প্রথমে ব্যবহার না করার নীতি থেকে সরে আসার বক্তব্য দায়িত্বশীল পরমাণু শক্তি হিসেবে ভারতীয় ভাবমূর্তির জন্য হুমকি by ইপসিতা চক্রবর্তী
পাকিস্তান
কাশ্মীর ইস্যুটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভায় উত্থাপন করার প্রেক্ষাপটে
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ভারতের ‘প্রথমে ব্যবহার নয়’
পরমাণুনীতি ভবিষ্যতে পর্যালোচনা করা হতে পারে। তিনি বলেন, এটা নির্ভর করবে
পরিস্থিতির ওপর।
রাজনাথ সিং ১৯৭৪ ও ১৯৯৮ সালে ভারতের পরমাণু পরীক্ষাস্থল পোখরানে এ মন্তব্য করেন। ওই পরীক্ষার মাধ্যমে ভারত পরমাণু শক্তি হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করে। তার মন্তব্যে বিস্ময়ের কিছু নেই। গত কয়েক বছর ধরেই ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি বিশেষ করে পাকিস্তান সম্পর্কিত বিষয়টি নিয়ে পুরনো অবস্থানে বিচ্যুতি দেখা গেছে। তবে তাতে উপমহাদেশে শান্তি বজায় রাখতে দায়িত্বশীল পরমাণু শক্তি হিসেবে ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতায় সমস্যা সৃষ্টি হয়নি।
কয়েক দশক ধরেই নেহরু ও গান্ধীর বিশ্ববীক্ষায় নিহিত ‘কৌশলগত সংযমের ওপর ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি গড়ে ওঠেছে। এতে উস্কানির মুখে শক্তি প্রয়োগের বদলে দীর্ঘ মেয়াদি স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। তবে ১৯৯৮ সালের পরমাণু পরীক্ষা এবং ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ, ২০০১ সালে পার্লামেন্ট আক্রমণের পর অপারেশন পরাক্রমে (এ সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়) এই নীতি থেকে সরে যাওয়ার প্রয়াস দেখা যায়।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ২০০২ সাল থেকে বলে আসছে যে তারা ‘কোল্ড স্টার্ট’ মতবাদ প্রণয়ন করেছে। এতে শত্রু ভূখণ্ডে ক্ষিপ্রতার সাথে সীমিত হামলা চালিয়ে দ্রুত ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে। অনেক বছর ধরেই এই মতবাদটি সরকারিভাবে অস্বীকার করা হচ্ছিল। সামরিক বাহিনী যদি গোপনে হামলা চালায়, তবে ভারতের রাজনৈতিক এস্টাবলিশমেন্ট কৌশলগত সংযম প্রদর্শন করার জন্যই দৃশ্যত ছিল এই অস্বীকার।
তারপর ২০১৬ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী তথাকথিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা ঘোষণা করে। তারা নিয়ন্ত্রণ রেখার ভেতরে ঢুকে সন্ত্রাসীদের লঞ্চপ্যাডে হামলা চালানোর দাবি করে, রাজনৈতিক এস্টাবলিশমেন্ট এটিকে নির্বাচনী ট্রাম্প কার্ড হিসেবে গ্রহণ করে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বালাকোট বিমান হামলার সময় সরকার কয়েক শ’ জৈশ-ই মোহাম্মদ কর্মীদের হত্যা করার দাবি করে। এর মাধ্যমে সংযমের স্থানে আগ্রাসনের স্থলাভিষেক ঘটে।
পাকিস্তান রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্যকে দায়িত্বহীন ও দুর্ভাগ্যজনক হিসেবে অভিহি করলেও তার নিজের অবস্থান স্থিতিশীলতা জন্য খুব বেশি আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করেনি। অনেক বছর ধরেই পাকিস্তান তার পরমাণুনীতি নিয়ে দ্ব্যর্থবোধকতার সৃষ্টি করে আছে। তারা প্রথমে ব্যবহার না করার প্রতিশ্রতি দিতে অস্বীকার করেছ, অবশ্য পরমাণু পরীক্ষার ক্ষেত্রে একতরফা বিলম্ব করার কথা ঘোষণা করেছে। পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচির প্রধান কৌশলগত লক্ষ্য হলো ভীতি প্রদর্শন; আর তা যদি ব্যর্থ হয়, তবে যুদ্ধে ভারতের জয়কে ঠেকানো। বিশ্লেষকেরা উল্লেখ করছেন যে পরমাণু হুমকি প্রশ্নে ক্রমবর্ধমান হারে নীরবতা হলো পাকিস্তানের প্রতিরক্ষানীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ প্রচলিত সামর্থ্যে তারা ভারতের সাথে তাল মেলাতে পারবে না।
ভারত যদি প্রথমে ব্যবহারের নীতি পরিত্যাগ করে তবে উপমহাদেশের স্থিতিশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সেফটি ভালব শেষ হয়ে যাবে। ২০০৩ সালের পর থেকে ভারতের রাজনৈতিক মহল কিন্তু আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছে।
