বেসরকারি পর্যায়ে শিগগিরই আইসিটি নির্মাণ by এস এম আব্বাস
নদীপথে পণ্য পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি, সড়কপথের ওপর চাপ কমানো, কম খরচে নদীপথে কার্গো পরিবহন বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে বেসরকারি সেক্টরে ইন্টারনাল কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) নির্মাণের সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর করবে সরকার।
এ লক্ষ্যে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। যাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তাদেরও নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্মাণ শেষ করে অপারেশনে যেতে হবে।
এরই মধ্যে নীতিমালা চূড়ান্ত করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ, গত জুলাই মাসের শেষ দিকে নৌ- পরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত নীতিমালা সংক্রান্ত আহবায়ক কমিটির বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সর্বশেষ মতামত জানাতে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
এ সময়ের মধ্যে অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের চূড়ান্ত মতামত নৌ মন্ত্রণালয়ের আহবায়ক কমিটির কাছে জমা দিয়েছে। এসব মতামতের ভিত্তিতে নীতিমালা চূড়ান্ত করছে সরকার।
এ প্রসঙ্গে নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মান্নান হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, “কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট, রূপায়ন গ্রুপ ও একে খান গ্রুপকে বেসরকারি পর্যায়ে আইসিটি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন দেওয়া এসব প্রতিষ্ঠানসহ আরো যাদের অনুমোদন দেওয়া হবে তারাও এ নীতিমালার আওতায় আসবে।”
নৌ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের মাধ্যমে ১৩ দশমিক ৬৮ লাখ টিইইউ (টুয়েন্টিফিট ইক্যুভেলেন্ট ইউনিট) ক্ষমতা সম্পন্ন কনটেইনার প্রবাহিত হয়। আগামী ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমেই ১৮ দশমিক ২০ লাখ কনটেইনার পরিবহন প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হলে কনটেইনার পরিবহনের প্রবৃদ্ধির হার আরও বৃদ্ধি পাবে।
কনটেইনার পরিবহনের ৭৫ শতাংশই ঢাকা কেন্দ্রিক। বর্তমানে যা খোলা অবস্থায় রেল ও সড়ক পথে প্রবাহিত হচ্ছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারত প্রটোকলের আওতায় বর্তমানে ১৫ লাখ মেট্রিকটন মালামাল পরিবহন করা হচ্ছে। ট্রানজিট ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হলে এটা ২০ থেকে ২২ লাখ মেট্রিকটনে উন্নীত হবে। আর ট্রান্সশিপমেন্ট চালু হলে অতিরিক্ত আরও ১০ থেকে ১২ লাখ মেট্রিকটন মালামাল বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পরিবহন করা হবে। এসব মালামাল কনটেইনারে নৌ পরিবহন পথে ডোর টু ডোর পৌঁছাতে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ প্রয়োজন।
কনটেইনার নির্মাণের বর্তমান পরিস্থিতি
বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে পনগাঁও নামক স্থানে ১ লাখ ৬০ হাজার টিইইউ কনটেইনার পরিচালন ক্ষমতা সম্পন্ন ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া বিআইডব্লিউটএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর এলাকায় খানপুরে এবং আশুগঞ্জ এলাকায় এক লাখ টিইইউ কনটেইনার পরিচালন ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি টার্মিনাল নির্মাণ কাজ হাতে নিয়েছে সরকার।
এছাড়া কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট, রূপায়ন গ্রুপ ও একে খান গ্রুপকে বেসরকারি পর্যায়ে আইসিটি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালার উদ্দেশ্য
বেসরকারি পর্যায়ে কনটেইনার টার্মিনাল স্থাপনে সহায়তা ও ব্যবসা-বাণিজ্য, ল্যান্ডিং-শিপিং সুবিধাসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্টের লক্ষ্যে লাইসেন্স দিতে জরুরি ভিত্তিতে নীতিমালা করার উদ্যোগ নেয় সরকার।
কনটেইনার টার্মিনালের কার্যাবলী
