সবাই আমাকে ‘আউটসাইডার’ ভাবে -তসলিমা নাসরিন
একা থাকতে থাকতে বদঅভ্যাস হয়ে গেছে।
মানুষের ভিড় থেকে নিজেকে আলগোছে সরিয়ে একাই থাকি। বেড়াল পুষতে পুষতে এখন
বেড়াল দেখলেই পুষতে ইচ্ছা করে। একা থাকা মেয়েরা নাকি বেশ বেড়াল পোষে। এখানে
সেখানে পুড়তে পুড়তে এইটুকু জেনেছি যে, পুরুষ পোষার চেয়ে বেড়াল পোষা ভাল।
বিবিসিকে দেয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে এ সব কথা বলেছেন বাংলাদেশের বিতর্কিত
লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি বলেন, কুড়ি বছরে কত কিছু ঘটেছে, কত শহরে
থেকেছি, কত দেশে থেকেছি। আবার শহর পাল্টিয়েছি, দেশ বদল করেছি। কোথাও মনে
হয়নি যে, আমি ভাল আছি বা কোথাও মনে হয়নি যে, আমার দেশ। যদিও ইউরোপের
নাগরিকত্ব পেয়েছি, কিন্তু ইউরোপকে সত্যিকার আমার নিজের দেশ বলে মনে হয় নি।
সব সময় মনে হয়েছে যে, আমি নিজের দেশে যাবো। আবার এখন কুড়ি বছর পর মনে হয়
দেশ বলে বোধহয় আমার কিছু নেই। মানুষ, যারা আমাকে ভালবাসে, যারা আমার লেখা
পড়ে, বোঝে, যারা শ্রদ্ধা জানায়, তাদেরকেই আমার দেশ বলে মনে হয়। এ রকম লোক
পৃথিবীর সব জায়গাতেই আছে। যখন আমি ইতালি যাচ্ছি, যখন আমি নরওয়ে যাচ্ছি।
ফ্রান্সে কত মেয়ে আমার কাছে আসে। ফ্রেঞ্চ মেয়েরা বলে যে, তোমার লেখা পড়ে
আমরা শক্তি পাই। তুমি আমাদের অনুপ্রেরণা। তারা ভালবাসে আমাকে। তাদের দেশকেই
আমার মনে হয় আমার দেশ। এখন দেশ বলতে আমি শুধু মাটি, গাছপালা, বাড়িঘর,
যেখানে আমার জন্ম হয়েছিল বা যেখানে আমি বড় হয়েছি, সেটাকেই যে দেশ বলে মনে
হয়, তা নয় কিন্তু। আমি কিন্তু তারপরও দেশে ফেরার অধিকারের জন্য লড়াই করবো-
যতদিন বেঁচে থাকি ততদিন।
প্রশ্ন: পছন্দে হোক বা অপছন্দে হোক ধরুন গত তিন-চার বছর ধরে আপনার ঠিকানা দিল্লি। আপনি যে বললেন বহু শহরে ঘুরতে হয়েছে। ঠাঁইহারা হতে হয়েছে বারবার। কিন্তু এ শহরগুলোকে কতটা আপন করে নিতে পেরেছেন? ধরুন দিল্লি প্রসঙ্গে যদি বলি। আপনি কতটা ‘দিল্লিআইড’ হতে পেরেছেন? আপনি কি চাঁদনী চকে যান, বিরিয়ানি খান কারিমসে, বা দিল্লি হাটে বাজার করেন?
