টেন্ডারমুঘল শামীমের যত কাহিনী
গোলাম
কিবরিয়া (জিকে) শামীম। মধ্যবিত্ত এক স্কুল মাস্টারের ছেলে। ভাগ্য
পরিবর্তনে আশায় নারায়ণগঞ্জ থেকে চলে আসেন ঢাকায়। কায়দা-কানুন করে পেয়ে যান
যুবলীগের পদ-পদবি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তার। নিজের ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান জেকেবি এন্ড কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের নামে বড় বড় সব
প্রতিষ্ঠানের কাজ একাই বাগিয়ে নেন তিনি। আর দু’একটি কাজ দয়া-দাক্ষিণ্য করে
অন্য কাউকে ছেড়ে দিলেও নিজের হিস্যা ঠিকই বুঝে নিতেন। তাকে কমিশন দিয়েই
অন্যরা কাজ করার সুযোগ পেতেন। সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও কার্যালয়ের সব
টেন্ডারে তার ছিলো একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ।
শামীমের রাজ্যে যেনো টাকার বিকল্প কিছু নেই। তার সব কাজকর্ম টাকাকেই কেন্দ্র করে। অফিসে টাকা, বাসায় টাকা, ব্যাংকে টাকা। টাকা তার নিজ নামে, স্বজনদের নামে।
বর্তমানে ১৬টি বড় প্রতিষ্ঠানের কাজ শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেকেবি এন্ড কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের কব্জায়। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার কাজ করছে জেকেবি।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর আশকোনায় র্যাবের সদর দপ্তর, গাজীপুরের পোড়াবাড়িতে র্যাব ট্রেনিং সেন্টার, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবন, পঙ্গু হাসপাতাল, এনজিও ভবন, নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল, পাবলিক সার্ভিস কমিশন ভবন, বিজ্ঞান জাদুঘর, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবন, ক্যাবিনেট ভবন, বাসাবো বৌদ্ধমন্দির, পার্বত্য ভবন, মিরপুর-৬ নম্বরের স্টাফ কোয়ার্টার, সেবা মহাবিদ্যালয় এবং মহাখালী ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণের কাজ প্রতিষ্ঠানটি করছে।
শামীমের রাজ্যে যেনো টাকার বিকল্প কিছু নেই। তার সব কাজকর্ম টাকাকেই কেন্দ্র করে। অফিসে টাকা, বাসায় টাকা, ব্যাংকে টাকা। টাকা তার নিজ নামে, স্বজনদের নামে।
বর্তমানে ১৬টি বড় প্রতিষ্ঠানের কাজ শামীমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেকেবি এন্ড কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের কব্জায়। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার কাজ করছে জেকেবি।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর আশকোনায় র্যাবের সদর দপ্তর, গাজীপুরের পোড়াবাড়িতে র্যাব ট্রেনিং সেন্টার, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবন, পঙ্গু হাসপাতাল, এনজিও ভবন, নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল, পাবলিক সার্ভিস কমিশন ভবন, বিজ্ঞান জাদুঘর, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবন, ক্যাবিনেট ভবন, বাসাবো বৌদ্ধমন্দির, পার্বত্য ভবন, মিরপুর-৬ নম্বরের স্টাফ কোয়ার্টার, সেবা মহাবিদ্যালয় এবং মহাখালী ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণের কাজ প্রতিষ্ঠানটি করছে।
এর
মধ্যে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪০০ কোটি টাকার কাজ,
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ৪০০
কোটি টাকার কাজ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডাইজেস্টিভ, রিসার্চ এন্ড
হসপিটালে (মহাখালী ডাইজেস্টিভ) ২০০ কোটি টাকার কাজ, এজমা সেন্টারে ২০-২৫
কোটি টাকার কাজ। এছাড়া জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে
