ক্ষুদ্রঋণের সুদহার-নীতির কিছু বিষয় স্পষ্ট করেছে এমআরএ
মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) গত ১০ নভেম্বর ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার ও অন্যান্য বিষয়ে যে নীতিমালা জারি করেছে, তার কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করতে ব্যাখ্যা প্রদান করেছে।
নীতিমালায় সুদের সর্বোচ্চ হার ২৭ শতাংশ নির্ধারণ; সুদের হারের হিসাব ক্রমহ্রাসমান ঋণস্থিতির ভিত্তিতে গণনা করা; এবং সাধারণ ক্ষুদ্রঋণের কিস্তিসংখ্যা ৫০-এ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো নিয়ে কিছু অস্পষ্টতা দেখা দেওয়ায় বিষয়গুলো স্পষ্টীকরণে এমআরএর পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার হিসাবের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট রেট নামে একটা পদ্ধতিতে সুদ নির্ণয় করা হয়, যার ফলে ক্ষুদ্রঋণের প্রকৃত সুদের হার নির্ধারণে বিভিন্ন প্রকার বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
এ পদ্ধতিতে হিসাবের কারণে ১৫ শতাংশ সুদের হারের প্রকৃত হার দাঁড়ায় ন্যূনতম ৩০ শতাংশ, যা ঋণগ্রহীতাসহ অনেকের কাছেই অস্পষ্ট থাকে। এ পদ্ধতিতে এক হাজার টাকা ঋণের ওপর ১৫ শতাংশ হারে সুদ আরোপের ফলে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে এক বছরে আদায় করার কথা এক হাজার ১৫০ টাকা (১০০০ টাকা আসল + ১৫০ টাকা সুদ)।
কিন্তু ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান এই এক হাজার ১৫০ টাকা ৫০ কিস্তির মাধ্যমে আদায় করলে প্রতিটি কিস্তিতে ঋণগ্রহীতাকে পরিশোধ করতে হয় ২৩ টাকা (২০ টাকা আসল + ৩ টাকা সুদ)। এভাবে ৫০তম কিস্তিতে ঋণগ্রহীতা যখন ৯৮০ টাকা আসল পরিশোধ করেছেন তখনো অবশিষ্ট ২০ টাকার আসলের জন্য সুদ পরিশোধ করবেন পূর্ণ আসল এক হাজার টাকার ওপর।
৫০তম কিস্তিতে ঋণগ্রহীতার অবশিষ্ট আসল ২০ টাকার ওপর সুদ পরিশোধ করার কথা প্রায় ১১ পয়সা (দশমিক ১০৮ টাকা)। অথচ তাকে পরিশোধ করতে হচ্ছে তিন টাকা যা আগের হার।
এভাবে সাপ্তাহিক কিস্তির মাধ্যমে ঋণগ্রহীতার ঋণের আসল টাকার পরিমাণ কমে এলেও কথিত ফ্ল্যাট পদ্ধতিতে তিনি ক্রমহ্রাসমান ঋণস্থিতির (যা ক্রমান্বয়ে কমে আসবে) ওপর সুদ পরিশোধ না করে মূল এক হাজার টাকার ওপর শেষ কিস্তি পর্যন্ত একই হারে সুদ পরিশোধ করায় প্রকৃত সুদের হার দাঁড়ায় ন্যূনতম দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩০ শতাংশ।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতসহ সারা বিশ্বে ঋণের সুদের হার নির্ণয়ের ক্রমহ্রাসমান পদ্ধতি অবলম্বন করা হলেও বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ খাতে কথিত ফ্ল্যাট পদ্ধতিতে সুদ নির্ণয় করে কিস্তি আদায় করা হচ্ছে।
এমআরএর ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়েছে, প্রকৃত সুদের হার আরও নির্ভর করে ঋণপ্রদানের সময় থেকে কিস্তি আদায়কালীন বিরতিকালের (গ্রেস পিরিয়ড) ওপর, ঋণপ্রদানকালে বাধ্যতামূলক যেসব অর্থ আদায় করা হয় তার ওপর এবং সর্বোপরি কিস্তিসংখ্যার ওপর।
এসব কর্তনসহ কিস্তির হ্রাসভেদে (অনেক ক্ষেত্রে ৩৭ থেকে ৪৬ পর্যন্ত) কথিত ফ্ল্যাট হারে প্রকৃত সুদের হার দ্বিগুণের বেশি দাঁড়ায়।
