মিয়ানমারে ভারতের অভিযান চীন ও পাকিস্তানকে সতর্কবার্তা
মিয়ানমারের
অভ্যন্তরে প্রবেশ করে অভিযান চালিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী। এতে মিয়ানমারে
কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়েছে। এ অভিযানের মধ্য দিয়ে সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে
চীন ও পাকিস্তানকে। ৪ঠা জুন ভারতের মণিপুরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ১৮
ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর এ ‘প্রতিশোধমূলক’ হামলা চালায় ভারত। পাঁচদিন আগে
থেকেই শুরু হয় হামলার পরিকল্পনা। মণিপুরের ঘটনার পর ভারতের জাতীয়
নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল মোদির সঙ্গে তার পূর্বনির্ধারিত বাংলাদেশ
সফর বাতিল করে মণিপুরে চলে যান। পূর্বনির্ধারিত যুক্তরাজ্য সফর বাতিল করে
একই কাজ করেন দেশটির সেনাপ্রধান দলবীর সিং সুহাগও। এছাড়া, এক সপ্তাহ আগে
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস. জয়শঙ্কর গোপনে মিয়ানমার সফর করেন। ওই সফরের
বিস্তারিত প্রকাশ করা হয় নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে
মিয়ানমারের ভেতরে বিশেষ বাহিনীর পুরো অভিযানের বিষয়টি দেখভাল করেন সাবেক
গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও বর্তমানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও
সেনাপ্রধান দলবীর সিং। অজিত দোভাল কয়েকদিন ধরে মণিপুরে অবস্থান করে
গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে
সমন্বয় সাধন করেন। এরই ফলশ্রুতিতে মিয়ানমারের মধ্যে প্রবেশ করে হামলা চালায়
ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ইউনিট। এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া,
এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টাইমস ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এতে আরও বলা হয়, দেশের
বাইরে এ ধরনের অভিযান চালানোর ঘটনা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে বিরল। সূত্র বলেছে,
ওই অভিযানে অন্তত ৫০ জনের হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত। তবে সংখ্যা আরও বেড়ে
শতাধিকও হতে পারে। মঙ্গলবার রাত তিনটায় যখন অন্ধকার কাটেনি ঠিক তখনই ওই
অভিযান শুরু হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় গতকাল বিকালে। অভিযান শেষে
ভারতের তথ্য ও সমপ্রচারবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাথোড় এক টুইট
বার্তায় বলেন, ওই অভিযানটি ছিল পাকিস্তান সহ যে সব দেশ ও গোষ্ঠী ভারতে
সন্ত্রাস চালানোর ইচ্ছা পোষণ করে, তাদের প্রতি সতর্ক বার্তা। সন্ত্রাসীদের
কোন পরিচয় থাকতে পারে না। আমরা যখন চাইবো, আমরা হামলা চালাবো। ভারতীয়
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল রাথোড় আরও বলেন, খুবই প্রয়োজনীয় এ
অভিযানটির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল
যে, দুইটি ভিন্ন গোষ্ঠী ভারতে আবারও হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
কিন্তু দুইটি শিবিরেই হামলা করা হয়েছে এবং সমপূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। বিশেষ
বাহিনীর কারো কোন ক্ষয়ক্ষতি হয় নি। সমপ্রতি মোদির বাংলাদেশ সফরের দিকে
ইঙ্গিত করে রাজ্যবর্ধন রাথোড় আরও বলেন, একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের প্রতি
ভারতের ইচ্ছা ও পারসপরিক উন্নয়নের প্রতি অঙ্গীকার তৈরি হয়েছে ওই দেশটির
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কারণে। তিনি বলেন, আমরা ভারত বা
ভারতীয়দের ওপর কোন হামলা বরদাশত করবো না। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবে বা
আক্রমণাত্মক কায়দায় এর বিরুদ্ধে উদ্যোগ চালাবোই। আমরা যেকোন জায়গায়, যেকোন
সময় আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী আক্রমণ চালাবো।
ভোর ৩টায় অভিযান চালানো হলেও, বিষয়টি সমপর্কে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে দেশটিতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অবহিত করেন মঙ্গলবার সকাল ৯টায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ওই একক অভিযান সমপর্কে মিয়ানমারকে জানানো না হলেও, কোন সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা করে নি ভারত। কারণ, দেশ দু’টোর মধ্যে ১৯৯০ সাল থেকেই একটি চুক্তি কার্যকর আছে। এর বলে উভয় দেশের সেনাবাহিনী পরসপরের ভূমিতে অভিযান পরিচালনা করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে আগে সংশ্লিষ্ট দেশকে অবহিত করতে হয়। কিন্তু তথ্য ফাঁসের আশঙ্কায় এ অভিযানের ক্ষেত্রে মিয়ানমারকে আগে থেকে না জানানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। কেননা, ধারণা করা হয়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যম ও নিম্ন পর্যায়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ভালো সংযোগ রয়েছে। তবে দেশ দু’টোর মধ্যে এ ধরনের অভিযানের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে ১৯৯৫ সালের এপ্রিল-মে’র দিকে ‘অপারেশন গোল্ডেন বার্ড’ নামে ভারত-মিয়ানমারের একটি যৌথ অভিযানে