সম্পর্ক ভিন্নমাত্রায় নেয়ার অঙ্গীকার
মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বৃহস্পতিবার
ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের মালিকাধীন অবকাশ কেন্দ্রে স্বাগত জানিয়েছেন। এটি তাদের
মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ। ট্রাম্প ক্ষমতা নেয়ার পর প্রথমবারের মতো
যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন জিনপিং। সফরের প্রথম দিন চীনা নেতার সম্মানে
নৈশভোজের আয়োজন করেন ট্রাম্প। সেখানে দু’নেতার মধ্যে প্রথমবার দেখা হয়।
ট্রাম্প বলেছেন, মার-এ-লাগো অবকাশ কেন্দ্রে দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন
হবে। মার্কিন নেতা উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে চীনকে চাপ দেবেন বলে আশা করা
হচ্ছে। অন্যদিকে তাইওয়ান ইস্যুতে দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতি বজায় রাখার বিষয়ে
নিশ্চয়তা চান জিনপিং। বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডায় বিলাসবহুল মার-এ-লাগো গলফ
রিসোর্টে পৌঁছান চীনা প্রেসিডেন্ট। রাতে দু’নেতা আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে মিলিত
হন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দু’নেতাকে আন্তরিকভাবে সময় কাটাতে দেখা
যায়। এ সময় চীনা ফার্স্টলেডি ও দেশটির জনপ্রিয় ফোকশিল্পী পেং লিউয়ান,
মার্কিন ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প, ট্রাম্পের বড় মেয়ে ইভাঙ্কা, জামাতা ও
তার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জেরার্ড কুশনারসহ উভয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা
উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্প বলেন, ‘চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আন্তরিক সময়
কেটেছে।
আমরা উভয়ে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে
যেতে চাই।’ শুক্রবার দু’নেতার মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
হাইপ্রোফাইল এ বৈঠক নিয়ে বিশ্বব্যাপী আগ্রহ তৈরি হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার
পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে রাশ টানতে চীনের সহায়তা চান ট্রাম্প।
যদিও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, এ বিষয়ে চীন সহায়তা না করলে তিনি একাই ব্যবস্থা
নেবেন। হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্প জিনপিংয়ের মধ্যে
সম্পর্কের ক্ষেত্রে পিয়ংইয়ং ইস্যুটি মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।’ অন্যদিকে
তাইওয়ান ইস্যুতে দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতি বহাল রাখার বিষয়ে নিশ্চয়তা চান
জিনপিং। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টকে ফোন করে প্রোটোকল
ভাঙেন ট্রাম্প। পরে ফেব্রুয়ারি মাসে চীনা প্রেসিডেন্টকে ফোন করে ‘এক চীন
নীতি’র প্রতি সম্মান দেখানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এ ছাড়া বাণিজ্য যুদ্ধ,
দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন সেনা উপস্থিতি, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ মিত্রতাসহ নানা ইস্যুতে দু’দেশের মধ্যে বিরোধ চলছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প ও জিনপিংয়ের মধ্যকার এ বৈঠক বিশ্বরাজনীতিতে বেশ
গুরুত্ব পাচ্ছে। এমন এক সময় এ দুই বিশ্বনেতার দেখা হল যখন প্রেসিডেন্ট
ট্রাম্পের নির্দেশে মার্কিন বাহিনী সিরিয়ার শায়রাত বিমান ঘাঁটিতে পরপর ৫৯টি
টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বেসামরিক মানুষের ওপর সিরিয়ার
প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগের জবাবে
যুক্তরাষ্ট্র এমন পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে। আসন্ন বৈঠকে সিরিয়া ইস্যুটিও
গুরুত্ব পাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
No comments