দাঙ্গা আতঙ্কে ব্রাজিলে লক্ষাধিক সেনা, পুলিশ মোতায়েন
কি ঘটবে আজ ক্যাস্তেলাও স্টেডিয়ামে! আজ রাতে ব্রাজিল কি এ স্টেডিয়ামের ফুটবল যুদ্ধে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাবে! নাকি কান্নায় ভাসবে ব্রাজিল! কলম্বিয়ার সঙ্গে এ যুদ্ধের এখনও অনেকটা সময় বাকি। কিন্তু হাসি-কান্না যা-ই হোক, ব্রাজিল কিন্তু অন্য এক আতঙ্কে আছে। সে আতঙ্ক অনাকাক্সিক্ষত পরাজয় নিয়ে। ফুটবল তো খেলা। গায়ের জোরে এখানে জেতা যায় না। তাই জয় বা পরাজয় হতেই পারে। যদি ব্রাজিল আজকের ম্যাচে জেতে তাহলে তো কথাই নেই। ব্রাজিল পরিণত হবে এক মহোৎসবের দেশে। কিন্তু যদি হেরে যায় তাহলে শুরু হতে পারে দাঙ্গা। নিজেদের দেশে ফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিলের অনাকাক্ষিত পরাজয় মেনে নিতে পারবেন না ব্রাজিলের কোটি নাগরিক। ফলে তারা দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়তে পারেন। এমন আশঙ্কা মাথায় নিয়ে কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে মোতায়েন করেছে লক্ষাধিক সেনা ও পুলিশ। তারা ক্যাস্তেলাও স্টেডিয়ামের চারদিকে অবস্থান নিয়েছে। বিমান বিধ্বংসী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র মোতায়েন থাকছে আর কিছু সময় পরে। এমন দৃশ্য সত্যিকার একটি ‘বিশ্বযুদ্ধের’ পরিস্থিতি ফুটিয়ে তোলে। ফলে ব্রাজিল, বিশেষত ওই স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করে অন্য এক চেহারা নিয়েছে। এর আগে মারাকানা স্টেডিয়ামে ‘ব্রাজিলেইরাও সেরি-এ ২০১৪’ ম্যাচের সময়ও এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। মোতায়েন করা হয়েছিল মিলিটারি পুলিশ। তারা পরিস্থিতি নজরদারিতে রেখেছিল। সেই ম্যাচটি হয়েছিল ফ্লেমেঙ্গো ও পালমেইরাসের মধ্যে। তখন আর এখনকার অবস্থা ভিন্ন। এখন হচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবল। এখানে সারাবিশ্বের কাছে ব্রাজিলের যে অতুলনীয় ইতিহাস আছে তা যেন অক্ষুণœ থাকে সে আশায় বুক বেঁধে আছেন দেশটির নাগরিকরা। সঙ্গে বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত। কিন্তু যদি সেই স্বপ্ন আজ ভঙ্গ হয়, তাহলে তারা শোক সইতে পারবেন না। আর তারই ফলে দেখা দিতে পারে দাঙ্গা। ব্যাপক আকারে ভাঙচুর হতে পারে। তাই প্রশাসন আগেভাগেই সচেতন হয়েছে। ফরতালেজায় অবস্থিত ৬৪ হাজার ৮৪৬ আসনের স্টেডিয়াম ক্যাস্তেলাও আজ কানায় কানায় পূর্ণ হবে, হলুদ রঙে নাচবে চারদিক- এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। সেখানে ও এর আশপাশে মোতায়েন করা হচ্ছে প্রায় লাখখানেক সেনা, পুলিশ। মোতায়েন করা হয়েছে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট। যদি কোন দর্শক, পর্যটকের হাতে পাওয়া যায় বোমা তাহলে তা সঙ্গে সঙ্গে নিষ্ক্রিয় করতে এমন ব্যবস্থা। এর কারণ, খেলায় হেরে গেলে সহিংসতার হুমকি আগেভাগেই দিয়েছে কিছু গোষ্ঠী। সাধারণ সরকারি কর্মচারীদের একটি অংশ রয়েছেন এর মধ্যে। এর বাইরে রয়েছেন বিশ্বকাপ আয়োজনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী একটি অংশ। বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনে ব্যাপক অঙ্কের অর্থ খরচ হয়েছে। এর পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১০০০ কোটি পাউন্ড। এতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে তারা এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার বিক্ষোভ করেছেন। তাতে কাঁদানে গ্যাস, গুলি ছুড়েছে পুলিশ। তারাও আজ রাতে সুযোগ নিতে পারেন। এ জন্য বড় বড় সব শহরেও বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। আজ রাতে ক্যাসাব্লাঙ্কা সমুদ্র সৈকতে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখতে হাজির হবেন লাখ লাখ মানুষ। সেখানেও বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। ব্রাজিলের ১২টি ভেন্যুতে এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ম্যাচ। এসব শহরে, স্টেডিয়ামের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে এক লাখেরও বেশি পুলিশ। তাদেরকে সমুদ্র ও আকাশ পথে সহায়তা করবে বাড়তে নিরাপত্তা দল।
No comments