বেসরকারি আইসিটি পরিচালনাকারী কন্ট্রাক্ট অ্যাক্ট ১৮৭২ অনুযায়ী, একটি বন্দর টার্মিনালের দায়িত্ব পালন করবে। কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ অনুযায়ী, কাস্টমস্ এর যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করবে।
কনটেইনার জাহাজের মাধ্যমে কনটেইনার ল্যান্ডিং ও বিতরণ (শিপিং) করা হবে টার্মিনালের মাধ্যমে। সাময়িকভাবে মালামাল গুদামজাতের ব্যবস্থাও থাকবে।
কার্গো স্টাফিং, অনস্টাফিং ও কনসোলিডেশন’র কাজ করা হবে টার্মিনালের মাধ্যমে। নৌ, সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে কনটেইনার বিতরণ সম্পাদন ও কাস্টমস্ ক্লিয়ারেন্স সম্পাদন করা হবে এই টার্মিনালের মাধ্যমে। শুল্কায়ন ও ছাড়করণ সম্পর্কিত যাবতীয় কাজ সম্পাদন করা হবে। ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যাবলীও সম্পাদন করা হবে এর মাধ্যমে।
টার্মিনাল নির্মাণের সীমাবদ্ধতা
যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া টার্মিনাল স্থাপন করা যাবে না। দেশের অভ্যন্তরে টার্মিনালের চাহিদা নিরূপণ করে একটি অংশ উদ্যোক্তাদের এবং অবশিষ্ট অংশ সরকারের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রতি দুই বছর অন্তর চাহিদা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। বেসরকারি পর্যায়ে টার্মিনাল নির্মাণের আবেদন পাওয়া গেলে নবায়ন ভিত্তিতে অনুমতি দেওয়া হবে।
তবে স্থায়ী অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অন্যদের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
লাইসেন্সের শর্তাবলী
আইসিটি নির্মাণের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নৌ-পথে কার্গো পরিবহন পরিচালন কাজে তিন বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মালবাহী জাহাজের বৈধ মালিক/চার্টার, এজেন্ট/জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শিপিং লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নৌ-বাণিজ্যিক কাজে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
দু’টি মোবাইল হার্বার ক্রেইন/শিপসোর, গেইন্টি/পোর্টাল ক্রেইন-টুইস্ট (লক ও ২০ ফিট স্প্রেডারসহ) থাকতে হবে। তিন থেকে পাঁচ মেট্রিকটন ক্ষমতা সম্পন্ন ৫টি ফর্ক লিফট থাকতে হবে। ২০ ও ৪০ ফিট লোড কনটেইনার বহনের জন্য ৮টি ট্রাকটর/টেইলর থাকতে হবে।
এছাড়া নির্দিষ্ট স্টাডেল ক্যারিয়ার ও ৩টি রেল মাউন্টেড ইয়ার্ড গ্রেইন্টি ক্রেন থাকতে হবে।
ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে কমপক্ষে ১৫ একর নিজস্ব বা লিজের জমি থাকতে হবে। এই ভৌত অবকাঠামোতে ব্যংক-বীমাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার উল্লেখ করা হয়েছে নীতিমালায়। তবে অনেকে মতামত দিয়েছেন, জমি ৩০ একর বাধ্যতামূলক করার।
আইসিটি’র সেফটি সিকিউরিটি
কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ অনুযায়ী, আইসিটি এলাকা নিরাপত্তা দেওয়াল পরিবেষ্টিত হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নিজস্ব বা প্রাইভেট নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগ করতে হবে।
বিপদজনক ও বিস্ফোরক মালামাল সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক মেরিটাইমস ডেনজারাস গুডস নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর থেকে শর্ত ও নমুনা অনুযায়ী অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত থাকতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ অ্যাম্বুলেন্স ও স্থানীয় হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি থাকতে হবে।
এছাড়া আইএসপিএস কোড অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুমোদন কার্যক্রম
আইসিটি নির্মাণের অনুমোদন দিতে চার সদস্যের প্রাথমিক কমিটি থাকবে। প্রধান হবেন কমিটির চেয়ারম্যান। বন্দর ও পরিবহন বিভাগের পরিচালক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রাথমিক কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনার জন্য ৯ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে। কমিটির প্রধান হবেন চেয়ারম্যান। নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
