এ কেমন প্রশ্ন!
‘ফারিযা
আইডিয়াল স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। সে পোশাক পরিচ্ছদ ও চলাফেরায় অতি
আধুনিকতার ছাপ ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করে। স্কুলে ও কোচিং এ যাওয়ার সময়
এলাকার বখাটে ছেলেরা তার পিছু নেয়। বাধ্য হয়ে তার মা নিজে বা অন্য কারও
সঙ্গে কোচিংয়ে পাঠান। ধর্মীয় শিক্ষক শারমিন আপা বললেন, নারী-পুরুষ শালীনতার
সঙ্গে চললে এবং শালীন পোশাক পড়লে অনেক অঘটন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।’
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষায় (সৃজনশীল) অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় গতকাল মঙ্গলবার এ প্রশ্নপত্র দিয়েই ছাত্র ছাত্রীরা (ছেলে মেয়ে আলাদা সেকশন) পরীক্ষা দিয়েছে। ফারিযা কীভাবে চললে বখাটে ছেলেদের হাত থেকে বাঁচতে পারবে? -শিক্ষার্থীদের এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরও দিতে হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান তিনি এ বিষয়ে তখন পর্যন্ত কিছু জানেন না।
পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্কুলের সব প্রশ্ন দেখা সম্ভব হয় না। তবে আমার কাছে মনে হয়, যিনি এ প্রশ্ন করেছেন তিনি শিক্ষক হিসেবে অযোগ্য। সেই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’
তবে সপ্তম শ্রেণির ইসলাম ধর্মের ওই শিক্ষক নূর উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কাউকে কটাক্ষ করার জন্য এ ধরনের প্রশ্ন করিনি। ইসলামিক দৃষ্টি অনুযায়ী, মেয়েরা শালীন পোশাকে থাকলে কুদৃষ্টি থেকে দূরে থাকবে। শয়তানের হাত থেকেও বাঁচতে পারবে। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও শালীন পোশাক পরতে হবে। বর্তমানে যৌন হয়রানির ঘটনা বেশি ঘটছে। তাই এ প্রশ্ন দিয়েছিলাম। তবে সপ্তম শ্রেণির জন্য এ প্রশ্নপত্র না করে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য করা হলে ভালো হতো।’
এর আগে রাজধানীতে হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ইসলাম ধর্ম (সৃজনশীল) পরীক্ষাতেও যৌন নিপীড়নের জন্য মেয়েদের পোশাককে দায়ী করে প্রশ্ন করা হয়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হলে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম প্রথম আলোকে বলেন, একদিকে নারীর ক্ষমতায়ন ও মানবাধিকারের কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে আবার এসবের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি শিক্ষার্থীদের মনমানসিকতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাঠ্যসূচি, পরীক্ষার প্রশ্ন যে ধরনের জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন তাতে যথেষ্ট ঘাটতি আছে। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাতো বলতে গেলে নজরের বাইরেই থেকে যাচ্ছে। তাই সরকারকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের পরিশীলিত, মূল্যবোধসম্পন্ন ও অধিকারবোধ সম্পন্ন করে গড়ে তোলা। তবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে নারীদের যদি এভাবে উপস্থাপন করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কি ধরনের মূল্যবোধের জন্ম নেবে তাই আশঙ্কার কথা। এ ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে ছোট ছোট ছেলেদের মধ্যে মেয়েদের প্রতি যেভাবে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে তাও সমাজে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা আরও বলেন, যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুড়সুড়ি দিয়ে যেভাবে নারীর প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করা হচ্ছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়, গ্রহণযোগ্যও নয়। এ ছাড়া সৃজনশীল প্রশ্নের এ ধরনের অপব্যবহারও ভয়াবহ অবস্থার তৈরি করবে। তাই শুধু শিক্ষক, অভিভাবক, নাগরিক সমাজ সোচ্চার হলেই হবে না, সরকারকেও যথাযথভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষায় (সৃজনশীল) অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় গতকাল মঙ্গলবার এ প্রশ্নপত্র দিয়েই ছাত্র ছাত্রীরা (ছেলে মেয়ে আলাদা সেকশন) পরীক্ষা দিয়েছে। ফারিযা কীভাবে চললে বখাটে ছেলেদের হাত থেকে বাঁচতে পারবে? -শিক্ষার্থীদের এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরও দিতে হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান তিনি এ বিষয়ে তখন পর্যন্ত কিছু জানেন না।
পরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্কুলের সব প্রশ্ন দেখা সম্ভব হয় না। তবে আমার কাছে মনে হয়, যিনি এ প্রশ্ন করেছেন তিনি শিক্ষক হিসেবে অযোগ্য। সেই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’
তবে সপ্তম শ্রেণির ইসলাম ধর্মের ওই শিক্ষক নূর উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কাউকে কটাক্ষ করার জন্য এ ধরনের প্রশ্ন করিনি। ইসলামিক দৃষ্টি অনুযায়ী, মেয়েরা শালীন পোশাকে থাকলে কুদৃষ্টি থেকে দূরে থাকবে। শয়তানের হাত থেকেও বাঁচতে পারবে। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও শালীন পোশাক পরতে হবে। বর্তমানে যৌন হয়রানির ঘটনা বেশি ঘটছে। তাই এ প্রশ্ন দিয়েছিলাম। তবে সপ্তম শ্রেণির জন্য এ প্রশ্নপত্র না করে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য করা হলে ভালো হতো।’
এর আগে রাজধানীতে হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ইসলাম ধর্ম (সৃজনশীল) পরীক্ষাতেও যৌন নিপীড়নের জন্য মেয়েদের পোশাককে দায়ী করে প্রশ্ন করা হয়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হলে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম প্রথম আলোকে বলেন, একদিকে নারীর ক্ষমতায়ন ও মানবাধিকারের কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে আবার এসবের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি শিক্ষার্থীদের মনমানসিকতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাঠ্যসূচি, পরীক্ষার প্রশ্ন যে ধরনের জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন তাতে যথেষ্ট ঘাটতি আছে। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাতো বলতে গেলে নজরের বাইরেই থেকে যাচ্ছে। তাই সরকারকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের পরিশীলিত, মূল্যবোধসম্পন্ন ও অধিকারবোধ সম্পন্ন করে গড়ে তোলা। তবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে নারীদের যদি এভাবে উপস্থাপন করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কি ধরনের মূল্যবোধের জন্ম নেবে তাই আশঙ্কার কথা। এ ধরনের প্রশ্নের মাধ্যমে ছোট ছোট ছেলেদের মধ্যে মেয়েদের প্রতি যেভাবে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে তাও সমাজে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা আরও বলেন, যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুড়সুড়ি দিয়ে যেভাবে নারীর প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করা হচ্ছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়, গ্রহণযোগ্যও নয়। এ ছাড়া সৃজনশীল প্রশ্নের এ ধরনের অপব্যবহারও ভয়াবহ অবস্থার তৈরি করবে। তাই শুধু শিক্ষক, অভিভাবক, নাগরিক সমাজ সোচ্চার হলেই হবে না, সরকারকেও যথাযথভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।
No comments