বাংলাদেশে উৎপাদিত সোয়েটার নিয়ে বিপাকে রাসেল ব্র্যান্ড
বৃটিশ
কৌতুকাভিনেতা রাসেল ব্র্যান্ড বাংলাদেশে উৎপাদিত সোয়েটার বিক্রি করছেন ৬০
পাউন্ড (৭১৩৩ টাকা) করে। অথচ বাংলাদেশের যে কারখানায় সোয়েটারগুলো তৈরি
হয়েছে, সেখানে প্রতিজন শ্রমিক ঘণ্টায় মজুরি পান মাত্র ২৫ পেনি (১ পাউন্ডের
চার ভাগের এক ভাগ বা ৩০ টাকা)! রাসেল ব্র্যান্ড বলছেন, সোয়েটার বিক্রির
লাভের অর্থ ব্যয় হবে ‘ভাল কাজে’ তথা দাতব্য সংস্থায়। কিন্তু কত অর্থ কোথায়
বা কিভাবে ব্যয় হয় - তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। শুধু তা-ই নয়, সোয়েটারের
ভেতরের স্টিকারে দাবি করা হয়েছে, এটি উৎপাদন ও প্রিন্ট হয়েছে যুক্তরাজ্যে!
অথচ ওই স্টিকার উল্টালেই দেখা যায়, লেখা রয়েছে: মেড ইন বাংলাদেশ! এ নিয়ে
ব্যাপক তোলপাড় চলছে বৃটেনে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা বের করেছেন এ রকম আরও
হাঁড়ির খবর। এ খবর দিয়েছে যুক্তরাজ্যের পত্রিকা দ্য ডেইলি মেইল। খবরে বলা
হয়েছে, বাংলাদেশের ওই কারখানার শ্রমিকরা জানিয়েছে প্রতিদিন তাদের ১১ ঘণ্টা
করে কাজ করতে হয়। দিনশেষে তারা মাত্র ২ পাউন্ডের কাছাকাছি পান। অথচ, রাসেল
ব্র্যান্ড সেসব সোয়েটার ৬০ পাউন্ড করে বিক্রি করছেন। বলছেন, এসব থেকে
প্রাপ্ত লাভের এক পয়সাও তিনি নেবেন না। কিন্তু এসব অর্থ কোথায় ব্যয় হয়েছে,
লাভের অঙ্কটিই বা কতো - এ নিয়ে কোন সদুত্তর নেই তার কাছে। শুধু বলছেন, সব
আয়-ব্যয় হবে ‘ভাল কাজে’। ‘ভাল কাজ’ বলতে তিনি কি বোঝাচ্ছেন, তা-ও
সুনির্দিষ্ট নয়। নিজেকে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরোধী বলে দাবি করা কোটিপতি
কৌতুকাভিনেতা রাসেল ব্র্যান্ডের এসব দ্বিমুখী আচরণ প্রকাশ হবার পর,
যুক্তরাজ্যের রাজনীতিবিদ ও সামাজিক কর্মীরা তাকে আখ্যায়িত করেছেন ‘প্রথম
শ্রেণীর ভণ্ড’ হিসেবে। সম্প্রতি রাসেল ব্র্যান্ড বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান
ওয়ালমার্টের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। ওয়ালমার্ট শ্রমিকদের যুক্তরাষ্ট্রের
আইনানুযায়ী ন্যূনতম মজুরি দিতে ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে,
ব্র্যান্ড নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য যে কোম্পানি থেকে পোশাক নিয়েছেন, তারা
শ্রমিকদের যে মজুরি দেয়, তা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যূনতম মজুরির চেয়ে ৩১৭ গুণ
কম। বেলজিয়াম-ভিত্তিক স্টানলে অ্যান্ড স্টেলা নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি এরপরও
যুক্তি দেখাচ্ছে, তারা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় শ্রমিকদের অর্থ দেয়
বেশি, খাটায় কম। বৃহসপতিবার থেকে ব্র্যান্ড এ নিয়ে অসংখ্য প্রশ্নের বাণে
জর্জরিত হচ্ছেন। তবে কোন প্রশ্নেরই উত্তর না দিয়ে নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে
যোগাযোগ করতে বললেন তিনি।
ব্র্যান্ড তার সোয়েটারের ক্রেতাদের বলেছেন, ৬০ পাউন্ড দিয়ে শোয়েটার কিনলে আয়কৃত অর্থ যাবে দাতব্য সংস্থায়। কেউ চাইলে আরও বেশি অর্থ দিয়েও কিনতে পারেন। ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদক ৬০ পাউন্ড দিয়ে একটি সোয়েটার কিনলে দেখতে পান, এর মধ্যে কত অর্থ দাতব্য সংস্থায় যাবে, তা রশিদে উল্লেখ নেই। কিন্তু ৬৫ পাউন্ড দিয়ে আরেকটি সোয়েটার কিনলে তাকে জানানো হয়, এখান থেকে মাত্র ১.৩৭ পাউন্ড ব্যয় হবে ভাল কাজে! এ ছাড়া কোন ‘ভাল কাজে’ ব্যয় হবে, তা-ও জানানো হয়নি ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে। এর অর্থ কি এই যে, ৬০ পাউন্ড দিয়ে সোয়েটার কিনলে, ব্র্যান্ডের কোন লাভই হয় না এবং তাই দাতব্য সংস্থায় কোন অর্থই যায় না?
