হার্ডলাইনে খালেদা- গাজীপুরে জনসভা মাঠে ছাত্রলীগের ব্যানার, লাঠি মিছিল, প্রতিহতের ঘোষণা ছাত্রদলের, বাধা দিলে সারা দেশে সমাবেশ
আগামীকাল
গাজীপুরের জনসভা করা নিয়ে হার্ডলাইনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
যে কোন মূল্যে সমাবেশে অংশ নেয়ার বিষয়ে নিজের অনড় অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন
দলের নেতাদের। একই সঙ্গে সমাবেশ সফল করতে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে
পাল্টা সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়ে গতকাল থেকেই গাজীপুর ভাওয়াল বদরে আলম
সরকারি কলেজ মাঠ দখলে নিয়েছে ছাত্রলীগ। মাঠে অস্থায়ী একটি মঞ্চ করে ব্যানার
টাঙানো হয়েছে। গতকাল পুলিশ সদস্যদের ওই মঞ্চ পাহারা দিতে দেখা গেছে।
জনসভাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে জেলা বিএনপির নেতারা বুধবার রাতে
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গাজীপুর ও বকশীবাজারের ঘটনায় দলের সিনিয়র
নেতাদের সঙ্গেও জরুরি বৈঠক করেন তিনি। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যেহেতু
প্রশাসনের অনুমতি রয়েছে সেহেতু জনসভা হবেই। গাজীপুরে খালেদা জিয়ার জনসভা
প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে নিজেদের সমাবেশ সফল করতে ছাত্রলীগও রয়েছে অনড়
অবস্থানে। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ এ
সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, জাতির পিতাকে অবমাননা ও কটাক্ষের
প্রতিবাদে আগামী ২৭শে ডিসেম্বর গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ ছাত্রলীগের
সমাবেশ হবে। সকল প্রস্তুতিও ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গাজীপুরে
ছাত্র-যুব-শ্রমিক বিভিন্ন পেশার মানুষ ইতিমধ্যে আমাদের বিক্ষোভ সমাবেশে
সংহতি প্রকাশ করেছে। সেদিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমাবেশকে ঘিরে
সংঘর্ষ ও সহিংসতা হলে তার দায় বিএনপিকেই নিতে হবে। রাজধানীতে এক আলোচনাসভায়
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ২৭শে ডিসেম্বর
গাজীপুরে যাবো। অন্য অধিকার না থাকলেও জনসভার এ অধিকার আমরা যে কোন মূল্যে
প্রতিষ্ঠা করবো। গাজীপুরে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে সমাবেশ করা হবে। একই মাঠে
একই দিনে ২০ দলীয় জোট বিএনপি ও ছাত্রলীগের জনসভা আহ্বান করায় ভাওয়াল
সরকারি কলেজের মাঠটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে পুলিশ। সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে
বিপুল সংখ্যক আর্মড পুলিশ ও বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন। শনিবার
জনসভার করার কথা থাকলেও প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় মঞ্চ তৈরি করতে পারেনি
কোন পক্ষই। তবে ছোট একটি প্যান্ডেল তৈরি করে ব্যানার ঝুলিয়ে রেখেছে
ছাত্রলীগ। লাঠি নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় কলেজ ক্যাম্পাস ও কলেজ এলাকায় মিছিল
করেছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। এর আগে সকালে মিছিল করেছে ছাত্রশিবির। কয়েকদিনের
ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল পরস্পরের বিরুদ্ধে গতকালও কঠোর বক্তব্য
এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গাজীপুর। যে কোন
সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জেলায়। তবে জনসভা সফল করতে
কয়েক লক্ষাধিক লোক সমাগমের পাশাপাশি যে কোন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি
নেয়ারও নির্দেশনা দেন খালেদা জিয়া। ইতিমধ্যে ব্যাপক সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে
গাজীপুরের সমাবেশ যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মহানগর-জেলা, মানিকগঞ্জ,
টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি।
প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে, জনসভা হবেই: বিএনপি
