ঝিমিয়ে আছে বিএনপি! -বড় কর্মসূচি নেই, সংগঠনও গোছানো হয়নি by রিয়াদুল করিম
সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় প্রেসক্লাবকেন্দ্রিক ছোটখাটো সভা-সমাবেশ আর সেমিনারে আটকে ছিল বিএনপির কার্যক্রম। রমজান উপলক্ষে সাংগঠনিক কার্যক্রমের পরিধি বেড়ে ইফতার পার্টি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এর বাইরে টেলিভিশনের সামনে কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বক্তৃতা-বিবৃতি ছাড়া দলটির দৃশ্যমান আর কোনো তৎপরতা নেই।
আবার সাংগঠনিকভাবেও বিএনপি গোছানো আছে বলা যাবে না। মূল দল ও অঙ্গ, সহযোগী সংগঠনের কমিটিগুলো পুনর্গঠনের ঘোষণা দিলেও কাজ এগোয়নি। এতে আটকে গেছে দল গোছানোর প্রক্রিয়াও।
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠকে দল পুনর্গঠন এবং শুরুতে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে না গিয়ে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দেওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়। কিন্তু গত ছয় মাসে তেমন কোনো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে পারেনি দলটি। গত মে মাসে গুম-খুনের প্রতিবাদে কিছু কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।
তবে কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা এসেছে, এ কথা মানতে রাজি নন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি গত বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপিতে স্থবিরতা এসেছে, তা কিছুতেই বলা যাবে না। কিছুদিন আগে জয়পুরহাটে বিএনপি চেয়ারপারসন সমাবেশে করেছেন। এরপর ফেনীতে কর্মসূচি হয়েছে। রমজান মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ইফতারের মাধ্যমে সামাজিক কর্মসূচিতে থাকবে বিএনপি। এর মাধ্যমে সারা দেশে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডও চলবে।
গত জুন মাসে মাঠে বিএনপির কোনো কর্মসূচি ছিল না বললেই চলে। তবে এ সময়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে অন্তত ১৭টি আলোচনা বা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসহ আরও কিছু ‘নামসর্বস্ব’ সংগঠন। এসব অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বা দলের স্থায়ী কমিটির কোনো না কোনো সদস্য বক্তব্য দিয়েছেন। এর বাইরে গত মাসে কর্মসূচির মধ্যে ছিল ঢাকার বাইরে জয়পুরহাটে বিএনপির চেয়ারপারসনের সমাবেশ, ফেনীতে মহাসচিবের গণসংযোগ, ঢাকা বিভাগে নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং সরকারের বক্তব্যের জবাব দিতে কয়েকটি সংবাদ ব্রিফিং।
এর আগে গত মে মাসে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার পর গুম-খুনের প্রতিবাদে মাঠে নামার চেষ্টা করেছিল বিএনপি। গুম-খুনের প্রতিবাদে গণ-অনশন এবং কয়েকটি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে দলটি। এর মধ্যে ঢাকায় তিনটি কর্মসূচিতে বাধার মুখে পড়ে। এর প্রতিবাদে কয়েকটি বিক্ষোভ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল। সেসব কর্মসূচিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য।
দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া বলেছিলেন, উপজেলা নির্বাচনের পর তাঁরা দল গুছিয়ে আন্দোলন শুরু করবেন। উপজেলা নির্বাচন শেষ হলেও বিএনপি কোনো কর্মসূচি দেয়নি। সর্বশেষ তিনি বলেছেন, ঈদের পর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এবং ১৯-দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত আন্দোলনের কোনো রূপরেখা ঠিক করা হয়নি। এ নিয়ে দল বা জোটে বিস্তারিত আলোচনাও হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি আন্দোলনে যাওয়ার জন্য এখনো প্রস্তুত নয়। এ কারণে সংগঠিত হওয়ার জন্য সময় নিচ্ছে। ঈদুল ফিতরের পর কিছু কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। তবে এ জন্য মাঠপর্যায়ে দলকে প্রস্তুত করতে হবে। অক্টোবরে গিয়ে হয়তো বড় ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে।
আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত কি না, জানতে চাইলে বিএনপির কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দল যেহেতু করি, ম্যাডামের নির্দেশ যেভাবে হোক পালন করব।’
থেমে গেছে দল পুনর্গঠন: ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের এক মাসের মাথায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দল গুছিয়ে আবার আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর এক দিন পর দলের স্থায়ী কমিটির সভায় ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি এবং ছাত্রদলের কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং বিএনপির সব জেলা কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। দল গুছিয়ে উপজেলা নির্বাচনের পর বিএনপি আবার আন্দোলনে নামবে।
