চাকরির ফাঁদ: যা হচ্ছে চট্টগ্রামে by ইব্রাহিম খলিল
চাকরির
প্রলোভনে পড়ে চট্টগ্রাম শহরে এসে মুখোমুখি হচ্ছে জীবনের এক নিদারুণ
গল্পের। যার নাম পতিতাবৃত্তি। গত এক সপ্তাহে এমন ৭ কিশোরীকে উদ্ধার করেছে
চট্টগ্রাম মহানগরীর তিন থানার পুলিশ। যারা শুনিয়েছেন, চাকরি নামক সোনার
হরিণের পেছনে ছুটতে গিয়ে নিজের জীবনকে কীভাবে চরম দুর্দশায় ঠেলে দিয়েছে তার
লোমহর্ষক বর্ণনা।
গত ২১শে জুন শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজার এলাকার দুবাইওয়ালা কলোনির একটি বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরী দিয়েছেন ঘোর অন্ধকার জীবনের বর্ণনা। তাদের দেয়া বর্ণনা থেকে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, গার্মেন্টসে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে আবদুর রহিম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি পাঁচ-ছয় দিন আগে চট্টগ্রাম শহরে এনে বাসায় জোরপূর্বক আটকে রেখে দেহব্যবসা করতে বাধ্য করে তাদের।
দুই কিশোরীর বাড়ি চন্দনাইশ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল বরকল এলাকায়। তারা পরস্পর চাচাতো বোন।
গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি দেয়ার কথা বলায় পূর্ব পরিচিত আবদুর রহিমের সঙ্গে চট্টগ্রাম শহরে আসে তারা। এরপর রহিম নিজে দুই কিশোরীকে আলাদাভাবে ধর্ষণ করে। এরপর দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে।
পুলিশ খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে দুই কিশোরীকে উদ্ধার ও আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার দেহ তল্লাশি করে ৫১ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেটও উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহিম স্বীকার করে দুই তরুণীকে ইয়াবা সেবন করিয়ে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করে সে।
এ ঘটনায় বাকলিয়া থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে নিয়মিত মামলা করা হয়। শনিবার সকালে ভুক্তভোগী নারীরা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আবদুর রহিম হাটহাজারী উপজেলার মিরেরখিলের আবুল কাশেমের ছেলে বলে জানান ওসি।
গত ২০শে জুন বৃহসপতিবার পতেঙ্গা থানার মোজাফ্ফর ভবন থেকে উদ্ধার করা হয় দুই তরুণীকে। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও বাগেরহাটের বাসিন্দা। ওই ঘটনায় নারীসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গার্মেন্টসে চাকরির দেয়ার কথা বলে ওই দুই তরুণীকেও চট্টগ্রাম শহরে এনে বাসায় আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়।
পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে চক্রটির লোকজন দীর্ঘদিন ধরে তরুণীদের পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করাতো। এ ঘটনায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ই জুন রাতে বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজারের আলেক্কা রোড নূর বেগম আবাসনের একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে এক কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। চাকরি দেয়ার কথা বলে মহেশখালী থেকে ওই কিশোরীকে শহরে এনেছিল চক্রটির নারী সদস্য জাহানারা বেগম। পরে তাকে আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়।
গত ১৪ই জুন শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানার কাপাসগোলার একটি বাসায় দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার সময় কান্না শুনতে পেয়ে দুই নারীকে উদ্ধার করে জুমার নামাজ শেষে বাসায় ফেরা মুসল্লিরা। সেই সঙ্গে দেহ ব্যবসা পরিচালনার মূল হোতা শেলী আক্তার (২৮), আবু কায়সার জাহাঙ্গীর বাবু (৩২) ও খদ্দের মো. হৃদয় (১৮) কে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
পরে আদালতে ভুক্তভোগী দুই নারী জবানবন্দিতে বলেন, শেলী ও জাহাঙ্গীর বাবুসহ তাদের চক্রের অধীনে নগরীর চকবাজার, দুই নাম্বার গেইট ও খুলশী এলাকায় তিনটি বাসা আছে। এসব বাসায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকরির প্রলোভনে নারীদের ফুসলিয়ে বা ফাঁদে ফেলে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাদেরকে বন্দি করে রেখে, মারধর করে দেহব্যবসায় বাধ্য করা হয়।
পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, চট্টগ্রাম মহানগরীর অভিজাত এলাকা খুলশী, চান্দগাঁও, হালিশহর, বাকলিয়া ও কোতোয়ালি থানা এলাকায় বাসাবাড়িতে কিশোরীদের আটকে রেখে দেহ ব্যবসা করানোর তথ্য রয়েছে। তথ্য মোতাবেক পুলিশের অভিযানে অনেক কিশোরীকে উদ্ধার ও দেহ ব্যবসা পরিচালনাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব স্থানে পতিতাবৃত্তির পাশাপাশি ইয়াবা সেবন ও বিক্রি হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ- কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, গ্রামাঞ্চল থেকে সহজ সরল কিশোরীদের চাকরি দেয়ার প্রলোভনে এনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার বাসায় আটকে রেখে দেহ ব্যবসা চালানোর একাধিক চক্র সক্রিয় রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর রয়েছে।
