ভিআইপিদেরও হার মানিয়েছে ‘শামীম স্টাইল’ by মারুফ কিবরিয়া
সামনে
পেছনে অস্ত্রধারী দেহরক্ষী। মোটরসাইকেলে চেপে সাইরেন বাজাতেন সেই
দেহরক্ষীরা। একাধিক গাড়িতে থাকতো একদল ক্যাডার। পেছনে দামি গাড়িতে থাকতেন
শামীম। একেক দিন ব্যবহার করতেন একেক গাড়ি। গাড়িবহর আসার আগেই ফাঁকা করা হতো
সড়ক। এটি টেন্ডার মোঘল জি কে শামীমের চলাফেরার স্টাইল। তার এ স্টাইল
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অনেকের প্রটোকলকে হার মানিয়েছে। রাজধানীর নিকেতনের
কার্যালয়ে আসা যাওয়ার সময় ভবনের আশপাশ দিয়ে কাউকে চলাচল করতে দিতেন না তার
দেহরক্ষীরা। জি কে শামীম স্থান ত্যাগ করার পর সবার জন্য রাস্তা উম্মুক্ত
হতো। জি কে শামীমের এমন প্রটোকল দেখে বিস্মিত হতেন অনেকে। একই সঙ্গে
বিরক্তির ব্যাপারও হয়ে উঠত অনেকের কাছে। তবে কেউ ভয়ে মুখ খুলেননি। শামীম
উচ্চতায় ছোটখাটো। ৫ ফুটের সামান্য বেশি। মাথায় চুল নেই বললেই চলে। দেখতে
সাদামাটা মনে হলেও জীবনযাত্রা ছিল বিলাসী। রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো,
মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত যুবলীগের এই
নেতাকে শুক্রবার আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। নিকেতনের যে
কার্যালয় থেকে শামীম র্যাবের হাতে ধরা পড়েন সেটি পুরোটাই আবাসিক এলাকা।
আবাসিক ভবনগুলো সবকটিই ৫ থেকে ৭ তলা। এবং প্রতিটিই একটির সঙ্গে আরেকটি
ঘেঁষা।
শুধু জি কে শামীমের ব্যবসায়িক ভবনটি (জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড) চার তলা। এই ভবনের অফিসে কখনো সকালে, কখনও দুপুরে এমনকি গভীর রাতেও আসতেন জি কে শামীম। সকাল, দুপুর, বিকাল বা রাত যখনই শামীম নিকেতনে প্রবেশ করতেন তা টের পেয়ে যেতেন আশপাশের সবাই। তার পাহারায় সবসময় তিনটি মোটরসাইকেলে ৬ জন দেহরক্ষী থাকতেন। শামীমের গাড়ির সঙ্গে থাকতো আরও দুটি কালো রঙের জিপ গাড়ি। এ দুই গাড়িতে থাকতো তার ক্যাডাররা। সাইরেন বাজাতে বাজাতে রাস্তা দিয়ে গাড়িবহরসহ এগিয়ে যেতেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে যতক্ষণ শামীম স্থান ত্যাগ না করতেন ততক্ষণ কারো গাড়ি নামতে পারতো না। যুবলীগের এই নেতার ব্যবসায়িক কার্যালয়ের পাশের এক ভবনের নিরাপত্তারক্ষী বলেন, শামীম সাহেবের চালাচল ছিল পুরো রাজকীয়। মন্ত্রীদের মতো। মন্ত্রীরা আসা যাওয়ার সময় যেমন চারপাশ খালি করে দেয়া হয় তেমনি তার অফিসে প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার সময় এমন হতো। তার সাথে সবসময় ছয়জন বডিগার্ড থাকতো। তাদের হাতে অস্ত্র থাকতো। এ ছাড়া তার আগে-পিছে কালো রঙের আরও দুটি দামি জিপ গাড়ি থাকতো।
