এনআরসি আলোচনার মধ্যে উড়িষ্যায় বড় প্রশ্ন: কে বাংলাদেশী?
রুমা মণ্ডল ও তার দুই সন্তান |
“আমাকে
বাংলাদেশী বলবেন না। আমি ওদিয়া। বাংলা বলা আমি ভুলে গেছি”। ছবির জন্য পোজ
দেয়ার আগে বিন্দি লাগাতে লাগাতে বললেন ৩৬ বছর বয়সী রুমা মণ্ডল।
উড়িষ্যা রাজ্যের কেন্দ্রপাড়া প্রশাসনের ১৪ বছরের পুরনো একটি আংশিক তালিকা অনুযায়ী রুমা ‘বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের’ একজন যিনি বানিপাল গ্রামে এসে বসতি গড়েন। তালিকাটা তৈরি করা হয় ২০০৫ সালে। সে সময়, বিজেডি বিজেপির সাথে মিলে রাজ্য শাসন করছিল। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে লিখিত এক জবাবে জেলা প্রশাসন বলেছে যে, ২০০৫ সালে ‘বাংলাদেশী’ চিহ্নিত করার জন্য কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়নি।
রুমার স্বামী সাজায়া, তার বড় বোন এবং তার প্রয়াত শ্বশুর-শ্বাশুড়ির নামও তালিকায় রয়েছে। এরপর তার চার সন্তানের জন্ম হয়েছে।
কেন্দ্রাপাড়ায় ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) বাস্তবায়িত হতে পারে, এ ধরনের খবরের প্রেক্ষিতে রুমার আশঙ্কা হলো তাকে ফেরত পাঠানো হতে পারে। তিনি বলেন, “এটা হবে অন্যায়। আমি এসেছি ভাদ্রাক থেকে, বাংলাদেশ থেকে আসা একজনকে বিয়ে করেছি। আমি আর আমার সন্তানেরা ভারতের নাগরিক”।
মাসের শুরুর দিকে, আদালতের অনুমোদিত একটি কমিটি যারা রাজ্যের জলাভূমিগুলো রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত, তারা স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে বলেছে যাতে জেলায় এনআরসি বাস্তবায়ন করা হয়।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস যে সব দলিল হাতে পেয়েছে, সেগুলোতে দেখা গেছে যে, অ্যামিকাস কিউরি মোহিত আগারওয়াল এই প্রস্তাব করেছেন। ভিতারককানিকা এবং চিলিকা জলাভূমি রক্ষার ব্যাপারে তিনি আদালতকে পরামর্শ দেন। রুমার গ্রামটি ভিতারকানিকার অধীনে পড়ে।
এরপর ডিরেক্টর এনভায়রনমেন্ট এবং বন বিভাগের বিশেষ সচিব কে মুরুগেসান দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন যে, কমিটি অ্যামিকাস কিউরির কাছ থেকে অনুরোধ পেয়ে সেটি জানিয়েছে। ফরেস্ট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের অ্যাডিশনাল চিফ সেক্রেটারি এস সি মাহামাত্রা বলেন, “কমিটির কাজ শুধু জলাভূমি রক্ষা করা। আমরা দখলদারদের উৎখাত করছি। বাংলাদেশী অভিবাসীদের ব্যাপারে আমাদের কোন ভূমিকা নেই”।
জলাভূমি রক্ষার বিষয়টি কেন অবৈধ অভিবাসীদের শিকারের বিষয়ে পরিণত হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে আগারওয়াল বলেন, তার কোন রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। “তবে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন”।
“অনানুষ্ঠানিক সূত্রকে’ উদ্ধৃত করে তিনি বলেন যে, রাজ্যে ‘বাংলাদেশীর’ সংখ্যা বেড়ে সাত লাখ হয়ে গেছে।
কালেক্টর সামার্থ ভার্মা অবশ্য জেলায় ‘বাংলাদেশীদের’ কোন সংখ্যা বলতে অস্বীকার করলেন।
এদিকে, স্থানীয় অধিবাসীরা এ ধরনের জল্পনা শুরু করেছেন যে, কারা বাংলাদেশী হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। তবে কে বলছেন, তার উপর ভিত্তি করে এই উত্তর হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন। বানিপালের পাশে শ্রী-রাজেন্দ্রপুরের অধিবাসী ৬০ বছর বয়সী শম্ভু দাস বললেন, “এখানকার বাংলাভাষী সবাই বাংলাদেশী। আমরা এখানে ওদিয়া ভাষায় কথা বলি”।
বহু বাংলাভাষীই এ সব দাবি নাকচ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, “আমরা এসেছি (পশ্চিম বঙ্গের) মেদিনিপুর জেলা থেকে। বাংলা বলি বলেই আমরা বিদেশী হয়ে যেতে পারি না”।
এইসব কথিত ‘বাংলাদেশীদের’ মধ্যে, একমাত্র রুমাই নিজের নাম প্রকাশ করেছে। সে তার পরিবারের ভোটার ও আধার কার্ডগুলো সামনে বিছিয়ে রেখেছে।
“আমি যদি বহিরাগত হই, তাহলে কিভাবে আমাকে এই সব কাগজপত্র দেয়া হলো?”
