার বোলিংয়ে কোনো বিধি-নিষেধ নেই। গতির আতঙ্ক ছড়াতে গিয়ে রোচ প্রায়ই বেসামাল হলেও রামপাল এবং আন্দ্রে রাসেল এ অস্ত্রের ব্যবহার করেন নিপুণতার সঙ্গে। তবে বোলারদের 'স্বাধীনতা' তো এনে দিয়েছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা। ড্রেসিংরুমে বসে দেখা শাহরিয়ার নাফীস বদলে যাওয়া ক্যারিবীয় ব্যাটিংয়ের প্রশংসায় গতকাল বলেছেন, 'এটা ঠিক যে ওদের অ্যাপ্লিকেশনটা ভালো হয়েছে।'
এ 'অ্যাপ্লিকেশন'টা বাংলায় প্রয়োগ ক্ষমতা। যা অভিধানে আছে কিন্তু বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের মাঝে সেটির অভাব প্রায়ই প্রকট হয়ে ওঠে। বৃহস্পতিবারের সেঞ্চুরিয়ান লেন্ডল সিমন্স কখনোই তামিমের চেয়ে ভালো ব্যাটসম্যান নন। কিন্তু প্রয়োগ ক্ষমতার জোরে ওই ক্যারিবীয় স্পিনারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি উদ্যাপনের দিনে স্ট্রাইক রেটের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হন তামিম। নতুন অধিনায়কের কণ্ঠেও ম্যাচশেষে শুনতে হয় বহু পুরনো অনুযোগ, 'কেউ সেট হয়ে গেলে তার বড় ইনিংস খেলা উচিত।' শুরুর অপচয় করা বলগুলো পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় নেমেই আউট হয়ে যান নাঈম ইসলাম। প্রয়োগ ক্ষমতার অভাবে তো রীতিমতো 'হতদরিদ্র' মোহাম্মদ আশরাফুল! উইকেট একটু মুখ ফিরিয়ে নিলে সাফল্যের মূল মন্ত্র ভুলে যান স্পিনাররা। কিংকর্তব্যবিমূঢ়তার ছাপ আছে দলের থিঙ্ক ট্যাংকেও। নইলে ২৯৯ রান তাড়া করার জন্য তামিমের বিকল্প সঙ্গী হিসেবে আশরাফুলকে ছেড়ে নাঈমকে পাঠানো কেন?
ছোট ছোট এমন অনেক ভুলের কারণে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান অবশ্য বৃহস্পতিবারের ম্যাচ থেকে খুঁজে বের করেছেন শাহরিয়ার নাফীস। হারলেও সে ম্যাচে ২৫৮ রান করেছে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের এ রান পাওয়াটা বিসিবি কাপ থেকে 'জারি' আছে। তার মানে তামিম-সাকিবদের সঙ্গী ব্যাটসম্যানদের মনেও আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই। শুধু ঠিকঠাকভাবে কোমরের ওপরের বলগুলো সামলাতে পারলে হয়! নিশ্চিত করে বলা যায়, আজও ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলারদের অভিন্ন 'টার্গেট' বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের কোমরের ওপর থেকে পাঁজর পর্যন্ত।
হঠাৎ ঘরের মাঠে এমন 'ড্রিল' শুরু করলেন কেন তামিম? ওপেনারদের ফাস্ট বোলিং খেলা জানতে হয়। সেটি ভালোই জানেন তামিম। লর্ডস ঘুরে ম্যানচেস্টারে তো আর এমনি এমনি সেঞ্চুরি করেননি তিনি। তবু সে তুলনায় দেশের ধীরগতির উইকেটে ম্যাচের আগে শর্ট অব লেন্থ বল খেলার প্রস্তুতি নতুন করে নিতে হচ্ছে তামিমকে। আসলে বাধ্য করেছেন রবি রামপাল আর কেমার রোচরা। বলের লাফিয়ে ওঠাটা তামিমের জন্য সমস্যার নয়। তবে লাফিয়ে ওঠা বল ব্যাটের কাছে কখন আসবে কিংবা পেরিয়ে যাবে, উইকেটের চরিত্রের কারণে তা সংশয়াচ্ছন্নই থেকে যাচ্ছে। যে কারণে লাফিয়ে ওঠা বলে পুল-হুক করার লোভ সামলাতে হচ্ছে। লোভের ফাঁদে পা দিয়ে প্রথম ওয়ানডেতে মোহাম্মদ আশরাফুল এবং অলক কাপালির পরিণতি তো সবাই-ই দেখেছেন। আগে খেলে ফেলায় আশরাফুলের গ্লাভস ছুঁয়ে বল উইকেটকিপারের কাছে ক্যাচ যায়। আর অসময়ে ব্যাটে-বলে হওয়ায় অলক আউট হন আকাশে ক্যাচ তুলে।
তাই কোমরের ওপরে ওঠা বল নিচে খেলার অনুশীলনই গতকাল করেছেন তামিম ইকবাল। প্রতিপক্ষের যে দুর্বলতার কথা মনে করিয়ে দিতে গিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগের দিন দাঁত বের করে হেসেছিলেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার কিয়েরন পোলার্ড, 'আমরা জানি কোমরের ওপর বল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা খেলতে পারে না'। টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচের শেষ বলটা করার সময় বহুল আলোচিত এ দুর্বলতার কথা কি ভুলে গিয়েছিলেন রবি রামপাল? নাকি যদি পুলটা মুশফিক ঠিক সময়ে খেলে দেন_এ আশঙ্কায় ইয়র্কার দিতে গিয়ে এক্কেবারে হিটিং জোনে ফেলেছিলেন ক্যারিবীয় এ পেসার? এ প্রশ্নের উত্তর ম্যাচ শেষের টিম মিটিংয়ে হয়তো দিয়েছেনও রামপাল। তা যে ভুল ছিল, সেটি ধরিয়ে দেওয়ার যথেষ্ট যোগ্যতা আছে ক্যারিবীয় দলের কোচ ওটিস গিবসনের। খেলোয়াড়ি জীবনে যে ফাস্ট বোলার ছিলেন তিনি!
