বিশ্ব সংস্কৃতি সম্মেলন ফলপ্রসূ হবে তো? by সাইফুদ্দীন চৌধুরী
ইউনেসকোর উদ্যোগে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় প্রথমবারের মতো বিশ্ব সংস্কৃতি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সংস্কৃতিবিনিময়। সংস্কৃতি রাষ্ট্রের নাগরিকদের আত্মিক, বস্তুগত, বুদ্ধিগত এবং আবেগগত চিন্তা ও কর্মপ্রবাহের প্রকাশ ঘটায়। নাগরিকদের সম্পূর্ণ জীবনধারা সংস্কৃতিতেই প্রতিবিম্বিত হয়। এসব বিবেচনায় স্বাগতিক দেশ হিসেবে আসন্ন বিশ্ব সংস্কৃতি সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য মর্যাদাপূর্ণ ঘটনা তো বটেই, গৌরবেরও।
ওই সম্মেলন নিয়ে বিশিষ্টজনেরা ভাবছেন নানা কথা। তাঁরা সংশয় প্রকাশ করছেন, বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব সংস্কৃতি সম্মেলন আদৌ কি কোনো সাফল্য আনতে পারবে? কোন মানদণ্ড বা কোন লক্ষ্য সামনে রেখে স্বাগতিক বাংলাদেশ বক্তব্য উপস্থাপন করবে? দেশে সংস্কৃতি বিষয়ে নীতিমালাই নেই। থাকলে তার আলোকে কেবল সংস্কৃতিবিনিময় প্রসঙ্গই নয়, সংস্কৃতির আর সব বিষয়-আশয় নিয়েও আলোচনা-পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেত। সুধীজনেরা বলছেন, ছোটখাটো ত্রুটি থাকলেও দেশে প্রায় সর্বজনগ্রাহ্য একটি শিক্ষানীতি হয়েছে। এবার কমিশন গঠন করে সংস্কৃতিনীতি প্রণয়নে উদ্যোগী হওয়া জরুরি। যদিও বর্তমান সরকার সরকারিভাবে না করে দলীয় ভিত্তিতে একটি সংস্কৃতি উপকমিটি গঠন করেছে, দেশের একজন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদকে সভাপতি ও দর্শকনন্দিত একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে সদস্যসচিব করে। কথা ছিল, কমিটি যথাশিগগির দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নানা কৌণিকে আলোচনা-পর্যালোচনা করে একটি খসড়া সংস্কৃতি নীতিমালা তৈরি করবে। ‘নিউক্লিয়াস’ ওই খসড়াই বিভিন্ন পর্ব-পর্যায় হয়ে ‘জাতীয় সংস্কৃতিনীতি’ হিসেবে দেশবাসীর কাছে উপস্থাপিত হবে। প্রায় বছর অতিক্রান্ত হলো, কমিটির কাজের অগ্রগতির কথা কিছুই জানা যায়নি। আমাদের প্রত্যাশা, কমিটি যত দ্রুত সম্ভব একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে জনমতের ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে শুধু সংস্কৃতিবিনিময় প্রসঙ্গই নয়, দেশ-কালভেদে সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইলে, নিজ দেশের ওই নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ে কোনো বিধিবদ্ধ নীতিমালা বা নিয়মনীতি না থাকায় অতীতে দেশে ও দেশের বাইরে উপস্থাপিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে বহু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আদতে ওই সব অনুষ্ঠান বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে কি?
