ভূমিকম্পে পাল্টে গেল নেপালের রাজনীতি
অবশেষে নেপালে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নতুন সংবিধান প্রণয়নের বিষয়ে ঐতিহাসিক চুক্তি সই হয়েছে। এর ফলে নেপাল আটটি প্রদেশে বিভক্ত হবে। তবে চালু থাকবে সংসদীয় ব্যবস্থাই। নতুন সংবিধান প্রণয়নের বিষয়ে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে গত কয়েক বছর ধরে যে অচলাবস্থা বিরাজ করছিল এর মধ্যদিয়ে তার অবসান ঘটল বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর আলাপ-আলোচনা শেষে সোমবার রাতে সমঝোতার এ ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হল। দেশটিতে মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে হাজার হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটে। আর এ বিষয়টি দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা নিরসনে রাজনীতিবিদদের ওপর প্রবল চাপ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দেশটির দৈনিক ‘নাগরিক’ পত্রিকার সম্পাদক গোনা রাজ লুইটেল বলেছেন, ‘জনগণ রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিল। তারা ভাবছিল আর কখনোই হয়তো সংবিধান প্রণয়ন সম্ভব হবে না। কারণ রাজনীতিবিদরা কখনোই ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে না। কিন্তু ভূমিকম্প সব কিছু পাল্টে দিয়েছে। দেশ পুনর্গঠনের জন্য সবারই যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা উচিত ভূমিকম্পের পর রাজনৈতিক দলগুলো তা উপলব্ধি করতে পেরেছে।’ তথ্যমন্ত্রী মীনেন্দ্র রাইজাল বলেন, ২৫ এপ্রিলের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৮ হাজার ৭শ’রও বেশি লোক প্রাণ হারায়।
ধ্বংস হয় পাঁচ লাখেরও বেশি বাড়িঘর। আর এ কারণেই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো একযোগে কাজ করতে অনুপ্রাণিত হয়। নতুন এ সমঝোতার আওতায় নেপালে বর্তমান সরকার ব্যবস্থাই বহাল থাকবে। বর্তমান পদ্ধতিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী এবং প্রেসিডেন্ট একজন আনুষ্ঠানিক প্রধানমাত্র। নতুন ফেডারেল কমিশন অভ্যন্তরীণ সীমানা নির্ধারণসহ পার্লামেন্টে অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাব জমা দেবে। আইন প্রণয়নকারীরা বলছেন, চূড়ান্ত সংবিধানের খসড়া জুলাইয়ে প্রস্তুত হবে। এতে পার্লামেন্টের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন লাগবে। নেপালে গত ২৫ এপ্রিল ও ১২ মের ভয়াবহ ভূমিকম্পে আট হাজার ৭শ’রও বেশি মানুষ মারা গেছে। ধ্বংস হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ বাড়ি।
No comments