জার্মান হয়েও আমি স্পেনের ভক্ত
স্পেন এখন অনন্যসাধারণ একটা দল। এই দলটা অনেক বছর একসঙ্গে খেলছে। বোঝাপড়াটা এত চমৎকার, দলের সবকিছু যেন হয়ে যায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। স্পেনের বিপক্ষে খেলতে হলে আপনাকে কঠোর লড়াই করতে হবে, ছুড়ে দিতে হবে চ্যালেঞ্জ। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আপনি সেটি পারবেন না। কারণ আপনার পায়ে তো বলই থাকবে না। আর আপনি যদি তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আক্রমণাত্মক খেলতে চান, তাতেও উল্টো বিপদ। হজম করতে হবে গোল। কারণ ওরা ঠিক সেটার জন্যই ওত পেতে থেকে, আপনি আক্রমণাত্মক খেলবেন, ওরা পেয়ে যাবে জায়গা।
স্পেন-জার্মানি সেমিফাইনালটির কথাই ধরুন। প্রথমার্ধে জার্মানি তো দুর্দান্তভাবে রক্ষণ সামলে যাচ্ছিল। সে সময় তো আমার মনে হচ্ছিল, এই রক্ষণব্যূহ ভেঙে স্প্যানিয়ার্ডরা কি আদৌ গোলের দেখা পাবে? কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে জার্মানির এই দলে অভিজ্ঞতার অভাবটাই প্রকট হয়ে উঠল। মনে হলো, ওরা যেন ধন্দের মধ্যে পড়ে গেছে এখন আমাদের কী করা উচিত, সেই কথা ভেবে ভেবে।
স্পেনের এত গুণগান গাওয়ার পরও বলছি, দিনের শেষে আমি কিন্তু চাই, স্পেন হেরে যাক। জানি, সুইজারল্যান্ড ওদের হারিয়ে দিয়েছে, কিন্তু সেটি ছিল গ্রুপ পর্বের সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটের একটা ম্যাচ।
স্পেন আর হল্যান্ডের খেলার একটা অভিন্ন দিক হলো, দুটো দলের খেলোয়াড়েরাই সব সময়ই জায়গা বদল করে খেলে। খেয়াল করলেই দেখবেন, মাঝমাঠে ডান দিকে খেলছিল যে, হুট করে সে চলে এসেছে বাঁ দিকে; আর বাঁয়ের জন চলে গেছে ডানে। ভবিষ্যতে জার্মানিকেও এমন আরও বেশি বৈচিত্র্য নিয়ে খেলতে হবে। তবে এও খেয়াল রাখতে হবে, ডানের যে খেলোয়াড়েরা তার জায়গা ছেড়ে বাঁয়ে উঠে গেল, তার শূন্যস্থানটা যেন শূন্যই না থেকে যায়।
সেমিফাইনাল থেকে জার্মানির পরাজয়ে অনেকেই হতাশ। নিজে জার্মান বলে সেই দুঃখটা আরও বেশি করে অনুভব করছি। তবে একদিক দিয়ে মন্দেও ভালোও আছে। ফাইনালে হেরে যাওয়ার চেয়ে সেমিফাইনালে হারার দুঃখটা যে অনেক কম! আমার নিজের যে সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে দুবার। ১৯৯৯ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগের এবং ২০০২ বিশ্বকাপের ফাইনালে। অবশ্য আমি দুবার চ্যাম্পিয়নও হয়েছি। ১৯৯৬ সালে উয়েফা কাপ এবং ২০০১ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ।
মাঝেমধ্যে তো আমার এমনও মনে হয়, ফাইনালে হেরে যাওয়ার চেয়ে বরং গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেওয়া অনেক ভালো! তাতে দুঃখটা অনেক কম হয়। হ্যাঁ, আপনার মধ্যে অনেক হতাশা থাকবে কিন্তু দুঃখবোধের যে যাতনা, সেটি আর সইতে হবে না। ২০০৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আমরা যখন ইতালির কাছে হেরে গেলাম, আমি ছিলাম বেঞ্চে বসে। কাজটা সহজ ছিল না মোটেও।
আজ স্পেন আর হল্যান্ডের কোনো একটা দল চ্যাম্পিয়ন হবে। আরেকটি দল এত কাছে থেকে ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখতে না পারার একবুক শূন্যতা নিয়ে ফিরে যাবে। কে সেই দুঃখ নিয়ে কাঁদবে আর কে কাঁদবে আনন্দে, সেটি আগাম বলা মুশকিল। তবে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, জয় হবে ইউরোপের ফুটবলের!