গত চার মাসে শুধু শ্রমিক দলের নতুন কমিটি করা হয়েছে। কয়েকটি জেলায় বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। আর কোনো তৎপরতা এখন আর নেই।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে খালেদা জিয়া এক মাসের মধ্যে নতুন কমিটি করতে বলেছিলেন। কিন্তু চার মাসেও সে কাজ হয়নি। দলীয় সূত্র বলছে, কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ চাঙা হয়ে উঠলে পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া থমকে যায়।
এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারির স্থায়ী কমিটির সভায় ছাত্রদলের কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল; তাও বাস্তবায়িত হয়নি। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়া নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে কমিটি করার ঘোষণা দেওয়ায় ছাত্র ও অছাত্র নেতাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককে ছাত্রদলের নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়ায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এরপর সবকিছু থেমে যায়।
গত এপ্রিলে এসে জেলা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেন খালেদা জিয়া। ওই মাসে পঞ্চগড়, সৈয়দপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম উত্তর, নওগাঁ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ উত্তর, সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি জেলার কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়া হয়। তবে রংপুরের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর সেখানে এক পক্ষ বিক্ষোভ করে। এরপর আর আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কার্যক্রমও থেমে যায়।
দল গোছানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘দল পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়নি। ১০-১২টি জেলা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। এটি একটি প্রক্রিয়া, কিছু সময় লাগে।’
হতাশা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ২৯ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের অভিযাত্রা কর্মসূচি সফল না হওয়ায়, বিশেষ করে ঢাকার নেতা-কর্মীরা মাঠে না থাকায় তৃণমূলের কর্মীরা হতাশ হন। এরপর আবার ঘোষণা দিয়ে ঢাকা মহানগর কমিটি করতে না পারা বা অন্য সংগঠনগুলো পুনর্গঠন না করা তাঁদের সে হতাশাকে আরও বাড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, দল তাঁদের সামনে কোনো সম্ভাবনা দেখাতে পারছে না।
দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্যেও অনেক সময় হতাশার বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে। গত ২১ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, ‘কত বলব, বলতে বলতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। শুনতে শুনতে আপনারা ক্লান্ত।’ তবে হতাশ না হয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আবার সাংগঠনিকভাবেও বিএনপি গোছানো আছে বলা যাবে না। মূল দল ও অঙ্গ, সহযোগী সংগঠনের কমিটিগুলো পুনর্গঠনের ঘোষণা দিলেও কাজ এগোয়নি। এতে আটকে গেছে দল গোছানোর প্রক্রিয়াও।
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠকে দল পুনর্গঠন এবং শুরুতে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে না গিয়ে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দেওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়। কিন্তু গত ছয় মাসে তেমন কোনো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে পারেনি দলটি। গত মে মাসে গুম-খুনের প্রতিবাদে কিছু কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।
তবে কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা এসেছে, এ কথা মানতে রাজি নন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি গত বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপিতে স্থবিরতা এসেছে, তা কিছুতেই বলা যাবে না। কিছুদিন আগে জয়পুরহাটে বিএনপি চেয়ারপারসন সমাবেশে করেছেন। এরপর ফেনীতে কর্মসূচি হয়েছে। রমজান মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ইফতারের মাধ্যমে সামাজিক কর্মসূচিতে থাকবে বিএনপি। এর মাধ্যমে সারা দেশে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডও চলবে।
গত জুন মাসে মাঠে বিএনপির কোনো কর্মসূচি ছিল না বললেই চলে। তবে এ সময়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে অন্তত ১৭টি আলোচনা বা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসহ আরও কিছু ‘নামসর্বস্ব’ সংগঠন। এসব অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বা দলের স্থায়ী কমিটির কোনো না কোনো সদস্য বক্তব্য দিয়েছেন। এর বাইরে গত মাসে কর্মসূচির মধ্যে ছিল ঢাকার বাইরে জয়পুরহাটে বিএনপির চেয়ারপারসনের সমাবেশ, ফেনীতে মহাসচিবের গণসংযোগ, ঢাকা বিভাগে নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং সরকারের বক্তব্যের জবাব দিতে কয়েকটি সংবাদ ব্রিফিং।
