বিশ্ব রেকর্ডের দিনে নার্ভাস মিলন! by মাসুদ পারভেজ
চেনা মাঠে অচেনার পিছু নিয়ে তাঁরা দুজন। লর্ডসে একে অন্যের মুখোমুখি কতবার হয়েছেন অথচ সেই হোম অব ক্রিকেটেই স্টিভ ওয়াহ আর মাইকেল আথারটনের এবারের দেখায় দুজনেই চমকিত। দূর থেকে স্টিভকে লক্ষ্য করে এগিয়ে যাওয়া আথারটনের বিস্ময়মাখানো জিজ্ঞাসা, 'হেই, হোয়াট দ্য হেল আর ইউ ডুয়িং হিয়ার?'
অলিম্পিকে অস্ট্রেলিয়া দলের অ্যাথলেট লিয়াজোঁ অফিসার স্টিভও কি কালকের লর্ডসে আথারটনকে দেখে কম অবাক হয়েছেন! খেলোয়াড়ি জীবন শেষে ধারাভাষ্য ও সাংবাদিকতায় ক্যারিয়ার গড়া ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক এখন দ্য টাইমস-এর ক্রিকেট করেসপনডেন্ট। অথচ কাল সাতসকালে তিনি লর্ডসে হাজির আর্চারি কাভার করতে! বেশ নোট-টোটও নিচ্ছিলেন। এর-ওর কাছে খেলাটার নিয়ম-কানুনও বুঝে নেওয়ার চেষ্টায় ব্যতিব্যস্ত দেখা গেছে তাঁকে!
তো সেই আর্চারির র্যাংকিং রাউন্ড শেষে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ শত্রুতার পুরনো আগুনও উসকে দিতে চেয়েছেন স্টিভ ওয়াহ। আর সেটা কিনা এই আর্চারির মাধ্যমেই! কাল বাছাইয়ের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়ার টেলর ওয়ার্থের সঙ্গে ব্যক্তিগত রাউন্ডে খেলা পড়েছে গ্রেট ব্রিটেনের অ্যালান উইলসের। আর এই ড্রয়ের খবর শুনে লর্ডসেই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়কের প্রতিক্রিয়া, 'টেলরের খেলাটা একজন ব্রিটিশের সঙ্গে পড়েছে, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। রাউন্ড ওয়ান, অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট।'
ব্যক্তিগত রাউন্ডে বাংলাদেশের ইমদাদুল হক মিলনেরও খেলা পড়েছে একজন ব্রিটিশের সঙ্গে। ৩০ জুলাইয়ের সেই নকআউট রাউন্ডে তাঁর প্রতিপক্ষ র্যাংকিং রাউন্ডে চতুর্থ হওয়া গডফ্রে লেরি। যতটা সম্ভব ভালো করে শক্ত প্রতিপক্ষ এড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই কাল লর্ডসে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের এ আর্চার। শুরুটাও করেছিলেন খুব ভালো। ছয় শটের প্রথম সেটে তাই ৬০-এর মধ্যে ৫৭ স্কোর করে ৬৪ জন আর্চারের মধ্যে ছিলেন নবম স্থানে। কিন্তু এরপর ক্রমেই পেছাতে থাকলেন। পেছাতে পেছাতে ১২ সেটের ৭২ শট শেষে তাঁর স্কোর ৬৩৬ আর অবস্থান ৬১তম। মানে শেষের দিক থেকে চার নম্বর!