২০-২৫ কোটি টাকার কাজ, বাংলাদেশ সেবা মহাবিদ্যালয়ে ২০-২৫ কোটি টাকার কাজ,
গাজীপুর র্যাব ট্রেনিং স্কুলের ৫৫০ কোটি টাকার কাজ, বেইলি রোডে পার্বত্য
চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সের ৩০০ কোটি টাকার নির্মাণ কাজ, সচিবালয়ের ক্যাবিনেট
ভবণ নির্মাণে ১৫০ কোটি টাকার কাজ, এনবিআরের ৪০০ কোটি টাকার, ন্যাশনাল
ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের ১০০ কোটি টাকার কাজ, পিএসসিতে ১২ কোটি টাকার
কাজ ও এনজিও ফাউন্ডেশনে ৬৫ কোটি টাকার কাজ।
সরকারি
এসব কাজে সাধারণত: ইউজিপির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হলেও তাতে শামীমের
কোন সমস্যা ছিলো না। বরং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের অর্থ
দিয়ে ইউজিপিতেও প্রভাব খাটান।
অভিযোগ রয়েছে, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির
সমবায়বিষয়ক সম্পাদক পদ হাতিয়ে নেয়ার পর শামীমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান
জিকেবি এন্ড কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড ঠিকাদারি কাজের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
গণপূর্তেও আধিপত্য বিস্তার করেন জিকে শামীম। অধিংকাংশ কাজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে
পাইয়ে দেয়ার পাশাপাশি অন্য ঠিকাদাররা যে কাজ পেতেন সেখান থেকেও মোটা
অঙ্কের কমিশন নিতেন তিনি। এসব কিছুই করতেন যুবলীগের পরিচয় ব্যবহার করে।
যদিও যুবলীগ সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী দাবি করেছেন, যুবলীগে তার কোন পদ-পদবি
নেই।
এদিকে
গতকাল নিকেতনের ৫ নম্বর রোডের ১১৩ নম্বর রোডে বাসায় র্যাবের সদস্যরা
তল্লাশি শেষ করে শামীমের অফিস ১১৪ নম্বর বাড়িতে যান। ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলা ও
তৃতীয় তলায় শামীমের বিলাসবহুল অফিস। সেখানে অভিযান চালিয়ে নগদ ১ কোটি ৮০
লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার বিভিন্ন ব্যাংকের এফডিআর, ১টি রিভলবার, ৪ টি
বিদেশি মদের বোতল ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই উদ্ধার করা হয়। এ সময় শামীমসহ
তার ৭ দেহরক্ষীকে আটক করা হয়। র্যাব দেহরক্ষীর অস্ত্রগুলো জব্দ করে।
আটককৃত দেহরক্ষীরা হলেন, শহিদুল ইসলাম, মুরাদ, দেলোয়ার, জাহেদ, সায়েম,
আমিনুল ও কামাল।
অভিযান
শেষে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন
কাশেম সাংবাদিকদের জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সকাল থেকে আমরা
শামীমের বাসা ও অফিসে অভিযান শুরু করি। এ সময় শামীম ও তার সাত জন
দেহরক্ষীকে আটক করা হয়।
তিনি জানান, অভিযানে শামীমের অফিস থেকে তার একটি
অত্যাধুনিক অস্ত্র ও দেহরক্ষীদের সাতটি শটগান এবং নগদ এক কোটি আশি লাখ
টাকা, মোট ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআরের (১৪০ কোটি টাকার এফডিআর মায়ের নামে,
বাকি ২৫ কোটি টাকার এফডিআর শামীমের নামে) কাগজ ও বিদেশি মদের কয়েকটি বোতল
উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে।
আমরা সেসব তদন্ত করছি। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাকে আটক করা
হয়েছে। যেসব টাকাগুলো উদ্ধার হয়েছে সেগুলো বৈধ না অবৈধ এক প্রশ্নের উত্তরে
তিনি জানান, অবৈধভাবে টাকাগুলো আয় করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তদন্ত
প্রক্রিয়াধীন। তদন্ত শেষে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হবে।
বিলাসী জীবন ছিল জি কে শামীমের। তার চারপাশে থাকত ছয় দেহরক্ষী। তাদের হাতে শটগান। গায়ে থাকত বিশেষ পোষাক। দূর থেকেই দেখলেই মনে হত বিশেষ কেউ |
No comments