কমপক্ষে ৪০ জঙ্গি নিহত হয়। এরপর থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে উভয় দেশ পরসপরকে সহযোগিতা করে আসছে। ২০০১ সালে, ভারতের মণিপুরে প্রবেশ করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। তবে এ অভিযানের মাধ্যমে চীনকে ভারতের পক্ষ থেকে একটি বার্তা পাঠানো হলো বলে ভাবা হচ্ছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রমতে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগিতা দিচ্ছে চীন। একেবারে সামপ্রতিক একটি গোয়েন্দা তথ্য মোতাবেক, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া চীনের ইউনান প্রদেশে আশ্রয় চেয়েছেন। এছাড়া, সামপ্রতিক সপ্তাহগুলোতে এ খবরও আসছিল যে, চীনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় পরেশ বড়ুয়ার উলফা ও আরেক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএন (কে) সহ মোট ৭টি সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন মিলে গঠন করেছে ‘ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ওয়েস্টার্ন সাউথ-ইস্ট এশিয়া’ নামের একটি সংগঠন। মণিপুরে ৪ঠা জুনের যে হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন, সেখানে সন্ত্রাসীরা অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে ধারণা করছে ভারত। ভারতীয় গোয়েন্দাদের আরও ধারণা, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ওই অস্ত্র পেয়েছে ভিনদেশী সংস্থার কাছ থেকে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ক্ষমতাসীন বিজেপি আর নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের একাংশ দাবি করছে এই বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে একটা কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে সব দেশকেই যে, জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসীদের রুখতে সীমান্ত পেরুতেও ভারতীয় সেনারা পিছপা হবে না। এই অংশের ইঙ্গিত পাকিস্তানের দিকেই। বিশ্লেষকদের অন্য অংশের মতে এর আগেও বিদেশে অপারেশন চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী আর সর্বশেষ এই অপারেশন কখনই সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ রোখার জন্য এটা নতুন শক্তিশালী নীতির ফল নয়। ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরী বলেন, ভারত সরকারের সর্বোচ্চ স্তর থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে বলেই এত বড় অপারেশন চালাতে পেরেছে সেনাবাহিনী। তারা নিজে থেকে কখনই এই অপারেশন চালিয়ে থাকতে পারে না। তার মতে, এই অপারেশনের মাধ্যমে নিশ্চিতভাবেই বিভিন্ন দেশকে একটা বার্তা দেওয়া গেছে যে প্রয়োজন পড়লে বিদেশে গিয়েও সেনাবাহিনী জঙ্গি বা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অপারেশন চালাতে পারে। বিশ্লেষকদের একাংশ আবার এই অপারেশনে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটাকেই বড় করে দেখছেন। ভারতের নিরাপত্তা বিষয়ক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট অব কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের কার্যনির্বাহী পরিচালক অজয় সাহনী বলেন, এ অপারেশনের পরে সামরিক কৌশল নিয়ে আলোচনার থেকে বেশী দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক আস্ফালন। কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই অপারেশনটাকে ভারতের একটা নতুন সামরিক নীতি হিসাবে দেখাতে চাইছেন। বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে যে সরকারের একটা শক্তিশালী নীতি, পেশীশক্তির প্রদর্শন হচ্ছে। মি. সাহনী আরও বলেন যে, একটা অপারেশনে সেনাবাহিনী বিজয়ী হয়েছে ঠিকই। কিন্তু মিয়ানমারে অবস্থিত জঙ্গি শিবিরগুলি ধ্বংসের জন্য লাগাতার প্রচেষ্টা না থাকলে এই অপারেশনের কোন গুরুত্বই থাকবে না। প্রায় একই কথা বলেন উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তা ও জঙ্গি তৎপরতার বিশ্লেষক রাজীব ভট্টাচার্যি। তিনি বলেন, জঙ্গি শিবিরগুলি আদৌ ধ্বংস করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিরিশ বছরেরও বেশী সময় ধরে এই শিবিরগুলি গড়ে উঠেছে আর সেগুলোর সংখ্যা নিয়মিত বেড়েই চলেছে। ভারতের সেনাবাহিনী নিশ্চয়ই এই শিবিরগুলো ধ্বংস করতে চাইবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সুযোগ মিয়ানমার তাদের বার বার দেবে কি না। কারণ মিয়ানমার সরকার বা তাদের সেনাবাহিনী একটা নতুন ফ্রন্ট খুলে উত্তরপূর্বের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে চাইবে না।