উত্তর: সেটা আমি সব শহরেই করি। মাঝেমধ্যে মনে হয়, পৃথিবীর সব জায়গায়ই আমার। ফ্রান্স আমার দেশ নয়, বাংলাদেশ আমার দেশ, যেহেতু আমি জন্ম নিয়েছি, তা কিন্তু নয়। এবং এই যে দেখুন দিল্লির কথা বলছেন। দিল্লির যে জায়গাগুলোর কথা বলছেন, ওগুলোতে আমি যাই এবং দিল্লি হাটে গিয়ে বাজার করি। আমি ইন্ডিয়া গেটে আইসক্রিম খাই। কারিমসে গিয়ে বিরিয়ানিও খাই। কিন্তু এগুলো তো দোকানপাট। না? এগুলো তো রাস্তাঘাট। আসলে ‘দিল্লিআইড’ হতে যেটা দরকার সেটা হচ্ছে মনে হয় দিল্লির মানুষ আমাকে কতটা আপন করে নিয়েছে, না? তবে যেখানেই যাই, আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি, সবাই আমাকে ‘আউটসাইডার’ ভাবে। আমি যতই এখানকার মানুষ হতে চাই, মানে ‘লঙ্গিং টু বিলং’, বাট সবাই আমাকে ভাবে যে, ও তুমি তো অন্য দেশের। তুমি তো আমাদের নও।
প্রশ্ন: মানে এখন আপনি বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিতা লেখিকা, এই পরিচয় আপনার?
উত্তর: হ্যাঁ, এখনও। যদিও আমি ভারতে থাকতে থাকতে, ধরুন ভারতের বিষয়টা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি জানি। এখানকার নিউজপেপার আসছে সকালবেলা, এখানকার টিভি খুলছি। সুতরাং এ খবরগুলো আমার কাছে বেশি আসছে। বাংলাদেশের খবরগুলো তো আসছে না আমার কাছে। তাছাড়া এমনি বিশ্বের খবর তো আমি জানছি, না? বিবিসি, সিএনএন দেখছি। ওতে তো আর বাংলাদেশের খবর অত করে আসছে না, যদি কোন বড় দুর্ঘটনা না ঘটে। তবে সব জায়গাতেই কিন্তু আমাকে বলা হয় যে, তুমি অন্য দেশের। সুতরাং আমি যতই আপন করে নিই যে কোন শহরকে বা মানুষকে, তারা কিন্তু একটা দেয়াল রাখে। সে সব দেশেই দেখেছি। এখানকার কোন প্রবলেমে আমি যখন প্রতিবাদ করি, তখন কিছু মানুষ আমার বিরুদ্ধে লেগে যায়। বলে যে তুমি বাইরের লোক। তুমি আমাদের ভেতরের ব্যাপার নিয়ে কথা বলবে না। আরে আমি তো নিজেকে পৃথিবীর লোক ভাবি। তাই আমি পৃথিবীর সব ব্যাপারেই কথা বলি। আমেরিকায় উল্টোপাল্টা হলে, আমি আমেরিকাকে গালাগালি করি। ইউরোপের কিছু প্রবলেম দেখলে ওটা নিয়ে কথা বলি। তো ভারতে থাকছি, ভারত নিয়ে কথা বললে তোমাদের এত গা জ্বলে কেন, না? আবার বাংলাদেশ নিয়ে কিছু বললে, ওখানকার লোকও বলে, কি! এদেশ নিয়ে কথা বলার তোমার কোন রাইট নেই। এ দেশ তোমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ব্যস! যে দেশে থাকছো, সে দেশ নিয়ে কথা বলো। কিন্তু তার মানে আমি তো আর থেমে থাকি না। আমি যেখানেই থাকি পৃথিবীর, আমি লিখে যাচ্ছি। বই লিখছি, তারপর আমার ব্লগ লিখছি। এসবই আমার...।
প্রশ্ন: এ লেখার প্রসঙ্গেই বলি। প্রধানত তো আপনি একজন লেখক এবং বাংলা ভাষায় আপনি লেখালিখি করেন। কিন্তু বাংলা ভাষার সে পরিমণ্ডল থেকে, এতদিন ধরে বাইরে থাকতে হচ্ছে। আপনার কি মনে হয় লেখালেখিতে তার কোন প্রভাব পড়ছে?
