ঠাকুরগাঁওয়ে ধানক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগ, দিশেহারা কৃষক
আর ক’দিন পরেই ঘরে ধান ওঠার কথা। ঠিক সে মুহূর্তে ঠাকুরগাঁওয়ে শত শত বিঘা বোরো ধানক্ষেতজুড়ে ব্যাপক আকারে নেক ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, বালাইনাশক প্রয়োগ করেও সুফল পাচ্ছেন না তারা। বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ধানক্ষেত সাদা ও কালো হয়ে গাছ মরে যাচ্ছে। সদর উপজেলার কৃষ্ণনাপুর গ্রামের ফজলুল হক জানান, তার তিনবিঘা জমির ধান গাছের কাণ্ড ও পাতা কালো হয়ে গাছ মরে যাচ্ছে। থোর থেকে উঠে আসা ধানের শীষ সাদা হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।দ্রুত এক ক্ষেত থেকে অন্য ক্ষেতে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে এই ঘাতক রোগ। একই কথা জানালেন বেগুনবাড়ি নতুন পাড়া গ্রামের কৃষক সাদ্দাম হোসেন, নুর হোসেন মোল্লা ও শাহিনুর আলম। তারা জানান, ৫৫ বিঘা বোরোধান চাষ করেছেন। এই তিন কৃষকের ধানক্ষেতে ব্যাপক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তাদের এলাকার শতাধিক কৃষকের ধানক্ষেতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বালাইনাশক ব্যবহার করেও কোন কুল কিনার পাচ্ছে না তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার অধিকাংশ এবং বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ধানক্ষেতে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। হতাশাগ্রস্ত কৃষকরা জানান, এমতাবস্থায় পরার্মশের জন্য মাঠ পর্যায়ের কৃষিকর্মকর্তাদেরও পাচ্ছেন না তারা। জেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, দায়িত্বশীল অনেক কর্মকর্তারাই জেলার বাইরে অব্স্থান করায় অন্য কর্মকর্তারা কর্তব্য অবহেলা করছেন। এ কারণে কৃষকরা সমস্যায় থাকলেও সেবা পাচ্ছে না। সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও বাতাসের আদ্রতা বেড়ে যাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে নেক ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়েছে ধানক্ষেতে। শিলা বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো বাতাসের পর বোরো ধানক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়। এই রোগ প্রতিরোধে সরকার অনুমোদিত ছত্রাক নাশক নিদিষ্ট মাত্রায় ৭ দিন অন্তর-অন্তর ধান ক্ষেতে প্রয়োগ করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। খাদ্য বিভাগ বলছে, এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে না পারলে খাদ্য শষ্যের উদ্বৃত্ত এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে এবার বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে।
No comments