ক্যাসিনো ঘিরে অন্য সিন্ডিকেট by পিয়াস সরকার
মতিঝিল
থানার পেছনের এলাকাটি ক্যাসিনোপাড়া নামেই পরিচিতি। সূর্য অস্ত যাবার পরই
বদলে যেতো পাড়াটির চিত্র। আলোক ছটা ছড়িয়ে পড়তো এলাকায়। গুরুত্বপূর্ণ
ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে দেখা মিলতো দামি গাড়ির বহর। আবার এই ক্যাসিনো ঘিরে কাজ
করতো কয়েকটি গাড়ি কেনার সক্রিয় চক্র। ক্যাসিনোপাড়ায় গতকাল সরজমিন গিয়ে
দেখা যায়, তালা ঝুলছে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সামনে। আর একে ঘিরে উৎসুক
জনতার ভিড়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুর আমিন জয় এই এলাকার
একটি ছাত্রাবাসে থাকেন। তিনি বলেন, রাত নামলেই এলাকাটি পরিণত হতো আলোর
মেলায়। একদিন রাতে দেখি বাংলাদেশ জাতীয় দলের এক সাবেক ক্রিকেটারকে। এছাড়াও
বেশ কয়েকদিন দেখা মিলেছে অভিনেতাদেরও। আরেকজন বাসিন্দা বলেন, রীতিমতো এখানে
দামী গাড়ির ভিড়ে অবর্ণনীয় যানজটের সৃষ্টি হতো। এছাড়াও বিদেশিরাও আসতো
এখানে। সড়ক থেকে বেরিয়েই অস্থায়ী এক চায়ের দোকান। দোকানটি খোলা থাকে
সারারাত। রাতের বেলা দোকান সামলান ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, রাতে প্রচুর
পরিমাণে সিগারেট বিক্রি হয়। এছাড়াও বিক্রি হয় চা। বেশি বিক্রি হয় বেনসন
সিগারেট। এক প্যাকেটের দাম ২৬০ টাকা হলেও অনেকইে ৫শ’ টাকার নোট দিয়ে চলে
যেতো।
এই চা বিক্রেতা আরো জানান, প্রায়ই দেখতেন ক্যাসিনো থেকে হতাশ হয়ে বের হচ্ছেন অনেকে। তারা বিক্রি করে দিতেন তাদের মোটর সাইকেল, প্রাইভেট কার। আর মোবাইলফোন, হাতঘড়ি কারা কিনতো এসব পণ্য? তিনি বলেন, এখানে মোটর সাইকেল ও গাড়ি কেনার জন্য বেশ কয়েকজন লোক থাকে। তারা আশে পাশে অপেক্ষা করে। জুয়া খেলতে গিয়ে সব হারানো লোকেরা গাড়ি বিক্রি করে ফের জুয়া খেলতে যায়। আর ঘড়ি, চেইন বিক্রি করে তারা গাড়ি ভাড়া দিতো। মোটর সাইকেল বিক্রি প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা। আরেকজন চায়ের দোকানদার ইবাদত মিয়া বলেন, এসব মোটর সাইকেল বিক্রি হয় খুবই কম দামে। সপ্তাহখানেক আগে একটি নতুন এফ জেড এস মোটর সাইকেল বিক্রি হয় মাত্র ৪০ হাজার টাকায়। আর সেদিনই একটি পালসার বিক্রি হয় ৫০ হাজার টাকায়।
অরিত্র সাহা নামে একজন বলেন, মোড়ে মোড়ে অপেক্ষা করতে থাকে এসব লোক। আর মোবাইল ফোনের দাম ছিলো আরো সস্তা। আইফোন বিক্রি হয় মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায়।
এক ব্যক্তি বলেন, এই মোটর সাইকেল, গাড়িগুলো অল্প দামে কেনার সঙ্গে সঙ্গেই নিয়ে যাওয়া হয় মানিকনগরে। সেখানে যাবার সঙ্গে সঙ্গেই চেচিস নম্বর পরিবর্তন করে ফেলা হয়। এরপর নম্বর প্লেট খুলে ফেলে বিক্রি করা হয় মাসখানেক পর। এটি একটি সক্রিয় চক্র। তিনি ধারণা করেন এসব পণ্য কেনাবেচার সঙ্গে হয়তো জড়িত রয়েছে ক্যাসিনো কর্তৃপক্ষ।
আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌরভ মন্ডল। তার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো ক্যাসিনোতে যাবার। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি পার্ট টাইম চাকরী করেন একটি বায়িং হাউজের অনলাইনে। এই শিক্ষার্থী গিয়েছিলেন তার অফিসের এক উর্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে। সৌরভ বলেন, এসব মানুষ একসঙ্গে অনেক টাকা হারিয়ে বসেন। তারা একসঙ্গে খেলেন কয়েক লাখ থেকে কোটি টাকাও। সব হারিয়ে বেশ একটা ধাক্কার মুখে পড়েন। এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে শেষ চেষ্টা হিসেবে নিজের সর্বস্ব বিক্রি করে হলেও শেষ একটা সুযোগ খোঁজেন।
কেমন ছিলো তার ক্যাসিনোর অভিজ্ঞতা? তিনি বলেন, আমি গিয়েছিলাম গত মে মাসে। বনানী গোল্ডেন ক্লাবে। কলিগের সঙ্গে যাবার কারণে ছিলাম বেশ অস্বস্তিতে। যেকেউ চাইলে সেখানে ঢুকতে পারেনা। পরিচিত এবং রেফারেন্স থাকলেই ঢোকা সম্ভব হয়। ঢুকেই চোখে পড়ে বিভিন্ন আলোর ছটা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ব্রাণ্ডের মদ, বিয়ার, কোল্ড ড্রিংকস। আছে ইয়াবা ও সীসা। এছাড়াও মেলে বিচিত্র খাবার। থাই, চাইনিজ, বাঙ্গালী খাবার।
ভাই প্রথমে ১০ হাজার টাকার ২০টি চিপস কেনেন। চিপস বিক্রি করছিলেন বেশ স্মার্ট দু’জন তরুনী। ভাই ‘ইট রিচ’ ও ‘ত্রি কার্ড’ খেলেন। এই সময় লক্ষ্য করি সেখানে কোটি টাকার চিপস নিয়েও অনেকে খেলার আসরে বসেছেন। অধিকাংশ চিপস কেনেন এটিএম কার্ড দিয়ে। খেলার পাশাপাশি আড্ডাও দিচ্ছেলেন অনেকে। ছিলো অস্ত্রধারী নিরাপত্তাকর্মী। তিনটি বিশেষ স্থান আছে সেখানে। প্রথমটি বেশ বড়। এখানে সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকায় খেলা যায়। মধ্যমটিতে সর্বনিম্ন ১০ হাজার ও উচ্চ শ্রেণিরটা সম্ভবত ২৫ হাজার। তবে যেকেউ চাইলেই উচ্চ শ্রেণিরটিতে গিয়ে খেলতে পারেন না। আর খেলা চলাকালীন স্মার্ট কিছু তরুনী দিয়ে যেতেন কোল্ড ড্রিংকস।
এই চা বিক্রেতা আরো জানান, প্রায়ই দেখতেন ক্যাসিনো থেকে হতাশ হয়ে বের হচ্ছেন অনেকে। তারা বিক্রি করে দিতেন তাদের মোটর সাইকেল, প্রাইভেট কার। আর মোবাইলফোন, হাতঘড়ি কারা কিনতো এসব পণ্য? তিনি বলেন, এখানে মোটর সাইকেল ও গাড়ি কেনার জন্য বেশ কয়েকজন লোক থাকে। তারা আশে পাশে অপেক্ষা করে। জুয়া খেলতে গিয়ে সব হারানো লোকেরা গাড়ি বিক্রি করে ফের জুয়া খেলতে যায়। আর ঘড়ি, চেইন বিক্রি করে তারা গাড়ি ভাড়া দিতো। মোটর সাইকেল বিক্রি প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা। আরেকজন চায়ের দোকানদার ইবাদত মিয়া বলেন, এসব মোটর সাইকেল বিক্রি হয় খুবই কম দামে। সপ্তাহখানেক আগে একটি নতুন এফ জেড এস মোটর সাইকেল বিক্রি হয় মাত্র ৪০ হাজার টাকায়। আর সেদিনই একটি পালসার বিক্রি হয় ৫০ হাজার টাকায়।
