বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়- শিক্ষামন্ত্রী-টিআইবি পাল্টাপাল্টি
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে পাল্টাপাল্টি চ্যালেঞ্জ করছে শিক্ষামন্ত্রণালয় ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ৩০শে জুন রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট উপস্থাপন করে টিআইবি। সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয় কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৫০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকায় মিলছে সার্টিফিকেট। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পদে পদে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। ঘুষ লেনদেন হচ্ছে। মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির কিছু কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। টিআইবির প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপটে ওইদিনই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সেই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি টিআইবির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায়। বুধবার প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, টিআইবির প্রতিবেদন উদ্দেশ্যমূলক। টিআইবির কাছে কোন তথ্যপ্রমাণ নেই বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। গতকাল নওগাঁ-৩ আসনের সাংসদ ছলিম উদ্দিনের এক সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দিতে গিয়ে সংসদে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রতিবেদনের সত্যতা প্রমাণ করতে না পারলে টিআইবিকে অবিলম্বে তাদের প্রতিবেদন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। বলেন, প্রমাণ করতে না পারলে টিআইবিকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, টিআইবির প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ও তথ্য নেই। এ কারণে অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। তাদের হাতে প্রমাণ নেই। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করতে এ প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। তবুও এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে মন্ত্রণালয় তদন্ত শুরু করেছে। বৃহস্পতিবারই তদন্ত শুরু হয়েছে। নাহিদ বলেন, মিথ্যা অপপ্রচার করে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার অধিকার টিআইবির নেই। কি প্রমাণ আছে, তা অবিলম্বে হাজির করুন। তা না হলে প্রতিবেদন প্রত্যাহার করে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণকালে দেশে ৫৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এসব বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে যেটুকু আইন ছিল তা ছিল প্রায় অচল। কঠোর আইন না থাকায় তখন এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাজই ছিল সার্টিফিকেট বিক্রি করা ও মুনাফা অর্জন করা। তাছাড়া এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কাজ ছিল না। তিনি বলেন, এখন দেশে ৭৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ক্ষমতায় এসেই আমরা আইন সংশোধন করেছি। আইনটি সংশোধনের ফলে এখন আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অবৈধ কার্যকলাপ করার কোন সুযোগ নেই। আর যখনই কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অভিযোগ পেয়েছি তাৎক্ষণিক তদন্ত করে তা বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু হাইকোর্ট থেকে স্থিতাবস্থা নিয়ে এসব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং অবৈধ ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ঘুষ নিয়ে এসব অবৈধ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমতি দিয়েছি বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সবৈব মিথ্যা। আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে কোন হস্তক্ষেপ করি না। শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের কৃতিত্ব ও অর্জনকে ম্লান করতেই ওই সংস্থা চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, টিআইবি যে অভিযোগ করেছে তার পক্ষে তাদের কাছে কোন তথ্য-প্রমাণ নেই। মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হাসিলের জন্যই মনগড়া এসব রিপোর্ট প্রকাশ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সংস্থাটি অভিযোগ করলেও এর পক্ষে কোন তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। টিআইবি যদি অবিলম্বে অভিযোগের পক্ষে তথ্য-প্রমাণ জাতির সামনে হাজির করতে না পারে তাহলে বুঝা যাবে শুধুমাত্র সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই সংস্থাটি এসব অজুহাত সৃষ্টি করছে।
অন্যদিকে সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমাদের প্রতিবেদনটি গবেষণা প্রতিবেদন। এটা প্রত্যাহারের কোন সুযোগ নেই। আমরা যা করেছি সেটা সঠিক। তাই ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। যদি ক্ষমা চাইতে হয় সেটা অন্য কোন কারণে ভুল হলে চাইতে পারি। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ ধরনের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতিবাজরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, আমরা কোন গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর এ ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়। এটা নতুন কিছু নয়। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের যে শক্তি-সামর্থ্য আছে তা দুর্নীতিবাজদের শনাক্ত করার কাজে লাগানো উচিত। শিক্ষামন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায় তারা বিষয়টা অস্বীকার করার চেষ্টা করছেন। এর ফলে বিরাট একটা খাত হুমকির মুখে পড়বে। কেননা, এখানে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করেন। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ভাল করছে আমরা তো তাদের কথাও বলেছি। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে এটা তো দিবালোকের মতো পরিষ্কার। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আমাদেরকে ক্ষমা চাইতে বলছেন, যদি আমাদের প্রতিবেদন সঠিক হয় তখন তিনি কার কাছে ক্ষমা চাইবেন।
অন্যদিকে সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমাদের প্রতিবেদনটি গবেষণা প্রতিবেদন। এটা প্রত্যাহারের কোন সুযোগ নেই। আমরা যা করেছি সেটা সঠিক। তাই ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। যদি ক্ষমা চাইতে হয় সেটা অন্য কোন কারণে ভুল হলে চাইতে পারি। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ ধরনের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতিবাজরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, আমরা কোন গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর এ ধরনের প্রতিক্রিয়া হয়। এটা নতুন কিছু নয়। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিক্ষামন্ত্রণালয়ের যে শক্তি-সামর্থ্য আছে তা দুর্নীতিবাজদের শনাক্ত করার কাজে লাগানো উচিত। শিক্ষামন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায় তারা বিষয়টা অস্বীকার করার চেষ্টা করছেন। এর ফলে বিরাট একটা খাত হুমকির মুখে পড়বে। কেননা, এখানে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করেন। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ভাল করছে আমরা তো তাদের কথাও বলেছি। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে এটা তো দিবালোকের মতো পরিষ্কার। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আমাদেরকে ক্ষমা চাইতে বলছেন, যদি আমাদের প্রতিবেদন সঠিক হয় তখন তিনি কার কাছে ক্ষমা চাইবেন।
No comments