এই কমিটি প্রাথমিক কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করবে।
কনটেইনার স্থাপন বা নির্মাণ লাইসেন্স শর্ত খেলাপ হলে সরকার বাতিল বা স্থগিত করতে পারবে। এছাড়া প্রয়োজনে সরকার নীতিমালা সংশোধন বা সম্পূর্ণ বাতিল করে নতুন নীতিমালা জারি করতে পারবে।
এরই মধ্যে নীতিমালা চূড়ান্ত করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ, গত জুলাই মাসের শেষ দিকে নৌ- পরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত নীতিমালা সংক্রান্ত আহবায়ক কমিটির বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সর্বশেষ মতামত জানাতে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
এ সময়ের মধ্যে অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের চূড়ান্ত মতামত নৌ মন্ত্রণালয়ের আহবায়ক কমিটির কাছে জমা দিয়েছে। এসব মতামতের ভিত্তিতে নীতিমালা চূড়ান্ত করছে সরকার।
এ প্রসঙ্গে নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মান্নান হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, “কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট, রূপায়ন গ্রুপ ও একে খান গ্রুপকে বেসরকারি পর্যায়ে আইসিটি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন দেওয়া এসব প্রতিষ্ঠানসহ আরো যাদের অনুমোদন দেওয়া হবে তারাও এ নীতিমালার আওতায় আসবে।”
নৌ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের মাধ্যমে ১৩ দশমিক ৬৮ লাখ টিইইউ (টুয়েন্টিফিট ইক্যুভেলেন্ট ইউনিট) ক্ষমতা সম্পন্ন কনটেইনার প্রবাহিত হয়। আগামী ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমেই ১৮ দশমিক ২০ লাখ কনটেইনার পরিবহন প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হলে কনটেইনার পরিবহনের প্রবৃদ্ধির হার আরও বৃদ্ধি পাবে।
কনটেইনার পরিবহনের ৭৫ শতাংশই ঢাকা কেন্দ্রিক। বর্তমানে যা খোলা অবস্থায় রেল ও সড়ক পথে প্রবাহিত হচ্ছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারত প্রটোকলের আওতায় বর্তমানে ১৫ লাখ মেট্রিকটন মালামাল পরিবহন করা হচ্ছে। ট্রানজিট ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হলে এটা ২০ থেকে ২২ লাখ মেট্রিকটনে উন্নীত হবে। আর ট্রান্সশিপমেন্ট চালু হলে অতিরিক্ত আরও ১০ থেকে ১২ লাখ মেট্রিকটন মালামাল বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পরিবহন করা হবে। এসব মালামাল কনটেইনারে নৌ পরিবহন পথে ডোর টু ডোর পৌঁছাতে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ প্রয়োজন।
কনটেইনার নির্মাণের বর্তমান পরিস্থিতি
বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে পনগাঁও নামক স্থানে ১ লাখ ৬০ হাজার টিইইউ কনটেইনার পরিচালন ক্ষমতা সম্পন্ন ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া বিআইডব্লিউটএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর এলাকায় খানপুরে এবং আশুগঞ্জ এলাকায় এক লাখ টিইইউ কনটেইনার পরিচালন ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি টার্মিনাল নির্মাণ কাজ হাতে নিয়েছে সরকার।
এছাড়া কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্ট, রূপায়ন গ্রুপ ও একে খান গ্রুপকে বেসরকারি পর্যায়ে আইসিটি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালার উদ্দেশ্য
বেসরকারি পর্যায়ে কনটেইনার টার্মিনাল স্থাপনে সহায়তা ও ব্যবসা-বাণিজ্য, ল্যান্ডিং-শিপিং সুবিধাসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্টের লক্ষ্যে লাইসেন্স দিতে জরুরি ভিত্তিতে নীতিমালা করার উদ্যোগ নেয় সরকার।
কনটেইনার টার্মিনালের কার্যাবলী
বেসরকারি আইসিটি পরিচালনাকারী কন্ট্রাক্ট অ্যাক্ট ১৮৭২ অনুযায়ী, একটি বন্দর টার্মিনালের দায়িত্ব পালন করবে। কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ অনুযায়ী, কাস্টমস্ এর যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করবে।
কনটেইনার জাহাজের মাধ্যমে কনটেইনার ল্যান্ডিং ও বিতরণ (শিপিং) করা হবে টার্মিনালের মাধ্যমে। সাময়িকভাবে মালামাল গুদামজাতের ব্যবস্থাও থাকবে।
