দুই বছর ধরে ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় রোহিঙ্গা শিশুরা by ডেভিড স্কিনার
স্কুলের
গুরুত্ব সম্পর্কে ভালোভাবেই জানে ১৩ বছর বয়সী ফাতেমা (আসল নাম নয়)। দুই
বছর আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে সে। এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী
ক্যাম্পে বাবা-মা, দুই বোন আর দাদার সাথে থাকে সে। এই বয়সে সে যে সব
প্রতিকূলতা পাড়ি দিচ্ছে, তার বয়সী অন্য কাউকে সেটা কখনও দিতে হবে না। সে
শিক্ষক হতে চায়। তবে সাধারণ শিক্ষক নয়, মেয়েদের শিক্ষক। কারণ মেয়েরা
শিক্ষিত হলে, তারা অন্যদের শেখাতে পারে।
অন্যভাবে বললে ফাতেমা একটা ভবিষ্যৎ চায়, অন্যান্য শত শত শিশুদের মতোই যাদেরকে তাদের নিজেদের ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে। ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট যে সঙ্কট শুরু হয়েছিল, তারপর পুরো দুই বছর চলে গেছে, এখনও তারা দুর্দশার মধ্যে বাস করছে। সামান্যই আশা আছে তাদের এবং তাদের দুর্দশার জন্য যারা দায়ি, তারা এখনও বিচারের মুখোমুখি হয়নি। বিশ্বের এখন দায়িত্ব হলো এই রোহিঙ্গা শিশুদের দুর্দশার জন্য দায়িদের বিচারের মুখোমুখি করা।
২০১৭ সালের আগস্টে অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশুকে তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডা গণহত্যার পর এর চেয়ে বড় ধরনের বিতাড়ণের ঘটনা আর ঘটেনি।
রোহিঙ্গা শিশুরা সেভ দ্য চিলড্রেনকে বলেছে যে, তারা ধর্ষণ, নির্যাতন এবং হত্যা দেখেছে। অনেকে ধর্ষিত হওয়ার পর নিজেদের উপর নির্যাতন করেছে; অনেকেরই চোখের সামনে তাদের বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে। তারা যেটা করতে পেরেছে, সেটা হলো পালানো, আর সে সময় পেছনে তাদের ঘরবাড়িগুলো আগুনে জ্বলছিল।
সামান্য কিছু জিনিস নিয়ে তারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছে। অসামান্য সহানুভূতি দেখিয়ে বাংলাদেশের মানুষ তাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং এক ধরনের নিরাপত্তার পরিবেশ দিয়েছে, যেটা মিয়ানমারে তাদের ছিল না। বাংলাদেশের মানুষের সহায়তায় পুরো বিশ্ব এগিয়ে এসেছে: তারা নিশ্চিত করেছে যাতে এই শিশু শরণার্থী এবং তাদের অভিভাবকেরা থাকার মতো একটু জায়গা পায় এবং তাদের মৌলিক অধিকারগুলো পূরণ হয়।
এই প্রচেষ্টার কারণেই জোরপূর্বক দেশছাড়া হওয়ার পরও বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঘটেনি। কক্সবাজারে বনাঞ্চলের বড় একটা অংশ পরিস্কার করে সেখানে অস্থায়ী আবাসন তৈরি করা হয়েছে, শিশুদের খাবার দেয়া হচ্ছে এবং রোগের সংক্রমণ রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও বড় ধরনের স্বাস্থ্য সঙ্কট এড়ানো গেছে, এরপরও প্রায় এক মিলিয়ন শরণার্থী এখনও ভুগছে।
বাংলাদেশের সরকার গত দুই বছর ধরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দিয়ে একটা বিশাল বৈশ্বিক দায়িত্ব পালন করেছে। সারা বিশ্ব থেকে তাদের সহায়তা করা দরকার।
কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সমাধান রয়ে গেছে মিয়ানমারের কাছে।
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই তাদের প্রতি মৌলিক দায়িত্বগুলো পূরণ করতে হবে, তাদেরকে নিরাপত্তা ও দেশের অন্যান্য নাগরিকদের মতো মানবিক মর্যাদা দিতে হবে। আর রোহিঙ্গাদের এই দুর্দশার জন্য যারা দায়ি, তাদেরকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।
রোহিঙ্গারা যে দেশে জন্মেছে এবং বড় হয়েছে, সেখানে অবশ্যই তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। শিশু অধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের কনভেনশান অনুযায়ী সকল শিশুর জাতীয় পরিচয়ের অধিকার রয়েছে। এই অধিকার স্পষ্ট ও বিভ্রান্তিহীন। মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই অর্থহীন কাগজপত্র দেয়া বন্ধ করে রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।
