উইকিপিডিয়ায় নারী-পুরুষ বৈষম্য প্রকট by মো. মিন্টু হোসেন
অলংকরণ: মাসুক হেলাল |
অনলাইন
বিশ্বকোষ হিসেবে পরিচিত উইকিপিডিয়ায় নারী-পুরুষের বৈষম্য প্রকট। ওয়াশিংটন ও
সাইরাকুস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, উইকিপিডিয়ার সম্পাদকদের মধ্যে
৮০ শতাংশের বেশি পুরুষ।
বিভিন্ন তথ্য–উপাত্ত বলছে, বাংলাদেশের চিত্রও হতাশাজনক।
উইকিপিডিয়া বর্তমানে বিশ্বের জনপ্রিয় অনলাইন বিশ্বকোষ ও তথ্য প্রাপ্তির মাধ্যম। ২০০১ সালের ১৫ জানুয়ারি এই অনলাইন বিশ্বকোষটি যাত্রা শুরু করে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
গত মে মাসে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ ও ঢাকার সুইডিশ দূতাবাসের আয়োজনে বাংলা উইকিপিডিয়ায় নারীবিষয়ক তথ্য সমৃদ্ধ করতে আয়োজিত নিবন্ধ লেখার প্রতিযোগিতায় সেরা ১০ জনের মধ্যে একমাত্র নারী ছিলেন তাসমিন আক্তার। পরে সুইডিশ রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে তিনি সম্মাননা গ্রহণ করেন।
ইডেন কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী তাসমিন আক্তার বললেন, ‘উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ আয়োজিত উইকিপিডিয়ার বিভিন্ন ইভেন্ট দেখে গত বছরের প্রথম দিকে উইকিপিডিয়ার ব্যাপারে আগ্রহ তৈরি হয়। বাংলা উইকিপিডিয়ার ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমিসহ মাত্র দুজন নারী অংশগ্রহণকারী ছিলাম। সে সময়ই মূলত বুঝতে পারি উইকিপিডিয়াতে নারী লেখক কম, ফলে নারীর অবদানও কম।’
বিশ্বের ৫ম শীর্ষ এ ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের গ্রামীণ এক্কাদোক্কা, কানামাছি খেলা নিয়ে যেমন তথ্য রয়েছে, তেমনি তথ্য রয়েছে ইউরোপের ছোট দেশ মোনাকোসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইতিহাস নিয়েও। বাংলা ভাষাসহ পৃথিবীর ৩০১টি ভাষায় পড়া যায় উইকিপিডিয়া।
বাংলা উইকিপিডিয়ায় সক্রিয় নারী উইকিপিডিয়ান রয়েছেন হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন। একটি নির্দিষ্ট সময় পর বিভিন্ন কারণে অধিকাংশ নারী উইকিপিডিয়ান নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। বাংলা উইকিপিডিয়ার নিয়মিত কাজ করার জন্য যে ১০ জন প্রশাসক রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কোনো নারী নেই।
গত বছর উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, উইকিপিডিয়াতে যাঁরা লেখেন, তাঁদের মধ্যে গড়ে মাত্র ৯ শতাংশ নারী। ইংরেজি ভাষাভাষী দেশগুলোতে এই সংখ্যা মাত্র ১৩ শতাংশ।
উইকিপিডিয়াতে নারী-পুরুষ সংক্রান্ত যে নিবন্ধ আছে, তার মধ্যে পুরুষসংক্রান্ত নিবন্ধের সংখ্যা নারীসংক্রান্ত নিবন্ধের তুলনায় ৪ গুণ। যদিও অঞ্চলভেদে বা উইকিপিডিয়ার বিভিন্ন ভাষা সংস্করণে এই সংখ্যার তারতম্য আছে।
উইকিপিডিয়ার বিভিন্ন ভাষা সংস্করণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধ আছে ইংরেজি উইকিপিডিয়ায়। ইংরেজিতে মোট জীবনীভিত্তিক নিবন্ধ আছে ১৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১টি। এর মধ্যে নারীদের নিয়ে লেখা জীবনীর সংখ্যা মাত্র ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৪৯টি অর্থাৎ, ১৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বাংলা উইকিপিডিয়া ২০০৪ সালে চালু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত মোট জীবনীভিত্তিক নিবন্ধ লেখা হয়েছে ১৮ হাজার ৫২৪টি। এর মধ্যে নারীদের জীবনী মাত্র ৪ হাজার ২৫২টি অর্থাৎ, ২২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। বাংলা উইকিপিডিয়াতে গত ১০ থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত মোট ১৩০টি জীবনীভিত্তিক পাতা তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ২০টি নারীদের জীবনী।