কোচের হাতে-কলমে শিক্ষা নিয়ে প্রথম ওয়ানডেতে আরো বিস্তৃত পোলার্ডের হাসি! ওয়ানডেতে বাউন্সারের কড়াকড়ি আছে। কিন্তু কোমর আর পাঁজরের মাঝামাঝি উচ্চতার বোলিংয়ে কোনো বিধি-নিষেধ নেই। গতির আতঙ্ক ছড়াতে গিয়ে রোচ প্রায়ই বেসামাল হলেও রামপাল এবং আন্দ্রে রাসেল এ অস্ত্রের ব্যবহার করেন নিপুণতার সঙ্গে। তবে বোলারদের 'স্বাধীনতা' তো এনে দিয়েছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা। ড্রেসিংরুমে বসে দেখা শাহরিয়ার নাফীস বদলে যাওয়া ক্যারিবীয় ব্যাটিংয়ের প্রশংসায় গতকাল বলেছেন, 'এটা ঠিক যে ওদের অ্যাপ্লিকেশনটা ভালো হয়েছে।'
এ 'অ্যাপ্লিকেশন'টা বাংলায় প্রয়োগ ক্ষমতা। যা অভিধানে আছে কিন্তু বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের মাঝে সেটির অভাব প্রায়ই প্রকট হয়ে ওঠে। বৃহস্পতিবারের সেঞ্চুরিয়ান লেন্ডল সিমন্স কখনোই তামিমের চেয়ে ভালো ব্যাটসম্যান নন। কিন্তু প্রয়োগ ক্ষমতার জোরে ওই ক্যারিবীয় স্পিনারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি উদ্যাপনের দিনে স্ট্রাইক রেটের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হন তামিম। নতুন অধিনায়কের কণ্ঠেও ম্যাচশেষে শুনতে হয় বহু পুরনো অনুযোগ, 'কেউ সেট হয়ে গেলে তার বড় ইনিংস খেলা উচিত।' শুরুর অপচয় করা বলগুলো পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় নেমেই আউট হয়ে যান নাঈম ইসলাম। প্রয়োগ ক্ষমতার অভাবে তো রীতিমতো 'হতদরিদ্র' মোহাম্মদ আশরাফুল! উইকেট একটু মুখ ফিরিয়ে নিলে সাফল্যের মূল মন্ত্র ভুলে যান স্পিনাররা। কিংকর্তব্যবিমূঢ়তার ছাপ আছে দলের থিঙ্ক ট্যাংকেও। নইলে ২৯৯ রান তাড়া করার জন্য তামিমের বিকল্প সঙ্গী হিসেবে আশরাফুলকে ছেড়ে নাঈমকে পাঠানো কেন?
ছোট ছোট এমন অনেক ভুলের কারণে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান অবশ্য বৃহস্পতিবারের ম্যাচ থেকে খুঁজে বের করেছেন শাহরিয়ার নাফীস। হারলেও সে ম্যাচে ২৫৮ রান করেছে বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের এ রান পাওয়াটা বিসিবি কাপ থেকে 'জারি' আছে। তার মানে তামিম-সাকিবদের সঙ্গী ব্যাটসম্যানদের মনেও আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই। শুধু ঠিকঠাকভাবে কোমরের ওপরের বলগুলো সামলাতে পারলে হয়! নিশ্চিত করে বলা যায়, আজও ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলারদের অভিন্ন 'টার্গেট' বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের কোমরের ওপর থেকে পাঁজর পর্যন্ত।
No comments