ব্লগার ওয়াশিকুর রহমানকে হত্যা- ১৫ দিন ধরে চলে প্রশিক্ষণ
ব্লগার
ওয়াশিকুর রহমানকে হত্যার ১৫ দিন আগে থেকে প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ চলে।
প্রশিক্ষণ পর্যায়ে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, চাপাতিসহ একজন
ধরাও পড়েন। তবে তাঁর কাছ থেকে কোনো তথ্য বের করতে পারেনি পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম গতকাল বুধবার এসব তথ্য জানান। ওয়াশিকুর হত্যা মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, হত্যাকারীরা উগ্রপন্থী সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের কোনো গোপন দলের (স্লিপার সেল) সদস্য। গত সোমবার সকালে রাজধানীর দক্ষিণ বেগুনবাড়ীতে প্রকাশ্যে সড়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ওয়াশিকুর রহমানকে। ঘটনাস্থল থেকেই স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জিকরুল্লাহ ও আরিফুল ইসলাম নামে দুই তরুণকে ধরে ফেলে। গতকাল থেকে তাঁদের আট দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে ডিবি।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুজন ডিবিকে জানিয়েছেন, জিকরুল্লাহ চট্টগ্রামের হাটহাজারীর একটি মাদ্রাসায় পড়ছেন। আর আরিফুল একই মাদ্রাসা থেকে দাওরা হাদিসে পাস করে ঢাকার একটি মাদ্রাসায় উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হয়েছেন। তাঁরা পাঁচজন যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মেসে থাকতেন। এঁদের মধ্যে চারজন সরাসরি ওয়াশিকুর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। আরিফুল ও জিকরুল্লাহ ধরা পড়লেও আবু তাহের এবং আরও একজন পালিয়ে যান। এঁদের (পাঁচজনের) একজন সাইফুল ইসলাম।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল বলেন, যাত্রাবাড়ীর ওই মেসে এবং আশপাশের এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ১৫ দিন আগে থেকে তাঁদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। মানুষকে কীভাবে কোপাতে হবে, কোপ দেওয়ার সময় নিজেরা যেন আহত না হন, চাপাতি নিয়ে চলাফেরায় অভ্যস্ত করতে এবং ভয় কাটাতে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ জন্য হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন আগে থেকে তাঁদের সব সময় চাপাতি নিয়ে চলাফেরা করতে বলা হয়। এই পর্যায়ে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরির সময় ২৪ মার্চ সকালে সাইফুল যাত্রাবাড়ী পুলিশের কাছে ধরা পড়েন। তবে তাঁর কাছ থেকে পুলিশ কোনো তথ্য বের করতে পারেনি। আরিফুল ও জিকরুল্লাহ ধরা পড়ার পরে তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি পরিষ্কার হয়। পুলিশ যাত্রাবাড়ীতে তাঁদের থাকার জায়গাটি খুঁজে পেয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শংকর কর জানান, সাইফুলকে এখন তৃতীয় দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি চাপাতিসহ তিনি গ্রেপ্তার হন।
মনিরুল আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়া দুজন মাসুম নামে একজনের কথা বলেছেন। তিনি যাত্রাবাড়ীর ওই মেসে গিয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতেন। খুন করতে যাওয়ার সময় কেউই সঙ্গে মুঠোফোন নেননি। গ্রেপ্তার আরিফুল খুন করতে যাওয়ার আগে একজনের কাছে মুঠোফোন জমা রেখে গিয়েছিলেন। পুলিশ সেই মুঠোফোনটি উদ্ধার করেছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, এঁরা আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের তাত্ত্বিক নেতা জসীমউদ্দীন রাহমানীর অনুসারী বলে মনে হচ্ছে। এই সংগঠনেরই কোনো স্লিপার সেলের সদস্য এঁরা। এই স্লিপার সেলগুলো সাধারণত পাঁচ-ছয়জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়। ওই সেলের বাইরে সংগঠনের আর কাউকে তাঁরা চেনেন না। শুধু সেলের সমন্বয়কের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ থাকে। সেলের ভেতরের সদস্যরা তাঁদের অন্য সঙ্গীদের বিষয়ে অনাবশ্যক কৌতূহল দেখান না। একে অন্যের নাম-পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন না। এর ফলে একজন ধরা পড়লেও তিনি সবার তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিতে পারেন না।
ডিবির ধারণা, মাসুম এই সেলের সমন্বয়ক। তবে মাসুম তাঁর আসল নাম নয়, বানানো নাম। এর আগে ব্লগার রাজীব হত্যার ঘটনায় স্লিপার সেলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হলেও এর সমন্বয়ক এবং হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী রেদওয়ানুল আজাদ রানাকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। রানার বিস্তারিত পরিচয় অনেক পরে পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, রানা এখন দেশের বাইরে পালিয়ে রয়েছেন।
আরিফুল জেএমবির সদস্য ছিলেন: ডিবি সূত্র জানায়, ২০১২ সালে নরসিংদীর রায়পুরায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ধরা পড়েছিলেন আরিফুল। পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে যান। ওই মামলায় ২৬ জনের সঙ্গে অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি আরিফুল।
নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, রায়পুরা থানার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১ আগস্ট রায়পুরায় ধরা পড়ে একদল জঙ্গি। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। সেই মামলায় আরিফ হোসেন ওরফে বিল্লাহ ওরফে বিল্লাহ মুজিবুল হক নামে একজনের নাম রয়েছে।
আরিফুলের আনসারউল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, নরসিংদী থেকে জামিনে বের হয়ে আরিফুল রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মাওলানা জসীমউদ্দীন রাহমানীর মসজিদে যাওয়া শুরু করেন। বিশেষ করে শুক্রবারের বিশেষ বয়ানে তিনি অংশ নিতেন। তখন থেকে তিনি রাহমানীর অনুসারী হন।
কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত আরিফুল ও জিকরুল্লাহ আর কোনো ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেননি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম গতকাল বুধবার এসব তথ্য জানান। ওয়াশিকুর হত্যা মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, হত্যাকারীরা উগ্রপন্থী সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের কোনো গোপন দলের (স্লিপার সেল) সদস্য। গত সোমবার সকালে রাজধানীর দক্ষিণ বেগুনবাড়ীতে প্রকাশ্যে সড়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ওয়াশিকুর রহমানকে। ঘটনাস্থল থেকেই স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জিকরুল্লাহ ও আরিফুল ইসলাম নামে দুই তরুণকে ধরে ফেলে। গতকাল থেকে তাঁদের আট দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে ডিবি।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুজন ডিবিকে জানিয়েছেন, জিকরুল্লাহ চট্টগ্রামের হাটহাজারীর একটি মাদ্রাসায় পড়ছেন। আর আরিফুল একই মাদ্রাসা থেকে দাওরা হাদিসে পাস করে ঢাকার একটি মাদ্রাসায় উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হয়েছেন। তাঁরা পাঁচজন যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মেসে থাকতেন। এঁদের মধ্যে চারজন সরাসরি ওয়াশিকুর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। আরিফুল ও জিকরুল্লাহ ধরা পড়লেও আবু তাহের এবং আরও একজন পালিয়ে যান। এঁদের (পাঁচজনের) একজন সাইফুল ইসলাম।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল বলেন, যাত্রাবাড়ীর ওই মেসে এবং আশপাশের এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ১৫ দিন আগে থেকে তাঁদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। মানুষকে কীভাবে কোপাতে হবে, কোপ দেওয়ার সময় নিজেরা যেন আহত না হন, চাপাতি নিয়ে চলাফেরায় অভ্যস্ত করতে এবং ভয় কাটাতে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ জন্য হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন আগে থেকে তাঁদের সব সময় চাপাতি নিয়ে চলাফেরা করতে বলা হয়। এই পর্যায়ে অস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরির সময় ২৪ মার্চ সকালে সাইফুল যাত্রাবাড়ী পুলিশের কাছে ধরা পড়েন। তবে তাঁর কাছ থেকে পুলিশ কোনো তথ্য বের করতে পারেনি। আরিফুল ও জিকরুল্লাহ ধরা পড়ার পরে তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি পরিষ্কার হয়। পুলিশ যাত্রাবাড়ীতে তাঁদের থাকার জায়গাটি খুঁজে পেয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শংকর কর জানান, সাইফুলকে এখন তৃতীয় দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি চাপাতিসহ তিনি গ্রেপ্তার হন।
মনিরুল আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়া দুজন মাসুম নামে একজনের কথা বলেছেন। তিনি যাত্রাবাড়ীর ওই মেসে গিয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিতেন। খুন করতে যাওয়ার সময় কেউই সঙ্গে মুঠোফোন নেননি। গ্রেপ্তার আরিফুল খুন করতে যাওয়ার আগে একজনের কাছে মুঠোফোন জমা রেখে গিয়েছিলেন। পুলিশ সেই মুঠোফোনটি উদ্ধার করেছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, এঁরা আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের তাত্ত্বিক নেতা জসীমউদ্দীন রাহমানীর অনুসারী বলে মনে হচ্ছে। এই সংগঠনেরই কোনো স্লিপার সেলের সদস্য এঁরা। এই স্লিপার সেলগুলো সাধারণত পাঁচ-ছয়জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়। ওই সেলের বাইরে সংগঠনের আর কাউকে তাঁরা চেনেন না। শুধু সেলের সমন্বয়কের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ থাকে। সেলের ভেতরের সদস্যরা তাঁদের অন্য সঙ্গীদের বিষয়ে অনাবশ্যক কৌতূহল দেখান না। একে অন্যের নাম-পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন না। এর ফলে একজন ধরা পড়লেও তিনি সবার তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিতে পারেন না।
ডিবির ধারণা, মাসুম এই সেলের সমন্বয়ক। তবে মাসুম তাঁর আসল নাম নয়, বানানো নাম। এর আগে ব্লগার রাজীব হত্যার ঘটনায় স্লিপার সেলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হলেও এর সমন্বয়ক এবং হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী রেদওয়ানুল আজাদ রানাকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। রানার বিস্তারিত পরিচয় অনেক পরে পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, রানা এখন দেশের বাইরে পালিয়ে রয়েছেন।
আরিফুল জেএমবির সদস্য ছিলেন: ডিবি সূত্র জানায়, ২০১২ সালে নরসিংদীর রায়পুরায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ধরা পড়েছিলেন আরিফুল। পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে যান। ওই মামলায় ২৬ জনের সঙ্গে অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি আরিফুল।
নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, রায়পুরা থানার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১ আগস্ট রায়পুরায় ধরা পড়ে একদল জঙ্গি। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। সেই মামলায় আরিফ হোসেন ওরফে বিল্লাহ ওরফে বিল্লাহ মুজিবুল হক নামে একজনের নাম রয়েছে।
আরিফুলের আনসারউল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, নরসিংদী থেকে জামিনে বের হয়ে আরিফুল রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মাওলানা জসীমউদ্দীন রাহমানীর মসজিদে যাওয়া শুরু করেন। বিশেষ করে শুক্রবারের বিশেষ বয়ানে তিনি অংশ নিতেন। তখন থেকে তিনি রাহমানীর অনুসারী হন।
কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত আরিফুল ও জিকরুল্লাহ আর কোনো ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেননি।
No comments