‘রাজনৈতিকভাবেই তিস্তার সমাধান করতে হবে’ by সিরাজুস সালেকিন
ভারতের
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন না
হওয়ায় এর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মোদির এবারের সফরে
সবার দৃষ্টি ছিল তিস্তা চুক্তির দিকে। কিন্তু এই চুক্তি নিয়ে নরেন্দ্র মোদি
পরিষ্কারভাবে কিছু বলেননি। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোন সময়সীমার কথাও বলা
হয়নি। বাংলাদেশীদের কাছে বহুল প্রত্যাশিত তিস্তার পানি বণ্টনের জট এখনও না
খোলার ক্ষেত্রে আবার ‘গণতন্ত্রের’ যুক্তি দেখিয়ে অপেক্ষায় রেখেছেন মোদি।
বাংলাদেশ ত্যাগের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত উন্মুক্ত বক্তৃতায় মোদি
বলেন- ভারত অনেক বড় দেশ, অনেক রাজ্য ওখানে, আমাদের ওখানে গণতন্ত্র রয়েছে,
তাই সবার মতৈক্য নিয়ে তা করতে সময় লাগবে। তবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি,
পানি সমস্যার সমাধানও আমরা করবো। মোদি আরও যোগ করেন, পাখি, বাতাস আর পানি
সীমানা মানে না। তাই পানি নিয়ে কোন রাজনীতি হতে পারে না। সফরে পশ্চিমবঙ্গের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গী হলেও তার পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য
আসেনি। এ অবস্থায় তিস্তা চুক্তি দীর্ঘদিনের জন্য ঝুলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা
করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই বাংলাদেশ সরকারকে তিস্তা সমস্যা সমাধানে জোর তৎপরতা
চালানোর তাগিদ দিয়েছেন তারা। ক্ষতিপূরণ দাবির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলে
জনমত গঠনের জন্য সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে তারা এ
পরামর্শ দেন। পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, তিস্তা ইস্যুটি সম্পূর্ণ
রাজনৈতিক। এটা রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই হওয়া দরকার। পানি বণ্টনের
কারিগরি বিষয়গুলো ২০১১ সালেই হয়ে গেছে। এখন বাংলাদেশ সরকার এটা পুরোপুরি
বাস্তবায়ন করবে নাকি করবে না, এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক। রাজনৈতিকভাবে যত
দর-কষাকষির যত যন্ত্র আছে বাংলাদেশের ব্যবহার করা উচিত।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশ সরকারের বেশি কিছু করণীয় নেই। ক্ষমতায় থাকার জন্য নিজেদের স্বার্থ তুলে দিচ্ছে। যতই প্রপাগান্ডা করুক তারা কি দিয়েছে। সীমান্ত চুক্তি বহু আগে রেকটিফাইড হওয়ার কথা ছিল। এর বিনিময় মূল্য আমরা পাইনি। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন ও তাদের নিরাপত্তার জন্য ট্রানজিট নিয়েছে, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র, নদীর ভেতরে বাঁধ সবকিছু দিয়েছে সরকার। এ দেয়াটা মোটেও সমতাপূর্ণ হয়নি। সরকার নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য ভারতের সমর্থন জরুরি মনে করছে। পাওয়ার আগে দিয়ে দেয়াটা বোকামি। তারা যে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করেছে তা বাস্তবায়নে অনেক সময় নেবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক ম. ইনামুল হক বলেন, সরকারের যা করণীয় তা করছে না। ভারত পানি সরিয়ে নিচ্ছে। এর ফলে যে ক্ষতি হচ্ছে তা হিসাব করা দরকার। টাকার অংকে নয়। এটা ডলারের অংকে হিসাব করতে হবে। ভারত সরকারের কাছে এ ক্ষতিপূরণ দাবি করতে হবে। তিস্তা চুক্তি না হওয়ার কারণে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হতে পারে। পানি না পাওয়ায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। ডিপ টিউবওয়েল কাজ করছে না। সর্বোপরি পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে এটা প্রচার করতে হবে। শুধু লংমার্চ করলে হবে না। সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। যৌথ নদী কমিশনে সম্ভব না হলে সচিব পর্যায়ে বৈঠকে এটা তোলা দরকার।