এর আগে গত মে মাসে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার পর গুম-খুনের প্রতিবাদে মাঠে নামার চেষ্টা করেছিল বিএনপি। গুম-খুনের প্রতিবাদে গণ-অনশন এবং কয়েকটি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে দলটি। এর মধ্যে ঢাকায় তিনটি কর্মসূচিতে বাধার মুখে পড়ে। এর প্রতিবাদে কয়েকটি বিক্ষোভ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল। সেসব কর্মসূচিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য।
দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া বলেছিলেন, উপজেলা নির্বাচনের পর তাঁরা দল গুছিয়ে আন্দোলন শুরু করবেন। উপজেলা নির্বাচন শেষ হলেও বিএনপি কোনো কর্মসূচি দেয়নি। সর্বশেষ তিনি বলেছেন, ঈদের পর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এবং ১৯-দলীয় জোটের শরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত আন্দোলনের কোনো রূপরেখা ঠিক করা হয়নি। এ নিয়ে দল বা জোটে বিস্তারিত আলোচনাও হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি আন্দোলনে যাওয়ার জন্য এখনো প্রস্তুত নয়। এ কারণে সংগঠিত হওয়ার জন্য সময় নিচ্ছে। ঈদুল ফিতরের পর কিছু কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। তবে এ জন্য মাঠপর্যায়ে দলকে প্রস্তুত করতে হবে। অক্টোবরে গিয়ে হয়তো বড় ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে।
আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত কি না, জানতে চাইলে বিএনপির কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দল যেহেতু করি, ম্যাডামের নির্দেশ যেভাবে হোক পালন করব।’
থেমে গেছে দল পুনর্গঠন: ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের এক মাসের মাথায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দল গুছিয়ে আবার আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর এক দিন পর দলের স্থায়ী কমিটির সভায় ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি এবং ছাত্রদলের কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং বিএনপির সব জেলা কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। দল গুছিয়ে উপজেলা নির্বাচনের পর বিএনপি আবার আন্দোলনে নামবে।
গত চার মাসে শুধু শ্রমিক দলের নতুন কমিটি করা হয়েছে। কয়েকটি জেলায় বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। আর কোনো তৎপরতা এখন আর নেই।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে খালেদা জিয়া এক মাসের মধ্যে নতুন কমিটি করতে বলেছিলেন। কিন্তু চার মাসেও সে কাজ হয়নি। দলীয় সূত্র বলছে, কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ চাঙা হয়ে উঠলে পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া থমকে যায়।
এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারির স্থায়ী কমিটির সভায় ছাত্রদলের কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল; তাও বাস্তবায়িত হয়নি। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়া নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে কমিটি করার ঘোষণা দেওয়ায় ছাত্র ও অছাত্র নেতাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককে ছাত্রদলের নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়ায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এরপর সবকিছু থেমে যায়।
গত এপ্রিলে এসে জেলা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেন খালেদা জিয়া। ওই মাসে পঞ্চগড়, সৈয়দপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম উত্তর, নওগাঁ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ উত্তর, সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি জেলার কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়া হয়। তবে রংপুরের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর সেখানে এক পক্ষ বিক্ষোভ করে। এরপর আর আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কার্যক্রমও থেমে যায়।
দল গোছানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘দল পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়নি। ১০-১২টি জেলা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। এটি একটি প্রক্রিয়া, কিছু সময় লাগে।’
হতাশা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ২৯ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের অভিযাত্রা কর্মসূচি সফল না হওয়ায়, বিশেষ করে ঢাকার নেতা-কর্মীরা মাঠে না থাকায় তৃণমূলের কর্মীরা হতাশ হন। এরপর আবার ঘোষণা দিয়ে ঢাকা মহানগর কমিটি করতে না পারা বা অন্য সংগঠনগুলো পুনর্গঠন না করা তাঁদের সে হতাশাকে আরও বাড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, দল তাঁদের সামনে কোনো সম্ভাবনা দেখাতে পারছে না।
দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্যেও অনেক সময় হতাশার বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে। গত ২১ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, ‘কত বলব, বলতে বলতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। শুনতে শুনতে আপনারা ক্লান্ত।’ তবে হতাশ না হয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
No comments