এমআরএ বলছে, গরিব ঋণগ্রহীতা ওই হারে ঋণ নিয়ে ঋণের অর্থ ব্যবহার করে উল্লিখিত হারের চেয়ে অধিক হারে মুনাফা অর্জন করলেই কেবল তাদের পক্ষে ঋণের অর্থের সদ্ব্যবহার হবে। তিনি কিস্তি প্রদান করতে পারবেন এবং যে উদ্দেশ্যে ঋণ গ্রহণ করছে অর্থাৎ দারিদ্র্য বিমোচনের পথে অগ্রসর হবেন।
এমআরএ আরও বলছে, অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে যে প্রচলিত হারে ব্যাংকঋণ নিয়ে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা সম্ভব নয়। প্রকৃতপক্ষে ক্ষুদ্রঋণ খাতে গড়ে আর্থিক খরচ (বা তহবিল ব্যয়) মাত্র সাত শতাংশ, যা ব্যাংকিং খাতের ক্ষেত্রে তিন থেকে চার শতাংশ।
উল্লেখ্য, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঞ্চয়ের পরিমাণ গড়ে ঋণস্থিতির ৩০ শতাংশ। আর এ সঞ্চয়ের ওপর সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়।
তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত তহবিল রয়েছে যার প্রকৃত ব্যয় নেই। এসব অর্থের সঙ্গে ব্যাংকঋণ যোগ করলে এই খাতের গড় আর্থিক খরচ দাঁড়ায় উল্লিখিত সাত শতাংশ।
নীতিমালায় সুদের হার সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ নির্ধারণ করার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর মার্জিন (প্রশাসনিক খরচ ও মুনাফা) দাঁড়াবে ২০ শতাংশ যা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এখনো বেশি। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত তহবিলের পরিমাণ কমের কারণে (অধিক প্রশাসনিক ব্যয়ের জন্য) বা উচ্চহারে ব্যাংকঋণের ফলে আর্থিক ব্যয় বেশি হলেও উচ্চ মার্জিনের কারণে (২০ শতাংশ) তাদের পক্ষে লাভজনকভাবে ব্যবসা চালানো সম্ভব।
এমআরএ তাই মনে করে, প্রশাসনিক ব্যয় হ্রাসকরণ, দক্ষতা বৃদ্ধি ইত্যাদির মাধ্যমে সুদের হার আরও কমিয়ে আনা সম্ভব।
নীতিমালায় সুদের সর্বোচ্চ হার ২৭ শতাংশ নির্ধারণ; সুদের হারের হিসাব ক্রমহ্রাসমান ঋণস্থিতির ভিত্তিতে গণনা করা; এবং সাধারণ ক্ষুদ্রঋণের কিস্তিসংখ্যা ৫০-এ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো নিয়ে কিছু অস্পষ্টতা দেখা দেওয়ায় বিষয়গুলো স্পষ্টীকরণে এমআরএর পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার হিসাবের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট রেট নামে একটা পদ্ধতিতে সুদ নির্ণয় করা হয়, যার ফলে ক্ষুদ্রঋণের প্রকৃত সুদের হার নির্ধারণে বিভিন্ন প্রকার বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
এ পদ্ধতিতে হিসাবের কারণে ১৫ শতাংশ সুদের হারের প্রকৃত হার দাঁড়ায় ন্যূনতম ৩০ শতাংশ, যা ঋণগ্রহীতাসহ অনেকের কাছেই অস্পষ্ট থাকে। এ পদ্ধতিতে এক হাজার টাকা ঋণের ওপর ১৫ শতাংশ হারে সুদ আরোপের ফলে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে এক বছরে আদায় করার কথা এক হাজার ১৫০ টাকা (১০০০ টাকা আসল + ১৫০ টাকা সুদ)।
কিন্তু ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান এই এক হাজার ১৫০ টাকা ৫০ কিস্তির মাধ্যমে আদায় করলে প্রতিটি কিস্তিতে ঋণগ্রহীতাকে পরিশোধ করতে হয় ২৩ টাকা (২০ টাকা আসল + ৩ টাকা সুদ)। এভাবে ৫০তম কিস্তিতে ঋণগ্রহীতা যখন ৯৮০ টাকা আসল পরিশোধ করেছেন তখনো অবশিষ্ট ২০ টাকার আসলের জন্য সুদ পরিশোধ করবেন পূর্ণ আসল এক হাজার টাকার ওপর।
