অ্যাসাঞ্জের ভবিষ্যত কী?
তফাতটা খুব অল্প। উপরে বারান্দায় তিনি, নীচে ভিড় করে পুলিশ। ওই দূরত্বটুকুই অপার হয়ে দেখা দিল। বৃটিশ পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে জনসমক্ষে এলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। উইকিলিকস-এর প্রতিষ্ঠাতার টিকিটি কেউ ছুঁতে পারল না। তিনি সবার সামনে হেঁকে বললেন, “আমেরিকা জুজু ধরার অভিযান বন্ধ করুক!” জনতা হাততালি দিল! প্রচুর আটঘাট বেঁধেও নীরব দর্শকের ভূমিকাতেই সন্তুষ্ট থাকতে বাধ্য হল পুলিশ।
উইকিলিকস ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলা ঝুলছে সুইডেনে। তাকে সুইডেনে প্রত্যর্পণ করতে চায় বৃটিশ সরকার। তবে অ্যাসাঞ্জের সমর্থকরা মনে করেন, উইকিলিকসে লাগাতার গোপন তথ্য ফাঁস করার ‘অপরাধে’ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে অ্যাসাঞ্জকে আদতে হেফাজতে নিতে চাইছে আমেরিকা।
অ্যাসাঞ্জের নিজেরও আশঙ্কা, প্রত্যর্পণ করা হলে তাকে আমেরিকার হাতেই তুলে দেবে সুইডেন। গ্রেফতারি এড়াতে জুন মাস থেকেই অ্যাসাঞ্জ লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আস্তানা নিয়েছেন। সম্প্রতি ইকুয়েডর তাকে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেয়ার কথা ঘোষণা করার পরে বৃটেন-ইকুয়েডর কূটনৈতিক টানাপোড়েন অত্যন্ত জোরদার হয়ে উঠেছে। অ্যাসাঞ্জের নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়াও জানিয়েছে, তারা প্রয়োজনে অ্যাসাঞ্জকে আমেরিকায় প্রত্যর্পণ করবে। ফলে সুইডেন থেকে অস্ট্রেলিয়া হয়ে আমেরিকা পৌঁছনোর সম্ভাবনা আরও গতি পাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতেই রোববার দূতাবাসের বারান্দায় বেরিয়ে এলেন অ্যাসাঞ্জ। জুন মাসের পরে এই প্রথম বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে কথা বললেন তিনি। আমেরিকার কড়া সমালোচনা করে ফিরে গেলেন দূতাবাসের নিরাপদ আশ্রয়ে। ইকুয়েডরের ‘সীমান্তের’ মধ্যে থাকায় তাকে ছুঁতে পারল না পুলিশ। ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী কোনো দেশের দূতাবাসে ঢোকার অধিকার পুলিশের নেই বলে আগেই ঘোষণা করেছিল ইকুয়েডর। বৃটেন পাল্টা দাবি করে, প্রয়োজনে কূটনৈতিক রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে দূতাবাসে ঢোকার অধিকার আছে বৃটিশ পুলিশের। কিন্তু শেষ অবধি তেমন কিছু হয়নি।
পুলিশ দূতাবাস ঘিরে রাখল ঠিকই। অ্যাসাঞ্জ দূতাবাস থেকে বেরোলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে প্রস্তুতিও থাকল। আর তখনই শুরু হয়ে গেল জল্পনা, অ্যাসাঞ্জ ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে কথা বলবেন! বিকেল নাগাদ দূতাবাসের একটি বারান্দায় কিছু নড়াচড়া দেখা গেল। অ্যাসাঞ্জ যে ওই বারান্দা থেকে কথা বলবেন, তা তখন আন্দাজ করলেন সকলে। চিলির প্রাক্তন শাসক জেনারেল পিনোশের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বিখ্যাত হয়েছিলেন স্পেনের প্রাক্তন বিচারপতি বালথাজার ইয়ারন। এখন তিনিই অ্যাসাঞ্জের প্রধান আইনি পরামর্শদাতা।
রোববার উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে দেখা করেন ইয়ারন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, অ্যাসাঞ্জ আদৌ হাল ছাড়েননি। তিনি এখনও লড়াই চালিয়ে যেতে চান।