অরিত্র সাহা নামে একজন বলেন, মোড়ে মোড়ে অপেক্ষা করতে থাকে এসব লোক। আর মোবাইল ফোনের দাম ছিলো আরো সস্তা। আইফোন বিক্রি হয় মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায়।
এক ব্যক্তি বলেন, এই মোটর সাইকেল, গাড়িগুলো অল্প দামে কেনার সঙ্গে সঙ্গেই নিয়ে যাওয়া হয় মানিকনগরে। সেখানে যাবার সঙ্গে সঙ্গেই চেচিস নম্বর পরিবর্তন করে ফেলা হয়। এরপর নম্বর প্লেট খুলে ফেলে বিক্রি করা হয় মাসখানেক পর। এটি একটি সক্রিয় চক্র। তিনি ধারণা করেন এসব পণ্য কেনাবেচার সঙ্গে হয়তো জড়িত রয়েছে ক্যাসিনো কর্তৃপক্ষ।
আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌরভ মন্ডল। তার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো ক্যাসিনোতে যাবার। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি পার্ট টাইম চাকরী করেন একটি বায়িং হাউজের অনলাইনে। এই শিক্ষার্থী গিয়েছিলেন তার অফিসের এক উর্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে। সৌরভ বলেন, এসব মানুষ একসঙ্গে অনেক টাকা হারিয়ে বসেন। তারা একসঙ্গে খেলেন কয়েক লাখ থেকে কোটি টাকাও। সব হারিয়ে বেশ একটা ধাক্কার মুখে পড়েন। এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে শেষ চেষ্টা হিসেবে নিজের সর্বস্ব বিক্রি করে হলেও শেষ একটা সুযোগ খোঁজেন।
কেমন ছিলো তার ক্যাসিনোর অভিজ্ঞতা? তিনি বলেন, আমি গিয়েছিলাম গত মে মাসে। বনানী গোল্ডেন ক্লাবে। কলিগের সঙ্গে যাবার কারণে ছিলাম বেশ অস্বস্তিতে। যেকেউ চাইলে সেখানে ঢুকতে পারেনা। পরিচিত এবং রেফারেন্স থাকলেই ঢোকা সম্ভব হয়। ঢুকেই চোখে পড়ে বিভিন্ন আলোর ছটা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ব্রাণ্ডের মদ, বিয়ার, কোল্ড ড্রিংকস। আছে ইয়াবা ও সীসা। এছাড়াও মেলে বিচিত্র খাবার। থাই, চাইনিজ, বাঙ্গালী খাবার।
ভাই প্রথমে ১০ হাজার টাকার ২০টি চিপস কেনেন। চিপস বিক্রি করছিলেন বেশ স্মার্ট দু’জন তরুনী। ভাই ‘ইট রিচ’ ও ‘ত্রি কার্ড’ খেলেন। এই সময় লক্ষ্য করি সেখানে কোটি টাকার চিপস নিয়েও অনেকে খেলার আসরে বসেছেন। অধিকাংশ চিপস কেনেন এটিএম কার্ড দিয়ে। খেলার পাশাপাশি আড্ডাও দিচ্ছেলেন অনেকে। ছিলো অস্ত্রধারী নিরাপত্তাকর্মী। তিনটি বিশেষ স্থান আছে সেখানে। প্রথমটি বেশ বড়। এখানে সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকায় খেলা যায়। মধ্যমটিতে সর্বনিম্ন ১০ হাজার ও উচ্চ শ্রেণিরটা সম্ভবত ২৫ হাজার। তবে যেকেউ চাইলেই উচ্চ শ্রেণিরটিতে গিয়ে খেলতে পারেন না। আর খেলা চলাকালীন স্মার্ট কিছু তরুনী দিয়ে যেতেন কোল্ড ড্রিংকস।
No comments