উড়িষ্যা রাজ্যের কেন্দ্রপাড়া প্রশাসনের ১৪ বছরের পুরনো একটি আংশিক তালিকা অনুযায়ী রুমা ‘বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের’ একজন যিনি বানিপাল গ্রামে এসে বসতি গড়েন। তালিকাটা তৈরি করা হয় ২০০৫ সালে। সে সময়, বিজেডি বিজেপির সাথে মিলে রাজ্য শাসন করছিল। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে লিখিত এক জবাবে জেলা প্রশাসন বলেছে যে, ২০০৫ সালে ‘বাংলাদেশী’ চিহ্নিত করার জন্য কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়নি।
রুমার স্বামী সাজায়া, তার বড় বোন এবং তার প্রয়াত শ্বশুর-শ্বাশুড়ির নামও তালিকায় রয়েছে। এরপর তার চার সন্তানের জন্ম হয়েছে।
কেন্দ্রাপাড়ায় ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) বাস্তবায়িত হতে পারে, এ ধরনের খবরের প্রেক্ষিতে রুমার আশঙ্কা হলো তাকে ফেরত পাঠানো হতে পারে। তিনি বলেন, “এটা হবে অন্যায়। আমি এসেছি ভাদ্রাক থেকে, বাংলাদেশ থেকে আসা একজনকে বিয়ে করেছি। আমি আর আমার সন্তানেরা ভারতের নাগরিক”।
মাসের শুরুর দিকে, আদালতের অনুমোদিত একটি কমিটি যারা রাজ্যের জলাভূমিগুলো রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত, তারা স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে বলেছে যাতে জেলায় এনআরসি বাস্তবায়ন করা হয়।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস যে সব দলিল হাতে পেয়েছে, সেগুলোতে দেখা গেছে যে, অ্যামিকাস কিউরি মোহিত আগারওয়াল এই প্রস্তাব করেছেন। ভিতারককানিকা এবং চিলিকা জলাভূমি রক্ষার ব্যাপারে তিনি আদালতকে পরামর্শ দেন। রুমার গ্রামটি ভিতারকানিকার অধীনে পড়ে।
এরপর ডিরেক্টর এনভায়রনমেন্ট এবং বন বিভাগের বিশেষ সচিব কে মুরুগেসান দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন যে, কমিটি অ্যামিকাস কিউরির কাছ থেকে অনুরোধ পেয়ে সেটি জানিয়েছে। ফরেস্ট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের অ্যাডিশনাল চিফ সেক্রেটারি এস সি মাহামাত্রা বলেন, “কমিটির কাজ শুধু জলাভূমি রক্ষা করা। আমরা দখলদারদের উৎখাত করছি। বাংলাদেশী অভিবাসীদের ব্যাপারে আমাদের কোন ভূমিকা নেই”।
জলাভূমি রক্ষার বিষয়টি কেন অবৈধ অভিবাসীদের শিকারের বিষয়ে পরিণত হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে আগারওয়াল বলেন, তার কোন রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। “তবে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন”।
“অনানুষ্ঠানিক সূত্রকে’ উদ্ধৃত করে তিনি বলেন যে, রাজ্যে ‘বাংলাদেশীর’ সংখ্যা বেড়ে সাত লাখ হয়ে গেছে।
কালেক্টর সামার্থ ভার্মা অবশ্য জেলায় ‘বাংলাদেশীদের’ কোন সংখ্যা বলতে অস্বীকার করলেন।
এদিকে, স্থানীয় অধিবাসীরা এ ধরনের জল্পনা শুরু করেছেন যে, কারা বাংলাদেশী হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। তবে কে বলছেন, তার উপর ভিত্তি করে এই উত্তর হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন। বানিপালের পাশে শ্রী-রাজেন্দ্রপুরের অধিবাসী ৬০ বছর বয়সী শম্ভু দাস বললেন, “এখানকার বাংলাভাষী সবাই বাংলাদেশী। আমরা এখানে ওদিয়া ভাষায় কথা বলি”।
বহু বাংলাভাষীই এ সব দাবি নাকচ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, “আমরা এসেছি (পশ্চিম বঙ্গের) মেদিনিপুর জেলা থেকে। বাংলা বলি বলেই আমরা বিদেশী হয়ে যেতে পারি না”।
এইসব কথিত ‘বাংলাদেশীদের’ মধ্যে, একমাত্র রুমাই নিজের নাম প্রকাশ করেছে। সে তার পরিবারের ভোটার ও আধার কার্ডগুলো সামনে বিছিয়ে রেখেছে।
“আমি যদি বহিরাগত হই, তাহলে কিভাবে আমাকে এই সব কাগজপত্র দেয়া হলো?”
No comments