কার্গো স্টাফিং, অনস্টাফিং ও কনসোলিডেশন’র কাজ করা হবে টার্মিনালের মাধ্যমে। নৌ, সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে কনটেইনার বিতরণ সম্পাদন ও কাস্টমস্ ক্লিয়ারেন্স সম্পাদন করা হবে এই টার্মিনালের মাধ্যমে। শুল্কায়ন ও ছাড়করণ সম্পর্কিত যাবতীয় কাজ সম্পাদন করা হবে। ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যাবলীও সম্পাদন করা হবে এর মাধ্যমে।
টার্মিনাল নির্মাণের সীমাবদ্ধতা
যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া টার্মিনাল স্থাপন করা যাবে না। দেশের অভ্যন্তরে টার্মিনালের চাহিদা নিরূপণ করে একটি অংশ উদ্যোক্তাদের এবং অবশিষ্ট অংশ সরকারের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রতি দুই বছর অন্তর চাহিদা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। বেসরকারি পর্যায়ে টার্মিনাল নির্মাণের আবেদন পাওয়া গেলে নবায়ন ভিত্তিতে অনুমতি দেওয়া হবে।
তবে স্থায়ী অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অন্যদের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
লাইসেন্সের শর্তাবলী
আইসিটি নির্মাণের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। নৌ-পথে কার্গো পরিবহন পরিচালন কাজে তিন বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মালবাহী জাহাজের বৈধ মালিক/চার্টার, এজেন্ট/জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শিপিং লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নৌ-বাণিজ্যিক কাজে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
দু’টি মোবাইল হার্বার ক্রেইন/শিপসোর, গেইন্টি/পোর্টাল ক্রেইন-টুইস্ট (লক ও ২০ ফিট স্প্রেডারসহ) থাকতে হবে। তিন থেকে পাঁচ মেট্রিকটন ক্ষমতা সম্পন্ন ৫টি ফর্ক লিফট থাকতে হবে। ২০ ও ৪০ ফিট লোড কনটেইনার বহনের জন্য ৮টি ট্রাকটর/টেইলর থাকতে হবে।
এছাড়া নির্দিষ্ট স্টাডেল ক্যারিয়ার ও ৩টি রেল মাউন্টেড ইয়ার্ড গ্রেইন্টি ক্রেন থাকতে হবে।
ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে কমপক্ষে ১৫ একর নিজস্ব বা লিজের জমি থাকতে হবে। এই ভৌত অবকাঠামোতে ব্যংক-বীমাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার উল্লেখ করা হয়েছে নীতিমালায়। তবে অনেকে মতামত দিয়েছেন, জমি ৩০ একর বাধ্যতামূলক করার।
আইসিটি’র সেফটি সিকিউরিটি
কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ অনুযায়ী, আইসিটি এলাকা নিরাপত্তা দেওয়াল পরিবেষ্টিত হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নিজস্ব বা প্রাইভেট নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগ করতে হবে।
বিপদজনক ও বিস্ফোরক মালামাল সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক মেরিটাইমস ডেনজারাস গুডস নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর থেকে শর্ত ও নমুনা অনুযায়ী অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত থাকতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ অ্যাম্বুলেন্স ও স্থানীয় হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি থাকতে হবে।
এছাড়া আইএসপিএস কোড অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
অনুমোদন কার্যক্রম
আইসিটি নির্মাণের অনুমোদন দিতে চার সদস্যের প্রাথমিক কমিটি থাকবে। প্রধান হবেন কমিটির চেয়ারম্যান। বন্দর ও পরিবহন বিভাগের পরিচালক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রাথমিক কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনার জন্য ৯ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে। কমিটির প্রধান হবেন চেয়ারম্যান। নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
এই কমিটি প্রাথমিক কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করবে।
কনটেইনার স্থাপন বা নির্মাণ লাইসেন্স শর্ত খেলাপ হলে সরকার বাতিল বা স্থগিত করতে পারবে। এছাড়া প্রয়োজনে সরকার নীতিমালা সংশোধন বা সম্পূর্ণ বাতিল করে নতুন নীতিমালা জারি করতে পারবে।
No comments