শিবগঞ্জে সোয়াতের ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী শিবনগর গ্রামের জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু করেছে সোয়াত। ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ নাম দিয়ে সোয়াতের এ অভিযান শুরু হয় বুধবার সন্ধ্যা পোনে ৭টায়। আস্তানাটির দেয়াল ভেঙে অভিযান শুরু করে সোয়াত। ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে শিবগঞ্জ পৌঁছেই সোয়াত সদস্যরা অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করেন। এরই অংশ হিসেবে এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। রাতে অভিযান চালানোর জন্য জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে অভিযান শুরুর পর ওই এলাকায় গুলির মুহুর্মুহু শব্দ শোনা যায়। একবার বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া গেছে। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এডিসি আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, সোয়াত সদস্যরা অভিযান শুরু করেছেন। একতলা বাড়ির ভেতরে নারী ও শিশুসহ চারজন সদস্য আছেন বলে তাদের ধারণা। জেলা পুলিশ সুপার মুজাহিদুল ইসলাম জানান, অপারেশনের নাম দেয়া হয়েছে ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’। রাত সাড়ে ৮টায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের (বুধবার) জন্য অপারেশন স্থগিত করা হয়েছে। কাল (আজ) অভিযান ফের শুরু হবে।’ আবু (৩০) নামের এক ব্যক্তি তার স্ত্রী-সন্তানসহ আস্তানায় অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন বাড়ির মালিকের ছেলে ও আবুর মা। আবুর স্ত্রী-সন্তান ছাড়াও বাড়িতে আরও দু’জন থাকতে পারেন বলে পুলিশের ধারণা। এর আগে আবুকে আত্মসমর্পণের জন্য তার মা ও পরিবারের সদস্যদের ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিকালে আবুর চাচি চামেলি বেগম, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রুনা বেগমকে নিয়ে তার মা ওই বাড়ির দরজার সামনে পর্যন্ত যান। এ সময় মাইকে তারা আবুকে বাড়ির বাইরে বের হয়ে আসার আহ্বান জানান। বেশ কয়েকবার আহ্বান জানানোর পরও ভেতর থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তাদের সঙ্গে পুলিশ ছিল।
সকাল থেকে বাড়ি ঘেরাও : সকাল থেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের বাড়িটি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে ফেলেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। কাউন্টার টেরোরিজমের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, শিবনগর এলাকায় সাইদুর রহমান জেন্টু হাজী নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টার দিকে ওই বাড়ি থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয় বলে ডিবি ইন্সপেক্টর সারওয়ার রহমান জানান। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে এর জবাব দেয়। বাড়িটিতে রফিকুল আলম আবু নামে এক জঙ্গি তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন। প্রাথমিক তথ্যে জানা যায়, বাড়িতে মোট চারজন সদস্য অবস্থান করছেন। মাইকে তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ সকাল থেকে বাড়ির চারপাশে অবস্থান নেয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে মাঝে মধ্যে গুলির শব্দ শোনা যায়। অভিযানের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় দুপুর থেকেই। শিবগঞ্জ ও নাচোল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা হয়। ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরোরিজম ও সোয়াত সদস্যরা হেলিকপ্টারে উপজেলার শিবগঞ্জ স্টেডিয়ামে নেমে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে ছুটে যান এবং বিকাল সাড়ে ৪টার পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান।
১৪৪ ধারা জারি : শিবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে শিবনগর ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ এলাকায় যানবাহন, ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা নিয়ে চলাচল নিষিদ্ধ করে মাইকিং করা হয়। পুলিশের রাজশাহী বিভাগীয় এডিশনাল ডিআইজি ইসরুল আরেফিনসহ প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। অভিযান সফলভাবে সমাপ্তি এবং অহেতুক মানুষের জটলা এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সাংবাদিকদেরও নির্দিষ্ট এরিয়ার বাইরে থাকতে বলা হয়েছে। জানা যায়, বাড়ির মালিক ৭৫ বছর বয়সী সাইদুর রহমান ওরফে জেন্টু বিশ্বাস মাস তিনেক আগে একই এলাকার আফসার আলীর ছেলে আবুর কাছে বাসাটি ভাড়া দেন। আবু স্থানীয় বাজারে মসলা বিক্রি করেন। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানোর পর পুলিশ গত শুক্র ও শনিবার ঝিনাইদহের একটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চালিয়ে ‘বিপুল বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম’ উদ্ধার করে। এরপর মঙ্গলবার দিনভর রাজশাহীর একটি এলাকায় ব্লকরেইড দিয়ে কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে সেখানে কোনো জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পায়নি পুলিশ।
কে এই আবু? : শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামে জঙ্গি আস্তানায় থাকা আবুর সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ ছিল না বলে জানিয়েছেন তার মা ফুলসানা বেগম (৫০)। ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে আবুর বাবা আফসার আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আবুর মা অসুস্থ হয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন। তিনি জানান, ৮ বছর আগে শিবগঞ্জ উপজেলার আব্বাস বাজার এলাকার রুহুল আমিনের মেয়ে সুমাইয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় আবুর। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই তিনি শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। আবুর দুই মেয়ে। বাবা-মায়ের সঙ্গে আবুর খুব বেশি যোগাযোগ নেই, তবে মাঝে মধ্যে আসতেন। এদিকে আবুর বাবার বাড়ির পাশের কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, আবু শ্বশুরবাড়ি ও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে ঈদ উদ্যাপন করতেন। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে আবুর মতপার্থক্য ছিল। শ্বশুরবাড়ি গিয়েই আবু এসব আলাদা রীতিনীতি গ্রহণ করেন। তার বাবা এ নিয়ে তাকে অনেক বুঝিয়েছেন কিন্তু তিনি এসব ছাড়েননি। আবু পেশায় একজন মসলা বিক্রেতা। তিনি হাটবাজারে পাটি বিছিয়ে মসলা বিক্রি করতেন।