উত্তর: শুনুন। আমাকে যখন বাংলাদেশ থেকে তাড়িয়ে দিলো ১৯৯৪ সালে, তখন তো ইউরোপে গিয়ে পড়লাম। খুব চেষ্টা করতাম দেশে ফেরার জন্য। কিন্তু দেশে ফেরা তো সম্ভব হচ্ছিল না। কলকাতায় ফিরতে চাইলাম। কিন্তু ভারত সরকার আমাকে ভিসা দেয়নি ছ’ বছর। ছ’ বছর পর যখন ১৯৯৯-এর ডিসেম্বরের দিকে সম্ভবত, আমাকে ভিসা দেয়া হলো। আমি সঙ্গে সঙ্গে চলে এলাম কলকাতায়। কিছুদিন থাকলাম, তারপর আবার ভিসা শেষ হয়ে গেল, চলে যেতে বাধ্য হলাম। তারপর আবার ফিরে ফিরে আসতাম। প্রতি বছর আসতাম। এটা হচ্ছে কি, আমি চাইতাম আমি একটা বাংলা পরিবেশে থাকি। মানুষগুলো বাংলা ভাষায় কথা বলছে, আমিও বাংলা ভাষায় তাদের সঙ্গে কথা বলবো। কারণ আমি বাংলা ভাষায় লিখি। আমি যদি বাংলা ভাষা থেকে দূরে থাকি, বাইরে থাকি, আমার পক্ষে বোধ হয় লেখা সম্ভব হবে না। এটা আমি বিদেশে বসেই অনুভব করছিলাম। কারণ এত ইংরেজিতে কথা বলতে হতো, অনেক সময় বাংলায় লিখতে গেলে আমি কোন শব্দ হয়তো খুঁজে পেতাম না। হাতড়াতে হতো। এজন্য বিদেশের সমস্ত কিছু ছেড়ে, আমি কলকাতায় বাস করতে শুরু করলাম যখন আমাকে রেসিডেন্স পারমিট দেয়া হলো ২০০৪ থেকে। কেউ কি প্যারিস ছেড়ে কলকাতায় থাকে? কিন্তু আমি থাকলাম আমার ভাষার জন্য, আমার লেখার জন্য। কিন্তু তা বাংলার মানুষ বুঝলেও সরকার তো বোঝে নি, তাদের কিচ্ছু যায় আসে না। আমাকে যদি এই রাজনৈতিক ফুটবল বানানো হয়, আমাকে লাত্থি দিয়ে তাড়িয়ে দিলে যদি তাদের দু’টো ভোট জোটে! সে কারণে যদি আমার সর্বনাশ ঘটিয়ে, যদি আমি ভাল বই লিখতে না পারি, যদি আমি বাংলায় না থাকি, কিন্তু সে কথা কে বুঝলো? তাড়িয়ে দিলো।
প্রশ্ন: এ তাড়ানোরও কুড়ি বছর হয়ে গেল। কুড়ি বছরের ‘হাইস অ্যান্ড লোজ’ যদি বলি- তারও তো নিশ্চয়ই ওঠা-পড়া অনেক ছিল এ সময়টার মধ্যেও। কোনটা ওঠা, কোনটা পড়া বলে মনে হয়?
