উপসাগরীয় দেশগুলোকে ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি
এ মাসে শুরুর দিকে ইসরাইলকে টার্গেট করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। তার জবাবে তেহরানের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরাইল। ওই হামলার ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসরাইলি কর্মকর্তারা। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা বা তেলক্ষেত্রের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তারপর। এই হামলা করতে যদি ইসরাইলকে কোনো দেশ তাদের ভূখণ্ড বা আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছে ইরান। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, ওইসব দেশ এরই মধ্যে আরেকটি বৃহত্তর যুদ্ধে নিজেদের জড়ানোর বিষয়ে অস্বীকৃতি জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে। এসব জ্বালানিসমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশগুলোর কর্মকর্তাদের আশঙ্কা তাদের তেলক্ষেত্র নিয়ে। এসব তেলক্ষেত্র প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তায় আছে। তাদের আশঙ্কা যদি শত্রুতা বৃদ্ধি পায়, যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে তাহলে এসব স্থাপনা হতে পারে প্রধান টার্গেট। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মার্কিন সেনা মোতায়েন আছে বর্তমানে ওই অঞ্চলে। যদি ওইসব স্থাপনায় হামলা হয় তাহলে মার্কিন বাহিনীও বড় রকম ঝুঁকিতে থাকবে। উপসাগরীয় দেশগুলোর বড় উদ্বেগের মধ্যে অন্যতম হলো- যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে বিশ্ব তেলের বাজারে তার বড় প্রভাব পড়বে। তারা মনে করেন ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ হলে তাতে হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেল রপ্তানি বিঘ্নিত হবে। এই প্রণালীকে বিশ্ব বাজারে তেল সরবরাহের চেকপয়েন্ট হিসেবে দেখা হয়। ফলে সেখানে কোনো রকম বিঘ্ন ঘটলে তেলের দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠবে। তাতে শুধু ওই অঞ্চলই অস্থিতিশীল হবে এমন না। একই সঙ্গে বিশ্ববাজারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতে, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত সহ আরব নেতারা ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক হামলায় জড়িত হওয়া এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। উত্তেজনার মধ্যেই ইরানের তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে ইরানের কথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ জাহাজকে লক্ষ্য করে। ইরানের পেট্রোলিয়াম পরিবহনের সঙ্গে জড়িত বহু কোম্পানি এবং জাহাজকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং আঞ্চলিক যোদ্ধাগোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেয়ার আর্থিক লাইফলাইন কর্তন করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
No comments