সকাল থেকে বাড়ি ঘেরাও : সকাল থেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের বাড়িটি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে ফেলেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। কাউন্টার টেরোরিজমের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, শিবনগর এলাকায় সাইদুর রহমান জেন্টু হাজী নামে এক ব্যক্তির বাড়ি ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টার দিকে ওই বাড়ি থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয় বলে ডিবি ইন্সপেক্টর সারওয়ার রহমান জানান। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে এর জবাব দেয়। বাড়িটিতে রফিকুল আলম আবু নামে এক জঙ্গি তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন। প্রাথমিক তথ্যে জানা যায়, বাড়িতে মোট চারজন সদস্য অবস্থান করছেন। মাইকে তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আশপাশের বাড়ির লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ সকাল থেকে বাড়ির চারপাশে অবস্থান নেয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে মাঝে মধ্যে গুলির শব্দ শোনা যায়। অভিযানের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় দুপুর থেকেই। শিবগঞ্জ ও নাচোল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা হয়। ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরোরিজম ও সোয়াত সদস্যরা হেলিকপ্টারে উপজেলার শিবগঞ্জ স্টেডিয়ামে নেমে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে ছুটে যান এবং বিকাল সাড়ে ৪টার পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান।
১৪৪ ধারা জারি : শিবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে শিবনগর ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ এলাকায় যানবাহন, ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা নিয়ে চলাচল নিষিদ্ধ করে মাইকিং করা হয়। পুলিশের রাজশাহী বিভাগীয় এডিশনাল ডিআইজি ইসরুল আরেফিনসহ প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। অভিযান সফলভাবে সমাপ্তি এবং অহেতুক মানুষের জটলা এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সাংবাদিকদেরও নির্দিষ্ট এরিয়ার বাইরে থাকতে বলা হয়েছে। জানা যায়, বাড়ির মালিক ৭৫ বছর বয়সী সাইদুর রহমান ওরফে জেন্টু বিশ্বাস মাস তিনেক আগে একই এলাকার আফসার আলীর ছেলে আবুর কাছে বাসাটি ভাড়া দেন। আবু স্থানীয় বাজারে মসলা বিক্রি করেন। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানোর পর পুলিশ গত শুক্র ও শনিবার ঝিনাইদহের একটি বাড়ি ঘিরে অভিযান চালিয়ে ‘বিপুল বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম’ উদ্ধার করে। এরপর মঙ্গলবার দিনভর রাজশাহীর একটি এলাকায় ব্লকরেইড দিয়ে কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে সেখানে কোনো জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পায়নি পুলিশ।
কে এই আবু? : শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামে জঙ্গি আস্তানায় থাকা আবুর সঙ্গে তার পরিবারের যোগাযোগ ছিল না বলে জানিয়েছেন তার মা ফুলসানা বেগম (৫০)। ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে আবুর বাবা আফসার আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আবুর মা অসুস্থ হয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন। তিনি জানান, ৮ বছর আগে শিবগঞ্জ উপজেলার আব্বাস বাজার এলাকার রুহুল আমিনের মেয়ে সুমাইয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় আবুর। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই তিনি শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। আবুর দুই মেয়ে। বাবা-মায়ের সঙ্গে আবুর খুব বেশি যোগাযোগ নেই, তবে মাঝে মধ্যে আসতেন। এদিকে আবুর বাবার বাড়ির পাশের কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, আবু শ্বশুরবাড়ি ও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে ঈদ উদ্যাপন করতেন। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে আবুর মতপার্থক্য ছিল। শ্বশুরবাড়ি গিয়েই আবু এসব আলাদা রীতিনীতি গ্রহণ করেন। তার বাবা এ নিয়ে তাকে অনেক বুঝিয়েছেন কিন্তু তিনি এসব ছাড়েননি। আবু পেশায় একজন মসলা বিক্রেতা। তিনি হাটবাজারে পাটি বিছিয়ে মসলা বিক্রি করতেন।
তিনি বাড়ির কাছের চাতরা ফাজিল মাদ্রাসায় দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন বলে জানান প্রতিবেশীরা। স্থানীয়রা আরও জানান, সাধারণত মসজিদে জামাত শেষ হওয়ার পর আবু কয়েকজনের সঙ্গে মিলে নামাজ পড়তেন। আবু বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন, সর্বশেষ বাবার বাড়িতে কিছুদিন ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার পর তার বাবা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে আবু তার বাড়ির আধা কিলোমিটার দূরে জেন্টু বিশ্বাসের একটি অব্যবহৃত নতুন বাড়ি ভাড়া নেন। বাড়ির মালিক জেন্টু বিশ্বাস তাকে মূলত বাড়িটি দেখাশোনার জন্য বিদ্যুৎ বিলসহ সামান্য টাকায় ভাড়া দেন বলে জানান বাড়ির মালিকের ছেলে আনারুল ইসলাম বাবুল। তিনি জানান, গত ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন আবু।
No comments