উত্তর: দেখুন, বিদেশ বিভূঁইয়ে ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন ভাষার মধ্যে থাকলে না, অনেক সময় হতাশ হয়ে পড়ে মানুষ। আমি যদি কোন মানুষকে খুন করে, আমি যদি সত্যিই একজন ক্রিমিনাল হতাম, হ্যাঁ দেশ থেকে তাড়িয়েছে, আমার একটা সান্ত্বনা থাকতো। কিন্তু মানুষের ভালর জন্য লিখলাম, মানবতার কথা লিখলাম, মেয়েদের সমানাধিকারের কথা লিখলাম, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লিখলাম, এটা কি এতই অন্যায় কাজ করেছি, যে জন্য আমাকে তাড়াতে হবে? এখন ধরুন, অনেক পুরস্কার পেয়েছি, যেগুলো আমি কখনও কল্পনাও করিনি। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট থেকে শাখারভ পুরস্কার মুক্তচিন্তার জন্য। সিমন দ্য ব্যুভোর, যিনি নারীবাদী, এত বড় নারীবাদী, তার পুরস্কার পেয়েছি ফরাসি সরকারের কাছ থেকে। এগুলো তো খুব বড় পুরস্কার। এগুলোর চেয়েও বেশি বড় পুরস্কার আমার কাছে ছিল, যখন মানুষ আমার কাছে এসে চোখের জল ফেলে, বলে যে তুমি আমাদের প্রেরণা। ওইটা মনে হয় অনেক বেশি আমাকে সপর্শ করেছে।
প্রশ্ন: পেছন ফিরে তাকিয়ে কখনও কি এমন মনে হয়েছে যে, আমি যদি অন্যভাবে লিখতাম, আমার লেখায় যদি ঝাঁঝ এতটা কম হতো, তাহলে আমি তো বাংলাদেশে থাকতেই পারতাম। আর পাঁচটা লোকের মতো মহানন্দে নিজের দেশে, নিজের ভাষার মধ্যে থাকতে পারতাম। এতটা বাড়াবাড়ি করা হয়তো উচিত হয়নি বা না করলেও হতো। এরকম কি কখনও মনে হয়? এরকম ভাবনা আসে?
উত্তর: না, এরকম ভাবনা আসে না। কারণ আমার আগেও যারা মিনমিন করে নারীবাদের কথা বলতো, ওদের কথা কেউ শুনতো না, সমাজটাকে ধাক্কা দিতো না। ধাক্কা দেয়ার দরকার ছিল। আমার নিজের জীবন দিয়ে আমি সইলাম সেটা। কিন্তু মানুষ তো কিছুটা ভেবেছে এবং এই প্রসঙ্গগুলো নিয়ে তো আলোচনা হয়েছে। এখন ধরুন প্রচুর মেয়েরা লিখছে বা ছেলেরা লিখছে। ঠিক আমি দেখি যে সেই যে ২৩ বছর আগে যা লিখেছিলাম সেই নির্বাচিত কলাম, সেগুলোই লিখছে এখন। তখনকার যে রাগ ছিল আমার, যেভাবে আমি বলতে চেয়েছি সেভাবেই বলেছি। আর মানুষের রাগ থাকা উচিত। অ্যাঙ্গারের প্রয়োজন আছে।
প্রশ্ন: এত রাগ নিয়ে আপনার মনে হয়, কোনদিন আবার বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন? মানে আমি যদি বাস্তববাদী হয়ে চিন্তা করতে বলি...।
উত্তর: আমার মনে হয় না যে, বাংলাদেশে আমাকে কেউ ফিরতে দেবে আর। যদি দেয়, সে তো খুব ভালো। কিন্তু বাংলাদেশে যতদিন এই ধর্মান্ধ লোকগুলো আস্ফালন করবে বা ধর্মান্ধ লোকগুলো যতদিন আছে, তাদেরকে একটা ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আমি কিছুই অনুতাপ করি না। যা লিখেছি তা-ই লিখবো। এখন আমার যদি নতুন করে জন্ম হয়, অনেকে বলে যে, নতুন করে হলে কি তুমি একটু অন্যরকমভাবে লিখবে? না, আমি ঠিক ওভাবেই লিখবো, যেভাবে লিখেছি। আমাকে ভুগতে হয়েছে। পজিটিভ জিনিসটা হচ্ছে আমি অনেক দেশে অনেক কিছু দেখেছি, অনেক লেখক আমাকে কাছে টেনেছে। আমি আরও অনেক বড় করে পৃথিবীটা দেখতে পারছি। হয়তো বাংলাদেশে থাকলে যে চোখটা আমার হয়েছে, যে মনটা আমার হয়েছে, সেটা হয়তো এতটা হতো না।
প্রশ্ন: ভারতে একটা নতুন সরকার এসেছে। বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তারা সমপর্ক উন্নয়নে আগ্রহী, এমনটাই বলছেন। আপনার কি মনে হয় যে, নতুন সরকার যদি বাংলাদেশের সঙ্গে আপনার এই ইস্যুটা উত্থাপন করে তাহলে এটাতে একটা ‘ব্রেক থ্রু’ হলেও হতে পারে?