অথচ এদিন র্যাংকিং রাউন্ডেই নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইম ডং হাইয়ুন, যিনি 'দ্য ব্লাইন্ড আর্চার' নামেও কম পরিচিত নন, কারণ দুই চোখে দৃষ্টি আছে বটে, তবে সেটা খুব ক্ষীণ। টার্গেট বোর্ডের বিভিন্ন বৃত্তের রংটাই শুধু দেখতে পান। আর সেটা দেখেই তীর ছোড়া এ কোরিয়ান নতুন বিশ্ব রেকর্ডটি গড়েছেন তাঁরই গড়া আগের রেকর্ডটি ভেঙে। গত মে মাসেই তুরস্কের আন্তালিয়ায় ৬৯৬ স্কোর করেছিলেন। কাল সেটি ছাড়িয়ে গিয়ে ৬৯৯। তবে সদ্য গড়া বিশ্ব রেকর্ডের উচ্ছ্বাস ছিল না র্যাংকিং রাউন্ড শেষে মিক্সড জোন দিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বলা তাঁর কথায়, 'এটা যেহেতু মাত্রই প্রথম রাউন্ড, তাই এখনই রোমাঞ্চিত হওয়ার কিছু দেখছি না।'
বিশ্ব রেকর্ড গড়েও যখন নির্বিকার ইম ডং হাইয়ুন, তখন নিজের 'প্রথম' অলিম্পিক উত্তেজনায় ভেঙে পড়লেন বাংলাদেশের মিলন। সে কথা স্বীকারেও কোনো দ্বিধা করলেন না, 'সত্যি কথা বলতে কী, আমি আজ খুবই নার্ভাস ছিলাম।' সেই সঙ্গে সকাল থেকে হতে থাকা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিও তাঁর ব্যর্থতায় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন, 'আজকের আবহাওয়া তো দেখেছেনই। সেই সঙ্গে বাতাস থাকায়ও সমস্যা হয়েছে।' নার্ভাসনেস আর তাঁর জন্য বিরূপ আবহাওয়ার কবলে পড়ে মিলন নিজের আগের সেরা পারফরম্যান্সের কাছাকাছিও যেতে পারেননি। দেশে করে এসেছিলেন ৬৬০ স্কোর। তবে দেশে বা প্র্যাকটিসে ভালো করাই যে মূল আসরে পারফর্ম করার নিশ্চয়তা নয়, কালকের মিলন সেটা দেখিয়ে দিলেন। তাই মিলনকে দিয়ে বাংলাদেশের অলিম্পিক শুরুর পর আজ শ্যুটার শারমীন আক্তার রত্নাকে নিয়েও আগাম আশার বুলি ছোটানো যাচ্ছে না। যদিও বেশ কিছুদিন আগেই লন্ডনে এসে নিবিড় অনুশীলনে থাকা রত্নার কোচ শোয়েবুজ্জামান আশাবাদের কথা শোনাচ্ছেন। তাঁর ইভেন্ট ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে নাকি রত্না প্র্যাকটিসে গড়ে ৩৯৮ স্কোর করে চলেছেন। আসল দিনেও সেরকম করতে পারলে ভালো।
বিশ্ব রেকর্ডের দিনে মিলনের মতো নার্ভাস না হয়ে পড়লেই হয়!
তো সেই আর্চারির র্যাংকিং রাউন্ড শেষে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ শত্রুতার পুরনো আগুনও উসকে দিতে চেয়েছেন স্টিভ ওয়াহ। আর সেটা কিনা এই আর্চারির মাধ্যমেই! কাল বাছাইয়ের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়ার টেলর ওয়ার্থের সঙ্গে ব্যক্তিগত রাউন্ডে খেলা পড়েছে গ্রেট ব্রিটেনের অ্যালান উইলসের। আর এই ড্রয়ের খবর শুনে লর্ডসেই অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়কের প্রতিক্রিয়া, 'টেলরের খেলাটা একজন ব্রিটিশের সঙ্গে পড়েছে, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। রাউন্ড ওয়ান, অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট।'
ব্যক্তিগত রাউন্ডে বাংলাদেশের ইমদাদুল হক মিলনেরও খেলা পড়েছে একজন ব্রিটিশের সঙ্গে। ৩০ জুলাইয়ের সেই নকআউট রাউন্ডে তাঁর প্রতিপক্ষ র্যাংকিং রাউন্ডে চতুর্থ হওয়া গডফ্রে লেরি। যতটা সম্ভব ভালো করে শক্ত প্রতিপক্ষ এড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই কাল লর্ডসে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের এ আর্চার। শুরুটাও করেছিলেন খুব ভালো। ছয় শটের প্রথম সেটে তাই ৬০-এর মধ্যে ৫৭ স্কোর করে ৬৪ জন আর্চারের মধ্যে ছিলেন নবম স্থানে। কিন্তু এরপর ক্রমেই পেছাতে থাকলেন। পেছাতে পেছাতে ১২ সেটের ৭২ শট শেষে তাঁর স্কোর ৬৩৬ আর অবস্থান ৬১তম। মানে শেষের দিক থেকে চার নম্বর!
