পাহাড়ি টিলার ‘সোনালি ফসল’ কদর বেড়েছে ‘আদা আর জাড়া’ লেবুর by ইমাদ উদ দীন
এখন
ভর মৌসুম সাতকরা, আদা আর জাড়া লেবুর। প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের আগে ও পরে
কয়েক সপ্তাহ ব্যাপক চাহিদা থাকে এসব লেবুর। এখন স্থানীয় বাজারগুলোতেও দেখা
মিলছে ব্যাপক পসরা সাজানো এ লেবুগুলোর। বিক্রেতারা জানালেন- সাতকরা, আদা ও
জাড়া লেবুর চাহিদা বেশি। চাষিরা জানালেন মৌসুমে দাম পেয়ে তারা খুশি। গরুর
মাংসের সঙ্গে সাতকরা ও আদা লেবুর রান্না করা তরকারি ঘ্রাণে ও স্বাদে অনন্য।
আর ভাতের সঙ্গে জাড়া লেবু রস ও টালা স্বাদে আনে ভিন্নতা। তবে সাতকরার
চাহিদা সিলেট অঞ্চলের রেওয়াজি ঐতিহ্য হলে এখানে তা চাষ হয় খুবই কম।
তবে ‘আদা আর জাড়া’ লেবু মৌলভীবাজারের পাহাড়ি এলাকার বারোমাসি ফসল। পাহাড়ি টিলার চাষিদের কাছে এই ফসলগুলো ‘সোনালি ফসল’ হিসেবেই সমাদৃত। সবুজ পাহাড়ি টিলার গাছে গাছে দোল খায় আদা আর জাড়া লেবু। চাষিদের দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে পরিচিত এই লেবু ফসলই ওখানকার পাহাড়ি টিলার বারোমাসি ফসল। স্থানীয়রা জানালেন, একসময় অনাবাদি যে টিলাগুলো ছিল বন-জঙ্গলে ভরপুর এখন সেখানে চাষ হচ্ছে নানা জাতের লেবু। চাষিরা এমন ফসল চাষে এখন বেশ সফলতা পাচ্ছেন। আবাদ হচ্ছে অনাবাদি পাহাড়ি টিলা। ওই এলাকায় এখন অনেকেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যাপক পরিসরেও চাষ করছেন লেবু জাতীয় এ ফসল। এমনকি অল্প পরিসরেও তা চাষ হচ্ছে বাড়িতে বাড়িতে। চাষিরা সবুজ এই ফসলের নাম দিয়েছেন পাহাড়ি সোনালি ফসল। কারণ বছরজুড়ে এই ফসলগুলো তাদের মুখে হাঁসি ফুটায়। দেয় পাহাড়ি এলাকার হতদরিদ্র চাষি পরিবারগুলোর তিন বেলা ভাত আর জীবন জীবিকার নিশ্চয়তা।এমনটিই জানালেন লেবু চাষিরা। অল্প জায়গায় কম পরিশ্রমে লাভজনক এই লেবু চাষে ভাগ্যবদল হচ্ছে হাজারো মানুষের। মৌলভীবাজারের পাহাড়ি টিলাগুলোতে নানা জাতের মৌসুমি ফলের চাষ হলেও পাশাপাশি আদা, কাটা আর জাড়া লেবুসহ নানা লেবু জাতীয় ফসলের চাষ হয়। মৌলভীবাজারের সব উপজেলাতে নানা জাতের লেবু চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি লেবু জাতীয় ফসলের চাষ হয় বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে। তবে কাগজী লেবু চাষের জন্য শ্রীমঙ্গল সিলেটের মধ্যে অন্যতম প্রসিদ্ধ হলেও আদা, কাটা, জাড়া, পাতু, আশকুল, মাতু (জাম্বুরা), শাশনী, সাতকরা ও কমলা লেবু চাষের জন্য নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে জেলার জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা। এখন স্বল্প ও ব্যাপক পরিসরে বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষ হচ্ছে লেবু জাতীয় এ ফসল। সরজমিনে ওই এলাকায় গেলে লেবুচাষি সোলাম মিয়া, শফিক মিয়া, মো. ফখর উদ্দিন, বাছিত মিয়া, বিলাল মিয়া, লিয়াকত হোসেন, আব্দুর রহমানসহ অনেকেই জানান চৈত্র্য মাসের শেষ দিকে লেবু