সর্বাত্মক আন্দোলন বনাম জনদুর্ভোগ
ঈদের আগমুহূর্তে ১৪ নভেম্বর হঠাৎ সারা দেশে হরতাল ডেকে বিএনপি ঘরে ফেরা মানুষের জন্য যে কী পরিমাণ দুর্ভোগ ডেকে এনেছিল, তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। দুর্ভাগ্যের ব্যাপার হলো, আরও বড় দুর্ভোগের পালা শুরু হতে যাচ্ছে। বিএনপি সর্বাত্মক আন্দোলনের যে ডাক দিয়েছে, তা সরকারের জন্য যতটা না দুশ্চিন্তার কারণ হবে, এর চেয়ে বেশি সমস্যার কারণ হয়ে উঠবে সাধারণ মানুষের জন্য। রাজধানীর দৈনন্দিন জীবন এখন এত বেশি কর্মমুখর যে মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ করলেও এর ধাক্কা সারা নগরে পড়ে, রাস্তাঘাটে সৃষ্টি হয় অচলাবস্থা। এখন আন্দোলনের নামে যদি রাজপথ আটকে সমাবেশ, লংমার্চ, অবরোধ শুরু হয়, আর তারই একপর্যায়ে তথাকথিত মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে যদি হরতাল ডাকা হয়, তাহলে জনহয়রানির সীমা থাকবে না।
গণ-আন্দোলন গণতন্ত্রে স্বীকৃত। কিন্তু সেই আন্দোলন যেন মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে না তোলে, সেটা দেখার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর। বিরোধী দল বা সরকারি দল—কোনো পক্ষেরই এ ব্যাপারে নিস্পৃহ থাকার সুযোগ নেই। বিরোধী দলকে যেমন দেখতে হবে, তাদের দাবি আদায়ের জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ কতটা যুক্তিযুক্ত, তেমনি আবার সরকারি দলকেও দেখতে হবে তাদের অবিবেচনাপ্রসূত কোনো পদক্ষেপের কারণে যেন বিরোধী দল রাজপথে নামতে বাধ্য না হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাড়ি থেকে ‘উচ্ছেদ’-এর পদক্ষেপ এখনই না নিলে হয়তো এই মুহূর্তে রাজনীতি তপ্ত হয়ে ওঠার সুযোগ থাকত না। বিষয়টি আদালতেই নিষ্পত্তি হতে পারত। সরকারকে দেশ চালাতে হবে, তাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তাদের স্বার্থেই দরকার বেশি। সরকারের পরামর্শদাতারা অতি উৎসাহী হয়ে দেশে অনাসৃষ্টির বীজ বপন করছেন কি না, তা ভেবে দেখার দায়িত্ব সরকারেরই। কারণ হরতালের জন্য মানুষ বিএনপিকে দোষ দিলেও পাশাপাশি এ কথাও বলছে, সরকার কেন অন্তত ২৯ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত অপেক্ষা করল না। অর্থাৎ জনদুর্ভোগের দায় সরকার এড়াতে পারে না।
অন্যদিকে বিরোধী দল বিএনপি এর আগে বলেছে, তারা এমন কোনো কর্মসূচি দেওয়ার কথা ভাবছে না, যা মানুষের দুর্ভোগ বাড়ায়। নতুন ধারার আন্দোলনের চিন্তাভাবনার কথা তারা বিভিন্ন সময় বলেছে। এমনকি শুধু জিয়া পরিবারকেন্দ্রিক আন্দোলন খালেদা জিয়াই চান না, এ রকম মনোভাবের কথা মাস খানেক আগে চারদলীয় জোটের সভায় আলোচিত হয়েছে বলে পত্রিকার খবরে জানা গেছে। তাহলে কেন বিএনপি বাড়ি নিয়ে হরতাল ডাকল? এটা কি বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল, নাকি আকস্মিকভাবে জুড়ে দেওয়া কোনো কর্মসূচি? দায়িত্বশীল বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে এসব খুঁজে দেখতে হবে।