এই নীতিমালা না থাকায় বছর পাঁচেক আগে ফ্রান্সে পুরাকীর্তি পাঠানো নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল, প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। ঘটনাটি ছিল, বাংলাদেশের বিভিন্ন জাদুঘর থেকে সেরামানের কিছু পুরাকীর্তি সাময়িকভাবে প্রদর্শনের জন্য সেখানকার গিমে মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে। প্রদর্শনী শেষে সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হবে—এই মর্মে উভয় দেশের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু সম্পাদিত চুক্তিটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। চুক্তিতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডকুমেন্টেশনের নিয়মনীতি মানা তো হয়ইনি, তা ছাড়া সর্বত্র ছিল অযত্ন, অজ্ঞতা আর অদক্ষতার ছাপ। চুক্তির পুরো প্রক্রিয়াটিই ছিল অস্বচ্ছ। অন্তত ইউনেসকোর ‘রিটার্ন অ্যান্ড রেসটিউশন অব কালচারাল প্রপার্টি’ নামে যে আইন আছে তার আলোকে ওই চুক্তি হয়ে থাকলেও কেউ সে বিষয়ে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলত না।
পুরাকীর্তি বিষয়ে বিদ্যমান আইনগুলোর সবই ব্রিটিশ আমলের। পুরোনো আইন প্রয়োগ করে, বিশেষ করে, পুরাকীর্তি ক্ষমতাধরদের হাত থেকে রক্ষা করা দুঃসাধ্য। আইনগুলোর আধুনিকায়ন ও সংস্কার করে ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। প্রত্নপীঠ ও প্রত্নাঞ্চলের সঠিক জরিপ করে তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে প্রত্নপীঠ কেটে কৃষিজমিতে রূপান্তরের কাজ। প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ কাশীনাথ দীক্ষিতের ১৯২২-২৩ সালের ‘আর্কেওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার অ্যানুয়াল রিপোর্ট’-এ লেখা আছে, প্রত্নতাত্ত্বিক উ ৎ খননে রাজশাহী জেলার তানোরে যে প্রত্ন-উপকরণ পাওয়া গেছে, তাতে প্রমাণিত হয়, এলাকাটি ছিল গুপ্ত শাসনামলে পুণ্ড্রবর্ধনভুক্তির অন্তর্গত একটি জনপদ। সংবাদপত্রে লেখালেখির পরও এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এটি সংরক্ষণের জন্য অদ্যাবধি কোনো ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
দেশের সংস্কৃতি নীতিমালায় ব্যাখ্যা থাকবে, সংগীত, নৃত্য, চলচ্চিত্র, ভাষা, সাহিত্য, নাটকসহ শিল্পকলার বিভিন্ন শাখা থেকে কারা দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন। বহির্বিশ্বে তাঁরা কী ধরনের অনুষ্ঠান উপস্থাপন করবেন। দেশের পুস্তক প্রকাশনা ও বিপণনেও অনেক সমস্যা-অসংগতি রয়ে গেছে। আইন প্রয়োগ করে সেসব সমস্যা চিহ্নিত করে অসামঞ্জস্য দূর করতে হবে। দেখা যাচ্ছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা পুস্তকের সম্ভার দেশের প্রকাশনা শিল্পের ক্ষতির কারণ হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় দ্রুতই বিদেশি বই ‘পাইরেসি’ হয়ে বাজার ভরে যাচ্ছে। এ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে না আনলে আমাদের প্রকাশনাশিল্প সংকটে পড়তে পারে—চিন্তার বিষয়।