ঠিক তা-ই হলো। নীল শার্ট আর লাল টাই পরে বারান্দায় বেরিয়ে এলেন অ্যাসাঞ্জ। সোজাসুজি বললেন, মার্কিন সরকারের উইকিলিকসের পিছনে লাগা বন্ধ করা উচিত। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সামনে দু’টো রাস্তা খোলা আছে বলে মনে করেন অ্যাসাঞ্জ। যে বৈপ্লবিক মতাদর্শের উপরে ভিত্তি করে মার্কিন সরকার যাত্রা শুরু করেছিল, সেগুলিকে তুলে ধরতে পারে আজকের প্রশাসন। অথবা সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করে এক ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের দিকে বিশ্বকে টেনে নিয়ে যেতে পারে। অ্যাসাঞ্জের বক্তব্য, উইকিলিকসের উপরে আঘাত মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপরে আঘাত। উইকিলিকস হোক বা নিউ ইয়র্ক টাইমস, কোনো সংবাদমাধ্যমকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত নয়।
উইকিলিকসকে গোপন তথ্য সরবরাহ করার দায়ে আমেরিকায় বন্দি হয়ে বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন সেনা ব্র্যাডলে ম্যানিং। তার মুক্তির দাবিও করেছেন অ্যাসাঞ্জ। ওবামা প্রশাসনের সমালোচনা করার পাশাপাশি লাতিন আমেরিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আগামী শুক্রবার অ্যাসাঞ্জকে নিয়ে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনে আলোচনায় বসবেন আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীরা। এই বৈঠকের বিরোধিতা করেছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু আর্জেন্টিনা-চিলি-পেরুর মতো দেশ অনড় অবস্থান নেয়ায় বৈঠক হবে বলেই স্থির করেছে ‘অর্গানাইজেশন অফ অ্যামেরিকান স্টেটস’।
লাতিন আমেরিকার দেশগুলির পাশাপাশি নিজের সমর্থকদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন উইকিলিকস-এর প্রতিষ্ঠাতা। আমেরিকা, বৃটেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার তার বিরুদ্ধে। কিন্তু তাকে সমর্থন করেছেন ওই সব দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ। ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেয়ার পরে দিন-রাত জেগে বাইরের রাস্তায় পাহারা দিয়েছেন তার সমর্থকেরা। অ্যাসাঞ্জের দাবি, তারা না থাকলে বৃটিশ পুলিশ কূটনৈতিক রক্ষাকবচের তোয়াক্কা না করে দূতাবাসে ঢুকে আসত।
কিন্তু এর পরে কী হবে? অ্যাসাঞ্জের ভবিষ্যত কী? উইকিলিকসের মুখপাত্র ক্রিস্টিন রাফনসন জানিয়েছেন, অ্যাসাঞ্জকে তৃতীয় কোনও দেশে পাঠানো হবে না বলে আশ্বাস দিতে পারে সুইডেন ও বৃটেন। সে ক্ষেত্রে সমস্যা মিটতে পারে। এত সমস্যার মধ্যেও নিজের পরিবার-সন্তানদের কথা ভোলেননি অ্যাসাঞ্জ। জানিয়েছেন, দেখা হবে। শিগগিরই। সূত্র: ওয়েবসাইট।
অ্যাসাঞ্জের নিজেরও আশঙ্কা, প্রত্যর্পণ করা হলে তাকে আমেরিকার হাতেই তুলে দেবে সুইডেন। গ্রেফতারি এড়াতে জুন মাস থেকেই অ্যাসাঞ্জ লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আস্তানা নিয়েছেন। সম্প্রতি ইকুয়েডর তাকে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেয়ার কথা ঘোষণা করার পরে বৃটেন-ইকুয়েডর কূটনৈতিক টানাপোড়েন অত্যন্ত জোরদার হয়ে উঠেছে। অ্যাসাঞ্জের নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়াও জানিয়েছে, তারা প্রয়োজনে অ্যাসাঞ্জকে আমেরিকায় প্রত্যর্পণ করবে। ফলে সুইডেন থেকে অস্ট্রেলিয়া হয়ে আমেরিকা পৌঁছনোর সম্ভাবনা আরও গতি পাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতেই রোববার দূতাবাসের বারান্দায় বেরিয়ে এলেন অ্যাসাঞ্জ। জুন মাসের পরে এই প্রথম বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে কথা বললেন তিনি। আমেরিকার কড়া সমালোচনা করে ফিরে গেলেন দূতাবাসের নিরাপদ আশ্রয়ে। ইকুয়েডরের ‘সীমান্তের’ মধ্যে থাকায় তাকে ছুঁতে পারল না পুলিশ। ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী কোনো দেশের দূতাবাসে ঢোকার অধিকার পুলিশের নেই বলে আগেই ঘোষণা করেছিল ইকুয়েডর। বৃটেন পাল্টা দাবি করে, প্রয়োজনে কূটনৈতিক রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে দূতাবাসে ঢোকার অধিকার আছে বৃটিশ পুলিশের। কিন্তু শেষ অবধি তেমন কিছু হয়নি।