গাছগুলোতে ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ ভাগ থেকে ফল বিক্রি শুরু করেন তারা। চলে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত। এর মধ্যেই যে গাছগুলোর ফল শেষ হয়ে যায় সে গাছগুলোতে আবার ফুল ও ফল আসে। এভাবেই বছরজুড়ে গাছে লেবু থাকে কম-বেশি। মওসুমে বেশি লেবু ধরলেও মৌসুম ছাড়াও গাছে লেবু থাকে কম। কিন্তু মৌসুম ছাড়া লেবু গাছে ফলন কম দিলেও তখন দাম বেশি পাওয়া যায়। ঘুরে ফিরে সারা বছরজুড়েই তারা এই লেবু গাছগুলো থেকে তারা কম-বেশি ফলন পান। তবে আদা ও কাটা লেবুর চাষ ভালো হলেও জাড়া লেবুর ফলন আগের মতো এখন তেমন একটা হয় না। নানা কারণেই এই লেবুটির চাষাবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে। একটি লেবু গাছ চারা ও কলম লাগানোর ২ বছর থেকে ৪ বছরের মধ্যেই ফলন আসতে শুরু করে। একটা লেবু গাছ ফলন দেয় ৭-৮ বছর। একটি পরিপক্ব সুস্থ সবল গাছে (আদা ও কাটা লেবু) ৬০০ থেকে ৮০০ লেবু ধরে। লেবুচাষিরা জানালেন এখন প্রতি হালি জাড়া লেবু বিক্রি হচ্ছে বড় ও মাঝারি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আদা লেবু মাঝারি ও বড় প্রতি হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাটা লেবু ১৫ থেকে ২০ টাকা প্রতি হালি লেবু পাইকারি দরে তা বিক্রি হচ্ছে। তারা জানালেন অনেক সময় তারা তা বিক্রির জন্য স্থানীয় বাজারগুলোতে আনলেও অধিকাংশ সময় পাইকাররা তাদের বাড়ি থেকে তা কিনে নিয়ে যান। তরকারি হিসেবে আদা লেবু আর রস ও টালার জন্য জাড়া ও কাটা লেবুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ভোজন রসিকদের কাছে। এই লেবুগুলোর রেওয়াজি ঐতিহ্য রয়েছে সিলেট অঞ্চলে। চাষিরা জানালেন কোরবানির ঈদের আগে জাড়া ও আদা লেবুর চাহিদা থাকে ব্যাপক। কারণ গরুর মাংসের সঙ্গে আদা লেবু দিয়ে রান্না মাংসের স্বাদই আলাদা। আর জাড়া লেবুর রস ও টালা ভাতের সঙ্গে খেতে স্বাদে আনে ভিন্নতা। নানা পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ এই লেবুগুলোর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো আদা ও কাটা লেবু দিয়ে ছোট ও বড় মাছের টক রান্নায় অন্যরকম স্বাদ। তাছাড়া জাড়া ও কাটা লেবুর রস দিয়ে ঝটপট তৈরি করা যায় মজাদার লেবু শরবত। আর কাটা লেবুর রয়েছে ঔষধি গুণ। কাটা লেবুর রস বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে রাখলে তা মাথাব্যথা প্রশমনে ভালো ফল দেয়। আদা লেবু মাছ ও মাংসতে দিয়ে রান্না করা যায়। যার ঘ্রাণ স্বাদে আনে ভিন্নতা। সিলেট বিভাগসহ দেশে-বিদেশেও এখন দিন দিন কদর বাড়ছে এ লেবুগুলোর। লন্ডন, আমেরিকাসহ ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই এই লেবুগুলোর চাহিদা রয়েছে বলে জানালেন চাষিরা। তবে চাষিরা জানালেন এই ফসলগুলো চাষে তাদের প্ররিশ্রম কম হলেও নানা রোগবালাই আর শুষ্ক মৌসুমে পানিহীনতায় আগের মতো ভালো ফলন হয় না। ৩-৪ বছর ফল দেওয়ার পর অজ্ঞাত রোগেই পাতা লাল হয়েই মারা যায় লেবু গাছ। চাষিরা জানান পোকা মাকড় ও পানি সমস্যার সমাধান হলে বছরজুড়ে তাদের এই ফলন দ্বিগুণ হতো। তাদের আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে এই ফসলই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখত। আর অফ সিজনে অনেকটাই লাঘব হতো স্থানীয় চাষিদের বেকার সমস্যা।