কোন ‘ভাল কাজে’ ওই অর্থ ব্যয় হবে এমন প্রশ্নের জবাবে রাসেল ব্র্যান্ড বলেন, ওই অর্থ ‘সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পে’ ব্যয় হবে। ওই প্রকল্পের মধ্যে তার নিজের একটি ক্যাফেও আছে! সোয়েটার বিক্রির লাভের অর্থ কোথায় ব্যয় হয়, বা তার ক্যাফে ব্যতীত অন্য কোন দাতব্য সংস্থায় সে অর্থ ব্যয় হয়েছে কিনা, সে সম্পর্কে কোন প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।
শেষ পর্যন্ত বিষয়টি বৃটেনের চ্যারিটি কমিশন পর্যন্ত গড়িয়েছে। চারিটি কমিশন ব্র্যান্ডের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। গত বছর ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে লেখা ছিল, তার এ ধরনের বিভিন্ন জিনিস বিক্রির অর্থ রাসেল ব্র্যান্ড ফাউন্ডেশনে যাবে। বর্তমানে সে তথ্য ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া চ্যারিটি কমিশন জানিয়েছে, তাদের কাছে রাসেল ব্র্যান্ড ফাউন্ডেশন নামে কিছুই নথিভুক্ত নেই। ফাউন্ডেশন নিয়েও কোন প্রশ্নের জবাব দেননি কোটি পাউন্ডের মালিক এই অভিনেতা।
ব্র্যান্ড তার সোয়েটারের ক্রেতাদের বলেছেন, ৬০ পাউন্ড দিয়ে শোয়েটার কিনলে আয়কৃত অর্থ যাবে দাতব্য সংস্থায়। কেউ চাইলে আরও বেশি অর্থ দিয়েও কিনতে পারেন। ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদক ৬০ পাউন্ড দিয়ে একটি সোয়েটার কিনলে দেখতে পান, এর মধ্যে কত অর্থ দাতব্য সংস্থায় যাবে, তা রশিদে উল্লেখ নেই। কিন্তু ৬৫ পাউন্ড দিয়ে আরেকটি সোয়েটার কিনলে তাকে জানানো হয়, এখান থেকে মাত্র ১.৩৭ পাউন্ড ব্যয় হবে ভাল কাজে! এ ছাড়া কোন ‘ভাল কাজে’ ব্যয় হবে, তা-ও জানানো হয়নি ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে। এর অর্থ কি এই যে, ৬০ পাউন্ড দিয়ে সোয়েটার কিনলে, ব্র্যান্ডের কোন লাভই হয় না এবং তাই দাতব্য সংস্থায় কোন অর্থই যায় না?
কোন ‘ভাল কাজে’ ওই অর্থ ব্যয় হবে এমন প্রশ্নের জবাবে রাসেল ব্র্যান্ড বলেন, ওই অর্থ ‘সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পে’ ব্যয় হবে। ওই প্রকল্পের মধ্যে তার নিজের একটি ক্যাফেও আছে! সোয়েটার বিক্রির লাভের অর্থ কোথায় ব্যয় হয়, বা তার ক্যাফে ব্যতীত অন্য কোন দাতব্য সংস্থায় সে অর্থ ব্যয় হয়েছে কিনা, সে সম্পর্কে কোন প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।
শেষ পর্যন্ত বিষয়টি বৃটেনের চ্যারিটি কমিশন পর্যন্ত গড়িয়েছে। চারিটি কমিশন ব্র্যান্ডের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। গত বছর ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে লেখা ছিল, তার এ ধরনের বিভিন্ন জিনিস বিক্রির অর্থ রাসেল ব্র্যান্ড ফাউন্ডেশনে যাবে। বর্তমানে সে তথ্য ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া চ্যারিটি কমিশন জানিয়েছে, তাদের কাছে রাসেল ব্র্যান্ড ফাউন্ডেশন নামে কিছুই নথিভুক্ত নেই। ফাউন্ডেশন নিয়েও কোন প্রশ্নের জবাব দেননি কোটি পাউন্ডের মালিক এই অভিনেতা।
No comments