বিএনপি সংসদে যায় না, অথচ সংসদীয় গণতন্ত্র ধ্যান-জ্ঞান বলে তারা দাবি করে। বিতর্কিত সব বিষয়ই সংসদে আলোচনা হতে পারে। তর্কবিতর্ক সংসদেই হোক। তাহলে দেশবাসী জানতে পারবে, কার দাবি কতটা ন্যায্য। এর পরও সভা-সমাবেশ বা আন্দোলন হতে পারে। সেগুলো খোলা মাঠ বা হলঘরে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। রাজপথকে রেহাই দিন।
হরতাল বা লংমার্চের মতো কর্মসূচি গ্রহণের অধিকার থাকলেও এর প্রয়োগ আপাতত স্থগিত রাখাই শ্রেয়। কারণ মানুষের জন্যই রাজনীতি। তাদের ভালো-মন্দ উপেক্ষা করা যায় না।
গণ-আন্দোলন গণতন্ত্রে স্বীকৃত। কিন্তু সেই আন্দোলন যেন মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে না তোলে, সেটা দেখার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর। বিরোধী দল বা সরকারি দল—কোনো পক্ষেরই এ ব্যাপারে নিস্পৃহ থাকার সুযোগ নেই। বিরোধী দলকে যেমন দেখতে হবে, তাদের দাবি আদায়ের জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ কতটা যুক্তিযুক্ত, তেমনি আবার সরকারি দলকেও দেখতে হবে তাদের অবিবেচনাপ্রসূত কোনো পদক্ষেপের কারণে যেন বিরোধী দল রাজপথে নামতে বাধ্য না হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাড়ি থেকে ‘উচ্ছেদ’-এর পদক্ষেপ এখনই না নিলে হয়তো এই মুহূর্তে রাজনীতি তপ্ত হয়ে ওঠার সুযোগ থাকত না। বিষয়টি আদালতেই নিষ্পত্তি হতে পারত। সরকারকে দেশ চালাতে হবে, তাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তাদের স্বার্থেই দরকার বেশি। সরকারের পরামর্শদাতারা অতি উৎসাহী হয়ে দেশে অনাসৃষ্টির বীজ বপন করছেন কি না, তা ভেবে দেখার দায়িত্ব সরকারেরই। কারণ হরতালের জন্য মানুষ বিএনপিকে দোষ দিলেও পাশাপাশি এ কথাও বলছে, সরকার কেন অন্তত ২৯ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত অপেক্ষা করল না। অর্থাৎ জনদুর্ভোগের দায় সরকার এড়াতে পারে না।
অন্যদিকে বিরোধী দল বিএনপি এর আগে বলেছে, তারা এমন কোনো কর্মসূচি দেওয়ার কথা ভাবছে না, যা মানুষের দুর্ভোগ বাড়ায়। নতুন ধারার আন্দোলনের চিন্তাভাবনার কথা তারা বিভিন্ন সময় বলেছে। এমনকি শুধু জিয়া পরিবারকেন্দ্রিক আন্দোলন খালেদা জিয়াই চান না, এ রকম মনোভাবের কথা মাস খানেক আগে চারদলীয় জোটের সভায় আলোচিত হয়েছে বলে পত্রিকার খবরে জানা গেছে। তাহলে কেন বিএনপি বাড়ি নিয়ে হরতাল ডাকল? এটা কি বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল, নাকি আকস্মিকভাবে জুড়ে দেওয়া কোনো কর্মসূচি? দায়িত্বশীল বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে এসব খুঁজে দেখতে হবে।
বিএনপি সংসদে যায় না, অথচ সংসদীয় গণতন্ত্র ধ্যান-জ্ঞান বলে তারা দাবি করে। বিতর্কিত সব বিষয়ই সংসদে আলোচনা হতে পারে। তর্কবিতর্ক সংসদেই হোক। তাহলে দেশবাসী জানতে পারবে, কার দাবি কতটা ন্যায্য। এর পরও সভা-সমাবেশ বা আন্দোলন হতে পারে। সেগুলো খোলা মাঠ বা হলঘরে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। রাজপথকে রেহাই দিন।
হরতাল বা লংমার্চের মতো কর্মসূচি গ্রহণের অধিকার থাকলেও এর প্রয়োগ আপাতত স্থগিত রাখাই শ্রেয়। কারণ মানুষের জন্যই রাজনীতি। তাদের ভালো-মন্দ উপেক্ষা করা যায় না।
No comments