সিটি নির্বাচনে সরকার হস্তক্ষেপ করবে না
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ধ্বংসাত্মক ও মানুষ হত্যার
রাজনীতিই বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। আর এটাই হবে তার তথাকথিত আন্দোলনের
যৌক্তিক পরিণতি। দেশের মানুষই জঙ্গি নেত্রী খালেদা জিয়ার ধ্বংসাত্মক
কর্মকাণ্ড সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করছে, এই জঙ্গি নেত্রীর কথা জনগণ মানে না।
তার দলের নেতারাও খালেদা জিয়ার কথা শুনেন না, তার ফোন পর্যন্ত ধরেন না।
খালেদা জিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ না করলে থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যাওয়া
মাত্রই পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। গতকাল সংসদে প্রশ্নোত্তর-পর্বে
প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠিত অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সরকারি দলের সংসদ
সদস্য কাজী নাবিল আহমদ। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকে নিজ নিজ
স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চালু রাখুন, স্বাভাবিক যান চলাচল অব্যাহত রাখুন,
অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। জাতীয়
পার্টির ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আসন্ন তিন সিটি
করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী দেয়ায় বিএনপিকে স্বাগত জানান। নির্বাচন থেকে
পালানোর অজুহাত না খোঁজার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে সরকার কোন
ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বাচনে সম্পূর্ণ সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে।
নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে, আর সরকার ইসি’র চাহিদামত সর্বাত্মক
সহযোগিতা দেবে। বিএনপির ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ড’ দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
লেভেল প্লেইং ফিল্ডের সুরের পেছনে কোন বে-সুর কাজ করছে, সেটা বোধগম্য নয়।
লেভেল প্লেইং ফিল্ড বলতে আসলে তারা কী চাচ্ছে? আন্দোলনের নামে মানুষকে
পুড়িয়ে হত্যা, যানবাহনে আগুন, রেলগাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার সময় কী
তাদের (বিএনপি-জামায়াত) জনগণের কথা মনে পড়েনি? তিনি বলেন, আসলে নির্বাচনে
অংশগ্রহণ করবেন, কি করবেন না, এ নিয়ে বিএনপি নেত্রী দ্বিধা-দ্বন্দ্বে
ভুগছেন। তিনি বলেছিলেন বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন অংশ নিবেন না।
কিন্তু আগেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, এখনও করছে। তাদের
শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে, সিটি নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে। এখন লেভেল প্লেয়িং
ফিল্ডের সুর তুলে নির্বাচন থেকে পিছু হঠার পথ খুঁজছে কিনা, তা আমাদের কাছে
বোধগম্য নয়।
খালেদা জিয়ার সম্পদ বাজেয়াপ্ত: অবরোধ-হরতালের হুকুমদাতা খালেদা জিয়াসহ বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নিহত-আহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে কিনা, সরকারি দলের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের এমন সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী আইন-কানুন, আদালত-সংবিধান কিছুই মানেন না। কিন্তু আমরা আইন মানি, আইনকে রক্ষা করি। তাই আইন তার নিজস্বগতিতেই চলবে। আইন ও আদালত যে নির্দেশনা দেবে, সেই নির্দেশ আমরা মেনে চলবো। আদালত যদি বলে অবরোধ-হরতাল আহ্বানকারী বিএনপি নেত্রীসহ অন্যদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নাশকতায় নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে, আমরা তাই করবো। তবে আইনের বাইরে যাওয়ার আমাদের কোন সুযোগ নেই। