রাজধানীর দোলাইরপাড় এলাকায় আসন্ন বর্ষায়ও জলাবদ্ধতার আশঙ্কা
রাজধানীর
পূর্ব দোলাইরপাড় এলাকায় আসন্ন বর্ষায়ও জলাবদ্ধতার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
বর্ষা মওসুমের আর মাত্র এক মাস বাকি থাকলেও দোলাইরপাড়-কুতুবখালী খাল ও
এলাকার স্যুয়ারেজ লাইন পরিষ্কার না হওয়ায় এ আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
চিরাচরিত জনভোগান্তি কমাতে তারা অবিলম্বে খাল-নালা পরিষ্কার ও রাস্তা
সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, পূর্ব দোলাইরপাড়-কুতুবখালী
খালটি দুই রোডের কারণে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। দক্ষিণ কুতুবখালী রোড পর্যন্ত
গিয়ে খাল শেষ হয়ে গেছে। এরপর খাল রূপ নিয়েছে নালা বা ড্রেনে। পানিপ্রবাহ না
থাকায় ময়লা জমাট বেঁধে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আগাছা ও কচুরিপানায় ভরে গেছে।
যেটুকু খাল টিকে আছে তা দুই পাশ ঢালাই দিয়ে সীমাবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে।
কিন্তু এর পরও দখল থেমে নেই। দোলাইরপাড় ঢাল থেকে ওয়াসার পানির পাম্প
পর্যন্ত অংশে সড়কের পাশ ঘেঁষে মাটি ফেলে ভরাট করে তার ওপর দোকান তৈরি করা
হয়েছে। এ ছাড়া খালের ওপর বেশ কিছু নিচু কালভার্টও নির্মাণ করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, খালটিতে ময়লা জমে থাকায় পানিপ্রবাহ ঠিক থাকে না। এ ছাড়া
এলাকার স্যুয়ারেজ লাইনও ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। এ কারণে বর্ষার সময়
সড়কসহ আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। আসন্ন বর্ষায়ও পূর্ব দোলাইরপাড়
সড়কসহ আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় দোকান
মালিকেরা জানান, বর্ষায় নোংরা পানি থেকে বাঁচতে দোকানের সামনে ছোট দেয়াল
নির্মাণ করতে হয়। তার পরও ভারী বৃষ্টি হলে বা দ্রুত গতিতে যানবাহন যাওয়ার
ফলে সৃষ্ট ঢেউয়ে পানি উপচে দোকানের ভেতর চলে আসে। সড়কে পানি জমে থাকায়
ক্রেতা কমে ব্যবসায়ও মন্দা দেখা দেয়। খন্দকার আহসানুল হক এহসান নামে এক
এলাকাবাসী বলেন, ১৫-২০ বছর ধরে এলাকাবাসী জলাবদ্ধতার সমস্যায় ভুগছে। খালটি
ভরাট হয়ে থাকায় পানি ঠিকমতো অপসারণ হয় না। এ জন্য ভারী বৃষ্টি হলেই খাল
উপচে নোংরা পানি সড়কে চলে আসে। মাসের পর মাস জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
তিনি
বলেন, গত বছর প্রধান সড়কসহ এলাকার অলিগলিতে পানি জমে যায়। তখন ঘর থেকে বের
হওয়া কিংবা বাসায় ফিরতে হতো নোংরা পানি মাড়িয়ে। বৃষ্টি হলে সড়কে পানির
উচ্চতা বেড়ে এলাকাবাসীর ভোগান্তিও বেড়ে যেত। এভাবে প্রায় তিন মাস ধরে
এলাকাবাসীকে জলাবদ্ধতার সমস্যায় ভুগতে হয়েছে। নোংরা পানির মধ্য দিয়ে চলতে
গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পাশাপাশি নানা রোগব্যাধিতেও ভুগতে হয় বলে তিনি
জানান। এলাকার বাসিন্দা আসলাম খান বলেন, লোকজন খালে ময়লা ফেলে ভরাট করে
ফেলায় পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে পানি যেতে পারে না। বৃষ্টি
হলে তখন ভোগান্তি মারাত্মক হারে বেড়ে যায়। সড়কে হাঁটুপানি জমে যায়। এর মধ্য
দিয়ে রিকশা ছাড়া চলা যায় না। স্কুলের ছেলেমেয়েরা পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে
যেতে বাধ্য হয়। তখন অনেকে গর্তে পড়ে আহত হয়। আবার অনেক সময় রিকশাও উল্টে
যায়। তিনি জানান, খালটি ছয় মাস আগে একবার পরিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু আবার
ভরাট হয়ে গেছে। আসলাম খান বলেন, পূর্ব দোলাইরপাড় রাস্তাটি ভেঙে গেছে। রড
বের হয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে চলতে গিয়ে প্র্য়াই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়
কমিউিনিটি পুলিশের সভাপতি এ এন এম নুরুল হুদা বলেন, খালটির মালিকানা নিয়ে
দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড খালটির মালিক ছিল। এখন ঢাকা
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন বলছে
তারা নাকি খালটি বুঝে পাননি। এখন আমরা কার কাছে যাব? তিনি বলেন, গত বছর
বর্ষায় এলাকাবাসীকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এ বছর খালটি পরিষ্কার না
করলে আবারো ভোগান্তিতে পড়তে হবে। এলাকার ড্রেন-স্যুয়ারেজ লাইনও ঠিকমতো
পরিষ্কার না করায় ময়লা উপচে পড়ছে বলে তিনি জানান।
No comments