গুঁড়া মসলায় কাপড়ের রং-ভেজালকারীদের প্রতিহত করতেই হবে
খাদ্যে ভেজালের দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়ে গেছে যে পরিস্থিতি রীতিমতো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। দুনিয়াব্যাপী নিষিদ্ধ ডিডিটির ব্যবহার, মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত ট্যানারি বর্জ্য দিয়ে তৈরি পোলট্রি ফিড, মাছ-দুধে ফরমালিন মেশানোসহ কত কিছুই না মিশে যাচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন খাবারে! গুঁড়া মসলা, চানাচুর ও রঙিন খাবারে ব্যবহার করা হচ্ছে শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর কাপড়ের রং।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, এই রঙে রয়েছে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান। শাকসবজি, ফলমূলে তো সরাসরি কীটনাশকই ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব খাবার খেয়ে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ক্যান্সার, কিডনি, লিভারের বৈকল্যসহ নানা রকম অসুখে। বিভিন্ন হাসপাতালের পরিসংখ্যানেও এর সত্যতা পাওয়া যায়। দ্রুত বাড়ছে এসব রোগীর সংখ্যা। অন্যদিকে দেশে সরকারি স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা দিন দিনই নিম্নমুখী হচ্ছে। ফলে ভেজাল খেয়ে যেসব গরিব মানুষ এসব রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই একরকম বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। গতকালের কালের কণ্ঠে প্রকাশিত 'গুঁড়া মসলায় ভয়ংকর রং' শিরোনামের প্রতিবেদনটি আমাদের এই উদ্বেগ আরো এক ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। ঢাকায় এক হাজারের বেশি মসলার মিল দিনরাত কাপড়ের রং মিশ্রিত ভেজাল মসলা তৈরি করে চলছে। আর ঢাকার হোটেল-রেস্তোঁরায় ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছে এই ভেজাল মসলা।
২০১০ সালে পরিচালিত এক গবেষণায় মানবদেহের প্রতি গ্রাম রক্তে বিষের মাত্রা পাওয়া গেছে ৯ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত। অথচ মানবদেহে বিষের সহনীয় মাত্রা হলো শূন্য দশমিক ২ মাইক্রোগ্রাম। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ১৪৪ জনের রক্তের নমুনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ এবং সুইডেনের স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে পরীক্ষা করে এই ফল পাওয়া যায়। আর এই বিষ মানবদেহে প্রবেশ করে মূলত খাদ্যসামগ্রীর মাধ্যমে। এর ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, শরীরের কোষ-কলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাড়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বিপদ। সেই সঙ্গে কিডনি-লিভার বিকল হওয়াসহ নানা রকম দুরারোগ্য ব্যাধির সৃষ্টি হয়। এর পরও বিষয়টি রাষ্ট্রের কর্ণধারদের যথেষ্ট মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারছে বলে মনে হয় না। কারণ দেশে প্রতিনিয়ত বিষ আমদানির পরিমাণ বাড়ছে, বাড়ছে খাদ্যে ভেজালের পরিমাণ।
প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, ১০ বছর আগে দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ, বর্তমানে তা দুই কোটির অনেক বেশি এবং এদের অর্ধেকই শিশু। অন্যান্য রোগের পরিসংখ্যানও প্রায় একই রকম। এ অবস্থা চলতে থাকলে এক দশক পর দেশে সুস্থ, স্বাভাবিক ও কর্মক্ষম কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। দীর্ঘদিন ধরেই এ বিষয়ে সভা, সেমিনার, গোলটেবিল আলোচনা, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কিন্তু কখনোসখনো এক-আধবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা ছাড়া সরকার এ ব্যাপারে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালত কয়েক হাজার টাকা জরিমানা কিংবা কয়েক মাসের জেল দিচ্ছে। হাজার হাজার মানুষকে যারা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে, তাদের জন্য এই শাস্তি যথেষ্ট কি? অথচ দেশের প্রচলিত আইনেই খাদ্যে এমন মারাত্মক ভেজাল মেশানোর জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ গুরুতর শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত একজনেরও তেমন কোনো শাস্তি হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। আমরা আশা করি, এ ব্যাপারে দেশে বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রয়োজনে আইনের আরো সংশোধন করা যেতে পারে। কিন্তু হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া এসব ভেজালকারীকে যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করতেই হবে।
২০১০ সালে পরিচালিত এক গবেষণায় মানবদেহের প্রতি গ্রাম রক্তে বিষের মাত্রা পাওয়া গেছে ৯ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত। অথচ মানবদেহে বিষের সহনীয় মাত্রা হলো শূন্য দশমিক ২ মাইক্রোগ্রাম। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ১৪৪ জনের রক্তের নমুনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ এবং সুইডেনের স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে পরীক্ষা করে এই ফল পাওয়া যায়। আর এই বিষ মানবদেহে প্রবেশ করে মূলত খাদ্যসামগ্রীর মাধ্যমে। এর ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, শরীরের কোষ-কলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাড়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বিপদ। সেই সঙ্গে কিডনি-লিভার বিকল হওয়াসহ নানা রকম দুরারোগ্য ব্যাধির সৃষ্টি হয়। এর পরও বিষয়টি রাষ্ট্রের কর্ণধারদের যথেষ্ট মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারছে বলে মনে হয় না। কারণ দেশে প্রতিনিয়ত বিষ আমদানির পরিমাণ বাড়ছে, বাড়ছে খাদ্যে ভেজালের পরিমাণ।
প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, ১০ বছর আগে দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ, বর্তমানে তা দুই কোটির অনেক বেশি এবং এদের অর্ধেকই শিশু। অন্যান্য রোগের পরিসংখ্যানও প্রায় একই রকম। এ অবস্থা চলতে থাকলে এক দশক পর দেশে সুস্থ, স্বাভাবিক ও কর্মক্ষম কোনো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। দীর্ঘদিন ধরেই এ বিষয়ে সভা, সেমিনার, গোলটেবিল আলোচনা, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কিন্তু কখনোসখনো এক-আধবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা ছাড়া সরকার এ ব্যাপারে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়নি। ভ্রাম্যমাণ আদালত কয়েক হাজার টাকা জরিমানা কিংবা কয়েক মাসের জেল দিচ্ছে। হাজার হাজার মানুষকে যারা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে, তাদের জন্য এই শাস্তি যথেষ্ট কি? অথচ দেশের প্রচলিত আইনেই খাদ্যে এমন মারাত্মক ভেজাল মেশানোর জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ গুরুতর শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত একজনেরও তেমন কোনো শাস্তি হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। আমরা আশা করি, এ ব্যাপারে দেশে বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রয়োজনে আইনের আরো সংশোধন করা যেতে পারে। কিন্তু হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া এসব ভেজালকারীকে যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করতেই হবে।
No comments