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত নেত্রী খালেদা জিয়া গত ১৩ই মার্চ সংবাদ সম্মেলনে তার হিংস্ররূপ আবারও প্রকাশ করেছেন। এতগুলো মানুষ মারা গেল অথচ তিনি তার বক্তব্যে তাদের প্রতি সমবেদনাটুকুও জানাননি। আসলে এই নিরীহ মানুষগুলোকে খালেদা জিয়া হত্যা করেছেন। তাই সমবেদনা জানানোর মানসিক শক্তিটুকুও তার ছিল না। জঙ্গি নেত্রীর কথা দেশের জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। সংসদ নেতা বলেন, জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে। নাশকতামূলক ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, গোষ্ঠী, অর্থায়নকারী ও পরিকল্পনাকারীদের কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্যাদি সংগ্রহের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। এছাড়া, সকল জঙ্গি, আসামি গ্রেপ্তার, অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং মাদকদ্রব্যসহ সকল ধরনের অবৈধ মালামাল উদ্ধারে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।
আগামীতে স্থানীয় নির্বাচনও দলীয়ভাবে: আগামীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও দলীয়ভাবে করা হবে কিনা- সরকারি দলের শামসুল হক চৌধুরীর এমন সম্পূরক প্রশ্নের সঙ্গে একমত পোষণ করে সংসদ নেতা বলেন, আমাদের দেশে স্থানীয় নির্বাচনগুলো দলীয়ভাবে না হলেও ফলাফল ঘোষণার সময় তা দলীয়ভাবেই লেখা হয়। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমাদের দেশেও স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন ও প্রচার করার বিধান থাকা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। সংসদ সদস্যরা চাইলে এব্যাপারে বিদ্যমান আইন সংশোধন করে দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
যেকোন ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত: বর্ধমানে ধৃত জঙ্গিরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকেও হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল- এব্যাপারে সংসদ নেতার নিরাপত্তার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারি দলের একেএম শামীম ওসমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, হায়াত-মউত, ক্ষমতা দেয়া ও কেড়ে নেয়ার মালিক আল্লাহ। আমি দেশ ও জনগণের জন্য রাজনীতি করি, নিজের জন্য নয়। প্রতিনিয়ত মৃত্যুভয় নিয়ে চললে তো দেশের এতো উন্নয়ন করতে পারতাম না। তাই আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। বারবার আমার ওপর আঘাত এসেছে, ভবিষ্যতেও হয়তো আসবে। প্রতিনিয়তই শুনছি আমাকে হত্যা করা হবে! কে কখন মারবে এই দুশ্চিন্তা নিয়ে চললে তো দেশ ও জনগণের জন্য কিছু করতে পারবো না। এতোবার চেষ্টা করেও বিএনপি নেত্রী ও বিএনপি-জামায়াত আমাকে মারতে (হত্যা) পারলো না, এই দুঃখ তো তাদের। এই দুশ্চিন্তা আমি করি না। দেশ ও জনগণের কল্যাণে জীবনে যত বড় ঝুঁকি নিতে হয়, আমি তা নিতে প্রস্তুত। বিএনএফ’র চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের দুর্ভাগ্য, একজন নেত্রী আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করছেন, সম্পদ বিনষ্ট করছেন, আর আমরা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি। একজন নেতানেত্রীর কাজই হচ্ছে জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়ন সাধন করা। কিন্তু যিনি আগে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি জনগণের কল্যাণের পরিবর্তে তাদেরকে হত্যা করছেন! দেশের জনগণের প্রতি তার ন্যূনতম দায়িত্ববোধ নেই। আর তিনি দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না বলেই একাত্তরের মতোই দেশের মানুষকে হত্যা করছেন, জ্বালাও-পোড়াও চালাচ্ছেন। তবে দেশের মানুষ জঙ্গি নেত্রী খালেদা জিয়াকে প্রত্যাখ্যান করে নাশকতা দমনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে বলেই আমরা সবকিছু মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। আওয়ামী লীগের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের মূল প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন আন্দোলন যৌক্তিক পর্যায়ে না যাওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রীর এসব কর্মসূচিই বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দিবে, আর এটাই হবে তার তথাকথিত আন্দোলনের যৌক্তিক পরিণতি।? সংসদ নেতা বলেন, দেশের মানুষই জঙ্গি নেত্রী খালেদা জিয়ার ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করছে। জনগণই তার সন্ত্রাসের উপযুক্ত জবাব দিচ্ছে। দেশের মানুষ জঙ্গি নেত্রীর কথা মানেন না। তার দলের নেতারাও খালেদা জিয়ার কথা শুনেন না, তার ফোন পর্যন্ত ধরেন না। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত নেত্রী দেশের আইন মানেন না। কোর্ট তার (খালেদা) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রী হয়েও তিনি আইন অমান্য করছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) যদি কোর্টে আত্মসমর্পণ না করেন, তবে থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যাওয়া মাত্র পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে। সরকারি দলের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত ৮৫ দিন ধরে হরতাল-অবরোধের নামে নিরীহ ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। হরতাল-অবরোধের কারণে ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চলমান অবৈধ হরতাল-অবরোধের কারণে গার্মেন্টস সেক্টরে উৎপাদন কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিবহন ব্যবস্থা হওয়ায় এই সেক্টরের কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হচ্ছে এবং ক্রয়াদেশ অনুযায়ী সময়মতো উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে বিদেশী ক্রেতা বা তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করে অন্য দেশে স্থানান্তর করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে তৈরী পোশাক সেক্টরে নিয়োজিত বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
খালেদা জিয়ার সম্পদ বাজেয়াপ্ত: অবরোধ-হরতালের হুকুমদাতা খালেদা জিয়াসহ বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নিহত-আহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে কিনা, সরকারি দলের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের এমন সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী আইন-কানুন, আদালত-সংবিধান কিছুই মানেন না। কিন্তু আমরা আইন মানি, আইনকে রক্ষা করি। তাই আইন তার নিজস্বগতিতেই চলবে। আইন ও আদালত যে নির্দেশনা দেবে, সেই নির্দেশ আমরা মেনে চলবো। আদালত যদি বলে অবরোধ-হরতাল আহ্বানকারী বিএনপি নেত্রীসহ অন্যদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নাশকতায় নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে, আমরা তাই করবো। তবে আইনের বাইরে যাওয়ার আমাদের কোন সুযোগ নেই। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত নেত্রী খালেদা জিয়া গত ১৩ই মার্চ সংবাদ সম্মেলনে তার হিংস্ররূপ আবারও প্রকাশ করেছেন। এতগুলো মানুষ মারা গেল অথচ তিনি তার বক্তব্যে তাদের প্রতি সমবেদনাটুকুও জানাননি। আসলে এই নিরীহ মানুষগুলোকে খালেদা জিয়া হত্যা করেছেন। তাই সমবেদনা জানানোর মানসিক শক্তিটুকুও তার ছিল না। জঙ্গি নেত্রীর কথা দেশের জনগণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। সংসদ নেতা বলেন, জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে। নাশকতামূলক ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, গোষ্ঠী, অর্থায়নকারী ও পরিকল্পনাকারীদের কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্যাদি সংগ্রহের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। এছাড়া, সকল জঙ্গি, আসামি গ্রেপ্তার, অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং মাদকদ্রব্যসহ সকল ধরনের অবৈধ মালামাল উদ্ধারে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।
আগামীতে স্থানীয় নির্বাচনও দলীয়ভাবে: আগামীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও দলীয়ভাবে করা হবে কিনা- সরকারি দলের শামসুল হক চৌধুরীর এমন সম্পূরক প্রশ্নের সঙ্গে একমত পোষণ করে সংসদ নেতা বলেন, আমাদের দেশে স্থানীয় নির্বাচনগুলো দলীয়ভাবে না হলেও ফলাফল ঘোষণার সময় তা দলীয়ভাবেই লেখা হয়। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমাদের দেশেও স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন ও প্রচার করার বিধান থাকা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। সংসদ সদস্যরা চাইলে এব্যাপারে বিদ্যমান আইন সংশোধন করে দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