ভারত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদা হাসিল করেছিল তার নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে। পরমাণু শক্তিধর দেশ হয়ে সীমান্তের ওপার থেকে উস্কানির মুখেও শান্তি প্রতিষ্ঠার বাণীই তাকে ওই মর্যাদা দিয়েছিল।
রাজনাথ সিং ১৯৭৪ ও ১৯৯৮ সালে ভারতের পরমাণু পরীক্ষাস্থল পোখরানে এ মন্তব্য করেন। ওই পরীক্ষার মাধ্যমে ভারত পরমাণু শক্তি হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করে। তার মন্তব্যে বিস্ময়ের কিছু নেই। গত কয়েক বছর ধরেই ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি বিশেষ করে পাকিস্তান সম্পর্কিত বিষয়টি নিয়ে পুরনো অবস্থানে বিচ্যুতি দেখা গেছে। তবে তাতে উপমহাদেশে শান্তি বজায় রাখতে দায়িত্বশীল পরমাণু শক্তি হিসেবে ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতায় সমস্যা সৃষ্টি হয়নি।
কয়েক দশক ধরেই নেহরু ও গান্ধীর বিশ্ববীক্ষায় নিহিত ‘কৌশলগত সংযমের ওপর ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি গড়ে ওঠেছে। এতে উস্কানির মুখে শক্তি প্রয়োগের বদলে দীর্ঘ মেয়াদি স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। তবে ১৯৯৮ সালের পরমাণু পরীক্ষা এবং ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ, ২০০১ সালে পার্লামেন্ট আক্রমণের পর অপারেশন পরাক্রমে (এ সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়) এই নীতি থেকে সরে যাওয়ার প্রয়াস দেখা যায়।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ২০০২ সাল থেকে বলে আসছে যে তারা ‘কোল্ড স্টার্ট’ মতবাদ প্রণয়ন করেছে। এতে শত্রু ভূখণ্ডে ক্ষিপ্রতার সাথে সীমিত হামলা চালিয়ে দ্রুত ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে। অনেক বছর ধরেই এই মতবাদটি সরকারিভাবে অস্বীকার করা হচ্ছিল। সামরিক বাহিনী যদি গোপনে হামলা চালায়, তবে ভারতের রাজনৈতিক এস্টাবলিশমেন্ট কৌশলগত সংযম প্রদর্শন করার জন্যই দৃশ্যত ছিল এই অস্বীকার।
তারপর ২০১৬ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী তথাকথিত সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা ঘোষণা করে। তারা নিয়ন্ত্রণ রেখার ভেতরে ঢুকে সন্ত্রাসীদের লঞ্চপ্যাডে হামলা চালানোর দাবি করে, রাজনৈতিক এস্টাবলিশমেন্ট এটিকে নির্বাচনী ট্রাম্প কার্ড হিসেবে গ্রহণ করে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বালাকোট বিমান হামলার সময় সরকার কয়েক শ’ জৈশ-ই মোহাম্মদ কর্মীদের হত্যা করার দাবি করে। এর মাধ্যমে সংযমের স্থানে আগ্রাসনের স্থলাভিষেক ঘটে।
পাকিস্তান রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্যকে দায়িত্বহীন ও দুর্ভাগ্যজনক হিসেবে অভিহি করলেও তার নিজের অবস্থান স্থিতিশীলতা জন্য খুব বেশি আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করেনি। অনেক বছর ধরেই পাকিস্তান তার পরমাণুনীতি নিয়ে দ্ব্যর্থবোধকতার সৃষ্টি করে আছে। তারা প্রথমে ব্যবহার না করার প্রতিশ্রতি দিতে অস্বীকার করেছ, অবশ্য পরমাণু পরীক্ষার ক্ষেত্রে একতরফা বিলম্ব করার কথা ঘোষণা করেছে। পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচির প্রধান কৌশলগত লক্ষ্য হলো ভীতি প্রদর্শন; আর তা যদি ব্যর্থ হয়, তবে যুদ্ধে ভারতের জয়কে ঠেকানো। বিশ্লেষকেরা উল্লেখ করছেন যে পরমাণু হুমকি প্রশ্নে ক্রমবর্ধমান হারে নীরবতা হলো পাকিস্তানের প্রতিরক্ষানীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ প্রচলিত সামর্থ্যে তারা ভারতের সাথে তাল মেলাতে পারবে না।
ভারত যদি প্রথমে ব্যবহারের নীতি পরিত্যাগ করে তবে উপমহাদেশের স্থিতিশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সেফটি ভালব শেষ হয়ে যাবে। ২০০৩ সালের পর থেকে ভারতের রাজনৈতিক মহল কিন্তু আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছে।
ভারত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদা হাসিল করেছিল তার নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে। পরমাণু শক্তিধর দেশ হয়ে সীমান্তের ওপার থেকে উস্কানির মুখেও শান্তি প্রতিষ্ঠার বাণীই তাকে ওই মর্যাদা দিয়েছিল।
No comments