অর্থমন্ত্রীর ভিত্তিহীন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন by সাব্বির আহমদ
বছর ঘুরে ঈদ আসে। এবার এক বছর আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথাও মনে পড়লো অর্থমন্ত্রীর। গত বছর সিলেটের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহে মিনার স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন তিনি।
এবার ঈদের আগে আবার মনে পড়লো সে প্রতিশ্রুতির কথা। তাই তড়িঘড়ি করে সিলেটের ৬শ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহে মিনার নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
কোনো প্রকল্প বরাদ্দ ছাড়াই গত শনিবার বিকেল ৩টায় বায়বীয় এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নগর উন্নয়ন কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান ও ঈদগাহ কমিটির সদস্য আরিফুল হক বাংলানিউজকে জানান, ১৪ তলা মিনার স্থাপনের জন্য ৩ বছর ধরে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন অর্থমন্ত্রী। অথচ এর বাস্তবায়ন করেনি তিনি। সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে তড়িঘড়ি করে মিনার নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে এসে অনেকটা জনরোষের শিকার হয়েছেন অর্থমন্ত্রী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, মিনার শুধুই প্রতিশ্রুতি। এর জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রকৌশলী দিয়ে কোনো ডিজাইন করাননি। নেওয়া হয়নি কোনো প্রকল্প, কোন প্রতিষ্ঠান কাজ করবে তাও ঠিক হয়নি। এমনকি কোনো অর্থ পর্যন্ত বরাদ্দও দেওয়া হয়নি এর জন্য। তবুও লোক দেখানো হাওয়ার ওপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন অর্থমন্ত্রী।
ঈদগাহ কমিটির একাধিক সদস্য বাংলানিউজকে জানান, গত ঈদের জামাত শেষে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ৬০০ বছর পুরোনো শাহী ঈদগাহের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য ঈদগাহের মূল স্থাপত্য নিদর্শনের দু’পাশে ১৪ তলা মিনার নির্মাণের। কিন্তু এরপর আর কোনো কাজ হয়নি। হঠাৎ করে ঈদ-উল ফিতরের দুদিন আগে অর্থমন্ত্রী মুহিত তড়িঘড়ি করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য শাহী ঈদগাহে ছুটে আসেন।
তারা জানান, মিনার স্থাপনের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ৫ কোটি টাকা ধরা হলেও এর জন্য কোনো কার্যাদেশ বা প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়নি। যা ভিত্তিহীন।
ঈদগাহ কমিটি সূত্র জানিয়েছে, অর্থমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির মিনার নির্মাণের উদ্দ্যেগ বাস্তবায়নে তাড়াহুড়ো করা নিয়ে খোদ ঈদগাহ কমিটি ও সুশীল সমাজের মধ্যে দ্বিধা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মিনারটি কোথায় স্থাপন করা হবে এ নিয়ে খোদ ঈদগাহ কমিটিও দ্বিধাবিভক্তির মধ্যে রয়েছেন।
তবে এসব অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
জানা গেছে, উপমহাদেশের প্রথম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্র সিলেটের শাহী ঈদগাহ। স্থানটি ধারণ করে আছে সিলেটের কয়েক শত বছরের ঐতিহ্য। দেশের প্রাচীনতম ঈদগাহ হিসেবেও পরিচিত এ ঈদগাহে প্রতি বছর লাখো মানুষ নামাজ আদায় করেন। শাহী ঈদগাহ সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত সিলেটের প্রাচীন ঐতিহ্যের এক নিদর্শনও।
সরেজমিনে শাহী ঈদগাহ ঘুরে দেখা গেছে, প্রাচীনতম স্থাপত্যশৈলীর এই নিদর্শন ঈদগাহের মূল ভূ-খণ্ডে ২২টি সিঁড়ি মাড়িয়ে উঠতে হয়। উঁচু টিলার ওপরই ১৫টি গম্বুজ সজ্জিত মূল ঈদগাহ। টিলার মূল ঈদগাহের সামনের দিকে ৮টি গম্বুজ। নিচে বৃক্ষ ছায়ায় বিস্তৃত মাঠ এবং সীমানা প্রাচীরের চারদিকে রয়েছে-ছোট বড় ১০টি গেট। তবে ঈদগাহের সামনের দিকে রয়েছে মূল তিনটি গেট।
মূল তিনটি গেটে মুঘল আমলের স্থাপত্যের ছাপ স্পষ্ট। ২০০১ সালে বড় পরিসরে ৩টি গেটের নির্মাণ করে দেন স্থানীয় ব্যবসায়ী হাজারীবাগ নীরু মঞ্জিলের বাসিন্দা জহির উদ্দিন তারু মিয়া।
এছাড়া এর আকর্ষণ ঈদগাহের ভেতরের সামনের দিকে ওজু করার জন্য রয়েছে বিশাল পুকুর। পুকুরে স্থাপন করা রয়েছে কৃত্রিম ফোয়ারা। তবে ফোয়ারাটি এখনা অযত্ন-অবহেলায় অচল। ফোয়ারাটির দায়িত্বে সিলেট সিটি কর্পোরেশন থাকলেও এর কোনো দেখভাল করছে না কর্তৃপক্ষ- এমন অভিযোগও রয়েছে।