১৯৩৩ সালে প্রণীত লাইসেন্স এন্ডোরসমেন্ট অ্যাক্টের আধুনিকায়ন দরকার। এটি করা না হলে গ্রামবাংলার গুরুত্বপূর্ণ বিনোদনমাধ্যম যাত্রাশিল্প রক্ষা করা যাবে না। ইউনেসকোর ১৯৮২ সালের কনভেনশনে সদস্য সব দেশকে স্বতন্ত্রভাবে সংস্কৃতিনীতি প্রণয়নের জন্য বলা হয়েছে। ওই ঘোষণা অনুযায়ী অনেক দেশই নীতিমালা তৈরি করেছে। যেসব দেশ নীতিমালা তৈরি করেনি, সে তালিকার অন্যতম বাংলাদেশ।
আসন্ন সংস্কৃতি সম্মেলনে ফল পেতে চাইলে সংস্কৃতিনীতি প্রণয়ন বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। দুশ্চিন্তা হয়, পাছে ভারত-বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সমঝোতা বৈঠকের মতো ওই সম্মেলনের নেতিবাচক ফলাফলে আবারও জনমনে প্রশ্ন না ওঠে! জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য আসলেই দুর্ভাগ্যের।
ড. সাইফুদ্দীন চৌধুরী: গবেষক ও অধ্যাপক, ফোকলোর বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
pr_saif@yahoo.com
ওই সম্মেলন নিয়ে বিশিষ্টজনেরা ভাবছেন নানা কথা। তাঁরা সংশয় প্রকাশ করছেন, বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব সংস্কৃতি সম্মেলন আদৌ কি কোনো সাফল্য আনতে পারবে? কোন মানদণ্ড বা কোন লক্ষ্য সামনে রেখে স্বাগতিক বাংলাদেশ বক্তব্য উপস্থাপন করবে? দেশে সংস্কৃতি বিষয়ে নীতিমালাই নেই। থাকলে তার আলোকে কেবল সংস্কৃতিবিনিময় প্রসঙ্গই নয়, সংস্কৃতির আর সব বিষয়-আশয় নিয়েও আলোচনা-পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেত। সুধীজনেরা বলছেন, ছোটখাটো ত্রুটি থাকলেও দেশে প্রায় সর্বজনগ্রাহ্য একটি শিক্ষানীতি হয়েছে। এবার কমিশন গঠন করে সংস্কৃতিনীতি প্রণয়নে উদ্যোগী হওয়া জরুরি। যদিও বর্তমান সরকার সরকারিভাবে না করে দলীয় ভিত্তিতে একটি সংস্কৃতি উপকমিটি গঠন করেছে, দেশের একজন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদকে সভাপতি ও দর্শকনন্দিত একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে সদস্যসচিব করে। কথা ছিল, কমিটি যথাশিগগির দেশের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নানা কৌণিকে আলোচনা-পর্যালোচনা করে একটি খসড়া সংস্কৃতি নীতিমালা তৈরি করবে। ‘নিউক্লিয়াস’ ওই খসড়াই বিভিন্ন পর্ব-পর্যায় হয়ে ‘জাতীয় সংস্কৃতিনীতি’ হিসেবে দেশবাসীর কাছে উপস্থাপিত হবে। প্রায় বছর অতিক্রান্ত হলো, কমিটির কাজের অগ্রগতির কথা কিছুই জানা যায়নি। আমাদের প্রত্যাশা, কমিটি যত দ্রুত সম্ভব একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে জনমতের ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে শুধু সংস্কৃতিবিনিময় প্রসঙ্গই নয়, দেশ-কালভেদে সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইলে, নিজ দেশের ওই নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ে কোনো বিধিবদ্ধ নীতিমালা বা নিয়মনীতি না থাকায় অতীতে দেশে ও দেশের বাইরে উপস্থাপিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে বহু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আদতে ওই সব অনুষ্ঠান বাংলাদেশের সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে কি?