এই নিরাপত্তাকর্মী আরো বলেন, আমি গত ছয়মাস হইছে এখানে এসেছি। শামীম সাহেবের আসা যাওয়া দেখে অনেকে অবাক হয়ে যেতেন। সবাই মনে করতেন কোনো মন্ত্রী আসতেছে। আশাপাশের অনেক মানুষ বিরক্ত হতো। কেউ জরুরি কাজে বের হবে। কিন্তু তার (শামীম) জন্য আটকে থাকতে হতো। অফিসের সামনে তার গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রসহ দেহরক্ষীরা তার চারদিকে ঘিরে রাখতো। আর মন্ত্রীদের স্টাইলে গাড়ি থেকে নামতেন শামীম সাহেব। আশপাশের বাড়ির কারো গাড়ি বের করা হলে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হতো। জি কে শামীমের অফিসের পাশের সড়কের আরেকটি ভবনের নিরাপত্তা কর্র্মী ইউসুফ হোসেন বলেন, এই বাড়িতে আমি তিন বছর থেকে কাজ করছি। যতদূর জানি আগে ওই বাসাটা খান সাহেব নামের একজনের ছিল। বছর খানেক আগে খান সাহেবের কাছ থেকে শামীম বাড়িটা কিনছে। শামীম সাহেব বাড়িটা কেনার পর সবসময় এই জায়গাটা জমজমাট থাকে। প্রতিদিনই তিনি এখানে আসেন গাড়িতে সাইরেন বাজিয়ে। দেহরক্ষীদের পাশাপাশি পুলিশের গাড়িও থাকতো। তার চলাচল দেখে মনে হতো মন্ত্রী এমপিদের আসা যাওয়া চলছে। অনেক সময় গভীর রাতেও গাড়ির সাইরেন বাজতো। কিন্তু অফিসের ভেতরে কি কাজ চলতো আমি জানি না। সালাউদ্দিন নামের এক বাসিন্দা বলেন, আমি একটি বায়িং হাউজে চাকরি করি। অনেক সময় রাত হয় ফিরতে। রাতে অনেক সময় অফিস থেকে ফেরার সময় দেখি কয়েকটি বাইকার সাইরেন বাজাচ্ছেন। প্রথমে মনে করতাম পুলিশ সিভিল ড্রেসে কোনো কাজে আসে। পরে জানতে পারলাম যুবলীগের এক নেতা যার নাম জি কে শামীম। ওই ভবন কিনে সেখানে অফিস দিয়েছে।
এদিকে বিপুল অংকের নগদ টাকা, চেক, অস্ত্র ও মদসহ র্যাবের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের অফিস ভবনে গিয়ে দেখা যায় পুরনো কোনো লোক নেই। গ্রেপ্তারের পর থেকে বাড়িটি সম্পূর্ণ ফাঁকা। এমনকি রাতারাতি নিরাপত্তাকর্মীও বদলে যায়। শুক্রবার গ্রেপ্তারের পর গতকাল দিনভর বাড়িটি ঘিরেও মানুষের কৌতুহলেরও শেষ ছিল না। ‘টাকার খনি’ আখ্যা পাওয়া রাজধানীর নিকেতনের শামীমের ওই ভবনটি দেখতে আসা যাওয়ার পথে ঢুঁ মারতে দেখা যায় অনেককে। ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে দুই ব্যক্তি জানান, ভেতরে কেউ নেই। একজন বেরিয়ে এসে বলেন, আমরা নতুন আসছি। আজকে সকাল থেকেই কাজ করছি। এখানে আগে কে ছিল কারা ছিল কিছুই জানি না।
শুধু জি কে শামীমের ব্যবসায়িক ভবনটি (জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড) চার তলা। এই ভবনের অফিসে কখনো সকালে, কখনও দুপুরে এমনকি গভীর রাতেও আসতেন জি কে শামীম। সকাল, দুপুর, বিকাল বা রাত যখনই শামীম নিকেতনে প্রবেশ করতেন তা টের পেয়ে যেতেন আশপাশের সবাই। তার পাহারায় সবসময় তিনটি মোটরসাইকেলে ৬ জন দেহরক্ষী থাকতেন। শামীমের গাড়ির সঙ্গে থাকতো আরও দুটি কালো রঙের জিপ গাড়ি। এ দুই গাড়িতে থাকতো তার ক্যাডাররা। সাইরেন বাজাতে বাজাতে রাস্তা দিয়ে গাড়িবহরসহ এগিয়ে যেতেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে যতক্ষণ শামীম স্থান ত্যাগ না করতেন ততক্ষণ কারো গাড়ি নামতে পারতো না। যুবলীগের এই নেতার ব্যবসায়িক কার্যালয়ের পাশের এক ভবনের নিরাপত্তারক্ষী বলেন, শামীম সাহেবের চালাচল ছিল পুরো রাজকীয়। মন্ত্রীদের মতো। মন্ত্রীরা আসা যাওয়ার সময় যেমন চারপাশ খালি করে দেয়া হয় তেমনি তার অফিসে প্রবেশ ও বাইরে যাওয়ার সময় এমন হতো। তার সাথে সবসময় ছয়জন বডিগার্ড থাকতো। তাদের হাতে অস্ত্র থাকতো। এ ছাড়া তার আগে-পিছে কালো রঙের আরও দুটি দামি জিপ গাড়ি থাকতো।
এই নিরাপত্তাকর্মী আরো বলেন, আমি গত ছয়মাস হইছে এখানে এসেছি। শামীম সাহেবের আসা যাওয়া দেখে অনেকে অবাক হয়ে যেতেন। সবাই মনে করতেন কোনো মন্ত্রী আসতেছে। আশাপাশের অনেক মানুষ বিরক্ত হতো। কেউ জরুরি কাজে বের হবে। কিন্তু তার (শামীম) জন্য আটকে থাকতে হতো। অফিসের সামনে তার গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রসহ দেহরক্ষীরা তার চারদিকে ঘিরে রাখতো। আর মন্ত্রীদের স্টাইলে গাড়ি থেকে নামতেন শামীম সাহেব। আশপাশের বাড়ির কারো গাড়ি বের করা হলে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হতো। জি কে শামীমের অফিসের পাশের সড়কের আরেকটি ভবনের নিরাপত্তা কর্র্মী ইউসুফ হোসেন বলেন, এই বাড়িতে আমি তিন বছর থেকে কাজ করছি। যতদূর জানি আগে ওই বাসাটা খান সাহেব নামের একজনের ছিল। বছর খানেক আগে খান সাহেবের কাছ থেকে শামীম বাড়িটা কিনছে। শামীম সাহেব বাড়িটা কেনার পর সবসময় এই জায়গাটা জমজমাট থাকে। প্রতিদিনই তিনি এখানে আসেন গাড়িতে সাইরেন বাজিয়ে। দেহরক্ষীদের পাশাপাশি পুলিশের গাড়িও থাকতো। তার চলাচল দেখে মনে হতো মন্ত্রী এমপিদের আসা যাওয়া চলছে। অনেক সময় গভীর রাতেও গাড়ির সাইরেন বাজতো। কিন্তু অফিসের ভেতরে কি কাজ চলতো আমি জানি না। সালাউদ্দিন নামের এক বাসিন্দা বলেন, আমি একটি বায়িং হাউজে চাকরি করি। অনেক সময় রাত হয় ফিরতে। রাতে অনেক সময় অফিস থেকে ফেরার সময় দেখি কয়েকটি বাইকার সাইরেন বাজাচ্ছেন। প্রথমে মনে করতাম পুলিশ সিভিল ড্রেসে কোনো কাজে আসে। পরে জানতে পারলাম যুবলীগের এক নেতা যার নাম জি কে শামীম। ওই ভবন কিনে সেখানে অফিস দিয়েছে।
এদিকে বিপুল অংকের নগদ টাকা, চেক, অস্ত্র ও মদসহ র্যাবের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের অফিস ভবনে গিয়ে দেখা যায় পুরনো কোনো লোক নেই। গ্রেপ্তারের পর থেকে বাড়িটি সম্পূর্ণ ফাঁকা। এমনকি রাতারাতি নিরাপত্তাকর্মীও বদলে যায়। শুক্রবার গ্রেপ্তারের পর গতকাল দিনভর বাড়িটি ঘিরেও মানুষের কৌতুহলেরও শেষ ছিল না। ‘টাকার খনি’ আখ্যা পাওয়া রাজধানীর নিকেতনের শামীমের ওই ভবনটি দেখতে আসা যাওয়ার পথে ঢুঁ মারতে দেখা যায় অনেককে। ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে দুই ব্যক্তি জানান, ভেতরে কেউ নেই। একজন বেরিয়ে এসে বলেন, আমরা নতুন আসছি। আজকে সকাল থেকেই কাজ করছি। এখানে আগে কে ছিল কারা ছিল কিছুই জানি না।
No comments