উত্তর: আমি সত্যিই চাই যে, ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলুন। কারণ আমি ভারতে আছি, বলছি যে আমি বাংলাদেশে ফিরতে চাই। সেই সময়ে ভারত সরকার যদি বলেন আমি খুবই কৃতজ্ঞ থাকবো। আমি এমনকি কংগ্রেস সরকারকেও বলেছিলাম যে, আপনারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলুন। কারণ আপনারা ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন’কে মূল্য দিচ্ছেন, আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন। সেখানে বাংলাদেশ এত কিছু নির্ভর করছে আপনাদের ওপর, আপনারা তো এই শর্তটা দিতে পারেন যে, তোমরাও ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশনকে মূল্য দাও, আমরা যেমন দিচ্ছি।
প্রশ্ন: কিন্তু সদ্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘুরে এলেন বাংলাদেশে। ভিসা থেকে শুরু করে মৈত্রী এক্সপ্রেস, তিস্তা, স্থল-সীমান্ত চুক্তি, অনেক বিষয়ে আলোচনা হলো। তসলিমা নাসরিন কিন্তু সে আলোচনায় এসেছে, এরকম কথা আমরা শুনিনি।
উত্তর: না না। তসলিমা তো আসবে না। তসলিমা খুব ছোট ব্যাপার এখানে। তিস্তা এ সবের আর যা কিছু রাজনৈতিক সমপর্ক, সেখানে তো তসলিমা কোন প্রসঙ্গ আসতেই পারে না। আমি খুবই ছোট মানুষ। এখন আমি বলেছি যে, আমি খুব কৃতজ্ঞ থাকবো যদি বলেন। কারণ এটা হচ্ছে আসলে আমার ব্যক্তিগত ব্যাপারের চেয়েও এটা গণতন্ত্রের ব্যাপার। এটা গণতন্ত্রের প্রধান যে পিলার, সেই বাক-স্বাধীনতা বা মত প্রকাশের অধিকারের ব্যাপার।
প্রশ্ন: কোন অঙ্কই যদি না মেলে, তসলিমা নাসরিনকে যদি, আমি বলতে চাইছি, আরও কুড়িটা বছর নির্বাসনেই কাটাতে হয়, তসলিমা নাসরিন কিভাবে কাটাবেন সেটা কিছু ভেবেছেন?
উত্তর: আমি তো আগে থেকে প্ল্যান করে কিছু চলি না। আমি যখন যা ইচ্ছে হয় তাই করি। করতে চেষ্টা করি, সবসময় তো সম্ভব হয় না। যেমন ধরুন এখন আমার কলকাতায় যেতে ইচ্ছে করছে, আমি কি যেতে পারবো? না, আমাকে যেতে দেয়া হবে না। তো কুড়িটা বছর কিভাবে যাবে, তা তো আমি আগে প্ল্যান করে রাখি না। আমি হয়তো দু’দিন পর মরে যাবো। তবে যেখানেই থাকি, আমি লিখে যাবো। এইটুকুই জানি। যতদিন বাঁচি, যতদিন আমার মাথা কাজ করছে, ততদিন আমি যে কথাগুলো বলছিলাম, সে কথাগুলো বলবো এবং আরও যদি নতুন আইডিয়া আসে, সে সব প্রকাশ করবো।
No comments