যেকোন ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত: বর্ধমানে ধৃত জঙ্গিরা আমাদের প্রধানমন্ত্রীকেও হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল- এব্যাপারে সংসদ নেতার নিরাপত্তার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারি দলের একেএম শামীম ওসমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, হায়াত-মউত, ক্ষমতা দেয়া ও কেড়ে নেয়ার মালিক আল্লাহ। আমি দেশ ও জনগণের জন্য রাজনীতি করি, নিজের জন্য নয়। প্রতিনিয়ত মৃত্যুভয় নিয়ে চললে তো দেশের এতো উন্নয়ন করতে পারতাম না। তাই আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। বারবার আমার ওপর আঘাত এসেছে, ভবিষ্যতেও হয়তো আসবে। প্রতিনিয়তই শুনছি আমাকে হত্যা করা হবে! কে কখন মারবে এই দুশ্চিন্তা নিয়ে চললে তো দেশ ও জনগণের জন্য কিছু করতে পারবো না। এতোবার চেষ্টা করেও বিএনপি নেত্রী ও বিএনপি-জামায়াত আমাকে মারতে (হত্যা) পারলো না, এই দুঃখ তো তাদের। এই দুশ্চিন্তা আমি করি না। দেশ ও জনগণের কল্যাণে জীবনে যত বড় ঝুঁকি নিতে হয়, আমি তা নিতে প্রস্তুত। বিএনএফ’র চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের দুর্ভাগ্য, একজন নেত্রী আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করছেন, সম্পদ বিনষ্ট করছেন, আর আমরা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি। একজন নেতানেত্রীর কাজই হচ্ছে জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়ন সাধন করা। কিন্তু যিনি আগে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি জনগণের কল্যাণের পরিবর্তে তাদেরকে হত্যা করছেন! দেশের জনগণের প্রতি তার ন্যূনতম দায়িত্ববোধ নেই। আর তিনি দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না বলেই একাত্তরের মতোই দেশের মানুষকে হত্যা করছেন, জ্বালাও-পোড়াও চালাচ্ছেন। তবে দেশের মানুষ জঙ্গি নেত্রী খালেদা জিয়াকে প্রত্যাখ্যান করে নাশকতা দমনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে বলেই আমরা সবকিছু মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। আওয়ামী লীগের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের মূল প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন আন্দোলন যৌক্তিক পর্যায়ে না যাওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রীর এসব কর্মসূচিই বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দিবে, আর এটাই হবে তার তথাকথিত আন্দোলনের যৌক্তিক পরিণতি।? সংসদ নেতা বলেন, দেশের মানুষই জঙ্গি নেত্রী খালেদা জিয়ার ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করছে। জনগণই তার সন্ত্রাসের উপযুক্ত জবাব দিচ্ছে। দেশের মানুষ জঙ্গি নেত্রীর কথা মানেন না। তার দলের নেতারাও খালেদা জিয়ার কথা শুনেন না, তার ফোন পর্যন্ত ধরেন না। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত নেত্রী দেশের আইন মানেন না। কোর্ট তার (খালেদা) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রী হয়েও তিনি আইন অমান্য করছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) যদি কোর্টে আত্মসমর্পণ না করেন, তবে থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যাওয়া মাত্র পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে। সরকারি দলের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত ৮৫ দিন ধরে হরতাল-অবরোধের নামে নিরীহ ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। হরতাল-অবরোধের কারণে ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চলমান অবৈধ হরতাল-অবরোধের কারণে গার্মেন্টস সেক্টরে উৎপাদন কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিবহন ব্যবস্থা হওয়ায় এই সেক্টরের কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হচ্ছে এবং ক্রয়াদেশ অনুযায়ী সময়মতো উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে বিদেশী ক্রেতা বা তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করে অন্য দেশে স্থানান্তর করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে তৈরী পোশাক সেক্টরে নিয়োজিত বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
No comments