ঈদগাহের ভেতরের ফলক অনুযায়ী, ২০০৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান পুকুরের চারদিকে ঘাট নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পুকুরটির চারপাশে বৃক্ষের সমারোহ দিন-দুপুরে ক্লান্ত মানুষের নি:শ্বাস ফেলার আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল কর্মকর্তা, শাহী ঈদগাহ পরিচালনা পর্ষদ এবং জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
কোনো প্রকল্প বরাদ্দ ছাড়াই গত শনিবার বিকেল ৩টায় বায়বীয় এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নগর উন্নয়ন কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান ও ঈদগাহ কমিটির সদস্য আরিফুল হক বাংলানিউজকে জানান, ১৪ তলা মিনার স্থাপনের জন্য ৩ বছর ধরে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন অর্থমন্ত্রী। অথচ এর বাস্তবায়ন করেনি তিনি। সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে তড়িঘড়ি করে মিনার নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে এসে অনেকটা জনরোষের শিকার হয়েছেন অর্থমন্ত্রী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, মিনার শুধুই প্রতিশ্রুতি। এর জন্য অর্থমন্ত্রীর প্রকৌশলী দিয়ে কোনো ডিজাইন করাননি। নেওয়া হয়নি কোনো প্রকল্প, কোন প্রতিষ্ঠান কাজ করবে তাও ঠিক হয়নি। এমনকি কোনো অর্থ পর্যন্ত বরাদ্দও দেওয়া হয়নি এর জন্য। তবুও লোক দেখানো হাওয়ার ওপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন অর্থমন্ত্রী।
ঈদগাহ কমিটির একাধিক সদস্য বাংলানিউজকে জানান, গত ঈদের জামাত শেষে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ৬০০ বছর পুরোনো শাহী ঈদগাহের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য ঈদগাহের মূল স্থাপত্য নিদর্শনের দু’পাশে ১৪ তলা মিনার নির্মাণের। কিন্তু এরপর আর কোনো কাজ হয়নি। হঠাৎ করে ঈদ-উল ফিতরের দুদিন আগে অর্থমন্ত্রী মুহিত তড়িঘড়ি করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য শাহী ঈদগাহে ছুটে আসেন।
তারা জানান, মিনার স্থাপনের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ৫ কোটি টাকা ধরা হলেও এর জন্য কোনো কার্যাদেশ বা প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়নি। যা ভিত্তিহীন।
ঈদগাহ কমিটি সূত্র জানিয়েছে, অর্থমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির মিনার নির্মাণের উদ্দ্যেগ বাস্তবায়নে তাড়াহুড়ো করা নিয়ে খোদ ঈদগাহ কমিটি ও সুশীল সমাজের মধ্যে দ্বিধা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মিনারটি কোথায় স্থাপন করা হবে এ নিয়ে খোদ ঈদগাহ কমিটিও দ্বিধাবিভক্তির মধ্যে রয়েছেন।
তবে এসব অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
জানা গেছে, উপমহাদেশের প্রথম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্র সিলেটের শাহী ঈদগাহ। স্থানটি ধারণ করে আছে সিলেটের কয়েক শত বছরের ঐতিহ্য। দেশের প্রাচীনতম ঈদগাহ হিসেবেও পরিচিত এ ঈদগাহে প্রতি বছর লাখো মানুষ নামাজ আদায় করেন। শাহী ঈদগাহ সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত সিলেটের প্রাচীন ঐতিহ্যের এক নিদর্শনও।
সরেজমিনে শাহী ঈদগাহ ঘুরে দেখা গেছে, প্রাচীনতম স্থাপত্যশৈলীর এই নিদর্শন ঈদগাহের মূল ভূ-খণ্ডে ২২টি সিঁড়ি মাড়িয়ে উঠতে হয়। উঁচু টিলার ওপরই ১৫টি গম্বুজ সজ্জিত মূল ঈদগাহ। টিলার মূল ঈদগাহের সামনের দিকে ৮টি গম্বুজ। নিচে বৃক্ষ ছায়ায় বিস্তৃত মাঠ এবং সীমানা প্রাচীরের চারদিকে রয়েছে-ছোট বড় ১০টি গেট। তবে ঈদগাহের সামনের দিকে রয়েছে মূল তিনটি গেট।
মূল তিনটি গেটে মুঘল আমলের স্থাপত্যের ছাপ স্পষ্ট। ২০০১ সালে বড় পরিসরে ৩টি গেটের নির্মাণ করে দেন স্থানীয় ব্যবসায়ী হাজারীবাগ নীরু মঞ্জিলের বাসিন্দা জহির উদ্দিন তারু মিয়া।
এছাড়া এর আকর্ষণ ঈদগাহের ভেতরের সামনের দিকে ওজু করার জন্য রয়েছে বিশাল পুকুর। পুকুরে স্থাপন করা রয়েছে কৃত্রিম ফোয়ারা। তবে ফোয়ারাটি এখনা অযত্ন-অবহেলায় অচল। ফোয়ারাটির দায়িত্বে সিলেট সিটি কর্পোরেশন থাকলেও এর কোনো দেখভাল করছে না কর্তৃপক্ষ- এমন অভিযোগও রয়েছে।
ঈদগাহের ভেতরের ফলক অনুযায়ী, ২০০৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান পুকুরের চারদিকে ঘাট নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পুকুরটির চারপাশে বৃক্ষের সমারোহ দিন-দুপুরে ক্লান্ত মানুষের নি:শ্বাস ফেলার আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল জলিল সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল কর্মকর্তা, শাহী ঈদগাহ পরিচালনা পর্ষদ এবং জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
No comments