পুলিশ দূতাবাস ঘিরে রাখল ঠিকই। অ্যাসাঞ্জ দূতাবাস থেকে বেরোলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে বলে প্রস্তুতিও থাকল। আর তখনই শুরু হয়ে গেল জল্পনা, অ্যাসাঞ্জ ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে কথা বলবেন! বিকেল নাগাদ দূতাবাসের একটি বারান্দায় কিছু নড়াচড়া দেখা গেল। অ্যাসাঞ্জ যে ওই বারান্দা থেকে কথা বলবেন, তা তখন আন্দাজ করলেন সকলে। চিলির প্রাক্তন শাসক জেনারেল পিনোশের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বিখ্যাত হয়েছিলেন স্পেনের প্রাক্তন বিচারপতি বালথাজার ইয়ারন। এখন তিনিই অ্যাসাঞ্জের প্রধান আইনি পরামর্শদাতা।
রোববার উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে দেখা করেন ইয়ারন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, অ্যাসাঞ্জ আদৌ হাল ছাড়েননি। তিনি এখনও লড়াই চালিয়ে যেতে চান।
ঠিক তা-ই হলো। নীল শার্ট আর লাল টাই পরে বারান্দায় বেরিয়ে এলেন অ্যাসাঞ্জ। সোজাসুজি বললেন, মার্কিন সরকারের উইকিলিকসের পিছনে লাগা বন্ধ করা উচিত। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সামনে দু’টো রাস্তা খোলা আছে বলে মনে করেন অ্যাসাঞ্জ। যে বৈপ্লবিক মতাদর্শের উপরে ভিত্তি করে মার্কিন সরকার যাত্রা শুরু করেছিল, সেগুলিকে তুলে ধরতে পারে আজকের প্রশাসন। অথবা সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করে এক ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের দিকে বিশ্বকে টেনে নিয়ে যেতে পারে। অ্যাসাঞ্জের বক্তব্য, উইকিলিকসের উপরে আঘাত মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপরে আঘাত। উইকিলিকস হোক বা নিউ ইয়র্ক টাইমস, কোনো সংবাদমাধ্যমকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত নয়।
উইকিলিকসকে গোপন তথ্য সরবরাহ করার দায়ে আমেরিকায় বন্দি হয়ে বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন সেনা ব্র্যাডলে ম্যানিং। তার মুক্তির দাবিও করেছেন অ্যাসাঞ্জ। ওবামা প্রশাসনের সমালোচনা করার পাশাপাশি লাতিন আমেরিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আগামী শুক্রবার অ্যাসাঞ্জকে নিয়ে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনে আলোচনায় বসবেন আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীরা। এই বৈঠকের বিরোধিতা করেছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু আর্জেন্টিনা-চিলি-পেরুর মতো দেশ অনড় অবস্থান নেয়ায় বৈঠক হবে বলেই স্থির করেছে ‘অর্গানাইজেশন অফ অ্যামেরিকান স্টেটস’।
লাতিন আমেরিকার দেশগুলির পাশাপাশি নিজের সমর্থকদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন উইকিলিকস-এর প্রতিষ্ঠাতা। আমেরিকা, বৃটেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার তার বিরুদ্ধে। কিন্তু তাকে সমর্থন করেছেন ওই সব দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ। ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেয়ার পরে দিন-রাত জেগে বাইরের রাস্তায় পাহারা দিয়েছেন তার সমর্থকেরা। অ্যাসাঞ্জের দাবি, তারা না থাকলে বৃটিশ পুলিশ কূটনৈতিক রক্ষাকবচের তোয়াক্কা না করে দূতাবাসে ঢুকে আসত।
কিন্তু এর পরে কী হবে? অ্যাসাঞ্জের ভবিষ্যত কী? উইকিলিকসের মুখপাত্র ক্রিস্টিন রাফনসন জানিয়েছেন, অ্যাসাঞ্জকে তৃতীয় কোনও দেশে পাঠানো হবে না বলে আশ্বাস দিতে পারে সুইডেন ও বৃটেন। সে ক্ষেত্রে সমস্যা মিটতে পারে। এত সমস্যার মধ্যেও নিজের পরিবার-সন্তানদের কথা ভোলেননি অ্যাসাঞ্জ। জানিয়েছেন, দেখা হবে। শিগগিরই। সূত্র: ওয়েবসাইট।
No comments