এদিকে বুধবার রাতে গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতা ও গাজীপুর জেলা নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। বৈঠক শেষে গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল মানবজমিনকে বলেন, রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের বৈঠক হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন জনসভায় যোগ দেবেন। এছাড়া প্রশাসনও আমাদের অনুমতি দিয়েছে। তাই যে কোন মূল্যে আমরা এই জনসভা সফল করবো। ছাত্রলীগের জনসভা প্রতিহতের ঘোষণা সম্পর্কে তিনি বলেন, বুধবার গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুণ-অর রশিদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, আপনারা জনসভা করতে পারবেন, কোন সমস্যা নেই। তাই আমরা যে কোন মূল্যে জনসভা সফল করবো। তিনি বলেন, গত ২৩শে ডিসেম্বর আমাদের জনসভার তারিখ নির্ধারণ ছিল। কিন্তু ওই দিন গাজীপুরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা থাকায় জেলা প্রশাসক আমাদের জনসভা পেছানোর অনুরোধ করেন। এরপর আমরা জনসভা পিছিয়ে ২৭শে ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছি। তারপরও কেউ যদি বাধা দেয় তাহলে গাজীপুরের জনসভায় যে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। এছাড়া খালেদা জিয়া রাজধানী থেকে অন্তত ২০-২৫ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে জনসভায় যোগ দেবেন বলে জানান তিনি। তারপরও ছাত্রলীগ কোন উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাইলে তার দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। তিনি বলেন, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে ২০ দলীয় জোট আয়োজিত ওই জনসভায় যোগ দিতে শনিবার বেলা ২টায় তার গুলশানের বাসভবন থেকে রওনা হবেন। বিকাল ৩টায় জনসভাস্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন। বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার (অব.) আসম হান্নান শাহ, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, গাজীপুর সিটি মেয়র ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর আবদুল মান্নান, জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন উপস্থিত ছিলেন।
জঙ্গি ছাত্রলীগকে প্রতিহত করা হবে: ছাত্রদল
এদিকে ছাত্রলীগকে জঙ্গি সংগঠন আখ্যায়িত করে তাদের প্রতিহত ঘোষণার দিয়েছে ছাত্রদল। গতকাল এক বিবৃতিতে ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান এ ঘোষণা দেন। বুধবার নিজের ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে সিদ্দিকী নাজমুল আলম লিখেছিলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের নেড়ি কুত্তার মতো পিটামু। তার এই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে ছাত্রদল নেতৃদ্বয় বলেন, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে- পরিষ্কার হয়ে গেল ছাত্রলীগ একটা বেয়াদব সংগঠন। তারা যে শুধু প্রতিপক্ষকে কটু ভাষায় আক্রমণ করে তা নয়, নানা সময়ে এই সংগঠনটির অশালীন আক্রমণের শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাও। তবে এবার ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য ইতিহাসের সকল শিষ্টাচারকে পাশ কাটিয়ে, ন্যূনতম রাজনৈতিক সম্মানবোধের ধার না ধেরে সে এটাই প্রমাণ করেছে ছাত্রলীগ এখন আর কোন ছাত্রসংগঠন নয় বরং জঙ্গি সংগঠন। তারা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেষ্টিত হয়ে, সরকারের প্রত্যক্ষ মদত নিয়ে অনেক বড় বড় কথাই বলা যায়। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করার সাহস হারিয়ে ছাত্রলীগ এখন উল্টাপাল্টা বকছে। আওয়ামী লীগের সহযোগী এই সংগঠনটি সরকারের ছত্রছায়ায় বরাবরই ব্যস্ত থেকেছে টেন্ডারবাজি, অস্ত্রবাজি আর দখলবাজি নিয়ে। অবিলম্বে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার ভাষা পরিহার করে রাজনৈতিক শিষ্টাচার আত্মস্থ করতে বলেন। অন্যথায় এ ধরনের ভাষা অব্যাহত রাখলে দেশব্যাপী এই জঙ্গি ছাত্রলীগকে প্রতিহত করা হবে ।
সহিংসতা হলে দায় বিএনপির: ছাত্রলীগ
গাজীপুরে খালেদা জিয়ার সমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতা হলে তার দায় বিএনপিকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ। গতকাল বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। সোহাগ বলেন, জাতির পিতাকে অবমাননা ও কটাক্ষের প্রতিবাদে আগামী ২৭শে ডিসেম্বর গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ ছাত্রলীগের সমাবেশ হবে। আমাদের সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গাজীপুরে ছাত্র-যুব-শ্রমিক বিভিন্ন পেশার মানুষ ইতিমধ্যে আমাদের বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেছে। তারেক রহমান ক্ষমা না চাইলে আপনারা কি বিএনপির চেয়ারপারসনের সমাবেশ পরবর্তী সময়ও প্রতিহত করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তারেক রহমানের কটূক্তির বিপক্ষে সমাবেশ করাটাই হচ্ছে আমাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ। তাকে অবশ্যই জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। কারণ এখন আমাদের দুই ধরনের লড়াই চলছে। একটি হচ্ছে আইনি লড়াই। আরেকটি হচ্ছে রাজপথের সংগ্রাম। এই ধরনের কর্মসূচি নিয়ে আমরা মাঠে থাকব। বুধবার বকশীবাজার এলাকায় ছাত্রলীগের হামলা প্রসঙ্গে বদিউজ্জামান দাবি করেন, আমাদের ওপরই আগে আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মীর ওপর হামলা করা হয়েছে। তাদের এই ঘটনা ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
দু’পক্ষই অনড়, জনসভাস্থল পুলিশের নিয়ন্ত্রণে
গাজীপুরে খালেদা জিয়ার জনসভা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে তাদের সমাবেশ সফল করতে অনড় অবস্থানে রয়েছে ছাত্রলীগ। অনড় অবস্থানে আছে বিএনপি-ও। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। গাজীপুরের জনসভার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন খালেদা জিয়া। পথে পথে অবস্থান নেবেন হাজার হাজার নেতা-কর্মী। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তারেক রহমান কটুক্তি করায় তাদের জনসভা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরাও মাঠে রয়েছেন। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না তাদের নেতাকর্মীদের। নিজেদের অবস্থানে উভয়পক্ষ অনড় থেকে স্ব স্ব কর্মসূচি যে কোন মূল্যে সফল করতে এরই মধ্যে ব্যাপক প্রন্তুতি নিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছে। যে কোন মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে নগরবাসী। গাজীপুরের ওই জনসভা হওয়া আর না হওয়ার ওপর নির্ভর করছে রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিটি মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানসহ নেতৃবৃন্দ গাজীপুর জেলা প্রশাসক মো. নুরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। দুই দলের জনসভার বিষয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেন, কোন অবস্থাতেই আমরা দু’পক্ষের কাউকেই কলেজ মাঠে প্রবেশ করতে দেবো না। দুই দল যতক্ষণ পর্যন্ত একটি সমঝোতায় না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কলেজ মাঠে কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে দেয়া হবে না। জনসভাস্থল ভাওয়াল কলেজ মাঠে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন অবস্থাতেই পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে দেয়া হবে না বলে তিনি জানান। জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ডা. মাজহারুল আলম জানান, ২০ দলীয় জোট নেত্রীকে গাজীপুরে আসতে বাধা দিলে কিংবা কলেজ মাঠে জনসভা করতে না দিলে অবস্থার প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নেবেন। নেত্রীকে গাজীপুরের ঢুকতে বাধা দিলে প্রয়োজনে তিনি গাড়িতে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেবেন। বিকালে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সিটি মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান, জেলা বিএনপি সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, সহসভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, সদর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আহম্মেদ, জেলা শ্রমিক দল সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবুলসহ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ নেতৃবৃন্দ গাজীপুর জেলা প্রশাসক মো. নুরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। এ সময় জেলা প্রশাসক বিএনপি নেতাদেরকে ছাত্রলীগের সঙ্গে সমঝোতা করার পরামর্শ দেন এবং জনসভার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের কোন রিপোর্ট পাননি বলেও জানান। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে বের হয়ে মেয়র অধ্যাপক মান্নান জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মাঠে মঞ্চ করার সামগ্রী পাঠালে তা ছাত্রলীগ ও পুলিশ নিয়ে যায়। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার এই জনসভা কোন বাধার মুখেই আটকানো যাবে না। বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, জনসভা সফল করতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ সংগঠনের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত প্রস্ততিসভা, কর্মীসভা, জনসংযোগসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। বৃহস্পতিবার সিটি মেয়র ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নান নগরের চান্দনা এলকায় প্রস্তুতি সভা করেছে। জেলা বিএনপি কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের নেতা-কর্মীরা আলাদাভাবে প্রস্তুতি সভা করেছেন। জনসভাকে সফল করতে বিএনপি গত কয়েকদিন ধরে প্রস্ততিসভা, কর্মীসভা, জনসংযোগসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। নগর জেলা জুড়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ্ বৃহস্পতিবার দুপুরে কাপাসিয়ার ঘাগটিয়ায় নিজ এলাকা কাপাসিয়া উপজেলায় নেতাকর্মীদের নিয়ে জনসভা সফল করার ক্যাম্পিং করছেন। দুপুরে জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবুল ও স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর শ্রমিক দল নেতা ফয়সাল আহম্মেদের সরকারের নেতৃত্বে শ্রমিকদলের নেতা-কর্মীরা ভোগড়া এলাকায় জড়ো হয় জনসভাস্থল কলেজ মাঠে ঢোকার উদ্দেশ্যে। বারবার স্থান পরিবর্তন করে অন্তত তিনটি স্থানে জড়ো হয়ে তারা কলেজে ঢোকার চেষ্টা করলেও পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। খালেদা জিয়ার সমাবেশ সফল করতে জিয়া পরিষদের জেলা সভাপতি ডা. মাজহারুল আলমের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাকর্মীরা দিনভর প্রচার চালায়। বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত-শিবির ব্যাপক সমাগম ঘটাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পথসভা করে নেতাকর্মীদের জনসভা সফল করার জন্য প্রচারণা চালায়। বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর নগরের প্রবেশমুখ আব্দুল্লাহপুরে পেট্রোল পাম্পের পাশে এক পথসভা করা হয়। পরে তারা নগরের টঙ্গী সরকারি কলেজের পাশে একটি এবং সাতাইশ এলাকায় আরেকটি পথসভা করেন।
প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে, জনসভা হবেই: বিএনপি
এদিকে বুধবার রাতে গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতা ও গাজীপুর জেলা নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। বৈঠক শেষে গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল মানবজমিনকে বলেন, রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের বৈঠক হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন জনসভায় যোগ দেবেন। এছাড়া প্রশাসনও আমাদের অনুমতি দিয়েছে। তাই যে কোন মূল্যে আমরা এই জনসভা সফল করবো। ছাত্রলীগের জনসভা প্রতিহতের ঘোষণা সম্পর্কে তিনি বলেন, বুধবার গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুণ-অর রশিদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, আপনারা জনসভা করতে পারবেন, কোন সমস্যা নেই। তাই আমরা যে কোন মূল্যে জনসভা সফল করবো। তিনি বলেন, গত ২৩শে ডিসেম্বর আমাদের জনসভার তারিখ নির্ধারণ ছিল। কিন্তু ওই দিন গাজীপুরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা থাকায় জেলা প্রশাসক আমাদের জনসভা পেছানোর অনুরোধ করেন। এরপর আমরা জনসভা পিছিয়ে ২৭শে ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছি। তারপরও কেউ যদি বাধা দেয় তাহলে গাজীপুরের জনসভায় যে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। এছাড়া খালেদা জিয়া রাজধানী থেকে অন্তত ২০-২৫ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে জনসভায় যোগ দেবেন বলে জানান তিনি। তারপরও ছাত্রলীগ কোন উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাইলে তার দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। তিনি বলেন, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে ২০ দলীয় জোট আয়োজিত ওই জনসভায় যোগ দিতে শনিবার বেলা ২টায় তার গুলশানের বাসভবন থেকে রওনা হবেন। বিকাল ৩টায় জনসভাস্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন। বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার (অব.) আসম হান্নান শাহ, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, গাজীপুর সিটি মেয়র ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর আবদুল মান্নান, জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন উপস্থিত ছিলেন।
জঙ্গি ছাত্রলীগকে প্রতিহত করা হবে: ছাত্রদল