অথচ এদিন র্যাংকিং রাউন্ডেই নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইম ডং হাইয়ুন, যিনি 'দ্য ব্লাইন্ড আর্চার' নামেও কম পরিচিত নন, কারণ দুই চোখে দৃষ্টি আছে বটে, তবে সেটা খুব ক্ষীণ। টার্গেট বোর্ডের বিভিন্ন বৃত্তের রংটাই শুধু দেখতে পান। আর সেটা দেখেই তীর ছোড়া এ কোরিয়ান নতুন বিশ্ব রেকর্ডটি গড়েছেন তাঁরই গড়া আগের রেকর্ডটি ভেঙে। গত মে মাসেই তুরস্কের আন্তালিয়ায় ৬৯৬ স্কোর করেছিলেন। কাল সেটি ছাড়িয়ে গিয়ে ৬৯৯। তবে সদ্য গড়া বিশ্ব রেকর্ডের উচ্ছ্বাস ছিল না র্যাংকিং রাউন্ড শেষে মিক্সড জোন দিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বলা তাঁর কথায়, 'এটা যেহেতু মাত্রই প্রথম রাউন্ড, তাই এখনই রোমাঞ্চিত হওয়ার কিছু দেখছি না।'
বিশ্ব রেকর্ড গড়েও যখন নির্বিকার ইম ডং হাইয়ুন, তখন নিজের 'প্রথম' অলিম্পিক উত্তেজনায় ভেঙে পড়লেন বাংলাদেশের মিলন। সে কথা স্বীকারেও কোনো দ্বিধা করলেন না, 'সত্যি কথা বলতে কী, আমি আজ খুবই নার্ভাস ছিলাম।' সেই সঙ্গে সকাল থেকে হতে থাকা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিও তাঁর ব্যর্থতায় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন, 'আজকের আবহাওয়া তো দেখেছেনই। সেই সঙ্গে বাতাস থাকায়ও সমস্যা হয়েছে।' নার্ভাসনেস আর তাঁর জন্য বিরূপ আবহাওয়ার কবলে পড়ে মিলন নিজের আগের সেরা পারফরম্যান্সের কাছাকাছিও যেতে পারেননি। দেশে করে এসেছিলেন ৬৬০ স্কোর। তবে দেশে বা প্র্যাকটিসে ভালো করাই যে মূল আসরে পারফর্ম করার নিশ্চয়তা নয়, কালকের মিলন সেটা দেখিয়ে দিলেন। তাই মিলনকে দিয়ে বাংলাদেশের অলিম্পিক শুরুর পর আজ শ্যুটার শারমীন আক্তার রত্নাকে নিয়েও আগাম আশার বুলি ছোটানো যাচ্ছে না। যদিও বেশ কিছুদিন আগেই লন্ডনে এসে নিবিড় অনুশীলনে থাকা রত্নার কোচ শোয়েবুজ্জামান আশাবাদের কথা শোনাচ্ছেন। তাঁর ইভেন্ট ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে নাকি রত্না প্র্যাকটিসে গড়ে ৩৯৮ স্কোর করে চলেছেন। আসল দিনেও সেরকম করতে পারলে ভালো।
বিশ্ব রেকর্ডের দিনে মিলনের মতো নার্ভাস না হয়ে পড়লেই হয়!
No comments