ভোর ৩টায় অভিযান চালানো হলেও, বিষয়টি সমপর্কে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে দেশটিতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অবহিত করেন মঙ্গলবার সকাল ৯টায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ওই একক অভিযান সমপর্কে মিয়ানমারকে জানানো না হলেও, কোন সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা করে নি ভারত। কারণ, দেশ দু’টোর মধ্যে ১৯৯০ সাল থেকেই একটি চুক্তি কার্যকর আছে। এর বলে উভয় দেশের সেনাবাহিনী পরসপরের ভূমিতে অভিযান পরিচালনা করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে আগে সংশ্লিষ্ট দেশকে অবহিত করতে হয়। কিন্তু তথ্য ফাঁসের আশঙ্কায় এ অভিযানের ক্ষেত্রে মিয়ানমারকে আগে থেকে না জানানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। কেননা, ধারণা করা হয়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যম ও নিম্ন পর্যায়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ভালো সংযোগ রয়েছে। তবে দেশ দু’টোর মধ্যে এ ধরনের অভিযানের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে ১৯৯৫ সালের এপ্রিল-মে’র দিকে ‘অপারেশন গোল্ডেন বার্ড’ নামে ভারত-মিয়ানমারের একটি যৌথ অভিযানে কমপক্ষে ৪০ জঙ্গি নিহত হয়। এরপর থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে উভয় দেশ পরসপরকে সহযোগিতা করে আসছে। ২০০১ সালে, ভারতের মণিপুরে প্রবেশ করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। তবে এ অভিযানের মাধ্যমে চীনকে ভারতের পক্ষ থেকে একটি বার্তা পাঠানো হলো বলে ভাবা হচ্ছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রমতে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগিতা দিচ্ছে চীন। একেবারে সামপ্রতিক একটি গোয়েন্দা তথ্য মোতাবেক, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া চীনের ইউনান প্রদেশে আশ্রয় চেয়েছেন। এছাড়া, সামপ্রতিক সপ্তাহগুলোতে এ খবরও আসছিল যে, চীনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় পরেশ বড়ুয়ার উলফা ও আরেক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএন (কে) সহ মোট ৭টি সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন মিলে গঠন করেছে ‘ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ওয়েস্টার্ন সাউথ-ইস্ট এশিয়া’ নামের একটি সংগঠন। মণিপুরে ৪ঠা জুনের যে হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন, সেখানে সন্ত্রাসীরা অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে ধারণা করছে ভারত। ভারতীয় গোয়েন্দাদের আরও ধারণা, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ওই অস্ত্র পেয়েছে ভিনদেশী সংস্থার কাছ থেকে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ক্ষমতাসীন বিজেপি আর নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের একাংশ দাবি করছে এই বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে একটা কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে সব দেশকেই যে, জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসীদের রুখতে সীমান্ত পেরুতেও ভারতীয় সেনারা পিছপা হবে না। এই অংশের ইঙ্গিত পাকিস্তানের দিকেই। বিশ্লেষকদের অন্য অংশের মতে এর আগেও বিদেশে অপারেশন চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী আর সর্বশেষ এই অপারেশন কখনই সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদ রোখার জন্য এটা নতুন শক্তিশালী নীতির ফল নয়। ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরী বলেন, ভারত সরকারের সর্বোচ্চ স্তর থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে বলেই এত বড় অপারেশন চালাতে পেরেছে সেনাবাহিনী। তারা নিজে থেকে কখনই এই অপারেশন চালিয়ে থাকতে পারে না। তার মতে, এই অপারেশনের মাধ্যমে নিশ্চিতভাবেই বিভিন্ন দেশকে একটা বার্তা দেওয়া গেছে যে প্রয়োজন পড়লে বিদেশে গিয়েও সেনাবাহিনী জঙ্গি বা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অপারেশন চালাতে পারে। বিশ্লেষকদের একাংশ আবার এই অপারেশনে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটাকেই বড় করে দেখছেন। ভারতের নিরাপত্তা বিষয়ক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট অব কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্টের কার্যনির্বাহী পরিচালক অজয় সাহনী বলেন, এ অপারেশনের পরে সামরিক কৌশল নিয়ে আলোচনার থেকে বেশী দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক আস্ফালন। কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই অপারেশনটাকে ভারতের একটা নতুন সামরিক নীতি হিসাবে দেখাতে চাইছেন। বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে যে সরকারের একটা শক্তিশালী নীতি, পেশীশক্তির প্রদর্শন হচ্ছে। মি. সাহনী আরও বলেন যে, একটা অপারেশনে সেনাবাহিনী বিজয়ী হয়েছে ঠিকই। কিন্তু মিয়ানমারে অবস্থিত জঙ্গি শিবিরগুলি ধ্বংসের জন্য লাগাতার প্রচেষ্টা না থাকলে এই অপারেশনের কোন গুরুত্বই থাকবে না। প্রায় একই কথা বলেন উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তা ও জঙ্গি তৎপরতার বিশ্লেষক রাজীব ভট্টাচার্যি। তিনি বলেন, জঙ্গি শিবিরগুলি আদৌ ধ্বংস করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিরিশ বছরেরও বেশী সময় ধরে এই শিবিরগুলি গড়ে উঠেছে আর সেগুলোর সংখ্যা নিয়মিত বেড়েই চলেছে। ভারতের সেনাবাহিনী নিশ্চয়ই এই শিবিরগুলো ধ্বংস করতে চাইবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সুযোগ মিয়ানমার তাদের বার বার দেবে কি না। কারণ মিয়ানমার সরকার বা তাদের সেনাবাহিনী একটা নতুন ফ্রন্ট খুলে উত্তরপূর্বের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে চাইবে না।
No comments