ঘুষের কথা স্বীকার করলেন এফবিআই এজেন্ট
বিপুল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশী রাজনীতিকের গোপন তথ্য এফবিআই থেকে ফাঁস করে দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন রবার্ট লুসতিয়িক (৫২)। এজন্য তার ১৭ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। রবার্ট লুসতিয়িক গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সাবেক এজেন্ট। অভিযোগ আছে, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১২ সালের মার্চের মধ্যে তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘুষ দেন রিজভি আহমেদ নামে এক বাংলাদেশী। রিজভি তার রাজনৈতিক বিরোধীপক্ষের এক নেতার গোপন তথ্য এফবিআই থেকে বের করে দিতে ওই ঘুষ দিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার লুসতিয়িক আদালতে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ স্বীকার করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ঘুষ গ্রহণ। প্রতারণা করার জন্য ষড়যন্ত্র। সরকারি সম্পদ (প্রপার্টি) চুরি। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিচার চলছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে। সেখানকার সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট-এর অ্যাটর্নি প্রীত বারবারা আদালতে বলেছেন, রবার্ট লুসতিয়িক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বীকার করেছেন। স্বীকার করেছেন, অর্থের বিনিময়ে তিনি তথ্য ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট চুরি করে বিক্রি করেছেন। এসব তথ্য এফবিআইয়ের ভল্ট থেকে চুরি করা তার পক্ষে ছিল খুবই সহজ। কারণ, তিনি ছিলেন এফবিআইয়ের এজেন্ট। অ্যাটর্নি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন লুসতিয়িক। তিনি শুধু আইনই লঙ্ঘন করেন নি, একই সঙ্গে শপথও ভঙ্গ করেছেন। তার ওপর নাগরিকরা ও সহকর্মীরা যে আস্থা স্থাপন করেছিল তার মর্যাদা রাখেন নি তিনি। এ মামলায় ২০১৩ সালে লুসতিয়িক, এ দুর্নীতিতে তার সঙ্গী জোহানেস থ্যালার ও বাংলাদেশের রিজভির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। সিজার নামে পরিচিত রিজভি আহমেদ। অভিযোগে বলা হয়েছে, রিজভি আহমেদের প্রতিপক্ষ এক রাজনীতিকের বিরুদ্ধে এফবিআইয়ে যেসব তথ্য আছে তা বের করে দিতে তিনি লুসতিয়িক ও জোহানেস থ্যালারকে অর্থ দিয়েছেন। এ সব তথ্য দিয়ে রিজভি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ক্ষতি করতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে লুসতিয়িক ও থ্যালারের মধ্যে টেক্সট মেসেজ বিনিময় হয়। এতে একপর্যায়ে থ্যালারকে উদ্দেশ্য করে লুসতিয়িক লিখেছেন, রিজভি আহমেদকে আমাদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য চাপ দিতে হবে। অর্থ পাওয়ার বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলবো। আমি আমার ম্যাজিক দেখাবো। আমরা কাজের খুব কাছাকাছি রয়েছি। এ নিয়ে চলমান মামলায় লুসতিয়িকের বিরুদ্ধে আদালত শাস্তি ঘোষণা করবে নতুন বছরের ৩০শে এপ্রিল। বর্তমানে তিনি ১৫ লাখ ডলারের বিনিময়ে জামিনে রয়েছেন। আগামী ১৫ই ফেব্রুয়ারি তার আদালতে আত্মসমর্পণ করার কথা। প্রতিটি অভিযোগে তার ১৩ থেকে ১৭ বছর ৬ মাসের জেল হতে পারে। সব মামলার শাস্তি মিলিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে ৫৫ বছরের। এ মামলায় থ্যালার (৫১) ও রিজভি আহমেদ (৩৫) অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তাদের সর্বোচ্চ ৩৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। তাদের শাস্তি ঘোষণার কথা রয়েছে ২৩শে জানুয়ারি।
No comments