তবে ‘আদা আর জাড়া’ লেবু মৌলভীবাজারের পাহাড়ি এলাকার বারোমাসি ফসল। পাহাড়ি টিলার চাষিদের কাছে এই ফসলগুলো ‘সোনালি ফসল’ হিসেবেই সমাদৃত। সবুজ পাহাড়ি টিলার গাছে গাছে দোল খায় আদা আর জাড়া লেবু। চাষিদের দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে পরিচিত এই লেবু ফসলই ওখানকার পাহাড়ি টিলার বারোমাসি ফসল। স্থানীয়রা জানালেন, একসময় অনাবাদি যে টিলাগুলো ছিল বন-জঙ্গলে ভরপুর এখন সেখানে চাষ হচ্ছে নানা জাতের লেবু। চাষিরা এমন ফসল চাষে এখন বেশ সফলতা পাচ্ছেন। আবাদ হচ্ছে অনাবাদি পাহাড়ি টিলা। ওই এলাকায় এখন অনেকেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যাপক পরিসরেও চাষ করছেন লেবু জাতীয় এ ফসল। এমনকি অল্প পরিসরেও তা চাষ হচ্ছে বাড়িতে বাড়িতে। চাষিরা সবুজ এই ফসলের নাম দিয়েছেন পাহাড়ি সোনালি ফসল। কারণ বছরজুড়ে এই ফসলগুলো তাদের মুখে হাঁসি ফুটায়। দেয় পাহাড়ি এলাকার হতদরিদ্র চাষি পরিবারগুলোর তিন বেলা ভাত আর জীবন জীবিকার নিশ্চয়তা।এমনটিই জানালেন লেবু চাষিরা। অল্প জায়গায় কম পরিশ্রমে লাভজনক এই লেবু চাষে ভাগ্যবদল হচ্ছে হাজারো মানুষের। মৌলভীবাজারের পাহাড়ি টিলাগুলোতে নানা জাতের মৌসুমি ফলের চাষ হলেও পাশাপাশি আদা, কাটা আর জাড়া লেবুসহ নানা লেবু জাতীয় ফসলের চাষ হয়। মৌলভীবাজারের সব উপজেলাতে নানা জাতের লেবু চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি লেবু জাতীয় ফসলের চাষ হয় বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলে। তবে কাগজী লেবু চাষের জন্য শ্রীমঙ্গল সিলেটের মধ্যে অন্যতম প্রসিদ্ধ হলেও আদা, কাটা, জাড়া, পাতু, আশকুল, মাতু (জাম্বুরা), শাশনী, সাতকরা ও কমলা লেবু চাষের জন্য নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে জেলার জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা। এখন স্বল্প ও ব্যাপক পরিসরে বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষ হচ্ছে লেবু জাতীয় এ ফসল। সরজমিনে ওই এলাকায় গেলে লেবুচাষি সোলাম মিয়া, শফিক মিয়া, মো. ফখর উদ্দিন, বাছিত মিয়া, বিলাল মিয়া, লিয়াকত হোসেন, আব্দুর রহমানসহ অনেকেই জানান চৈত্র্য মাসের শেষ দিকে লেবু গাছগুলোতে ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ ভাগ থেকে ফল বিক্রি শুরু করেন তারা। চলে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত। এর মধ্যেই যে গাছগুলোর ফল শেষ হয়ে যায় সে গাছগুলোতে আবার ফুল ও ফল আসে। এভাবেই বছরজুড়ে গাছে লেবু থাকে কম-বেশি। মওসুমে বেশি লেবু ধরলেও মৌসুম ছাড়াও গাছে