এই নীতিমালা না থাকায় বছর পাঁচেক আগে ফ্রান্সে পুরাকীর্তি পাঠানো নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল, প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। ঘটনাটি ছিল, বাংলাদেশের বিভিন্ন জাদুঘর থেকে সেরামানের কিছু পুরাকীর্তি সাময়িকভাবে প্রদর্শনের জন্য সেখানকার গিমে মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে। প্রদর্শনী শেষে সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হবে—এই মর্মে উভয় দেশের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু সম্পাদিত চুক্তিটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। চুক্তিতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডকুমেন্টেশনের নিয়মনীতি মানা তো হয়ইনি, তা ছাড়া সর্বত্র ছিল অযত্ন, অজ্ঞতা আর অদক্ষতার ছাপ। চুক্তির পুরো প্রক্রিয়াটিই ছিল অস্বচ্ছ। অন্তত ইউনেসকোর ‘রিটার্ন অ্যান্ড রেসটিউশন অব কালচারাল প্রপার্টি’ নামে যে আইন আছে তার আলোকে ওই চুক্তি হয়ে থাকলেও কেউ সে বিষয়ে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলত না।
পুরাকীর্তি বিষয়ে বিদ্যমান আইনগুলোর সবই ব্রিটিশ আমলের। পুরোনো আইন প্রয়োগ করে, বিশেষ করে, পুরাকীর্তি ক্ষমতাধরদের হাত থেকে রক্ষা করা দুঃসাধ্য। আইনগুলোর আধুনিকায়ন ও সংস্কার করে ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। প্রত্নপীঠ ও প্রত্নাঞ্চলের সঠিক জরিপ করে তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে প্রত্নপীঠ কেটে কৃষিজমিতে রূপান্তরের কাজ। প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ কাশীনাথ দীক্ষিতের ১৯২২-২৩ সালের ‘আর্কেওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার অ্যানুয়াল রিপোর্ট’-এ লেখা আছে, প্রত্নতাত্ত্বিক উ ৎ খননে রাজশাহী জেলার তানোরে যে প্রত্ন-উপকরণ পাওয়া গেছে, তাতে প্রমাণিত হয়, এলাকাটি ছিল গুপ্ত শাসনামলে পুণ্ড্রবর্ধনভুক্তির অন্তর্গত একটি জনপদ। সংবাদপত্রে লেখালেখির পরও এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এটি সংরক্ষণের জন্য অদ্যাবধি কোনো ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
দেশের সংস্কৃতি নীতিমালায় ব্যাখ্যা থাকবে, সংগীত, নৃত্য, চলচ্চিত্র, ভাষা, সাহিত্য, নাটকসহ শিল্পকলার বিভিন্ন শাখা থেকে কারা দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন। বহির্বিশ্বে তাঁরা কী ধরনের অনুষ্ঠান উপস্থাপন করবেন। দেশের পুস্তক প্রকাশনা ও বিপণনেও অনেক সমস্যা-অসংগতি রয়ে গেছে। আইন প্রয়োগ করে সেসব সমস্যা চিহ্নিত করে অসামঞ্জস্য দূর করতে হবে। দেখা যাচ্ছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা পুস্তকের সম্ভার দেশের প্রকাশনা শিল্পের ক্ষতির কারণ হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় দ্রুতই বিদেশি বই ‘পাইরেসি’ হয়ে বাজার ভরে যাচ্ছে। এ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে না আনলে আমাদের প্রকাশনাশিল্প সংকটে পড়তে পারে—চিন্তার বিষয়।
১৯৩৩ সালে প্রণীত লাইসেন্স এন্ডোরসমেন্ট অ্যাক্টের আধুনিকায়ন দরকার। এটি করা না হলে গ্রামবাংলার গুরুত্বপূর্ণ বিনোদনমাধ্যম যাত্রাশিল্প রক্ষা করা যাবে না। ইউনেসকোর ১৯৮২ সালের কনভেনশনে সদস্য সব দেশকে স্বতন্ত্রভাবে সংস্কৃতিনীতি প্রণয়নের জন্য বলা হয়েছে। ওই ঘোষণা অনুযায়ী অনেক দেশই নীতিমালা তৈরি করেছে। যেসব দেশ নীতিমালা তৈরি করেনি, সে তালিকার অন্যতম বাংলাদেশ।
আসন্ন সংস্কৃতি সম্মেলনে ফল পেতে চাইলে সংস্কৃতিনীতি প্রণয়ন বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। দুশ্চিন্তা হয়, পাছে ভারত-বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সমঝোতা বৈঠকের মতো ওই সম্মেলনের নেতিবাচক ফলাফলে আবারও জনমনে প্রশ্ন না ওঠে! জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য আসলেই দুর্ভাগ্যের।
ড. সাইফুদ্দীন চৌধুরী: গবেষক ও অধ্যাপক, ফোকলোর বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
pr_saif@yahoo.com
No comments