আন্তর্জাতিক মহলে জনমত গঠনের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের পানি প্রবাহ আইনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বিচার চাইতে পারে বাংলাদেশ। এভাবে বিশ্বমহলে জনমত গড়ে তুলতে হবে। নাহলে পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে চলে যাবে। টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তা তিস্তার পানি বণ্টনে কোন প্রভাব ফেলবে না মন্তব্য করেন তিনি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দুইটা ভিন্ন জায়গা। টিপাইমুখের কারণে বাংলাদেশের যে ক্ষতি হবে তা ভারতকে বোঝানো গেছে। যে কারণে তারা সেখানে বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। ফেনী নদীর পানি বণ্টন সম্পর্কে এ পানি বিশেষজ্ঞ বলেন, ফেনী নদী সীমান্ত বরাবর প্রবাহিত নদী, এর ৬০ ভাগ বাংলাদেশে। আর ৪০ ভাগ ভারতে। কিন্তু ভারত ৫০ পঞ্চাশ ভাগ পানি দাবি করছে। এবিষয়েও সোচ্চার হওয়া দরকার বাংলাদেশ সরকারের।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশ সরকারের বেশি কিছু করণীয় নেই। ক্ষমতায় থাকার জন্য নিজেদের স্বার্থ তুলে দিচ্ছে। যতই প্রপাগান্ডা করুক তারা কি দিয়েছে। সীমান্ত চুক্তি বহু আগে রেকটিফাইড হওয়ার কথা ছিল। এর বিনিময় মূল্য আমরা পাইনি। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন ও তাদের নিরাপত্তার জন্য ট্রানজিট নিয়েছে, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র, নদীর ভেতরে বাঁধ সবকিছু দিয়েছে সরকার। এ দেয়াটা মোটেও সমতাপূর্ণ হয়নি। সরকার নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য ভারতের সমর্থন জরুরি মনে করছে। পাওয়ার আগে দিয়ে দেয়াটা বোকামি। তারা যে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করেছে তা বাস্তবায়নে অনেক সময় নেবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক ম. ইনামুল হক বলেন, সরকারের যা করণীয় তা করছে না। ভারত পানি সরিয়ে নিচ্ছে। এর ফলে যে ক্ষতি হচ্ছে তা হিসাব করা দরকার। টাকার অংকে নয়। এটা ডলারের অংকে হিসাব করতে হবে। ভারত সরকারের কাছে এ ক্ষতিপূরণ দাবি করতে হবে। তিস্তা চুক্তি না হওয়ার কারণে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হতে পারে। পানি না পাওয়ায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। ডিপ টিউবওয়েল কাজ করছে না। সর্বোপরি পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে এটা প্রচার করতে হবে। শুধু লংমার্চ করলে হবে না। সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। যৌথ নদী কমিশনে সম্ভব না হলে সচিব পর্যায়ে বৈঠকে এটা তোলা দরকার।
আন্তর্জাতিক মহলে জনমত গঠনের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের পানি প্রবাহ আইনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বিচার চাইতে পারে বাংলাদেশ। এভাবে বিশ্বমহলে জনমত গড়ে তুলতে হবে। নাহলে পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে চলে যাবে। টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তা তিস্তার পানি বণ্টনে কোন প্রভাব ফেলবে না মন্তব্য করেন তিনি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দুইটা ভিন্ন জায়গা। টিপাইমুখের কারণে বাংলাদেশের যে ক্ষতি হবে তা ভারতকে বোঝানো গেছে। যে কারণে তারা সেখানে বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। ফেনী নদীর পানি বণ্টন সম্পর্কে এ পানি বিশেষজ্ঞ বলেন, ফেনী নদী সীমান্ত বরাবর প্রবাহিত নদী, এর ৬০ ভাগ বাংলাদেশে। আর ৪০ ভাগ ভারতে। কিন্তু ভারত ৫০ পঞ্চাশ ভাগ পানি দাবি করছে। এবিষয়েও সোচ্চার হওয়া দরকার বাংলাদেশ সরকারের।
No comments