এদিকে ছাত্রলীগকে জঙ্গি সংগঠন আখ্যায়িত করে তাদের প্রতিহত ঘোষণার দিয়েছে ছাত্রদল। গতকাল এক বিবৃতিতে ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান এ ঘোষণা দেন। বুধবার নিজের ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে সিদ্দিকী নাজমুল আলম লিখেছিলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের নেড়ি কুত্তার মতো পিটামু। তার এই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে ছাত্রদল নেতৃদ্বয় বলেন, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে- পরিষ্কার হয়ে গেল ছাত্রলীগ একটা বেয়াদব সংগঠন। তারা যে শুধু প্রতিপক্ষকে কটু ভাষায় আক্রমণ করে তা নয়, নানা সময়ে এই সংগঠনটির অশালীন আক্রমণের শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাও। তবে এবার ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য ইতিহাসের সকল শিষ্টাচারকে পাশ কাটিয়ে, ন্যূনতম রাজনৈতিক সম্মানবোধের ধার না ধেরে সে এটাই প্রমাণ করেছে ছাত্রলীগ এখন আর কোন ছাত্রসংগঠন নয় বরং জঙ্গি সংগঠন। তারা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেষ্টিত হয়ে, সরকারের প্রত্যক্ষ মদত নিয়ে অনেক বড় বড় কথাই বলা যায়। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করার সাহস হারিয়ে ছাত্রলীগ এখন উল্টাপাল্টা বকছে। আওয়ামী লীগের সহযোগী এই সংগঠনটি সরকারের ছত্রছায়ায় বরাবরই ব্যস্ত থেকেছে টেন্ডারবাজি, অস্ত্রবাজি আর দখলবাজি নিয়ে। অবিলম্বে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার ভাষা পরিহার করে রাজনৈতিক শিষ্টাচার আত্মস্থ করতে বলেন। অন্যথায় এ ধরনের ভাষা অব্যাহত রাখলে দেশব্যাপী এই জঙ্গি ছাত্রলীগকে প্রতিহত করা হবে ।
সহিংসতা হলে দায় বিএনপির: ছাত্রলীগ
গাজীপুরে খালেদা জিয়ার সমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষ ও সহিংসতা হলে তার দায় বিএনপিকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ। গতকাল বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। সোহাগ বলেন, জাতির পিতাকে অবমাননা ও কটাক্ষের প্রতিবাদে আগামী ২৭শে ডিসেম্বর গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ ছাত্রলীগের সমাবেশ হবে। আমাদের সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গাজীপুরে ছাত্র-যুব-শ্রমিক বিভিন্ন পেশার মানুষ ইতিমধ্যে আমাদের বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেছে। তারেক রহমান ক্ষমা না চাইলে আপনারা কি বিএনপির চেয়ারপারসনের সমাবেশ পরবর্তী সময়ও প্রতিহত করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তারেক রহমানের কটূক্তির বিপক্ষে সমাবেশ করাটাই হচ্ছে আমাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ। তাকে অবশ্যই জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। কারণ এখন আমাদের দুই ধরনের লড়াই চলছে। একটি হচ্ছে আইনি লড়াই। আরেকটি হচ্ছে রাজপথের সংগ্রাম। এই ধরনের কর্মসূচি নিয়ে আমরা মাঠে থাকব। বুধবার বকশীবাজার এলাকায় ছাত্রলীগের হামলা প্রসঙ্গে বদিউজ্জামান দাবি করেন, আমাদের ওপরই আগে আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মীর ওপর হামলা করা হয়েছে। তাদের এই ঘটনা ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
দু’পক্ষই অনড়, জনসভাস্থল পুলিশের নিয়ন্ত্রণে
গাজীপুরে খালেদা জিয়ার জনসভা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে তাদের সমাবেশ সফল করতে অনড় অবস্থানে রয়েছে ছাত্রলীগ। অনড় অবস্থানে আছে বিএনপি-ও। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। গাজীপুরের জনসভার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন খালেদা জিয়া। পথে পথে অবস্থান নেবেন হাজার হাজার নেতা-কর্মী। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তারেক রহমান কটুক্তি করায় তাদের জনসভা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরাও মাঠে রয়েছেন। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না তাদের নেতাকর্মীদের। নিজেদের অবস্থানে উভয়পক্ষ অনড় থেকে স্ব স্ব কর্মসূচি যে কোন মূল্যে সফল করতে এরই মধ্যে ব্যাপক প্রন্তুতি নিয়ে গণসংযোগ চালাচ্ছে। যে কোন মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে নগরবাসী। গাজীপুরের ওই জনসভা হওয়া আর না হওয়ার ওপর নির্ভর করছে রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিটি মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নানসহ নেতৃবৃন্দ গাজীপুর জেলা প্রশাসক মো. নুরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। দুই দলের জনসভার বিষয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলেন, কোন অবস্থাতেই আমরা দু’পক্ষের কাউকেই কলেজ মাঠে প্রবেশ করতে দেবো না। দুই দল যতক্ষণ পর্যন্ত একটি সমঝোতায় না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কলেজ মাঠে কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে দেয়া হবে না। জনসভাস্থল ভাওয়াল কলেজ মাঠে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন অবস্থাতেই পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে দেয়া হবে না বলে তিনি জানান। জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ডা. মাজহারুল আলম জানান, ২০ দলীয় জোট নেত্রীকে গাজীপুরে আসতে বাধা দিলে কিংবা কলেজ মাঠে জনসভা করতে না দিলে অবস্থার প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নেবেন। নেত্রীকে গাজীপুরের ঢুকতে বাধা দিলে প্রয়োজনে তিনি গাড়িতে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেবেন। বিকালে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সিটি মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান, জেলা বিএনপি সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, সহসভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, সদর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আহম্মেদ, জেলা শ্রমিক দল সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবুলসহ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ নেতৃবৃন্দ গাজীপুর জেলা প্রশাসক মো. নুরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। এ সময় জেলা প্রশাসক বিএনপি নেতাদেরকে ছাত্রলীগের সঙ্গে সমঝোতা করার পরামর্শ দেন এবং জনসভার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের কোন রিপোর্ট পাননি বলেও জানান। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে বের হয়ে মেয়র অধ্যাপক মান্নান জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মাঠে মঞ্চ করার সামগ্রী পাঠালে তা ছাত্রলীগ ও পুলিশ নিয়ে যায়। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার এই জনসভা কোন বাধার মুখেই আটকানো যাবে না। বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, জনসভা সফল করতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ সংগঠনের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত প্রস্ততিসভা, কর্মীসভা, জনসংযোগসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। বৃহস্পতিবার সিটি মেয়র ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নান নগরের চান্দনা এলকায় প্রস্তুতি সভা করেছে। জেলা বিএনপি কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের নেতা-কর্মীরা আলাদাভাবে প্রস্তুতি সভা করেছেন। জনসভাকে সফল করতে বিএনপি গত কয়েকদিন ধরে প্রস্ততিসভা, কর্মীসভা, জনসংযোগসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। নগর জেলা জুড়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আসম হান্নান শাহ্ বৃহস্পতিবার দুপুরে কাপাসিয়ার ঘাগটিয়ায় নিজ এলাকা কাপাসিয়া উপজেলায় নেতাকর্মীদের নিয়ে জনসভা সফল করার ক্যাম্পিং করছেন। দুপুরে জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবুল ও স্থানীয় সিটি কাউন্সিলর শ্রমিক দল নেতা ফয়সাল আহম্মেদের সরকারের নেতৃত্বে শ্রমিকদলের নেতা-কর্মীরা ভোগড়া এলাকায় জড়ো হয় জনসভাস্থল কলেজ মাঠে ঢোকার উদ্দেশ্যে। বারবার স্থান পরিবর্তন করে অন্তত তিনটি স্থানে জড়ো হয়ে তারা কলেজে ঢোকার চেষ্টা করলেও পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। খালেদা জিয়ার সমাবেশ সফল করতে জিয়া পরিষদের জেলা সভাপতি ডা. মাজহারুল আলমের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাকর্মীরা দিনভর প্রচার চালায়। বিএনপির পাশাপাশি জামায়াত-শিবির ব্যাপক সমাগম ঘটাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পথসভা করে নেতাকর্মীদের জনসভা সফল করার জন্য প্রচারণা চালায়। বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর নগরের প্রবেশমুখ আব্দুল্লাহপুরে পেট্রোল পাম্পের পাশে এক পথসভা করা হয়। পরে তারা নগরের টঙ্গী সরকারি কলেজের পাশে একটি এবং সাতাইশ এলাকায় আরেকটি পথসভা করেন।
No comments