এবার ফাইনালে ইউরোপেরই দুটো দল। এই প্রথম ইউরোপের বাইরের কোনো মহাদেশে অনুষ্ঠানরত কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি দুই দলই ইউরোপের প্রতিনিধি। ইউরোপের ফুটবল বরাবরই সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে গেছে। ফাইনালের দুই দল ইউরোপের, এটা আমার কাছে অন্তত কোনো চমক নয়। কারণ ইউরোপের ফুটবলে সেই পেশাদারিটা আছে। ইউরোপের সঙ্গে বাকি বিশ্বের পার্থক্যটা এখানেই।
দুটো দলই ৪-৩-২-১ ছকে খেলে। দুটো দলেই আছে টেকনিকের দিক দিয়ে পরিপূর্ণ বেশ কিছু খেলোয়াড়। দুটো দলই খেলার ছন্দ ক্ষণে ক্ষণে পাল্টাতে পারে। নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী খেলার গতি পাল্টাতে সক্ষম। পরিপূর্ণ ফুটবল বলতে যা বোঝায়, দুই দলই সেই বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ। যোগ্যতম দুটো দলই খেলছে আজকের ফাইনালে।
কে জিতবে আজ? স্পেন! এদের এই দলটা শতাব্দীর সেরা দল। অনেকটা ফ্রান্সের সেই ১৯৯৮ বিশ্বকাপ আর ২০০০ ইউরোজয়ী দলটার মতো। এই দলটার এতটাই দুর্বলতা, প্রতিপক্ষের ওপর শেষ কামড়টি দিতে না পারা। এত এত সুযোগ তৈরির পরও গোল করেছে মাত্র সাতটি। আজও জাল খুঁজে পেতে কষ্ট হলে ওরা বিপদেই পড়ে যাবে। তবে যদি ১-০ গোলেও এগিয়ে যায় স্পেন, ওদের হারানো কঠিন।
স্পেন-জার্মানি সেমিফাইনালটির কথাই ধরুন। প্রথমার্ধে জার্মানি তো দুর্দান্তভাবে রক্ষণ সামলে যাচ্ছিল। সে সময় তো আমার মনে হচ্ছিল, এই রক্ষণব্যূহ ভেঙে স্প্যানিয়ার্ডরা কি আদৌ গোলের দেখা পাবে? কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে জার্মানির এই দলে অভিজ্ঞতার অভাবটাই প্রকট হয়ে উঠল। মনে হলো, ওরা যেন ধন্দের মধ্যে পড়ে গেছে এখন আমাদের কী করা উচিত, সেই কথা ভেবে ভেবে।
স্পেনের এত গুণগান গাওয়ার পরও বলছি, দিনের শেষে আমি কিন্তু চাই, স্পেন হেরে যাক। জানি, সুইজারল্যান্ড ওদের হারিয়ে দিয়েছে, কিন্তু সেটি ছিল গ্রুপ পর্বের সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটের একটা ম্যাচ।
স্পেন আর হল্যান্ডের খেলার একটা অভিন্ন দিক হলো, দুটো দলের খেলোয়াড়েরাই সব সময়ই জায়গা বদল করে খেলে। খেয়াল করলেই দেখবেন, মাঝমাঠে ডান দিকে খেলছিল যে, হুট করে সে চলে এসেছে বাঁ দিকে; আর বাঁয়ের জন চলে গেছে ডানে। ভবিষ্যতে জার্মানিকেও এমন আরও বেশি বৈচিত্র্য নিয়ে খেলতে হবে। তবে এও খেয়াল রাখতে হবে, ডানের যে খেলোয়াড়েরা তার জায়গা ছেড়ে বাঁয়ে উঠে গেল, তার শূন্যস্থানটা যেন শূন্যই না থেকে যায়।