লেবু থাকে কম। কিন্তু মৌসুম ছাড়া লেবু গাছে ফলন কম দিলেও তখন দাম বেশি পাওয়া যায়। ঘুরে ফিরে সারা বছরজুড়েই তারা এই লেবু গাছগুলো থেকে তারা কম-বেশি ফলন পান। তবে আদা ও কাটা লেবুর চাষ ভালো হলেও জাড়া লেবুর ফলন আগের মতো এখন তেমন একটা হয় না। নানা কারণেই এই লেবুটির চাষাবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে। একটি লেবু গাছ চারা ও কলম লাগানোর ২ বছর থেকে ৪ বছরের মধ্যেই ফলন আসতে শুরু করে। একটা লেবু গাছ ফলন দেয় ৭-৮ বছর। একটি পরিপক্ব সুস্থ সবল গাছে (আদা ও কাটা লেবু) ৬০০ থেকে ৮০০ লেবু ধরে। লেবুচাষিরা জানালেন এখন প্রতি হালি জাড়া লেবু বিক্রি হচ্ছে বড় ও মাঝারি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আদা লেবু মাঝারি ও বড় প্রতি হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাটা লেবু ১৫ থেকে ২০ টাকা প্রতি হালি লেবু পাইকারি দরে তা বিক্রি হচ্ছে। তারা জানালেন অনেক সময় তারা তা বিক্রির জন্য স্থানীয় বাজারগুলোতে আনলেও অধিকাংশ সময় পাইকাররা তাদের বাড়ি থেকে তা কিনে নিয়ে যান। তরকারি হিসেবে আদা লেবু আর রস ও টালার জন্য জাড়া ও কাটা লেবুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ভোজন রসিকদের কাছে। এই লেবুগুলোর রেওয়াজি ঐতিহ্য রয়েছে সিলেট অঞ্চলে। চাষিরা জানালেন কোরবানির ঈদের আগে জাড়া ও আদা লেবুর চাহিদা থাকে ব্যাপক। কারণ গরুর মাংসের সঙ্গে আদা লেবু দিয়ে রান্না মাংসের স্বাদই আলাদা। আর জাড়া লেবুর রস ও টালা ভাতের সঙ্গে খেতে স্বাদে আনে ভিন্নতা। নানা পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ এই লেবুগুলোর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো আদা ও কাটা লেবু দিয়ে ছোট ও বড় মাছের টক রান্নায় অন্যরকম স্বাদ। তাছাড়া জাড়া ও কাটা লেবুর রস দিয়ে ঝটপট তৈরি করা যায় মজাদার লেবু শরবত। আর কাটা লেবুর রয়েছে ঔষধি গুণ। কাটা লেবুর রস বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে রাখলে তা মাথাব্যথা প্রশমনে ভালো ফল দেয়। আদা লেবু মাছ ও মাংসতে দিয়ে রান্না করা যায়। যার ঘ্রাণ স্বাদে আনে ভিন্নতা। সিলেট বিভাগসহ দেশে-বিদেশেও এখন দিন দিন কদর বাড়ছে এ লেবুগুলোর। লন্ডন, আমেরিকাসহ ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই এই লেবুগুলোর চাহিদা রয়েছে বলে জানালেন চাষিরা। তবে চাষিরা জানালেন এই ফসলগুলো চাষে তাদের প্ররিশ্রম কম হলেও নানা রোগবালাই আর শুষ্ক মৌসুমে পানিহীনতায় আগের মতো ভালো ফলন হয় না। ৩-৪ বছর ফল দেওয়ার পর অজ্ঞাত রোগেই পাতা লাল হয়েই মারা যায় লেবু গাছ। চাষিরা জানান পোকা মাকড় ও পানি সমস্যার সমাধান হলে বছরজুড়ে তাদের এই ফলন দ্বিগুণ হতো। তাদের আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে এই ফসলই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখত। আর অফ সিজনে অনেকটাই লাঘব হতো স্থানীয় চাষিদের বেকার সমস্যা।
No comments