গত ২১শে জুন শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজার এলাকার দুবাইওয়ালা কলোনির একটি বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরী দিয়েছেন ঘোর অন্ধকার জীবনের বর্ণনা। তাদের দেয়া বর্ণনা থেকে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, গার্মেন্টসে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দিয়ে আবদুর রহিম (৩৫) নামের এক ব্যক্তি পাঁচ-ছয় দিন আগে চট্টগ্রাম শহরে এনে বাসায় জোরপূর্বক আটকে রেখে দেহব্যবসা করতে বাধ্য করে তাদের।
দুই কিশোরীর বাড়ি চন্দনাইশ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল বরকল এলাকায়। তারা পরস্পর চাচাতো বোন।
গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি দেয়ার কথা বলায় পূর্ব পরিচিত আবদুর রহিমের সঙ্গে চট্টগ্রাম শহরে আসে তারা। এরপর রহিম নিজে দুই কিশোরীকে আলাদাভাবে ধর্ষণ করে। এরপর দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে।
পুলিশ খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে দুই কিশোরীকে উদ্ধার ও আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার দেহ তল্লাশি করে ৫১ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেটও উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহিম স্বীকার করে দুই তরুণীকে ইয়াবা সেবন করিয়ে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করে সে।
এ ঘটনায় বাকলিয়া থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে নিয়মিত মামলা করা হয়। শনিবার সকালে ভুক্তভোগী নারীরা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আবদুর রহিম হাটহাজারী উপজেলার মিরেরখিলের আবুল কাশেমের ছেলে বলে জানান ওসি।
গত ২০শে জুন বৃহসপতিবার পতেঙ্গা থানার মোজাফ্ফর ভবন থেকে উদ্ধার করা হয় দুই তরুণীকে। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও বাগেরহাটের বাসিন্দা। ওই ঘটনায় নারীসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গার্মেন্টসে চাকরির দেয়ার কথা বলে ওই দুই তরুণীকেও চট্টগ্রাম শহরে এনে বাসায় আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়।
পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে চক্রটির লোকজন দীর্ঘদিন ধরে তরুণীদের পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করাতো। এ ঘটনায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ই জুন রাতে বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজারের আলেক্কা রোড নূর বেগম আবাসনের একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে এক কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। চাকরি দেয়ার কথা বলে মহেশখালী থেকে ওই কিশোরীকে শহরে এনেছিল চক্রটির নারী সদস্য জাহানারা বেগম। পরে তাকে আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়।
গত ১৪ই জুন শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানার কাপাসগোলার একটি বাসায় দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার সময় কান্না শুনতে পেয়ে দুই নারীকে উদ্ধার করে জুমার নামাজ শেষে বাসায় ফেরা মুসল্লিরা। সেই সঙ্গে দেহ ব্যবসা পরিচালনার মূল হোতা শেলী আক্তার (২৮), আবু কায়সার জাহাঙ্গীর বাবু (৩২) ও খদ্দের মো. হৃদয় (১৮) কে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
পরে আদালতে ভুক্তভোগী দুই নারী জবানবন্দিতে বলেন, শেলী ও জাহাঙ্গীর বাবুসহ তাদের চক্রের অধীনে নগরীর চকবাজার, দুই নাম্বার গেইট ও খুলশী এলাকায় তিনটি বাসা আছে। এসব বাসায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকরির প্রলোভনে নারীদের ফুসলিয়ে বা ফাঁদে ফেলে নিয়ে আসা হয়। এরপর তাদেরকে বন্দি করে রেখে, মারধর করে দেহব্যবসায় বাধ্য করা হয়।
পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, চট্টগ্রাম মহানগরীর অভিজাত এলাকা খুলশী, চান্দগাঁও, হালিশহর, বাকলিয়া ও কোতোয়ালি থানা এলাকায় বাসাবাড়িতে কিশোরীদের আটকে রেখে দেহ ব্যবসা করানোর তথ্য রয়েছে। তথ্য মোতাবেক পুলিশের অভিযানে অনেক কিশোরীকে উদ্ধার ও দেহ ব্যবসা পরিচালনাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব স্থানে পতিতাবৃত্তির পাশাপাশি ইয়াবা সেবন ও বিক্রি হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ- কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, গ্রামাঞ্চল থেকে সহজ সরল কিশোরীদের চাকরি দেয়ার প্রলোভনে এনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার বাসায় আটকে রেখে দেহ ব্যবসা চালানোর একাধিক চক্র সক্রিয় রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর রয়েছে।
No comments