সেমিফাইনাল থেকে জার্মানির পরাজয়ে অনেকেই হতাশ। নিজে জার্মান বলে সেই দুঃখটা আরও বেশি করে অনুভব করছি। তবে একদিক দিয়ে মন্দেও ভালোও আছে। ফাইনালে হেরে যাওয়ার চেয়ে সেমিফাইনালে হারার দুঃখটা যে অনেক কম! আমার নিজের যে সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে দুবার। ১৯৯৯ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগের এবং ২০০২ বিশ্বকাপের ফাইনালে। অবশ্য আমি দুবার চ্যাম্পিয়নও হয়েছি। ১৯৯৬ সালে উয়েফা কাপ এবং ২০০১ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ।
মাঝেমধ্যে তো আমার এমনও মনে হয়, ফাইনালে হেরে যাওয়ার চেয়ে বরং গ্রুপ পর্বেই বিদায় নেওয়া অনেক ভালো! তাতে দুঃখটা অনেক কম হয়। হ্যাঁ, আপনার মধ্যে অনেক হতাশা থাকবে কিন্তু দুঃখবোধের যে যাতনা, সেটি আর সইতে হবে না। ২০০৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আমরা যখন ইতালির কাছে হেরে গেলাম, আমি ছিলাম বেঞ্চে বসে। কাজটা সহজ ছিল না মোটেও।
আজ স্পেন আর হল্যান্ডের কোনো একটা দল চ্যাম্পিয়ন হবে। আরেকটি দল এত কাছে থেকে ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখতে না পারার একবুক শূন্যতা নিয়ে ফিরে যাবে। কে সেই দুঃখ নিয়ে কাঁদবে আর কে কাঁদবে আনন্দে, সেটি আগাম বলা মুশকিল। তবে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, জয় হবে ইউরোপের ফুটবলের!
এবার ফাইনালে ইউরোপেরই দুটো দল। এই প্রথম ইউরোপের বাইরের কোনো মহাদেশে অনুষ্ঠানরত কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি দুই দলই ইউরোপের প্রতিনিধি। ইউরোপের ফুটবল বরাবরই সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে গেছে। ফাইনালের দুই দল ইউরোপের, এটা আমার কাছে অন্তত কোনো চমক নয়। কারণ ইউরোপের ফুটবলে সেই পেশাদারিটা আছে। ইউরোপের সঙ্গে বাকি বিশ্বের পার্থক্যটা এখানেই।
দুটো দলই ৪-৩-২-১ ছকে খেলে। দুটো দলেই আছে টেকনিকের দিক দিয়ে পরিপূর্ণ বেশ কিছু খেলোয়াড়। দুটো দলই খেলার ছন্দ ক্ষণে ক্ষণে পাল্টাতে পারে। নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী খেলার গতি পাল্টাতে সক্ষম। পরিপূর্ণ ফুটবল বলতে যা বোঝায়, দুই দলই সেই বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ। যোগ্যতম দুটো দলই খেলছে আজকের ফাইনালে।
কে জিতবে আজ? স্পেন! এদের এই দলটা শতাব্দীর সেরা দল। অনেকটা ফ্রান্সের সেই ১৯৯৮ বিশ্বকাপ আর ২০০০ ইউরোজয়ী দলটার মতো। এই দলটার এতটাই দুর্বলতা, প্রতিপক্ষের ওপর শেষ কামড়টি দিতে না পারা। এত এত সুযোগ তৈরির পরও গোল করেছে মাত্র সাতটি। আজও জাল খুঁজে পেতে কষ্ট হলে ওরা বিপদেই পড়ে যাবে। তবে যদি ১-০ গোলেও এগিয়ে যায় স্পেন, ওদের হারানো কঠিন।
No comments