বাংলাসহ ২৫টি ভাষায় উইকিপিডিয়া প্রকল্প চালু আছে। এর মধ্যে হিন্দি উইকিপিডিয়াতে মোট ১৬ হাজার ৮০৫টি জীবনীভিত্তিক নিবন্ধের মধ্যে নারীর জীবনী ৩ হাজার ৯৩৮টি, তামিল উইকিপিডিয়াতে ২১ হাজার ৭৩১টি জীবনীর মধ্যে নারীর ৩ হাজার ৫৫৯টি, উর্দু উইকিপিডিয়াতে ১২ হাজার ৫০১টি জীবনীর মধ্যে নারীর ৩ হাজার ৫৫৬টি এবং মালায়ালাম ভাষায় ১৩ হাজার ৬৭৭টি জীবনীর মধ্যে নারীর ৪ হাজার ২৪০টি জীবনীসংক্রান্ত পাতা রয়েছে।
উইকিপিডিয়ার তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন কয়েক বছর ধরেই উইকিপিডিয়ায় নারীদের অবদানকে উৎসাহিত করতে এবং নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। উইকিপিডিয়াতে নতুন নারী অবদানকারীদের সাহায্য করার জন্য রয়েছে উইকি প্রকল্প নারী, উইকি প্রকল্প নারী বিজ্ঞানী, উইকি প্রকল্প জেন্ডার স্টাডিজ, জেন্ডারগ্যাপ টাস্কফোর্স প্রভৃতি।
বাংলাদেশে উইকিপিডিয়া নিয়ে কাজ করা উইকিমিডিয়ার অফিশিয়াল চ্যাপটার ‘উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ’ বাংলাদেশের নারীদের উইকিপিডিয়ায় অবদান রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দিতে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বাংলা উইকিপিডিয়াতে নিয়মিত নারীবিষয়ক অনলাইন নিবন্ধ প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মশালার মাধ্যমে নারীর অবদানকে উৎসাহ দেওয়া ও দেশি-বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিচালনা করছে।
গত মে মাসে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ ও ঢাকার সুইডিশ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে বাংলা উইকিপিডিয়াতে নারীবিষয়ক তথ্য সমৃদ্ধ করতে ১৫ দিনব্যাপী ‘উইকিগ্যাপ’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ লেখার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। জুন মাসে ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত সার্লোট্টা স্লাইটার তাঁর বাসভবনে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ, অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সাংবাদিক প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ‘উইকিগ্যাপ’ প্রতিযোগিতার সেরা ১০ জন উইকিপিডিয়া অবদানকারীকে সনদ প্রদান করেন।
সুইডিশ রাষ্ট্রদূত সার্লোট্টা স্লাইটার প্রথম আলোকে বলেছেন, গত বছর উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের সুইডিশ চ্যাপ্টার উইকিমিডিয়া সুইডেন ও সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে উইকিপিডিয়াতে নারীবিষয়ক নিবন্ধ বৃদ্ধি ও উইকিপিডিয়ায় নারীদের অবদানকে উৎসাহ দিতে ‘উইকিগ্যাপ’ নামের এই ক্যাম্পেইন শুরু করে।
সার্লোট্টা স্লাইটার বললেন, ‘সুইডেন বিশ্বের প্রথম দেশ যারা নারীবান্ধব পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে এবং সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। লিঙ্গসমতা, শান্তি, নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের একটি মৌলিক শর্ত। ভার্চ্যুয়াল জগতেও নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে উইকিপিডিয়াতে ৯০ ভাগ বিষয়বস্তুই পুরুষদের লিখিত এবং নারীদের তুলনায় পুরুষ-সম্পর্কিত নিবন্ধ ৪ গুণ। উইকিপিডিয়ায় এ অসামঞ্জস্য দূর করতেই সুইডিশ দূতাবাস এ আয়োজনে যুক্ত হয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ বললেন, ‘উইকিপিডিয়ার বেশির ভাগ লেখা থাকে ফরমায়েশি। আর ফরমাশ দেওয়ার বেলায় পুরুষদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। নারীবাদীরাও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে ততটা সচেতন নন। তাই নারী ও পুরুষ সবাইকে এই বৈষম্য কমাতে এগিয়ে আসতে হবে।’
