‘কারো প্রতি আমার কোনো রাগ নেই’ -প্রবীর মিত্র by মুজাহিদ সামিউল্লাহ
দেশীয়
চলচ্চিত্রের যে কজন শিল্পী অভিনয় নৈপুণ্যে সবসময় কোটি দর্শকের হৃদয়ে
মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেছেন তাদের অন্যতম একজন প্রবীর মিত্র। এই গুণী শিল্পী তরুণ
বয়সে কখনো প্রেমিক, কখনো প্রতিবাদী, আবার কখনো গ্রামের সহজ-সরল যুবক
চরিত্রে সিনেমার পর্দা কাঁপিয়েছেন। আর পরবর্তীতে স্নেহশীল পিতা বা বড়
ভাইয়ের চরিত্রে দেখিয়েছেন দারুণ মুন্সিয়ানা। শক্তিশালী এই অভিনেতা শারীরিক
অসুস্থতার কারণে প্রায় বছর তিনেক যাবৎ তার চিরচেনা ভালোবাসার জায়গা অভিনয়
থেকে দূরে সরে রয়েছেন। হাঁটতে তার কষ্ট হয়। সেগুনবাগিচার ফ্ল্যাটেই
শুয়ে-বসে কাটে তার দিন। বাইরে যেতে পারেন না। প্রবীর মিত্র জানান, তার
শরীরে প্রতিটি জয়েন্টে ব্যাথা। এছাড়া অন্য কোনো রোগ নেই। ডাক্তার জানিয়েছে
ওষুধ খেয়েই বাকি জীবন কাটাতে হবে।
তিনি বলেন, আজ আমি বড় একা। তেমন একটা খোঁজও নেয় না ইন্ডাস্ট্রির কেউ। মাঝেমধ্যে ভাবি, কাদের জন্য এত কাজ করেছি! এফডিসিতে যারা সবসময় আমার সঙ্গে ছিল আজ তারা সবাই ব্যস্ত। শারীরিক সুস্থতার জন্য সবার কাছে আশির্বাদ চাওয়া ছাড়া আমার কিছু বলার নেই। তবে কারো প্রতি আমার কোনো রাগ নেই। অবশ্য একটা কথা বলতে হয়, অনেক প্রযোজকের কাছে পারিশ্রমিকের টাকা বাকি থাকলেও তারা দিচ্ছে না। আর আমার দুঃখ একটাই যে, অভিনয়ের জন্য সব ছাড়তে পেরেছি আজ সেই অভিনয় করতে পারি না। এদিকে প্রবীর মিত্র এটাও জানান যে, তার কাছে অভিনয়ের নতুন নতুন প্রস্তাব আসে। কিন্তু তিনি বিনয়ের সঙ্গে সেসব ফিরিয়ে দেন। ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন যারা আসছে তাদের সম্পর্কে তিনি বলেন, নতুনদের মধ্যে অভিনয়ের প্রতি দরদ কম। তারা আসছে, অভিনয় করছে আবার চলেও যাচ্ছে। অভিনয়ে যদি টাকাটাই প্রধান হয়ে যায় তাহলে আর সেটা অভিনয় থাকে না। প্রবীর মিত্রের অভিনয়জীবন শুরু হয় পুরানো ঢাকায় ‘লালকুঠি গ্রুপ থিয়েটার’-এর মাধ্যমে। স্কুলে পড়াকালীন তার প্রথম অভিনয় করা হয় রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’ নাটকে। আর রূপালী পর্দায় তার অভিষেক হয় পরিচালক এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমা দিয়ে। নায়ক চরিত্রে এই শিল্পী অভিনয় করেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’সহ বেশ কিছু ছবিতে। নায়ক হিসেবে তিনি তেমন দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেয়ে পার্শ্বঅভিনেতা হিসেবেই বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সেসূত্রে দেশীয় সিনেমায় তিনি অপরিহার্য শিল্পী হয়ে উঠেন। প্রযোজক, পরিচালক, কোটি দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। ‘মিন্টু আমার নাম’ ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘নয়নের আলো’ সিনেমায় তার অভিনয় আজো দর্শক হৃদয়ে দারুণভাবে গেঁথে রয়েছে। ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্র অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। এর বাইরেও বিভিন্ন সংগঠন থেকে এ অভিনেতা অসংখ্য পুরস্কারে সম্মানিত হন। সদা হাস্যময় বিনয়ী এই শিল্পী চাঁদপুরে এক কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তার শৈশব থেকে বেড়ে উঠা পুরান ঢাকার তাঁতী বাজারে। পুরান ঢাকার সনামধন্য স্কুল সেন্ট গ্রেগরী, পরবর্তীতে পগোজ স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। সদালাপী এই অভিনেতা দুর্দান্ত অভিনয় প্রতিভার অধিকারী। তার অভিনীত প্রতিটি চরিত্র অভিনয়ের যাদুতে জীবন্ত হয়ে উঠে। ব্যক্তি প্রবীর মিত্র হারিয়ে যায় অভিনীত চরিত্রে। ব্যক্তিজীবনে এই শিল্পীর স্ত্রী অজন্তা মিত্র ও এক মেয়ে তিন ছেলে। তার স্ত্রী প্রয়াত হয়েছেন ২০০০ সালে। তার জীবনে দুঃখজনক অধ্যায় তার ছোট ছেলে ২০১২ সালে মারা গেছেন। অভিনয় প্রতিভার বাইরেও খেলার জগতে তিনি তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। ষাটের দশকে তিনি প্রথম বিভাগে ক্রিকেট খেলেছেন। একই সময়ে তিনি প্রথম বিভাগে ফায়ার সার্ভিস ক্লাবের হয়ে হকি খেলেছেন। এছাড়া কামাল স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবলও খেলেছেন। গুণী এই শিল্পী প্রায় বছর তিনেক আগে ‘বৃদ্ধাশ্রম’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো ‘রঙীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা, ‘পুত্রবধূ’, ‘জয়পরাজয়’, ‘আবদার’, ‘সীমার’, ‘মেঘের পর মেঘ’, ‘মেঘলা আকাশ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘বেদের মেয়ে জোসনা’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’, ‘দহন’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’ প্রভৃতি।