৫০তম কিস্তিতে ঋণগ্রহীতার অবশিষ্ট আসল ২০ টাকার ওপর সুদ পরিশোধ করার কথা প্রায় ১১ পয়সা (দশমিক ১০৮ টাকা)। অথচ তাকে পরিশোধ করতে হচ্ছে তিন টাকা যা আগের হার।
এভাবে সাপ্তাহিক কিস্তির মাধ্যমে ঋণগ্রহীতার ঋণের আসল টাকার পরিমাণ কমে এলেও কথিত ফ্ল্যাট পদ্ধতিতে তিনি ক্রমহ্রাসমান ঋণস্থিতির (যা ক্রমান্বয়ে কমে আসবে) ওপর সুদ পরিশোধ না করে মূল এক হাজার টাকার ওপর শেষ কিস্তি পর্যন্ত একই হারে সুদ পরিশোধ করায় প্রকৃত সুদের হার দাঁড়ায় ন্যূনতম দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩০ শতাংশ।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতসহ সারা বিশ্বে ঋণের সুদের হার নির্ণয়ের ক্রমহ্রাসমান পদ্ধতি অবলম্বন করা হলেও বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ খাতে কথিত ফ্ল্যাট পদ্ধতিতে সুদ নির্ণয় করে কিস্তি আদায় করা হচ্ছে।
এমআরএর ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়েছে, প্রকৃত সুদের হার আরও নির্ভর করে ঋণপ্রদানের সময় থেকে কিস্তি আদায়কালীন বিরতিকালের (গ্রেস পিরিয়ড) ওপর, ঋণপ্রদানকালে বাধ্যতামূলক যেসব অর্থ আদায় করা হয় তার ওপর এবং সর্বোপরি কিস্তিসংখ্যার ওপর।
এসব কর্তনসহ কিস্তির হ্রাসভেদে (অনেক ক্ষেত্রে ৩৭ থেকে ৪৬ পর্যন্ত) কথিত ফ্ল্যাট হারে প্রকৃত সুদের হার দ্বিগুণের বেশি দাঁড়ায়।
এমআরএ বলছে, গরিব ঋণগ্রহীতা ওই হারে ঋণ নিয়ে ঋণের অর্থ ব্যবহার করে উল্লিখিত হারের চেয়ে অধিক হারে মুনাফা অর্জন করলেই কেবল তাদের পক্ষে ঋণের অর্থের সদ্ব্যবহার হবে। তিনি কিস্তি প্রদান করতে পারবেন এবং যে উদ্দেশ্যে ঋণ গ্রহণ করছে অর্থাৎ দারিদ্র্য বিমোচনের পথে অগ্রসর হবেন।
এমআরএ আরও বলছে, অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে যে প্রচলিত হারে ব্যাংকঋণ নিয়ে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা সম্ভব নয়। প্রকৃতপক্ষে ক্ষুদ্রঋণ খাতে গড়ে আর্থিক খরচ (বা তহবিল ব্যয়) মাত্র সাত শতাংশ, যা ব্যাংকিং খাতের ক্ষেত্রে তিন থেকে চার শতাংশ।
উল্লেখ্য, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঞ্চয়ের পরিমাণ গড়ে ঋণস্থিতির ৩০ শতাংশ। আর এ সঞ্চয়ের ওপর সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়।
তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত তহবিল রয়েছে যার প্রকৃত ব্যয় নেই। এসব অর্থের সঙ্গে ব্যাংকঋণ যোগ করলে এই খাতের গড় আর্থিক খরচ দাঁড়ায় উল্লিখিত সাত শতাংশ।
নীতিমালায় সুদের হার সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ নির্ধারণ করার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর মার্জিন (প্রশাসনিক খরচ ও মুনাফা) দাঁড়াবে ২০ শতাংশ যা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এখনো বেশি। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত তহবিলের পরিমাণ কমের কারণে (অধিক প্রশাসনিক ব্যয়ের জন্য) বা উচ্চহারে ব্যাংকঋণের ফলে আর্থিক ব্যয় বেশি হলেও উচ্চ মার্জিনের কারণে (২০ শতাংশ) তাদের পক্ষে লাভজনকভাবে ব্যবসা চালানো সম্ভব।
এমআরএ তাই মনে করে, প্রশাসনিক ব্যয় হ্রাসকরণ, দক্ষতা বৃদ্ধি ইত্যাদির মাধ্যমে সুদের হার আরও কমিয়ে আনা সম্ভব।
No comments