বিভিন্ন তথ্য–উপাত্ত বলছে, বাংলাদেশের চিত্রও হতাশাজনক।
উইকিপিডিয়া বর্তমানে বিশ্বের জনপ্রিয় অনলাইন বিশ্বকোষ ও তথ্য প্রাপ্তির মাধ্যম। ২০০১ সালের ১৫ জানুয়ারি এই অনলাইন বিশ্বকোষটি যাত্রা শুরু করে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
গত মে মাসে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ ও ঢাকার সুইডিশ দূতাবাসের আয়োজনে বাংলা উইকিপিডিয়ায় নারীবিষয়ক তথ্য সমৃদ্ধ করতে আয়োজিত নিবন্ধ লেখার প্রতিযোগিতায় সেরা ১০ জনের মধ্যে একমাত্র নারী ছিলেন তাসমিন আক্তার। পরে সুইডিশ রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে তিনি সম্মাননা গ্রহণ করেন।
ইডেন কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী তাসমিন আক্তার বললেন, ‘উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ আয়োজিত উইকিপিডিয়ার বিভিন্ন ইভেন্ট দেখে গত বছরের প্রথম দিকে উইকিপিডিয়ার ব্যাপারে আগ্রহ তৈরি হয়। বাংলা উইকিপিডিয়ার ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমিসহ মাত্র দুজন নারী অংশগ্রহণকারী ছিলাম। সে সময়ই মূলত বুঝতে পারি উইকিপিডিয়াতে নারী লেখক কম, ফলে নারীর অবদানও কম।’
বিশ্বের ৫ম শীর্ষ এ ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের গ্রামীণ এক্কাদোক্কা, কানামাছি খেলা নিয়ে যেমন তথ্য রয়েছে, তেমনি তথ্য রয়েছে ইউরোপের ছোট দেশ মোনাকোসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইতিহাস নিয়েও। বাংলা ভাষাসহ পৃথিবীর ৩০১টি ভাষায় পড়া যায় উইকিপিডিয়া।
বাংলা উইকিপিডিয়ায় সক্রিয় নারী উইকিপিডিয়ান রয়েছেন হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন। একটি নির্দিষ্ট সময় পর বিভিন্ন কারণে অধিকাংশ নারী উইকিপিডিয়ান নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। বাংলা উইকিপিডিয়ার নিয়মিত কাজ করার জন্য যে ১০ জন প্রশাসক রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কোনো নারী নেই।
গত বছর উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, উইকিপিডিয়াতে যাঁরা লেখেন, তাঁদের মধ্যে গড়ে মাত্র ৯ শতাংশ নারী। ইংরেজি ভাষাভাষী দেশগুলোতে এই সংখ্যা মাত্র ১৩ শতাংশ।
উইকিপিডিয়াতে নারী-পুরুষ সংক্রান্ত যে নিবন্ধ আছে, তার মধ্যে পুরুষসংক্রান্ত নিবন্ধের সংখ্যা নারীসংক্রান্ত নিবন্ধের তুলনায় ৪ গুণ। যদিও অঞ্চলভেদে বা উইকিপিডিয়ার বিভিন্ন ভাষা সংস্করণে এই সংখ্যার তারতম্য আছে।
উইকিপিডিয়ার বিভিন্ন ভাষা সংস্করণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধ আছে ইংরেজি উইকিপিডিয়ায়। ইংরেজিতে মোট জীবনীভিত্তিক নিবন্ধ আছে ১৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১টি। এর মধ্যে নারীদের নিয়ে লেখা জীবনীর সংখ্যা মাত্র ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৪৯টি অর্থাৎ, ১৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বাংলা উইকিপিডিয়া ২০০৪ সালে চালু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত মোট জীবনীভিত্তিক নিবন্ধ লেখা হয়েছে ১৮ হাজার ৫২৪টি। এর মধ্যে নারীদের জীবনী মাত্র ৪ হাজার ২৫২টি অর্থাৎ, ২২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। বাংলা উইকিপিডিয়াতে গত ১০ থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত মোট ১৩০টি জীবনীভিত্তিক পাতা তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ২০টি নারীদের জীবনী।