তিনি বলেন, আজ আমি বড় একা। তেমন একটা খোঁজও নেয় না ইন্ডাস্ট্রির কেউ। মাঝেমধ্যে ভাবি, কাদের জন্য এত কাজ করেছি! এফডিসিতে যারা সবসময় আমার সঙ্গে ছিল আজ তারা সবাই ব্যস্ত। শারীরিক সুস্থতার জন্য সবার কাছে আশির্বাদ চাওয়া ছাড়া আমার কিছু বলার নেই। তবে কারো প্রতি আমার কোনো রাগ নেই। অবশ্য একটা কথা বলতে হয়, অনেক প্রযোজকের কাছে পারিশ্রমিকের টাকা বাকি থাকলেও তারা দিচ্ছে না। আর আমার দুঃখ একটাই যে, অভিনয়ের জন্য সব ছাড়তে পেরেছি আজ সেই অভিনয় করতে পারি না। এদিকে প্রবীর মিত্র এটাও জানান যে, তার কাছে অভিনয়ের নতুন নতুন প্রস্তাব আসে। কিন্তু তিনি বিনয়ের সঙ্গে সেসব ফিরিয়ে দেন। ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন যারা আসছে তাদের সম্পর্কে তিনি বলেন, নতুনদের মধ্যে অভিনয়ের প্রতি দরদ কম। তারা আসছে, অভিনয় করছে আবার চলেও যাচ্ছে। অভিনয়ে যদি টাকাটাই প্রধান হয়ে যায় তাহলে আর সেটা অভিনয় থাকে না। প্রবীর মিত্রের অভিনয়জীবন শুরু হয় পুরানো ঢাকায় ‘লালকুঠি গ্রুপ থিয়েটার’-এর মাধ্যমে। স্কুলে পড়াকালীন তার প্রথম অভিনয় করা হয় রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’ নাটকে। আর রূপালী পর্দায় তার অভিষেক হয় পরিচালক এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমা দিয়ে। নায়ক চরিত্রে এই শিল্পী অভিনয় করেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’সহ বেশ কিছু ছবিতে। নায়ক হিসেবে তিনি তেমন দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেয়ে পার্শ্বঅভিনেতা হিসেবেই বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সেসূত্রে দেশীয় সিনেমায় তিনি অপরিহার্য শিল্পী হয়ে উঠেন। প্রযোজক, পরিচালক, কোটি দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। ‘মিন্টু আমার নাম’ ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘নয়নের আলো’ সিনেমায় তার অভিনয় আজো দর্শক হৃদয়ে দারুণভাবে গেঁথে রয়েছে। ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্র অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। এর বাইরেও বিভিন্ন সংগঠন থেকে এ অভিনেতা অসংখ্য পুরস্কারে সম্মানিত হন। সদা হাস্যময় বিনয়ী এই শিল্পী চাঁদপুরে এক কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তার শৈশব থেকে বেড়ে উঠা পুরান ঢাকার তাঁতী বাজারে। পুরান ঢাকার সনামধন্য স্কুল সেন্ট গ্রেগরী, পরবর্তীতে পগোজ স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। সদালাপী এই অভিনেতা দুর্দান্ত অভিনয় প্রতিভার অধিকারী। তার অভিনীত প্রতিটি চরিত্র অভিনয়ের যাদুতে জীবন্ত হয়ে উঠে। ব্যক্তি প্রবীর মিত্র হারিয়ে যায় অভিনীত চরিত্রে। ব্যক্তিজীবনে এই শিল্পীর স্ত্রী অজন্তা মিত্র ও এক মেয়ে তিন ছেলে। তার স্ত্রী প্রয়াত হয়েছেন ২০০০ সালে। তার জীবনে দুঃখজনক অধ্যায় তার ছোট ছেলে ২০১২ সালে মারা গেছেন। অভিনয় প্রতিভার বাইরেও খেলার জগতে তিনি তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। ষাটের দশকে তিনি প্রথম বিভাগে ক্রিকেট খেলেছেন। একই সময়ে তিনি প্রথম বিভাগে ফায়ার সার্ভিস ক্লাবের হয়ে হকি খেলেছেন। এছাড়া কামাল স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবলও খেলেছেন। গুণী এই শিল্পী প্রায় বছর তিনেক আগে ‘বৃদ্ধাশ্রম’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো ‘রঙীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা, ‘পুত্রবধূ’, ‘জয়পরাজয়’, ‘আবদার’, ‘সীমার’, ‘মেঘের পর মেঘ’, ‘মেঘলা আকাশ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘বেদের মেয়ে জোসনা’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত’, ‘দহন’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’ প্রভৃতি।
No comments