ভূমিকম্পের পূর্বাভাস ১৫ দিন আগে! -ঢাকায় মার্কিন মহাকাশ প্রকৌশলী by আশিস আচার্য
আমেরিকান সেন্টারে জন পিনো l ছবি: সাজিদ হোসেন |
বিভিন্ন
প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ভূমিকম্পই সম্ভবত সবচেয়ে ভয়াবহ। কারণ, এ
বিপর্যয়ের পূর্বাভাস পাওয়ার কার্যকর পদ্ধতি এখনো মেলেনি। তবে মার্কিন
মহাকাশ প্রকৌশলী জন পিনো ভূমিকম্পের পূর্বাভাস-প্রযুক্তি উদ্ভাবনের
সম্ভাবনার কথা জানিয়ে বললেন, তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্বে প্রথমবারের
মতো এ দুর্যোগের খবর আগাম জানার পদ্ধতি বের হতে পারে। রাজধানীর আমেরিকান
সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার ভূমিকম্পসহ মহাকাশ প্রযুক্তির
নানা বিষয়ে আলোচনা করেন জন পিনো। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক
প্রকৌশল-প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্টেলার সলিউশনসের জ্যেষ্ঠ মহাকাশ প্রকৌশলীর
দায়িত্ব পালন করছেন। এ প্রতিষ্ঠানের একটি প্রকল্প কোয়েকফাইন্ডার ভূমিকম্পের
পূর্বাভাস-প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে, যার অর্থায়ন করেছে মার্কিন মহাকাশ
গবেষণা সংস্থা (নাসা)।
ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া গেলে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচানোর সুযোগ মিলবে। আর তা হবে মানব ইতিহাসে নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী এক অর্জন। ঘূর্ণিঝড়, আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ, সামুদ্রিক ঝড় এবং আবহাওয়ার অন্যান্য খবর আগাম জানার প্রযুক্তি এখন বেশ উন্নত ও কার্যকর হয়েছে। পিনো জানালেন, ভূমিকম্প আঘাত হানতে যাচ্ছে—এমন খবর সঠিকভাবে জানানোই কোয়েকফাইন্ডার প্রকল্পের লক্ষ্য। এ ক্ষেত্রে তত্ত্ব, তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে একটি বিশেষ সংকেত নিয়ে গবেষণা চলছে, যা কোনো ভূমিকম্পের ১৫ দিন আগে পাওয়া যেতে পারে।
এ উদ্ভাবনী কার্যক্রমের বিস্তারিতও তুলে ধরেন জন পিনো। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ফল্টলাইনে (ভূতাত্ত্বিক ফাটলরেখা) সংবেদী যন্ত্র বা সেন্সর স্থাপন করে তাঁরা ওই সংকেত শনাক্ত করেছেন, তবে সেটা ভূমিকম্পের পরে। এখন প্রকৃত সময়ে বা দুর্যোগের আগে সেই সংকেত পাওয়ার লক্ষ্যে পদ্ধতিটির কার্যকারিতা যাচাইয়ের গবেষণা চলছে।
পিনো জানান, প্রতিটি সেন্সরের জন্য খরচ পড়বে ৩৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। গবেষকদের আশা, কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া অবলোহিত রশ্মিনির্ভর (ইনফ্রা-রেড) ওই সংকেত-পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সফলভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে। মহাকাশযন্ত্র, নভোযান প্রকৌশল, মহাকাশবিজ্ঞান, মহাবিশ্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনার আগে পিনো প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের তরুণদের উদ্দেশে বলেন, সফল প্রকৌশলী হতে চাইলে নিরলস পরিশ্রম করতে হবে। আর ভুল করার ব্যাপারে ভয় পেলে চলবে না। ভুল করতে করতেই শেখা হয়।
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (এসটিইএম) শিক্ষার প্রসারের জন্য কাজ করছেন পিনো। তিনি স্টেলার সলিউশনস এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সম্মেলনে যোগ দিতে।
বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্র ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে। এ বিষয়ে পিনোর পরামর্শ, অন্যদের ভুল থেকে শেখা ভালো। এ দেশের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি খাতের সামর্থ্য আধুনিকায়নের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে। এতে সময়, প্রচেষ্টা, জিনিসপত্র, অবকাঠামো—সবকিছুর সাশ্রয় হবে।
দেশে নতুন নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও মৌলিক বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের ঘাটতি কখনোই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসারে অনুকূল নয় বলে মনে করেন পিনো। তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি—দুটো পাশাপাশি চালানোর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বিজ্ঞানটা হচ্ছে প্রকৌশলজ্ঞানের ভিত্তি। পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের মতো মৌলিক বিষয়ে জ্ঞানের অভাব থাকলে প্রকৌশলব্যবস্থায় সামর্থ্যের উন্নতি করার সম্ভাবনা কমে যায়।
নভোযান প্রকৌশলী হিসেবে পিনো মানুষবাহী বিভিন্ন মহাকাশযানের নকশা তৈরির প্রকল্পে কাজ করেছেন। যেমন: অরিয়ন ও স্পেস শাটল। এসব যানে মানুষের নিরাপত্তা কতটুকু? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবনের দাম অনেক। তাই সব ধরনের ঝুঁকি এড়ানোর বিষয়টি মাথায় রেখেই নকশা এমনভাবে তৈরি করি, যা খুব নির্ভরযোগ্য হয়। আমি মহাকাশ অভিযানে রোবটের পাশাপাশি মানুষ পাঠানোরও জোরালো সমর্থক।’
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা নিয়ে পিনো বলেন, সুবিশাল এই মহাবিশ্বে শতকোটি নক্ষত্র রয়েছে, আছে অগণিত নক্ষত্রপুঞ্জ। সেসবের মধ্যে কোথাও বুদ্ধিমান প্রাণের অস্তিত্ব না থাকলে, তিনি সত্যিই বিস্মিত হবেন।
মহাকাশ গবেষণায় নাসার বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের সুফল সাধারণ মানুষ পাবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পিনো বলেন, প্রযুক্তি, বস্তুবিদ্যা ও জীববিদ্যায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে এই মহাকাশ প্রকল্পের কারণে। এ সুফলের মূল্য অর্থ দিয়ে পরিমাপ করা যায় না।
কীভাবে মহাকাশ প্রকৌশলী হওয়া যায়—এ ব্যাপারে এ দেশের তরুণদের জন্য পিনোর পরামর্শ, স্বপ্নকে অনুসরণ করতে হবে। কাজের প্রতি নিষ্ঠা থাকতে হবে আর তাতে আনন্দ পেতে হবে। পড়াশোনা করতে হবে এবং অর্জিত জ্ঞানের যথার্থ প্রয়োগ ঘটাতে হবে।
ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া গেলে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচানোর সুযোগ মিলবে। আর তা হবে মানব ইতিহাসে নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী এক অর্জন। ঘূর্ণিঝড়, আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ, সামুদ্রিক ঝড় এবং আবহাওয়ার অন্যান্য খবর আগাম জানার প্রযুক্তি এখন বেশ উন্নত ও কার্যকর হয়েছে। পিনো জানালেন, ভূমিকম্প আঘাত হানতে যাচ্ছে—এমন খবর সঠিকভাবে জানানোই কোয়েকফাইন্ডার প্রকল্পের লক্ষ্য। এ ক্ষেত্রে তত্ত্ব, তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে একটি বিশেষ সংকেত নিয়ে গবেষণা চলছে, যা কোনো ভূমিকম্পের ১৫ দিন আগে পাওয়া যেতে পারে।
এ উদ্ভাবনী কার্যক্রমের বিস্তারিতও তুলে ধরেন জন পিনো। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ফল্টলাইনে (ভূতাত্ত্বিক ফাটলরেখা) সংবেদী যন্ত্র বা সেন্সর স্থাপন করে তাঁরা ওই সংকেত শনাক্ত করেছেন, তবে সেটা ভূমিকম্পের পরে। এখন প্রকৃত সময়ে বা দুর্যোগের আগে সেই সংকেত পাওয়ার লক্ষ্যে পদ্ধতিটির কার্যকারিতা যাচাইয়ের গবেষণা চলছে।
পিনো জানান, প্রতিটি সেন্সরের জন্য খরচ পড়বে ৩৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। গবেষকদের আশা, কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া অবলোহিত রশ্মিনির্ভর (ইনফ্রা-রেড) ওই সংকেত-পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সফলভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে। মহাকাশযন্ত্র, নভোযান প্রকৌশল, মহাকাশবিজ্ঞান, মহাবিশ্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনার আগে পিনো প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের তরুণদের উদ্দেশে বলেন, সফল প্রকৌশলী হতে চাইলে নিরলস পরিশ্রম করতে হবে। আর ভুল করার ব্যাপারে ভয় পেলে চলবে না। ভুল করতে করতেই শেখা হয়।
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (এসটিইএম) শিক্ষার প্রসারের জন্য কাজ করছেন পিনো। তিনি স্টেলার সলিউশনস এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সম্মেলনে যোগ দিতে।
বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্র ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হচ্ছে। এ বিষয়ে পিনোর পরামর্শ, অন্যদের ভুল থেকে শেখা ভালো। এ দেশের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি খাতের সামর্থ্য আধুনিকায়নের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে। এতে সময়, প্রচেষ্টা, জিনিসপত্র, অবকাঠামো—সবকিছুর সাশ্রয় হবে।
দেশে নতুন নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও মৌলিক বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের ঘাটতি কখনোই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসারে অনুকূল নয় বলে মনে করেন পিনো। তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি—দুটো পাশাপাশি চালানোর বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বিজ্ঞানটা হচ্ছে প্রকৌশলজ্ঞানের ভিত্তি। পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের মতো মৌলিক বিষয়ে জ্ঞানের অভাব থাকলে প্রকৌশলব্যবস্থায় সামর্থ্যের উন্নতি করার সম্ভাবনা কমে যায়।
নভোযান প্রকৌশলী হিসেবে পিনো মানুষবাহী বিভিন্ন মহাকাশযানের নকশা তৈরির প্রকল্পে কাজ করেছেন। যেমন: অরিয়ন ও স্পেস শাটল। এসব যানে মানুষের নিরাপত্তা কতটুকু? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবনের দাম অনেক। তাই সব ধরনের ঝুঁকি এড়ানোর বিষয়টি মাথায় রেখেই নকশা এমনভাবে তৈরি করি, যা খুব নির্ভরযোগ্য হয়। আমি মহাকাশ অভিযানে রোবটের পাশাপাশি মানুষ পাঠানোরও জোরালো সমর্থক।’
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা নিয়ে পিনো বলেন, সুবিশাল এই মহাবিশ্বে শতকোটি নক্ষত্র রয়েছে, আছে অগণিত নক্ষত্রপুঞ্জ। সেসবের মধ্যে কোথাও বুদ্ধিমান প্রাণের অস্তিত্ব না থাকলে, তিনি সত্যিই বিস্মিত হবেন।
মহাকাশ গবেষণায় নাসার বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের সুফল সাধারণ মানুষ পাবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পিনো বলেন, প্রযুক্তি, বস্তুবিদ্যা ও জীববিদ্যায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে এই মহাকাশ প্রকল্পের কারণে। এ সুফলের মূল্য অর্থ দিয়ে পরিমাপ করা যায় না।
কীভাবে মহাকাশ প্রকৌশলী হওয়া যায়—এ ব্যাপারে এ দেশের তরুণদের জন্য পিনোর পরামর্শ, স্বপ্নকে অনুসরণ করতে হবে। কাজের প্রতি নিষ্ঠা থাকতে হবে আর তাতে আনন্দ পেতে হবে। পড়াশোনা করতে হবে এবং অর্জিত জ্ঞানের যথার্থ প্রয়োগ ঘটাতে হবে।
No comments