ফাতেমাকে একটা জীবনের পথ দেখানো, তাকে সহায়তা করা এবং তার স্বপ্ন পূরণ করাটা আমাদের দায়িত্ব। আর সেই সাথে এটাও নিশ্চিত করতে হবে যাতে সেই সঙ্ঘাতের শিকার হয়ে তাকে থাকতে না হয়, যে সঙ্ঘাত সৃষ্টির পেছনে তার কোন ভূমিকা নেই।
অন্যভাবে বললে ফাতেমা একটা ভবিষ্যৎ চায়, অন্যান্য শত শত শিশুদের মতোই যাদেরকে তাদের নিজেদের ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে। ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট যে সঙ্কট শুরু হয়েছিল, তারপর পুরো দুই বছর চলে গেছে, এখনও তারা দুর্দশার মধ্যে বাস করছে। সামান্যই আশা আছে তাদের এবং তাদের দুর্দশার জন্য যারা দায়ি, তারা এখনও বিচারের মুখোমুখি হয়নি। বিশ্বের এখন দায়িত্ব হলো এই রোহিঙ্গা শিশুদের দুর্দশার জন্য দায়িদের বিচারের মুখোমুখি করা।
২০১৭ সালের আগস্টে অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশুকে তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডা গণহত্যার পর এর চেয়ে বড় ধরনের বিতাড়ণের ঘটনা আর ঘটেনি।
রোহিঙ্গা শিশুরা সেভ দ্য চিলড্রেনকে বলেছে যে, তারা ধর্ষণ, নির্যাতন এবং হত্যা দেখেছে। অনেকে ধর্ষিত হওয়ার পর নিজেদের উপর নির্যাতন করেছে; অনেকেরই চোখের সামনে তাদের বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে। তারা যেটা করতে পেরেছে, সেটা হলো পালানো, আর সে সময় পেছনে তাদের ঘরবাড়িগুলো আগুনে জ্বলছিল।
সামান্য কিছু জিনিস নিয়ে তারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছে। অসামান্য সহানুভূতি দেখিয়ে বাংলাদেশের মানুষ তাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং এক ধরনের নিরাপত্তার পরিবেশ দিয়েছে, যেটা মিয়ানমারে তাদের ছিল না। বাংলাদেশের মানুষের সহায়তায় পুরো বিশ্ব এগিয়ে এসেছে: তারা নিশ্চিত করেছে যাতে এই শিশু শরণার্থী এবং তাদের অভিভাবকেরা থাকার মতো একটু জায়গা পায় এবং তাদের মৌলিক অধিকারগুলো পূরণ হয়।
এই প্রচেষ্টার কারণেই জোরপূর্বক দেশছাড়া হওয়ার পরও বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঘটেনি। কক্সবাজারে বনাঞ্চলের বড় একটা অংশ পরিস্কার করে সেখানে অস্থায়ী আবাসন তৈরি করা হয়েছে, শিশুদের খাবার দেয়া হচ্ছে এবং রোগের সংক্রমণ রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও বড় ধরনের স্বাস্থ্য সঙ্কট এড়ানো গেছে, এরপরও প্রায় এক মিলিয়ন শরণার্থী এখনও ভুগছে।
বাংলাদেশের সরকার গত দুই বছর ধরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দিয়ে একটা বিশাল বৈশ্বিক দায়িত্ব পালন করেছে। সারা বিশ্ব থেকে তাদের সহায়তা করা দরকার।
কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সমাধান রয়ে গেছে মিয়ানমারের কাছে।
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই তাদের প্রতি মৌলিক দায়িত্বগুলো পূরণ করতে হবে, তাদেরকে নিরাপত্তা ও দেশের অন্যান্য নাগরিকদের মতো মানবিক মর্যাদা দিতে হবে। আর রোহিঙ্গাদের এই দুর্দশার জন্য যারা দায়ি, তাদেরকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।
রোহিঙ্গারা যে দেশে জন্মেছে এবং বড় হয়েছে, সেখানে অবশ্যই তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। শিশু অধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের কনভেনশান অনুযায়ী সকল শিশুর জাতীয় পরিচয়ের অধিকার রয়েছে। এই অধিকার স্পষ্ট ও বিভ্রান্তিহীন। মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই অর্থহীন কাগজপত্র দেয়া বন্ধ করে রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।
ফাতেমাকে একটা জীবনের পথ দেখানো, তাকে সহায়তা করা এবং তার স্বপ্ন পূরণ করাটা আমাদের দায়িত্ব। আর সেই সাথে এটাও নিশ্চিত করতে হবে যাতে সেই সঙ্ঘাতের শিকার হয়ে তাকে থাকতে না হয়, যে সঙ্ঘাত সৃষ্টির পেছনে তার কোন ভূমিকা নেই।
No comments