বাংলাসহ ২৫টি ভাষায় উইকিপিডিয়া প্রকল্প চালু আছে। এর মধ্যে হিন্দি উইকিপিডিয়াতে মোট ১৬ হাজার ৮০৫টি জীবনীভিত্তিক নিবন্ধের মধ্যে নারীর জীবনী ৩ হাজার ৯৩৮টি, তামিল উইকিপিডিয়াতে ২১ হাজার ৭৩১টি জীবনীর মধ্যে নারীর ৩ হাজার ৫৫৯টি, উর্দু উইকিপিডিয়াতে ১২ হাজার ৫০১টি জীবনীর মধ্যে নারীর ৩ হাজার ৫৫৬টি এবং মালায়ালাম ভাষায় ১৩ হাজার ৬৭৭টি জীবনীর মধ্যে নারীর ৪ হাজার ২৪০টি জীবনীসংক্রান্ত পাতা রয়েছে।
উইকিপিডিয়ার তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন কয়েক বছর ধরেই উইকিপিডিয়ায় নারীদের অবদানকে উৎসাহিত করতে এবং নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। উইকিপিডিয়াতে নতুন নারী অবদানকারীদের সাহায্য করার জন্য রয়েছে উইকি প্রকল্প নারী, উইকি প্রকল্প নারী বিজ্ঞানী, উইকি প্রকল্প জেন্ডার স্টাডিজ, জেন্ডারগ্যাপ টাস্কফোর্স প্রভৃতি।
বাংলাদেশে উইকিপিডিয়া নিয়ে কাজ করা উইকিমিডিয়ার অফিশিয়াল চ্যাপটার ‘উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ’ বাংলাদেশের নারীদের উইকিপিডিয়ায় অবদান রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দিতে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বাংলা উইকিপিডিয়াতে নিয়মিত নারীবিষয়ক অনলাইন নিবন্ধ প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মশালার মাধ্যমে নারীর অবদানকে উৎসাহ দেওয়া ও দেশি-বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিচালনা করছে।
গত মে মাসে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ ও ঢাকার সুইডিশ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে বাংলা উইকিপিডিয়াতে নারীবিষয়ক তথ্য সমৃদ্ধ করতে ১৫ দিনব্যাপী ‘উইকিগ্যাপ’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ লেখার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। জুন মাসে ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত সার্লোট্টা স্লাইটার তাঁর বাসভবনে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ, অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সাংবাদিক প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ‘উইকিগ্যাপ’ প্রতিযোগিতার সেরা ১০ জন উইকিপিডিয়া অবদানকারীকে সনদ প্রদান করেন।
সুইডিশ রাষ্ট্রদূত সার্লোট্টা স্লাইটার প্রথম আলোকে বলেছেন, গত বছর উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের সুইডিশ চ্যাপ্টার উইকিমিডিয়া সুইডেন ও সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে উইকিপিডিয়াতে নারীবিষয়ক নিবন্ধ বৃদ্ধি ও উইকিপিডিয়ায় নারীদের অবদানকে উৎসাহ দিতে ‘উইকিগ্যাপ’ নামের এই ক্যাম্পেইন শুরু করে।
সার্লোট্টা স্লাইটার বললেন, ‘সুইডেন বিশ্বের প্রথম দেশ যারা নারীবান্ধব পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে এবং সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। লিঙ্গসমতা, শান্তি, নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের একটি মৌলিক শর্ত। ভার্চ্যুয়াল জগতেও নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে উইকিপিডিয়াতে ৯০ ভাগ বিষয়বস্তুই পুরুষদের লিখিত এবং নারীদের তুলনায় পুরুষ-সম্পর্কিত নিবন্ধ ৪ গুণ। উইকিপিডিয়ায় এ অসামঞ্জস্য দূর করতেই সুইডিশ দূতাবাস এ আয়োজনে যুক্ত হয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ বললেন, ‘উইকিপিডিয়ার বেশির ভাগ লেখা থাকে ফরমায়েশি। আর ফরমাশ দেওয়ার বেলায় পুরুষদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। নারীবাদীরাও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে ততটা সচেতন নন। তাই নারী ও পুরুষ সবাইকে এই বৈষম্য কমাতে এগিয়ে আসতে হবে।’
No comments