ভবঘুরে রোনাল্ডো!
সকালের ভিড়ে ঠাসা মাদ্রিদের ব্যস্ততম রাস্তা প্লাজা দে কালাওয়ে। ধূসর রঙের জ্যাকেট, ট্রাউজার্স, পায়ে স্নিকার্স। অবিন্যস্ত, ভবঘুরে লোকটার মুখে একগাল দাড়ি। কেউ সেরকম পাত্তাও দিচ্ছিল না। মোটা লোকটার দাড়ি ও নোংরা জামাকাপড় দেখে অনেকে তো রীতিমতো এড়িয়েই চলছিল তাকে। হঠাৎ কোথা থেকে একটা বল চলে এলো লোকটার পায়ে। কয়েকবার জাগলিং করতে দেখা গেল তাকে। এবার দুয়েক জন তাকাতে শুরু করলেন। হঠাৎ দাড়ি আর পরচুলা সরে গেল। রাস্তার মানুষ তখন স্তম্ভিত। ভবঘুরে লোকটা তো তাদের দারুণ চেনা! এ তো আর কেউ নন, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো! প্রতি সপ্তাহে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকে প্রায় তিন লাখ পাউন্ড। ফেরারি থেকে অডি, তার গ্যারেজ যেন গাড়ির জাদুঘর। কিন্তু তিনি যে এভাবে ভবঘুরের ছদ্মবেশে রাস্তায় নেমে পড়বেন, এটা বোধহয় কারও কল্পনাতেই আসেনি। সমর্থকদের অবিশ্বাস্য এক অনুভূতির স্বাদ দেয়ার জন্যই নাকি রোনাল্ডোর এই কীর্তি! বিখ্যাত স্প্যানিশ গায়ক হুয়ান পেনার মোবাইল ফোনে তোলা পুরো ঘটনাটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ঝড় বয়ে যায়। টুইটার থেকে ফেসবুক- সমর্থকদের অবিশ্বাস্য প্রতিক্রিয়ায় ভরে যায়। বলা হতে থাকে, ভক্তদের জন্য মেসি যা কোনো দিন করার কথা ভাবতেও পারেন না, সেটাই করে দেখালেন রোনাল্ডো।
এক ক্ষুদে সমর্থক যেন বিশ্বাস করতে পারছিল না নিজের চোখকে। রোনাল্ডো যখন জড়িয়ে ধরেন তার ক্ষুদে ভক্তকে, বিস্ময় মাখানো উচ্ছ্বাসে তার মুখে শুধু ছিল হাসি। সিআর সেভেনও প্রমাণ করলেন, ব্যালন ডি’অরের সোনার বলটার মতোই তার হৃদয়টাও সোনার। সাধারণ মানুষ তখনও ভাবতে পারছেন না, যাকে তারা ভবঘুরে ভেবে এতক্ষণ পাশ কাটিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন, তিনিই বিশ্বের সেরা ফুটবলার! তবে বুঝতে পারার জন্য যতটুকু সময় লাগল, তার পরেই শুরু হয়ে যায় সেলফি তোলার আবদার। কেউ রোনাল্ডোর সই নিতে হুড়োহুড়ি করেন, তো কেউ আবার মোবাইলে তাকে ক্যামেরাবন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আমজনতার সঙ্গে মহাতারকার এমন চমকপ্রদ আদান-প্রদান ক্ষণিকের জন্য ব্যস্ত সড়কের সব কোলাহল যেন শুষে নেয়। সাম্প্রতিককালে রোনাল্ডো শুধুই বিতর্কিত কারণে শিরোনামে উঠে এসেছেন। ইরিনা শায়েকের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার জন্যই হোক কিংবা ব্যালন ডি’অরে ভোট রিগিংয়ের জন্য, সিআর সেভেন নিয়ে শুধুই বিতর্ক। অভিনব এ ঘটনার পর রোনাল্ডো প্রমাণ করলেন ইরিনাকে হারালেও, সমর্থকদের ভালোবাসা এখনও হারাননি তিনি। ওয়েবসাইট।
No comments